Next
Previous
Showing posts with label কবিতা. Show all posts
1

কবিতা - ঝানকু সেনগুপ্ত

Posted in





তারপর সেও একদিন
তোমার জন্য বৃষ্টিকে নিলাম আজলা ভরে
একমুঠো রোদ্দুর তাও নিলাম
মেঘের কাছে এক টুকরো রঙ

তুমি আমার ছেড়া বাড়ি
আর ভাঙ্গা জানালা দেখে মুখ ফেরালে
অথচ আমার কোনো ভনিতা ছিল না

সবুজ বনের কথা আর নাই বা বললাম!
0

কবিতা - অমৃতেন্দু মুখোপাধ্যায়

Posted in






এবারে বিস্মৃত হব।
মুঠো ছা‌ই হব।

আল্পনা

চিতাকাঠ জুড়ে —
0

কবিতা - ঝানকু সেনগুপ্ত

Posted in


সূর্যোদয়ের কোনও রঙ ছিল না সেদিন

এখন এই গোধূলি গানের সুরে মাতোয়ারা আমি
সূর্যাস্তের সময়কে দু হাতে সরিয়ে
তোমাকে পাওয়া

এখনও অনেক কাজ আছে বাকি
বাগানের চারা গাছে জল দিতে হবে
আসন পিড়ি হয়ে এস বসি
দু দণ্ড গল্প করি
সন্ধ্যায় তুলসী তলায় প্রদীপ জ্বালাবে তুমি
আমি নিশ্চিন্তে তোমার শঙ্খধ্বনির ছবি এঁকে নেব

বাতের ব্যথার ওষুধ খুঁজে রাখি এস
মাঝরাতে এক গ্লাস জল বিছানার পাশে
ওই কাগজের বান্ডিল ঘেঁটে খুঁজে নেব
আমাদের অসম্পূর্ণ উপন্যাসের মলিন পাতাগুলো
কবিতাও লেখা যেতে পারে

যে কথা বলা হয় নি এখনও
এস কথা বলি
আকাশের রঙ মাখি গায়ে
তারপর সেই শুভক্ষণে
চলে যাব দূরে

রেখে যাব আমাদের ছেঁড়া ইতিহাস!
0

কবিতা - আদ্রিকা ভট্টাচার্য

Posted in






আঁধারের গায়ে খুঁজে পেয়েছিলাম মুক্ত দেহ
হাত পা নারিয়ে মনে করিয়ে দেয় অস্তিত্বের আকাশ

*
শব্দদূষণের গতি বাড়ছে, আমি ও বাড়ছি
তলিয়ে যাচ্ছে কেবল ওই মেয়েটির জঘন্য আঁধার

গল্প শুনাতে চেয়েছিলো,‌ হারিয়ে যেতে চেয়েছিল
অজানা পথ গুলোয়, একটু খানি বেশি প্রেমে পরতে চেয়েছিলো
নদী হওয়া স্বপ্নের , ঠিক রক্তের মত প্রয়োজনীয়
হয়ে উঠতে চেয়েছিলো, সব মিলিয়ে বেঁচে
থাকতে চেয়েছিলো মেয়েটি

ক্রমশ আঁধার কমে আসে , মেয়েটির ও আয়ু কমে
শীতকালের বেড়ে উঠায় নেমে আসে ডিসেম্বর
হাত পা‌ ছরিয়ে দিয়ে কবর গুলো ধিরে ধিরে
গিলে নেয় মেয়েটিকে, গিলে নেয় বেঁচে
থাকার জঘন্য আঁধার, বেজে উঠে বেহালা

আমি ও বাড়তে বাড়তে এখন তলিয়ে গেছি শব্দদূষণের
গতির ভিরে, তলিয়েছে আমার সাথে জুড়ে যাওয়া কবর

*
জোনাকির রঙে পরো জন্মে চাতক হবো
জীবন কাটাবো রূপকথাতে বেহালার সুরে
ঘর বাঁধবো, সাজাবো, ভাঙ্গবো, উন্মাদের
উপাধি নিয়ে চিতায় উঠবো, অসীম শূন্যতায় শূন্য
হয়ে বেহালায় জোনাকির রঙ্গ লাগিয়ে হারিয়ে যাবো
0

কবিতা - বেবী সাউ

Posted in




















ছন্দ শুধু রুদ্ধ করে তবুও জানি অন্তরালে
বাধ্য আমি তোমার কাছে অন্ধ সারাদিন
যেখানে মন শান্ত হবে মন্দ্রস্বরে ডাকব তাকে
পাহাড়ঘেরা জম্বুদ্বীপে সঙ্গী তার ঋণ

