Next
Previous
Showing posts with label সম্পাদকীয়. Show all posts
0

সম্পাদকীয়

Posted in







দিনকয়েক হল সূচি ঘোষণা হয়েছে। আরেকটি সাধারণ নির্বাচনের দোরগোড়ায় আমরা। বলা হয়ে থাকে গণতন্ত্রের বৃহত্তম পার্বন এই প্রক্রিয়া। ভোট কী এবং কেন? প্রায় ঋতুচক্রের নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে এই নির্বাচন আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা কতদূর? আমজনতার কাছে সত্যিই কি এই প্রহসনের কোনও তাৎপর্য আছে? 

'নির্বাচন' মানে যদি হয় 'বেছে নেওয়া', তাহলে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, কাকে বা কাদের বেছে নেব আমরা? কেনই বা নেব? স্বাধীনতার পর সাতাত্তর বছর অতিক্রান্ত প্রায়। এতগুলি দশক অতিবাহিত হওয়ার পরও কেন তবে সমাধান হয়নি বহু মৌলিক সমস্যার? একদিকে যেমন 'ডিজিটাল ভারতে'র বিজ্ঞাপন ফুলে ফেঁপে উঠেছে, অন্যদিকে অনাহার আর অশিক্ষার করুণ চিত্রটিতে আমাদের লজ্জিত হতে হয় বারংবার। যে ধর্মনিরপেক্ষতা ছিল আমাদের কোহিনুর, তার গরিমা এখন অপসৃয়মান! 

বিপুল যে অর্থ ব্যয় করে নির্মাণ করা হয় একটি মন্দির অথবা মূর্তি, তাতে গড়ে তোলা যেত অগণন বিদ্যালয় বা হাসপাতাল। নির্বাচিত যেসব জনপ্রতিনিধি স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে সেইসব সৌধ স্থাপনে অগ্রণী ভূমিকা নিলেন, তাঁরা কি একমুহূর্তের জন্যও ভেবেছিলেন সেইসব মানুষগুলির কথা, যাঁরা নিরন্ন কিংবা বস্ত্রহীন অবস্থাতেও গণতন্ত্রের এই সুবিশাল স্তম্ভটিকে রক্ষা করে এসেছেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম জুড়ে? প্রশ্নগুলি মাথাচাড়া দেবে আবার চাপাও পরে যাবে বেআইনি কোনও নির্মাণের ধ্বংসস্তূপের তলায়।

সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে রাশিয়ার নির্বাচনের ফলাফল। পঞ্চমবারের জন্য প্রায় পঁচাশি শতাংশ গরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় এসে ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন বিশ্বের পরিস্থিতি এমন যে ঘটে যেতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আর আরেকটি নির্বাচনযুদ্ধের সম্মুখীন হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প হুমকি দিয়ে রেখেছেন, তিনি জয়ী না হতে পারলে বইবে রক্তগঙ্গা।

প্রাজ্ঞ এক বন্ধু বলছিলেন, আমরা যা দেখছি, শুনছি, প্রকৃত রাজনীতির পরিধিটা নাকি তার চেয়ে অনেক বড়। আমাদের দেশে বা অন্যত্র যা ঘটমান, তার কোনও কিছুই বিচ্ছিন্ন নয়, সবকিছুই সেখানে অদৃশ্য একটিই সুতোয় গ্রন্থিত। রাম জন্মানোর আগেই যেমন রচিত হয়েছিল 'রামায়ণ', আগামী দিনে চারপাশে আমরা কী দেখবো, একটি সামগ্রিক নকশার অঙ্গ হিসাবে তা নির্ধারিত হয়ে আছে অনেক আগেই।

রঙের উৎসবও আসন্ন। আমাদের চেতনা যেন রামধনু-রঙা হয়ে ওঠে!

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।
শুভেচ্ছা নিরন্তর।
0

সম্পাদকীয়

Posted in








আজ আরও একটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। কালের নিয়মে প্রতি বছর দিনটি ফেরত আসে। কিন্তু এমন একটি দিনের সার্থকতা কি কেবল বিশেষভাবে চিহ্নিত হওয়ার মধ্যে? সঠিক প্রেক্ষিত থেকে সরে এলে এই দিনটির আর আলাদা কোনও মর্যাদা থাকে না। কারণ প্রশ্নটি নিছক একটি ভাষার আব্রু রক্ষার প্রয়াসের চেয়েও অনেক বড়। রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস জড়িয়ে আছে বিষয়টির সঙ্গে।

ভাষার অধিকার যে কোনও মানুষের মৌলিক অধিকারগুলির অন্যতম। তার সঙ্গে স্বভাবতই যুক্ত হয়ে যায় কোনও একটি ভাষায় নিয়ন্ত্রণহীনভাবে নিজেকে মেলে ধরার একান্ত আপন ক্ষেত্রটি। গোল বাধে এখানেই।

বল্গাহীন, স্বতস্ফূর্ত ভাষার স্রোত আটকাতে বারবার প্রয়োজন হয়েছে রাষ্ট্রীয় পেশীশক্তির। ভাষার জাদুকরী ক্ষমতা এই যে তা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে পারে। একক থেকে বহুস্বর হয়ে উঠতে সময় লাগে না। এর ফলে শাসক গোষ্ঠীর মধ্যে যে নিরাপত্তাহীনতা আর ভীতি সঞ্চারিত হয়, তার একমাত্র নিবৃত্তি অন্ধ বলপ্রয়োগে। স্বৈরতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি বারবার প্রত্যক্ষ করেছে।

পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র বলে যে দেশ শ্লাঘার উত্তাপ উপভোগ করে, তার এরকম আচরণ শোভা পায় কি? আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রাক্কালে ভারত থেকে ফরাসি সাংবাদিক ভানেসা দুনাকের বহিষ্কার এই ধন্দের সামনে বেআব্রু করে আমাদের।

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।

শুভেচ্ছা নিরন্তর।
0

সম্পাদকীয়

Posted in







এই সম্পাদকীয় লেখার সময় আমরা এক অভূতপূর্ব সময়ের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে এদেশ এমন একটি ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে যাচ্ছে, যা চিরতরে বদলে দিতে পারে প্রাচীন এক সংস্কৃতির ভবিষ্যত গতিপথ। নানান সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে বিশ্ববাসী বারবার ভারত নামক বহুধাবিভক্ত আশ্চর্য এক দেশকে দৃষ্টান্ত হিসাবে দেখতে চেয়েছে। অতি শীঘ্র আমরা বুঝতে পারব, সেই চিত্রটির আমূল পরিবর্তন হয়ে গেল কিনা।

যে ঘটনাটির সম্ভাব্য অভিঘাত ঘিরে এত কথা অথবা বলা ভালো কল্পনা আর আবেগ ঢেলে এক মহাকবি একদিন যে চরিত্রটি নির্মাণ করেছিলেন, তিনি তো ভালোবাসার নায়ক হয়ে এক বিপুল জনজাতির অন্তঃপুরে বসবাস করে আসছিলেন। শতাব্দীপ্রাচীন এক সৌধের বিনিময়ে নির্মিত এক বাসস্থানে তাঁর পুনঃপ্রতিষ্ঠার কোনও আবশ্যকতা ছিল কি?

