1

সম্পাদকীয়

Posted in


সম্পাদকীয়



পূর্ণ করে আপনাকে সে দেবে,
রসের ভারে তাই সে অবনত...

আজ ২১শে জুলাই, ২০১৬। প্রকাশিত হলো ঋতবাক ২য় বর্ষ, ২৪তম সংখ্যা। পূর্ণ হলো দ্বিতীয় বর্ষ অতিক্রমণ। এই দুই বৎসরের যাত্রাপথ যে পুরোটাই মসৃণ ছিল, তা নয়। উপল বন্ধুর পথে বার বার হোঁচট খেতে খেতে এগিয়ে চলা। বার বার ভুল, আবার ভুলের মধ্যে দিয়েই ঠিকটাকে চিনে নেওয়া। অনেক বন্ধু এসেছেন, সাথে চলেছেন। আবার ত্যাগও করেছেন অনেকেই। তবু চলা থামেনি। আজ সঙ্গে পেয়েছি এমন সব বিশিষ্ট বিদ্বদ্জনদের, সহযাত্রী বন্ধুদের, যে তাঁদের আন্তরিকতার পূর্ণ মর্যাদা দিতে সামনে এগিয়ে চলা ছাড়া আর কোনও পথ খোলা নেই। কৃতজ্ঞতা জানবেন সকলে। 

আগেও বহুবার বলেছি, আবারও বলছি, ঋতবাক ওয়েব ম্যাগাজিন নিয়ে অনেক স্বপ্ন, সে স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার দায়ও আমাদের-ই। বিগত কুড়ি বছরের ওয়েব ম্যাগাজিনের অগ্রগতির ইতিহাস আমাকে আশান্বিত করে। প্রাকৃতিক এবং সমাজতাত্ত্বিক কারণেই মানব সভ্যতা রক্ষার প্রয়োজনে একদিন অবশ্যম্ভাবীভাবেই প্রিন্টেড ম্যাগাজিনের তুলনায় ওয়েব ম্যাগাজিনগুলির প্রয়োজনীয়তা ও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাবে। সে ভবিষ্যৎ বিশেষ দূরে নয়। আর সেদিন যাঁরা ইতিহাসের এই বিবর্তনের মূল্যায়ন করবেন, অনিবার্য ভাবেই ঋতবাক-এর নাম তাঁদের উল্লেখ করতেই হবে, আমি নিশ্চিত।

শ্রাবণের এই দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি সংখ্যা অনিবার্যভাবেই উৎসর্গীকৃত হলো সেই সে মহামানবটিকে স্মরণ করে, যাঁকে বাদ দিলে আজও বাঙালী অস্তিত্বসঙ্কটে বিব্রত বোধ করে। মৃত্যুতেও যেন তিনি বিজয়ী বীর... আসলে ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের বাইশে শ্রাবণ, দুপুর বারোটা দশ – সেদিন সেখানে পড়ে রয়ে গিয়েছিল তো শুধু সেই নশ্বর আধারটুকুই... বাকি সমস্তটাই কী আজ এই নিদারুণ অস্থিরতার সঙ্কট মুহূর্তেও প্রবল প্রাণপ্রাচুর্যে সর্বব্যাপী অস্তিমানতা নিয়ে বিরাজিত নয়? আজও তো তিনি বাঙালীর বিপন্নতার শেষ আশ্রয়। যুগ বদলেছে, বদলেছে প্রজন্ম, আর তার সাথে দৃষ্টিভঙ্গী এবং গ্রহণীয়তাও। অন্যভাবে আছেন, তবু আছেন – উত্তর আধুনিক কবির ভাষায় ‘ভিতর বাহিরে, অন্তরে অন্তরে...’ তাঁর আসন কোনও দিনই শূন্য হয়নি, যে পূর্ণ করতে হবে! 

এদিকে ঋতবাক সাহিত্যপত্রের যুগপৎ অন্তরঙ্গ ও বহিরঙ্গ সজ্জার পরিবর্তনের ধারা অব্যাহত। এখন থেকে ব্লগের লেখা ফেসবুক, ট্যুইটর, গুগল প্লাস বা যেখানে খুশি শেয়ার করা যাবে সরাসরি লিঙ্কে ক্লিক করেই। মুদ্রণ সংখ্যার লেখা নির্বাচন পর্ব প্রায় শেষের পথে। গল্প প্রতিযোগিতায় অভূতপূর্ব সাড়া। ঋতবাক পাবলিকেশনেও বন্ধুদের বই ছাপার কাজ চলছে জোরকদমে। সবচেয়ে বড় খবর, ব্লগের উপদেষ্টামণ্ডলীকে সমৃদ্ধ করলেন স্বনামধন্য শিক্ষাবিদ সুদিন চট্টোপাধ্যায় ও কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরাজী বিভাগীয় প্রধান চিন্ময় গুহ। ঋতবাক ঋদ্ধ হলো। 

আরও খবর, ঋতবাকের সর্বকালীন ইতিহাসে সম্ভবত জনপ্রিয়তম ধারাবাহিক ‘আমার বারুদবেলা’র প্রথম পর্ব শেষ হলো এই দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি সংখ্যাতেই। লেখক স্বপন দেবের কাছে অনুরোধ – দ্বিতীয় পর্বের ডালি নিয়ে ফিরে আসুন খুব শিগগিরি (জনান্তিকে জানিয়ে রাখি, লেখক চলেছেন সুদূর বিদেশে পৌত্র সন্দর্শনে – এ বড়ো অপ্রতিরোধ্য অমোঘ টান)। এই সংখ্যা থেকেই শুরু হলো রাজর্ষি পি দাসের ধারাবাহিক উপন্যাস ‘ফেরা’। 

ঋতবাকের নিয়মিত বিভাগগুলিও যথারীতি ভরে উঠেছে অজস্র ভালো লেখায়। এমনই নিরন্তর সহযোগিতা ও দীর্ঘ সহযাত্রার কামনায় সম্পৃক্ত হয়ে ঋতবাকের যাত্রাপথ উত্তরোত্তর মসৃণ হোক, এই প্রত্যাশাই রাখি।



শুভেচ্ছা নিরন্তর

সুস্মিতা বসু সিং

1 comment:

  1. একটা স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে বেশ চমৎকার লিখেছেন। তবে রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুকালের বোধহয় সবচেয়ে নিরপেক্ষ, সহজ অথচ মর্মস্পর্শী বিবরণ দিয়েছেন শ্রীমতী রানী চন্দ, তাঁর 'গুরুদেব' বইয়ে। মৈত্রেয়ী দেবী কি তখন জোড়াসাঁকোর বাড়িতে বা কলকাতায় প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ছিলেন? কোনও প্রামাণ্য তথ্য পেলাম না।

    ReplyDelete