অর্ধস্বরে কাব্য লেখা পাণ্ডুলিপি ধ্বংস করে
আকাশ খসে পড়ছে শুধু মৃত্যুনদী পার
বিশ্ব দেখা আলোকনেশা পুড়ছে শুধু তুমুল স্বরে
এখন তবে বসুন্ধরা ভস্ম উপহার

এভাবে কার সবুজ বলো এমন শীতে কবর শুধু
কেউ কি ডাকে অন্ধকারে, কেউ কি ভগবান
রুদ্র তার বীণায় তোলে দুঃখতারে ধুলোয় মেশা
কার কাছে সে ঘুমিয়ে আছে, কী তার পরিধান?

ছন্দ শুধু যুদ্ধ করে তবু কি তার রুদ্ধ হাত
বাজে কোথাও উল্কাপাত জীবনে যার রাত
0

কবিতা - সায়ন ভট্টাচার্য

Posted in




















১.


কখনও গাছের সঙ্গে, পাখির সঙ্গে, পাহাড়ের সঙ্গে, নদী কিংবা সমুদ্রের সঙ্গে একাত্ম ভাষায় কথা বলতে পেরেছি কি আমরা? যখন দেখি পাশে যাদের থাকার কথা ছিল - তারাও নেই, মনে হয় জীবনের কথা পড়ছি আসন পেতে বসে - পরাবাস্তবিক আমার আদরের রাত আছে, আছে আরও আছে মাটি জল, আমি মনের কথা নৌককে বলতাম

তোমাকে আদর ... মনের কথা... চোখের জল

ঝড়ে আকাশ অবিরল


আস্তে আস্তে ঘরের বাঁশ কেটে আলো আসবে, আস্তে আস্তে মেতে উঠবে ঠোঁটের পর ঠোঁট
চাষিমানবের উষ্ণহালে
তোমার ক্ষেতের পরশ লাগবে ঘোর!


২.


পাপড়ির কোনও দেশ নেই,
কাগজের মৃত্যুর মতো রাত
হাতের রেখার উপর অপ্রশ্ন,
কাঁচের বৃষ্টির মতো
খুলে গেল বৃষ্টিপুঁথির প্রেম


কোনও উরুতে আকাশ ভাঙে
কোনও জানুর উপর নামে হঠাৎ আঘাত
এখনও যদি উপচে ওঠে মেঘ
হয়তো তুমি ওপাশ ফেরো


কাঙালের বিদ্রোহী বিস্ময় !
0

কবিতা - দীপকরঞ্জন ভট্টাচার্য

Posted in






নিরীশ্বর বোধিবৃক্ষ থেকে পাখিমানবীর ডাক শোনা যায়। এমন কুহক রচনা কোরো না, রক্তে আমার বারুদ মিশেছে। উষ্ণ বরাভয় চারিদিকে পলাশের মতো ফুটে আছে দেখে বালির প্রান্তর ঠেলে পাড়ে উঠি আমি -- পিছনে আমার ভীরু, ভঙ্গুর জীবন। আর তাকেও দেখে, কী আশ্চর্য, আমি চিনতে পেরেছি এবার -- তোমারই অতীত থেকে সে এসে বসেছে মুখোমুখি। তেমনই অনুদ্ধারময়, তেমনই উজ্জ্বলতা তার।
2

কবিতা - ঝানকু সেনগুপ্ত

Posted in






এখন বিজ্ঞাপন বিরতি
সবকিছু ধোঁয়াটে হয়ে যাওয়ার সময়
আদার ব্যাপারীও 
শিথিল কুয়োতলায় অন্ধকার খুঁজতে 
খুঁজতে ধর্মকে আঁকড়ে ধরে

সভ্যতাকে বুঝে উঠবার আগেই 
কোনও এক বিজ্ঞপ্তিতে
নেমে আসে সেই অমোঘ কথন

ভগবানও চিরকাল বেচেঁ থাকে না '

বিজ্ঞাপন শেষ হলে পুনরায় কথামালা শুরু হবে!!
0

কবিতা - অঞ্জন বল

Posted in






সেবার সে এসেছিল যেমনটি আসে প্রতিবার --
প্রান্ত বেলায় অস্ত গেছে দিবাকর
পশ্চিম ঢালে আগুনের খেলা শেষ করে
আঁচলে ঢেকেছে ময়দানি ঘাস ,
গঙ্গা তখন ম্লান কুয়াশায় ।