চারপাশের অসংখ্য অনৈতিক কার্যকলাপ সহ্য করতে করতে অবশ্য এই আয়োজনটিকে আর বিচ্ছিন্ন বলে মনে হয় না। কারণ ভালো-মন্দের মধ্যে যে লক্ষণরেখাটি বিরাজ করত, তা ঘুচে গেছে অনেক আগেই। মূল্যবোধ নামক যে বস্তুটি কোনও একদিন আমাদের মধ্যে অবস্থান করত, তার কংকালসার দেহটি বড়জোর এখনও বহন করে চলেছি আমরা।

এরই মধ্যে আমাদের বার্ষিক বই-পার্বণ শুরু হয়ে গেছে। বিগত বছরগুলির তুলনায় এর কলেবর বৃদ্ধিও পেয়েছে অনেক। সত্যিই তো বইয়ের ক্ষমতা যে সীমাহীন। নিরক্ষরকে আক্ষরিক করা ছাড়াও সে যে পারে মনের বন্ধ জানালাগুলির আগল খুলে দিতে!

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।

শুভেচ্ছা অফুরান।
0

সম্পাদকীয়

Posted in






ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ নম্বর ধারা। যে বিষয়গুলির ঢাল হয়ে উঠে অধঃপতনের গহ্বর থেকে সমাজকে রক্ষা করার কথা, তার প্রথম অবশ্যই মূল্যবোধ আর তার নীতিনিষ্ঠ প্রয়োগই একদিন জন্ম দিয়েছিল এই আইন নামক বিষম বস্তুটির। প্রণেতারা নিশ্চয়ই একথাই ভেবেছিলেন, যখন মানুষের অপরাধী প্রবৃত্তি মূল্যবোধের লক্ষণরেখা ভঙ্গ করবে, সমাজের গা দিয়ে চুইয়ে পড়বে পুঁজরক্ত, সেই ক্ষতস্থানের নিরাময়ের জন্য দরকার হবে আইনের। 

সেইসময় একথা তাঁরা অবশ্যই মনে রাখেননি যে প্রাণীকূলে মানুষই সবচেয়ে ধূর্ত এবং বিপদে পড়লে, একটি বিশেষ পরিস্থিতিকে নিজের আয়ত্বে আনার জন্য অন্য অনেক প্রাণীর মতোই চকিতে বদলে ফেলতে পারে বাহ্যিক চেহারা। 

আইনের অনুশাসন সৃষ্টি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আবিস্কৃত হল তার চোরা ফাঁকফোকরগুলি। বিষয়টি অধিক আক্ষেপের হয়ে ওঠে যখন রক্ষকই ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। যে ন্যায়ালয়ের দায়িত্ব সাধারণ মানুষের কাছে সুবিচার পৌঁছে দেওয়া এবং প্রমাণ করা আইন 'অন্ধ' হলেও তা নিরপেক্ষ, পবিত্র সেই স্থানটি থেকে একটি বিশেষ আইনের পরস্পরবিরোধী ব্যাখ্যা করা হল। এই দেশেই। 

৩৭৫ নম্বর এই বিশেষ ধারাটিতে স্পষ্ট বলা আছে কোনও নারীর অসম্মতিতে যে কোনও রকম যৌন সম্পর্ক স্থাপনের অর্থ ধর্ষণ এবং একমাত্র ধর্ষণই। এই একই আইনে এতদিন অবশ্য বৈবাহিক সম্পর্ককে এই ব্যাখ্যার আওতায় রাখা হয়নি, ছাড় দেওয়া হয়েছিল 'স্বামী দেবতাকে'। 

সম্প্রতি দেশের দুই প্রান্তের দুটি হাইকোর্ট আলাদা একই গোত্রের দুটি মামলায় এমন রায় দিলেন যাতে 'ধন্দ' শব্দটির যথার্থ মানে অনুধাবন করা গেল। একজন বিচারপতি বললেন, নারীর অসম্মতিতে যৌন মিলন হলে তা ধর্ষণই, বিবাহিত দম্পতির ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হবে না। আর অন্যজন বললেন, আলোচ্য ক্ষেত্রে মেয়েটির বয়স যদি হয় আঠারো বা তার অধিক, তাকে ধর্ষণ বলে গ্রাহ্য করা যাবে না। 

সমাজের অভিমুখ কোনদিকে এর পর নিশ্চয়ই বলার অপেক্ষা রাখে না! 'সত্য সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ'।

সুস্থ থাকুন, সৃজনে থাকুন

শুভেচ্ছা নিরন্তর
3

সম্পাদকীয়

Posted in







কী আশ্চর্য অতীন্দ্রিয় সমাপতন! ১৬ জুলাই ১৯৪৫ আর ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ এক 'বৈবাহিক' সম্পর্কে জুড়ে যাওয়া যেন শুধু সময়ের অপেক্ষা। আটাত্তর বছর আগের জুলাই মাসের ওই দিনটিতে নিউ মেক্সিকোর মরুপ্রদেশে একইসঙ্গে নির্মিত হয়েছিল অসামান্য বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির এক শৃঙ্গ এবং মানবসভ্যতার ইতিহাসের এক অতি কলঙ্কময় অধ্যায়। 'ট্রিনিটি টেস্ট' - কাব্যময় এই নামকরণের আড়ালে লুকিয়ে ছিল এক ফ্রাঙ্কেনস্টাইন। প্রথম পারমাণবিক বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ! বিশ্ববরেণ্য আরও অনেকের সঙ্গে যে প্রকল্পের নায়ক ছিলেন রবার্ট ওপেনহাইমার। ধোঁয়া, আগুন আর ধ্বংসের মাশরুম আকৃতির মেঘ যখন সূর্যকে ঢেকে ফেলেছে, ভগবৎগীতার একনিষ্ঠ পাঠক ওপেনহাইমারের মুখ থেকে অজান্তেই বেরিয়ে এসেছিল কৃষ্ণের সেই অমোঘ বাণী, 'এখন আমিই মৃত্যু, সংহারক আমি বিশ্বের'। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের প্রাক্কালে বিপক্ষে আত্মীয়-বন্ধু-পরিজনের মুখোমুখি দ্বিধাদীর্ণ অর্জুনকে উজ্জীবিত করতে কৃষ্ণ উচ্চারণ করেছিলেন কথাগুলি।

ওপেনহাইমারের প্রিয় কবি ছিলেন জন ডান, যাঁর কবিতা থেকে শব্দ ধার করে তিনি নাম দিয়েছিলেন সেই নিরীক্ষার আর ভগবৎগীতা বিরাজ করত তাঁর অন্তরের অন্দরমহলে। কাব্য আর দর্শনে নিবেদিতপ্রাণ ক্ষুরধার এই প্রতিভা কিন্তু চিহ্নিত হয়ে রইলেন সর্বকালীন বিচারে এক বৃহত্তম গণহত্যার নেপথ্যকর্মী হিসাবে। সফল সেই মরুনিরীক্ষার তিন সপ্তাহের মধ্যে নাগাসাকির মাটিতে নেমে এসেছিল 'ফ্যাট বয়' - পারমাণবিক বোমার সর্বপ্রথম নিদর্শনস্বরূপ।

আগামী ২৪ জুলাই ২০২৩ কলকাতায় এক বিশাল গীতা পাঠের আয়োজন হয়েছে, যেখানে গুঞ্জন এমনকি প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিরও। সাহিত্য আর দর্শনের এই উৎকৃষ্ট সপ্তশতী গ্রন্থটির উপাদান আণবিক বোমার সঙ্গে তুলনীয়। এর ব্যবহার সঙ্গত দায়িত্বশীলতা দাবী করে। আমরা সতর্ক থাকব।

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।

শুভেচ্ছা নিরন্তর।
0

সম্পাদকীয়

Posted in







একই অঙ্গে এত রূপ? সইবে তো? দেশের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশে জারি করা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাম্প্রতিক একটি নির্দেশিকা ঘিরে এই সংশয়। এই প্রথম অবশ্য নয়। নানান বিষয়ে বিভ্রান্তি-সৃষ্টিকারী সরকারি বিজ্ঞপ্তি আর তুঘলকি, একনায়কতন্ত্রী সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে অনেকটাই গা - সওয়া হয়ে গিয়েছে আমাদের। কিছুতেই তেমন আর কিছু এসে যায় না।হেঁয়ালি সরিয়ে বিষয়টির অভ্যন্তরে একটু প্রবেশ করা যাক এখন।

২১ ফেব্রুয়ারি তারিখটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে সারা বিশ্বে স্বীকৃত। ভারত তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু হঠাৎ দেখা গেল কোনও অজ্ঞাত বিশেষ কারণে ১১ ডিসেম্বর দিনটিকে সমগুরুত্ব দিয়ে প্রচারের আলোয় নিয়ে আসার প্রয়াস শুরু হয়েছে। আমাদের জানা আছে ওই বিশেষ তারিখটি তামিল মহাকবি সুব্রহ্মণ্য ভারতীর জন্মদিন। ওই নির্দেশিকায় বলা হল, এখন থেকে দিনটিকে 'বাধ্যতামূলকভাবে' ভারতীয় ভাষা দিবস হিসাবে পালন করতে হবে। এবং শুধু তাতেই শেষ হচ্ছে না। প্রমাণস্বরূপ অনুষ্ঠানের ভিডিও এবং স্থিরচিত্র আপলোড করতে হবে সরকারি পোর্টালে। অকস্মাৎ এই টনক নড়ার কারণ কী হতে পারে? আর কেনই বা মাতৃভাষা দিবসের প্রতিপক্ষরূপে সুচারুভাবে এক বিশেষ ভাষাগোষ্ঠীর প্রধান এক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে শিখন্ডি করে তোলার এই নির্লজ্জ অপপ্রয়াস? রাজনীতির কুনাট্যমঞ্চের অংশগ্রহণকারীরা এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবেন।

তাঁদের সেই সঙ্গে একথাও স্মরণে রাখতে হবে যে স্বতঃস্ফূর্ত মানবিক আবেগ নিয়ন্ত্রণ ও ইতিহাসকে আপন তাঁবেতে নিয়ে আসার চেষ্টা এর আগেও ইতিহাসের অনেক খলনায়ক করেছেন। তাঁদের একজনের নাম আডলফ হিটলার। যাঁর পরিণতি ভালো হয় নি।

শারদীয় শুভেচ্ছা আপনাদের সকলকে।

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।
0

সম্পাদকীয়

Posted in








পর্দা জুড়ে খয়েরি রঙা অন্ধকার আর তার মধ্য দিয়ে মাঝবয়সী উপবীতধারী এক পুরুষ পায়ের আঙুলে দড়ি বেঁধে অসীম ক্লেশে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন একটি লাশ। সৎকারের উদ্দেশে। মৃতদেহটি এক দলিতের। কন্যাদায় থেকে মুক্ত হবার জন্য যে গ্রামের উচ্চবর্ণের প্রতিভূ সেই ব্রাহ্মণের গৃহে ভৃত্যের কাজ করতে সম্মত হয়েছিল। মৃত্যুর পরও যাতে নিম্নবর্গের সেই মানুষটির ছোঁয়াচ না লেগে যায়, তার জন্যই সেই বিশেষ ব্যবস্থাপনা। 

মুন্সি প্রেমচন্দের ছোটগল্প অবলম্বনে ১৯৮১ সালে নির্মিত সত্যজিৎ রায়ের ছবি 'সদগতি'র এই দৃশ্য দেখতে দেখতে শিউরে উঠেছি আমরা। ভুলে গেলে চলবে না 'সদগতি' কাহিনি আকারে প্রকাশ পেয়েছিল চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাওয়ার পাঁচ দশক আগে। তার অর্থ পঞ্চাশ বছর পরেও বদলায়নি এই দেশ। তেমনই প্রাসঙ্গিক রয়ে গিয়েছিল অস্পৃশ্যতার বিষয়টি। 

আর সম্প্রতি সারাদিনের অজস্র টুকরো খবরের মধ্যে চোখ আটকে গেল একটি চমকপ্রদ মানচিত্রে। একটি সমীক্ষার ফলাফল বলছে দেশের অধিকাংশ অঞ্চল প্রবলভাবে এখনও বহাল রেখেছে আদিম সেই প্রথা! আজও। শিরদাঁড়া দিয়ে বরফঠান্ডা স্রোত নেমে গেল তৎক্ষণাৎ। 

চিত্রটি সঠিক হলে সামাজিক এই দূষণ এখনও গ্রাস করে রেখেছে ডিজিটাল ভারতকে। বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলির অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা ভারতবর্ষের উন্নয়নের কার্পেটের তলায় লুক্কায়িত এ কোন দেশ? নানা জাতি, ধর্ম আর কৃষ্টির এই মিলনভূমির সর্বত্র কমবেশি শোণিত-চিহ্ন! প্রতিনিয়ত সামাজিক সমতার সোচ্চার ঘোষণা কি প্রকৃতপক্ষে এক রাজনৈতিক ঢক্কানিনাদ? মুখোশের আড়ালে না-দেখা মুখটি কি তবে ভয়াল? উজ্জ্বল আলোকবর্তিকার সন্নিকটে বসবাস করে নিকষ আঁধার - এই তত্ত্বের কাছেই কি পরাজয় ঘটবে আমাদের? বারংবার?