কপালে সিঁদুর মেখে একচিলতে বনবাসী চাঁদ
স্বপ্নালু শিশিরের ঘ্রাণ মেখে এসে দাঁড়ায় --
যেমন প্রতিবার বিলোল কটাক্ষে
হাত নেড়ে ডাক দিয়ে যায় স্পর্শে
পসারিনী হিমেল বাতাস আবক্ষ বুকে
যৌবন গত যার ।

শীতের শুরু সবে ,
আমেজ রোদ পোহায়েছে সারাদিন ধরে ,
রোদওম পিঠে নিয়ে অলস দুপুর
বনভোজে আতিপাতি মগ্ন শিশুর মতো
হেমন্তের বিকেল শৈশব কলরবে ।

জরা ধর্মে জবুথবু , আলোয়ানে ঢাকা
শীত ঘুম , আড়মোড়া ভেঙে পাশ ফিরে শোয়
বেওয়ারিশ ভবঘুরে শহরের অশালীন মুখ ।
ফ্যাকাশে নিস্তেজ ঝলমলে বাতিগুলো
আড়াল খোঁজে নিরালা প্রান্তিক জলাভূমির অন্ধকার মেঠো পথ ধরে ভেঁজা আকাশের নিচে জমে থাকা শিশিরের ঘাসে
কুয়াশার অলস যাপন ।

ঘুণ ধরা চোখ নিয়ে দাঁড়ায় বট ছাদে
শীতের সকাল ।
0

কবিতা - কুমকুম বৈদ্য

Posted in






একটা মজা পুকুরের সাথে মাঝে মধ্যে
নদীর গল্প করতে যাই
টিলার কাছে পাহাড়ের গল্প
আমার কাছে আরেক আমির গল্প
বলে যাই অনর্গল চুপিসাড়ে
নদীর কাছে যাই পুকুর ভাসান দিতে
পাহাড়ের পায়ের কাছে যাই

নিজের কাছে যাই ফেরার আগে
যেতেই হয় হিসাব মিলাতে
0

কবিতা - শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

Posted in






প্রশ্ন করলে – ‘কেমন আছ?'
বললাম – ‘ভাল’, আর
সত্যিই সুস্থ বোধ করলাম ।

জলতরঙ্গের মত হেসে বললে
- ‘অমনি মিথ্যে কথা’
ঠিক তখনই কার্নিশে পায়রাগুলোর
এলোপাথাড়ি স্বর-সঙ্গম,
আমার পাণ্ডুর মুখের হাসি দেখতে পেলে না ।

তারপর ঘন অভিমানী মেঘ আর অঝোর শ্রাবণ
‘আমায় কেউ খবর দেয়নি’ ।

বললাম – ‘খুব মনে পড়ছিল তোমায়’
আকাশে তখন অবিশ্বাসী প্রশ্নবোধক চিহ্ন
উত্তর করলাম –
‘দুর্গত হলেই তো মানুষ বন্ধু খোঁজে’
মেঘের বুক চিরে একমুঠো ঝিলমিলে রোদ
‘মিথ্যে কথায় তোমার আজও জুড়ি নেই’
আবার পায়রাগুলো গেয়ে উঠল বৃন্দগান
আমার পাণ্ডুর মুখের হাসি দেখতে পেলে না ।

বললাম – ‘তোমায় দেখে ভাল লাগছে’
বললে – ওমা, টেলিফোনে দেখা যাচ্ছে বুঝি’ !!
বললাম – ‘হ্যাঁ, আমি পাই’
আবার ঝর্ণা হাসি, এবং – ‘মিথ্যুক’ ।

আমার পাণ্ডুর মুখের ভাললাগা হাসি
তুমি দেখতেই পেলে না ।
0

কবিতা - ঝানকু সেনগুপ্ত

Posted in





একসময় তুমি হেঁটে গেলে সামনের মাঠে জ্যোৎস্না নামতো।
জোয়ারে ভেসে যেত নদী।
পল্লবিত হাওয়ায় রোদ্দুর।
তুমি হেঁটে গেলে আরও কত কী যে।
এখন এই অন্ধকারে ভালোবাসা পাশে বসলেও

ছায়া পড়ে না !