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।

শুভেচ্ছা অফুরান!
0

সম্পাদকীয়

Posted in






ভাষার সৃষ্টি কেন এবং কীভাবে? মার্কিনী ভাষাতাত্ত্বিক ড্যানিয়েল এভারেট তাঁর চাঞ্চল্যসৃষ্টিকারী গ্রন্থ 'হাউ ল্যাঙ্গুয়েজ বিগ্যান' (How language began)- এর প্রারম্ভে বর্ণনা করছেন একটি ঘটনা। তাঁর প্রপিতামহ সপরিবারে তুলোর ক্ষেতের মধ্য দিয়ে চার্চ থেকে ফিরছেন। টেক্সাসে সেসময় ওই অঞ্চলে সাপের খুব উপদ্রব। বিশেষত রাটলস্নেক। অকস্মাৎ মাটিতে পড়ে গেলেন তিনি। যে বিপদ সম্পর্কে সবাইকে সাবধান করছিলেন, তাঁকে আঘাত হেনেছে সেই অজানা আশঙ্কা। কিন্তু এমনই অদ্ভুত এই প্রাণী যে দংশনের আগে ঘোষণা করে তার উপস্থিতি। তবুও সেই সংকেত আক্রান্তের কাছে পৌঁছয়নি সময়মতো।

অথচ প্রায় ছত্রিশ হাজার বছর আগে আলতামিরার গুহামানব চারকোলের ছোঁয়ায় যখন সেই আশ্চর্য সুন্দর বাইসন অঙ্কনে মগ্ন, কথ্য ভাষার অনুপস্থিতি সত্ত্বেও সংযোগ স্থাপনের নির্দিষ্ট ইঙ্গিত ইথারে ভর করে রওনা দিয়েছিল সুদূর ভবিষ্যতের দিকে। সেদিন সেই শিল্পীর মধ্যে ভবিষ্যত প্রজন্মের সঙ্গে কোনও যোগাযোগের স্পৃহা কাজ করছিল কি? আমরা জানি না। কিন্তু ভাষার প্রয়োজনীয়তার সূত্রপাত কি এইভাবে নয়? বইটির শিরোনাম এমনও দাবী করে, ভাষাই হলো মানবসভ্যতার মহত্তম আবিষ্কার।

নিঃসন্দেহে। সভ্যতার বিবর্তনের ইতিহাস কি ভাষার ক্রমিক উত্তরণের দিনলিপি নয়? অবশ্যই। কারণ ভাষার এই সরণি জন্ম দেয় সার্বভৌমত্বের অধিকারের। ভাষার বুনিয়াদি জমিতে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর আত্মপ্রকাশ করে স্বাধীন এক রাষ্ট্র। তবু ভাষা কেন সন্ত্রাসের উপকরণ?

বিবিধের মাঝে মিলনের মন্ত্র অনুসন্ধানকারী এক দেশ যখন সদ্য স্বাধীনতার বর্ষপূর্তি উদযাপন করে, প্রশ্নগুলি চ্যালেঞ্জসঞ্চারী হয়ে দাঁড়ায় আমজনতার অজান্তেই। কারণ অনেক পথ পেরিয়ে ভাষা এখন আর শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নেই, তা পীড়নের হাতিয়ারও। বর্বরতম অত্যাচারের চিহ্ন শরীরে নিয়ে একটি স্বপ্ন যখন অকালে ঝরে যায়, আমরা জানতে পারি সেই নৃশংসতার শুরু ভাষার হাত ধরেই। অধঃপতিত বিবর্তনের এই উত্তরাধিকার আমাদেরই।

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।

শুভেচ্ছা নিরন্তর!
0

সম্পাদকীয়

Posted in







তিন বছর আগের ভারতবর্ষ। তখনও অতিমারির হিংস্র দৃষ্টি স্তিমিত হয়ে আসেনি পুরোপুরি। অজানা আশঙ্কা ঘিরে রেখেছে আমাদের তখনও। তারই মধ্যে উত্তরপ্রদেশের হাথরাস উঠে এসেছিল সংবাদ শিরোনামে। একটি উনিশ বছরের দলিত মেয়েকে গণধর্ষণের পর মৃতপ্রায় অবস্থায় ফেলে রেখে যায় চারটি উচ্চ বর্ণের যুবক। নির্যাতিতা যাতে কোনও মৌখিক বয়ান দিতে না পারে, সেইজন্য ক্ষতবিক্ষত করে দেওয়া হয়েছিল তার জিভ। কিন্তু আশ্চর্য তার জীবনীশক্তি! পক্ষকাল বেঁচে থেকে সে শুধু অন্তিম জবানবন্দীই নথিভুক্ত করে না, শনাক্তও করে যায় অপরাধীদের।

পরবর্তী ঘটনাক্রমকে অতি নাটকীয় বললেও কিছুমাত্র বলা হয় না। আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে মেয়েটির দেহ পুড়িয়ে ফেলা হয় ময়না তদন্তের আগেই। নানান চাপের মুখে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করলেও প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেয়ে যায় তারা এবং অসামান্য তৎপরতায় গ্রামটির চারপাশে রচনা করা হয় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়।

এমন পরিস্থিতিতে কেরালা থেকে অকুতোভয় এক তরুণ সাংবাদিক সিদ্দিক কাপ্পান প্রকৃত সত্য খুঁজে পেতে প্রায় অকুস্থলে পৌঁছে যান। বিশেষ ক্ষমতাবলে প্রশাসন সেদিন কাপ্পানকে শুধু আটকই করেনি, কাল্পনিক নানাবিধ অভিযোগে কারাবাস করতে হয় তাঁকে পরবর্তী আঠাশ মাস।

অবশেষে স্বাধীনতার 'অমৃত মহোৎসব' উদযাপনের মধ্য পর্যায়ে এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে জামিনে মুক্তি পান কাপ্পান। কিন্তু শেষ হয় না তাঁর হয়রানি। জটিল আইনী প্রক্রিয়ার নাগপাশে আজও রুদ্ধ তাঁর জীবন। এ কেমন মুক্তির আলো, যা তাঁকে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে দেয় না? প্রাণনাশের অদেখা হুমকিতে কাটে বিনিদ্র রজনী? শুধু আদালতে হাজিরা দিতে লেগে যায় সপ্তাহব্যাপী সময়? এ কি তবে এক 'মুক্ত কারাবাস'? 'প্রশ্নগুলো সহজ আর উত্তরও তো জানা'।

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।

শুভেচ্ছা অফুরান।
0

সম্পাদকীয়

Posted in

 




হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বী! এ উক্তি আজকের নয়। কিন্তু এমন প্রাসঙ্গিক কখনও ছিল কি? অন্যভাবে ভাবলে এরকম কোনও কালের মধ্য দিয়ে কি আমাদের সভ্যতার ইতিহাস বিবর্তিত হয়েছে হানাহানি আর রক্তক্ষয় যার কেন্দ্রস্থ উপাদান ছিল না? 

সত্যিই ছিল না। আমাদের মহাকাব্যগুলি এই মতের সারবত্তা প্রমাণ করবে। প্রতিটি হত্যা সেখানে অকাট্য যুক্তিজালের ন্যায়বলয়ে সুরক্ষিত। কিন্তু সে তো মহাকাব্য। কবির কল্পনা।

এযুগের হত্যালীলা আসলে বৃহত্তর এক মনোরঞ্জনের অঙ্গ। প্রাণ হননের জন্য যখন কারণ কিংবা  অকারণের ছদ্ম অছিলাই যথেষ্ঠ। তা না হলে শিকাগোতে উৎসবের জন্য মিলিত হওয়া একদল মানুষের ওপর নির্বিচারে কেন গুলিবর্ষণ করবে অজ্ঞাত আততায়ী? আর কেনই বা সামান্য দশ হাজার টাকার জন্য দিল্লির এক জনবহুল অঞ্চলে নিহত হবে দুই বোন? একই দিনে কয়েক সহস্র মাইল ভৌগলিক ব্যবধানে ঘটে যাওয়া দুটি ঘটনা। কিন্তু কী আশ্চর্য অন্তর্লীন যোগ! মনে কি হয়না ' এ জগৎ মহা হত্যাশালা '! 

পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে উভয় ক্ষেত্রেই এই নিধনযজ্ঞের কোনও জোরালো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। তাহলে? প্রকারান্তরে এ কি আত্মহনন নয়? আমরা কি তবে অতি দ্রুত এগিয়ে চলেছি শেষের সেই দিনের দিকে? প্রফেসর শঙ্কু নিশ্চিহ্নাস্ত্রের পাশাপাশি আবিষ্কার করেছিলেন মিরাকিউরাল বড়ি - যার মধ্যে নিহিত ছিল সকল রোগের নিরাময়। আজকের এই গভীর মানবিক অসুখ সারাবে কোন বিশল্যকরণী?

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।

শুভেচ্ছা নিরন্তর।


0

সম্পাদকীয়

Posted in







আশ্চর্য সমাপতন! শিলচর শহর। মে মাস। বাষট্টি বছর আগে তারিখটা ছিল ১৯ আর এবার সেই ঘটনার বর্ষপূর্তির আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেসে উঠলো ছোট্ট একটি খবর। শিলচরের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে এক ছাত্রকে বাংলা বলার অপরাধে আড়াইশো টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই সেই শিলচর, যেখানে একদিন বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন এগারো জন। 

বাংলা সংখ্যাগরিষ্ঠ জনভাষা হওয়া সত্ত্বেও বাধ্যতামূলকভাবে সেদিন অহমিয়াকে রাজ্যের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদী আন্দোলন গড়ে ওঠে, তাতেই অসংখ্য বাঙালির সঙ্গে সামিল হয়েছিলেন ওই এগারো জনও। স্বাধীন ভারতের সশস্ত্র পুলিশ বিনা প্ররোচনায় হত্যা করেছিল তাদের। রক্তে ভেসে গিয়েছিল শিলচর রেলওয়ে স্টেশন। 

ওয়াকিবহাল মানুষ এ ইতিহাস জানেন। এই আলোয় সাম্প্রতিক ঘটনাটিকে খুব আলাদা করে দেখা যাবে কি? একটি বালককে তার মায়ের ভাষায় কথা বলার জন্য জরিমানা করে তার মৌলিক এক অধিকার হরণ কি অন্যতর এক হত্যা নয়? এখন কি আর আমাদের কিছুতেই কিছু যায় আসেনা? একটি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া আর তারপর business as usual - এটিই সম্ভবত প্রকৃত বিশ্বায়ন। আমাদের সমগ্র যাপন শৈলী আসলে এক ভান!

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।

শুভেচ্ছা অফুরান
0

সম্পাদকীয়

Posted in







অশনি সংকেত সেদিনই ছিল। যেদিন কোনও অজ্ঞাত এক কারণে বদলে গিয়েছিল মুঘল সরাই জংশনের নাম। এর আগে পরে ঘটেছিল এমন কিছু ঘটনা, যাদের মধ্যে কোনও আপাত যোগসূত্র না থাকলেও, তাদের মধ্যে ছিল এক অদৃশ্য বন্ধনসূত্র। 

সম্প্রতি আমরা আলোড়িত দ্বাদশ শ্রেণীর জাতীয় পাঠক্রম থেকে ভারতবর্ষের মুঘল ইতিহাস সংক্রান্ত অধ্যায়গুলি অকস্মাৎ কোনও অদৃশ্য অঙ্গুলি হেলনে বাদ পড়ায়। পাঠ্য পুস্তকের ওই অংশগুলো নাকি 'অপ্রাসঙ্গিক' হয়ে পড়েছিল। তাই এই পরিমার্জন। 

অপ্রাসঙ্গিক? নাকি কোনও এক নির্দিষ্ট নীতিকে প্রাসঙ্গিক করে তোলার মরিয়া চেষ্টা? যার পূতি গন্ধময় উপস্থিতি আজ শুধু সিলেবাস বদলে নয়, আমাদের প্রাত্যহিক যাপনের প্রায় সর্বত্র। 

এভাবেও কি হয়? মানুষের মগজে, মজ্জায়, রক্তস্রোত আর অস্তিত্বের গভীরে যা কিছু, তাকে আমরা ইতিহাস বলতে পারি বা নাও বলতে পারি, কিন্তু উত্তরাধিকারের যে বীজ প্রজন্ম ব্যাপী বিস্তৃত, তাকে কি এইভাবে উপড়ে ফেলা যায়? তাহলে তো ইসলামের পদার্পণের বহু আগে আফগানিস্তানের বামিয়ান প্রদেশে নির্মিত অতিকায় বুদ্ধ মূর্তিগুলি বহু কাঠখড় পুড়িয়ে দীর্ঘদিনের অপচেষ্টায় গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরও তো সেই প্রত্ন-রত্নগুলি আমাদের চেতনাকে আলোকিত করে রাখতো না। 

স্মৃতিকে তো মুছে দেওয়া যায় না! এমনকি প্রকৃতিও কখনও কখনও ব্যতিক্রমী হয় ঐতিহ্য রক্ষায়। তাই তো আজও আলতামিরার গুহামানবদের প্রাগৈতিহাসিক যুগের অঙ্কনশিল্প হাজার হাজার বছরের প্রাকৃতিক সব রোষানল মোকাবিলা করে বেঁচে রয়েছে আপন গরিমায়। 

তাই মানুষ নিজেই যখন নিজের হেঁটে আসা পথের মানচিত্র বদলে দিতে চায়, বিকৃত করতে চায়, সে ভুলে যায় সময়ের পাথরে লিপিবদ্ধ কাহিনী আসলে অপরিবর্তনীয়। অনেক অনেক জলস্রোত তার ওপর দিয়ে বয়ে গেলেও তার বুনিয়াদ রয়ে যায় অটুট।

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।

শুভেচ্ছা অফুরান!
0

সম্পাদকীয়

Posted in








একেক জন মানুষ থাকেন, যাঁর জন্য সময় থমকে দাঁড়ায়। হাত ধরতে চায় তাঁর। সেই মানুষটির কিন্তু অপেক্ষা করার সময় নেই। তিনি সদা ব্যস্ত। সমকাল কোন মাপকাঠিতে তাঁর দৈর্ঘ্য- প্রস্থ জরিপ করবে, সে নিয়ে কণামাত্র শিরঃপীড়া নেই তাঁর।

তাই আপন খেয়ালে তিনি মগ্ন। সাহিত্যানুরাগী ও গবেষকদের কথা ভেবে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি শুরু করলেন অভিনব একটি সংগ্রহশালা এবং গবেষণাকেন্দ্র। বিষয় লিটল ম্যাগাজিন। সাহিত্যচর্চার যে নিবিড়, ঋদ্ধ ধারাটি আমাদের সবিশেষ গর্বের কারণ, তার আঁতুড়ঘর ছাড়া আর কীইবা বলা যায় লিটল ম্যাগাজিনকে? আর সেই ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারকে যিনি ধ্যানজ্ঞান করে তোলেন, কীভাবে অভিহিত করব আমরা তাঁকে? তথাকথিত এইসব বিশ্লেষণ আর স্বীকৃতির তোয়াক্কা করেননি তিনি।

সন্দীপ দত্ত। আত্মপ্রচারবিমুখ, সদা হাস্যময় এই মানুষটির এই একলা পথচলা থেমে গেলো সম্প্রতি। রেখে গেলেন নানা ভাষার লক্ষাধিক পত্র পত্রিকা ও বইয়ের এক আশ্চর্য সম্ভার। তাঁর অন্তিম যাত্রায় স্বতস্ফূর্তভাবে সামিল হওয়া অগণন মুখচ্ছবি একথা নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করলো এখনও সব মূল্যবোধ আর যাবতীয় ভালোবাসার মৃত্যু হয়নি।

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।
শুভেচ্ছা নিরন্তর












0

সম্পাদকীয়

Posted in



































বসন্তের দখিনা বাতাস গায়ে মেখে প্রবল হর্ষধ্বনি আর প্রতিশ্রুতির আবহে শেষ হলো ৪৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা। একথা আমরা জানি, অনেক কারণেই এই আয়োজন অনন্য। এই মেলা একান্তভাবেই এই শহরের তথা বঙ্গ-জীবনের অচ্ছেদ্য অঙ্গ। যেমন দুর্গাপুজো। বিশ্বের অন্যত্র বইমেলার চারিত্রিকতা কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই তালিকার ওপরে যে দুটি নাম, সেই ফ্রাঙ্কফুর্ট আর লন্ডন শহরের মানুষের চেতনায় সেই তরঙ্গ এমন বিপুলভাবে জেগে ওঠে না, যা ঘটে এখানকার বাঙালি মননে। এর প্রধান কারণ পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র এ জাতীয় মেলা মানেই হয় সত্বের কেনাবেচা অথবা বড় মাপের বাণিজ্যস্থল। 

কলকাতা বইমেলা এক্ষেত্রে উজ্জ্বলতম ব্যতিক্রম। সুদূর কৃষ্ণনগর থেকে কাঁধে ঝোলা নিয়ে মেলায় এসেছেন একটি তরুণ টিউশনির টাকা দিয়ে জীবনানন্দের ' শেষ খাতা ' সংগ্রহ করবেন বলে, এ দৃশ্য জগতের আর কোনও গ্রন্থমেলায় দেখা যায় না। আমাদের তাই দায়িত্ব ছিল এক প্রজন্ম থেকে পরের প্রজন্মে বই ভালোবাসার এই সংস্কৃতিকে জাগর রাখার। দায়িত্ব ছিল আমাদের ভাষাগুলির দৈনন্দিন অবক্ষয়ের পটভূমিতে বাংলাভাষার অবিনশ্বর আয়ু সুনিশ্চিত করতে বইমেলাকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করার। 

কিন্তু কোথায় যেন একটা বদল হয়ে গেছে। ব্যবসার নিরিখে এ মেলার শ্রীবৃদ্ধি ঘটছে। আশার কথা। কিন্তু মানুষের আনাগোনার ছবিটি কি সর্বদা সত্যি কথা বলছে? বইমেলার কদিন এই প্রাঙ্গণটি বিবিধ মনোরঞ্জন আর সপ্তাহান্তে পারিবারিক মিলনমেলা এবং পিকনিকের জায়গা হয়ে ওঠেনি তো? একটা বিষয় মনে রাখা জরুরি। সুস্থ সংস্কৃতি মনোরঞ্জনের ক্ষেত্র রচনা করতে পারে অবশ্যই, কিন্তু এর উল্টোটা? 

প্রশ্নটা তাই ভারসাম্যের। যার বড় অভাব আমাদের জীবনে। ইউনেস্কোর বিশেষ স্বীকৃতি না পেলেও দুর্গাপুজোর কিছু এসে যেত না। কিন্তু বোধনের অনেক আগে বোধন ঘটিয়ে যেমন পাল্টে দেওয়া হয়েছে স্বতঃস্ফূর্ত এক সামাজিক উৎসবের চরিত্র, বইয়ের পাশাপাশি মনোরঞ্জন ও উদরপূর্তির বিশাল বন্দোবস্ত বইমেলায় টেনে আনছে তাঁদেরও, বই নামক এই সামগ্রীটির সঙ্গে যাঁদের সুদূরতম সম্পর্কও নেই। আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রেক্ষাপটে অস্বস্তিকর এই প্রসঙ্গগুলির অবতারণা জরুরি মনে হলো।

সুস্থ থাকুন, সৃজনে থাকুন

শুভেচ্ছা নিরন্তর
0

সম্পাদকীয়

Posted in





চোদ্দ লক্ষ তিরিশ হাজার। না, এটি কোনও টাকার অঙ্ক নয়। সম্প্রতি একটি বই প্রকাশের প্রথমদিন বিক্রির সংখ্যা। গ্রন্থটির নাম 'স্পেয়ার' । ব্রিটেনের রাজকুমার হ্যারির লেখা এই আত্মজৈবনিক রচনার ছত্রে ছত্রে রাজপরিবারের ভাঙন আর অন্ধকারের কাহিনি, ভেঙে দিয়েছে যেকোনও একটি বই বিক্রির একদিনের সর্বকালীন রেকর্ড।

বই কেন বিক্রি হয়?

এর উত্তর বিবিধ। লেখার বিষয়, গ্রন্থটির অঙ্গসৌষ্ঠভ, পাঠককুলে লেখকের চাহিদা - এরকম অনেক কিছু নির্ধারণ করে ব্যবসার চালচিত্রটি। কিন্তু একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, বিষয়টি যদি হয় মুচমুচে, মুখরোচক, প্রকাশকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়।

সত্যিই কি তাই? তাহলে তো পর্নগ্রাফি ছাপলেই হয়! 

মানুষের মৌলিক সংগ্রাম, তথাকথিত আপন ভাগ্যকে টপকে যাওয়ার সুতীব্র ইচ্ছার যে গাথা লিখিত হয়েছিল চারশো বছরেরও আগে, সার্ভেন্তেস-এর সেই 'দন কাহটি' এখনও পর্যন্ত পাঁচশো মিলিয়নেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছে। হ্যাঁ, পাঁচশো মিলিয়ন। ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের বাইরে এটাও চিরকালীন রেকর্ড। 

আসন্ন আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় থিম দেশ 'স্পেন'। সার্ভেন্তেস-এর জন্মস্থান।

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।

শুভেচ্ছা নিরন্তর
0

সম্পাদকীয়

Posted in





কালের নিয়মে আরেকটি বছর সমাগতপ্রায়। অতঃপর নববর্ষ উদযাপন, চড়ুইভাতি, পিঠেপুলি উৎসব এবং বইমেলা। অতিমারির কালো ছায়া এসবই গ্রাস করে নিয়েছিল। গতবছরও পিছিয়ে যায় বইমেলার নির্ঘণ্ট। এবং শেষ পর্যন্ত যখন তা বাস্তবায়িত হয়, একপ্রকার অভূতপূর্ব উৎসাহ আর উদ্দীপনার ঝোঁক লক্ষ্য করা গিয়েছিল প্রতিদিনের মানুষ সমাগমে। জানা গিয়েছিল ১৯৭৬ সালে শুরু হওয়া বার্ষিক এই আয়োজন ভেঙে দিয়েছে আগের বছরগুলির বাণিজ্যের যাবতীয় রেকর্ড। শ্লাঘার কথা নিঃসন্দেহে। আশার আলো এই শিল্পের জন্য, যার ওপর নির্ভরশীল শত-সহস্র পরিবার। এর পরও একটি দুর্বিনীত প্রশ্ন মনের আনাচে কানাচে ঘোরাফেরা করতে থাকে। একই হারে পাঠক তৈরি হচ্ছে তো? এই ছবিটি বিভ্রান্তিকর নয়তো? একজন লেখক কি জানেন, কীভাবে তাঁর পাঠক জন্মলাভ করে? তিনি নিজেই কি সেই প্রথম পাঠক নন? মুদ্রণ এবং প্রকাশনা শিল্পের ওপর অনেকাংশেই বৃহত্তর পাঠক কূল নির্মাণের দায়িত্ব ন্যস্ত থাকে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই কাজটি জরুরিতর হয়ে উঠেছে বলে মনে হয়।

একজন শ্রেষ্ঠ বাঙালি কথাশিল্পীর ধারণা ছিল আজীবন তিনি পাঠক রয়ে গিয়েছিলেন। এ মাসের ২৮ তারিখ রমাপদ চৌধুরি শতবর্ষ পূর্ণ করবেন। তাঁকে আমাদের সশ্রদ্ধ প্রণাম।




সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।

শুভেচ্ছা অফুরান।
0

সম্পাদকীয়

Posted in






হেমন্তের বিষণ্ণ বিকেলে ছায়া ফেলে যায় ফিকে হয়ে আসা একটা ছোটোবেলা। মনে পড়ে, এমনই বিকেলে বসে বই পড়তাম। না পাঠ্যবই নয়। পাঠ্য বইয়ের বাইরেও যেখানে ছিল বিশাল এক বইয়ের পৃথিবী। পাড়ায় পাড়ায় পাঠাগার বলে একটা বিষয় ছিল। সেখানে খুদে পাঠককে বাবা-মা পৌঁছে দিচ্ছেন, এটি ছিল এক পরিচিত দৃশ্য। সেই ছেলেমেয়ের দল এক হয়ে শুরু করেছে আরেকটি পাঠাগার তারপর আরেকটি, এটি ছিল সেই শৈশব, কৈশোরের চালচিত্রের এক অংশ। ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে যেতে লাগল বইয়ের নেশা ধরানোর সেই জায়গাগুলি। শিশু-কিশোরের দল খুঁজে পেলো তাদের পরবর্তী গন্তব্য, যেখানে অনেক কিছু থাকলেও বই নেই।

রে ব্র্যাডবেরির 'ফারেনহাইট ৪৫১' মনে পড়ে? কালোত্তীর্ণ সেই উপন্যাস অবলম্বনে ফ্রাঁসোয়া ত্রুফো নির্মাণ করেছিলেন মহাকাব্যিক এক চলচ্চিত্র। এক কাল্পনিক ভবিষ্যতের রক্ত হিম হয়ে যাওয়া ছবি দেখেছিলাম আমরা। আগুন নেভানো যাদের কাজ, তারাই জ্বালিয়ে রাখছে সেই চিতা, এক নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কাগজ যেখানে পুড়ে খাক হয়ে যায়! শেষ অবধি এলো একটি ছোটো মেয়ে যে বই ভালোবাসে। ততদিন পর্যন্ত আগুনে মদত দিচ্ছিল যারা, তারাও নড়েচড়ে বসলো।

সম্প্রতি দেখলাম মহল্লায় আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন একটি বই-বিপণি। এখনও কি তাহলে আশাবাদী হওয়া যায়? প্রতীক্ষায় থাকা যায় সেই ছোটো মেয়েটির?

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।

শুভেচ্ছা নিরন্তর 
0

সম্পাদকীয়

Posted in




সম্প্রতি জানা গেল একটি সর্বজনগ্রাহ্য ক্ষুধা সংক্রান্ত ক্রমিক তালিকায় ১২১ টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১০৭। ছোট্ট একটি খবর কিন্তু তার প্রভাব বিধ্বংসী! ক্ষুধা। এ এমন এক প্রাকৃতিক সৃষ্টি, যা না থাকলে প্রয়োজন হতো না অনেক কিছুরই। একই নিঃশ্বাসে এ কথাও মনে রাখতে হবে ক্ষুন্নিবৃত্তি হলেই সম্ভব এমন অনেক কিছু, যা মানুষকে মানুষ হিসাবে দিয়েছে পরিচিতি। যেমন শিক্ষা। যে শিক্ষার সঙ্গে আবার বইয়ের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। তাই কোনও রাজনৈতিক কাজিয়ার কারিগর বা অংশগ্রহণকারী না হয়েও এই সত্যটুকু মাথা নত করে মেনে নিতেই হবে। কারণ মিথ্যাচারী শাসক ছাড়া প্রত্যেকেই নির্দ্বিধায় এটুকু অন্তত স্বীকার করবেন যে পেটের ক্ষুধা মেটায় দুবেলা দুমুঠো অন্ন আর মনের চাহিদা মেটায় প্রকৃত জ্ঞান। বইয়ের কাজ পিপাসু মনের কাছে আধারিত জ্ঞান পৌঁছে দেওয়া। কে বা কারা সেই দায়িত্ব নেবেন? অভুক্ত শিশুদের মিড ডে মিলের পুষ্টিকে যাঁরা অবৈধ মুনাফায় রূপান্তর করেন, তাঁরা? অথচ তাঁদেরই তো সেই ভূমিকা গ্রহণ করার কথা ছিল। তাঁরাই তো প্রতিশ্রুত হয়েছিলেন জাতির মেরুদণ্ড নির্মাণ করার। যদিও সংখ্যাহীন, ক্ষুধাতাড়িত যে জনগণ তাঁদের প্রতিশ্রুতিমঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছিলেন, তাঁরা জানতেন না শিরদাঁড়া আসলে চেতনার অপর নাম।

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন। শুভেচ্ছা নিরন্তর।
1

সম্পাদকীয়

Posted in



সে একটা সময় ছিল বটে! এক অদ্ভুত সুন্দর সুবাস চেতনা ছাপিয়ে ছড়িয়ে পড়তো আশপাশে। কেউ যেন আমাদের কানে কানে বলে যেতো দুর্গাপুজো এসেছে। বাতাসে তারই গন্ধ। উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে উঠে যাওয়ার পর হাতে আসত প্রফেসর শঙ্কু, ফেলুদা কিংবা কাকাবাবুর সাম্প্রতিকতম কীর্তিকলাপের কাহিনী। প্রিয়জনের স্পর্শমাখা উপহার নিয়ে উৎসব উদযাপনের হিসেবনিকেশে মাতোয়ারা হয়ে উঠতাম আমরা। তখনও কোনও তকমা পাননি দুগ্গা ঠাকুর। তিনি ছিলেন আমজনতার। তখনও আমাদের বলে দেওয়া হয়নি কীভাবে কাটাতে হবে এ ক'টা দিন। কেউ ভাবেনি বোধনের আগেও প্রাক - বোধন হতে পারে। কেউ জানতো না কোনও দেশে, কোনও কালে সরকার সর্বজনীন কোনও উৎসব পরিচালনা করেছে বলে। জানলে হয়তো প্রায় আড়াইশো বছর আগে যে বারোটি যুবক এক হয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সূত্রপাত ঘটিয়েছিলেন প্রথম যে বারোয়ারি দুর্গাপুজোর, তার নামকরণই অন্যরকম কিছু হতো। হয়নি কারণ মগজ ধোলাই বলে কোনও শব্দকে আমরা তখনও আপন করে নিইনি এইভাবে। আমাদের তখন কোনও উৎসব অভিভাবকও ছিলেন না। পুজো তবুও তো পুজো। এই মাপের কোনও সামাজিক উৎসবের তুলনা মেলা ভার। এমন অনন্য সামাজিক মেলবন্ধনের মর্যাদা রক্ষার দায় আমাদের সকলের।


ভালো থাকুন। ভালো রাখুন


শারদ শুভেচ্ছা সকলকে
0

সম্পাদকীয়

Posted in



আশঙ্কাটা ধিকি ধিকি আগুনের মতো জ্বলছিল অনেকদিন। একটু স্তিমিতও হয়ে এসেছিল কিন্তু শেষরক্ষা হল না। মুক্ত কণ্ঠস্বর, ঘনিষ্ঠ যাপন থেকে উঠে আসা সাহিত্যের ভাষা মৌলবাদের দ্বারা আক্রান্ত হলো। লেখক রক্তাক্ত হলেন নাকি শুভবুদ্ধি আর মননশীলতা? ধর্মান্ধতার নগ্নরূপ আমরা দেখেছিলাম এই শহরেও। আমাদের বিবেকী সততা আমরা সেদিনও রক্ষা করতে পারিনি। আর এবার, আপাতচূড়ান্ত নিরাপত্তার অসহায় চেহারা আমরা প্রত্যক্ষ করলাম। ধ্বংসের বীজ যদি আমাদের অন্তঃস্থলে বসবাস করে, বাহ্যিক প্রকরণ কি তাকে সুরক্ষা দিতে পারে? Pen is mightier than sword আপ্তবাক্যটি বাঁচিয়ে রাখার এমন দায় আগে কখনও আসেনি।

সুস্থ থাকুন, সৃজনে থাকুন।

শুভেচ্ছা অফুরান।