0

কবিতা - নীনা আনসারী

Posted in







শরত নয়নে আনে স্মৃতির প্রলেপ
ফেলে আসা মধুময় মুহূর্তের আক্ষেপ।
আইস্ক্রিম মেঘে যবে এলিয়ে আরামে
ভেসে যেতাম ফিরোজা্ ওই মুক্ত আসমানে,
তখন তুমিও প্রানের হরষে, থাকতে মনের কাছে।
অনুরাগের তুলি দিয়ে নিও-রিয়ালিজ্মের ধাঁচে
রাঙা গোধূলির সেই প্রেমের আবেশ
মধুমাখা চাহনি, এলোমেলো কেশ।
ক্যানভাসে্র ফুশিয়া আর ওল্ড স্পাইসে্র নেশা
সিগারেটের ধোঁওয়া ছিল ধুনোর ঘ্রাণে মেশা।
সবে মিলে যবে মত্ত ঢাকে-দের তালে
চোখে চোখ রেখেছিলে, চোখের আড়ালে।
অধরে অধর মাখা সেই উষ্ণ অনুভুতি,
যেন গালিব ও মির-এর লেখায় অব্যক্ত প্রতিশ্রুতি।
তুলির টানে মেতেছিল মনের পাতা ফাঁকা
রামধনুর রঙে যেন রেনওয়া-র আঁকা।
হায়! তারা ভরা ভ্যান গঘ-এর রাত যে সীমিত,
দালি-র ছবির মত সময় হয়নি প্রসারিত।
কত শশী ফিরে গেল, গেল কত ভোর
স্বপ্নহীন একা আমি, ফ্যাকাসে শহর!
আজ কেন তবে ভুলে যাওয়া সে বাতাস
দুলায়ে শিউলি ফুল, ছুঁয়ে যায় কাশ?
বারে বারে একই কথা বলে কেন মন
আগমনীর গানে হবে তোমার আগমন?।
0

কবিতা - কুমকুম বৈদ্য

Posted in






তুই যদি গাছের পাতার নৌকা বানাস
যদি তুই জ্বরের দিনে আলতো বাতাস
যদি তুই অঙ্ক খাতায় শূন্য পেতিস
অথবা একের পিঠের দুইটা হতিস
আমি তবে সামলে যেতাম
বারোটা বাজার আজে ঠিক জাগতাম
শূণ্যে চড়ে চাঁদের পিঠে ঢাক বাজাতাম
সে ঢাক শুনে যদি বা উঠত নড়ে মেঘের বাড়ি
অথবা মেঘের কানের গোলাপী দুল, জুড়িগাড়ি
তবে তুই বৃষ্টি দিয়ে শিলেট মুছে
যা লিখতিস সবটুকু ভুল
ভুলটা সবই
তুই যদি হঠাৎ করে রাস্তা হারাস
ভুলে যাস ফুচকা ওলার পয়সা দিতে
যদি তুই ছাদের দিকে দু পা বাড়াস
আরেক জোড়া নাই বা দিল সঙ্গ তোকে
খসে পড়া একটা তারা পূব আকাশে
ওয়েট করুক বাইশ মিনিট তোর উইশের
তখন আমার উদাস চোখে দেখস যদি ঘাড় ঘুরিয়ে
যা পড়বি সবটুকু ভুল
ভুলটা সবই
যদি তোর ভুলো মনে লিখিস কিছু
ভুলে যাস তারপরে ঐ জল ন্যাকড়া
তারপর আরশিনগর মনের ঘুঁড়ি
ফিরে যাস পিছন দিকে বছর কুড়ি
লাটাই ছেঁড়া সুতোর মতন লুটলে খানিক
রেখে দিস ভরবে উড়ান পরের বারে
আসলে তুই মনের খাতায় শূন্য পেলি
আমাকে আগাপাছতল ভুল ভাবলি
ভাবনার সবটুকু ভুল
ভুলটা সবই
0

কবিতা - শ্রুতি নাহা

Posted in







আজ অনে-- ক দিন পরে ঠিক সেই রকম একটা দুপুর যেন!
যখন তুই আসতিস খড়্গপুর থেকে,
একটু পরেই ফেরার ট্রেন হুইসেল বাজিয়ে ডাক দিতো তোকে।
ভদ্রতা করে বলতাম, কেন আসিস এতো কষ্ট করে...
তুই বলতিস, গঙ্গার জলকে রাঙিয়ে দিয়ে কী সুন্দর সূর্য ডোবে এখানে!
কলকাতায় তখন হলুদ ট্যক্সির যুগ!
আমরা দুজনে দুপুর রোদে গড়ের মাঠে ঘোড়ায় চড়ে কতদূর চলে যেতাম!
সাদা ঘোড়ার পিঠে চড়ে কাদম্বরী দেবীর গল্প বলতে বলতে... আরো কতো অপ্রাসঙ্গিক গল্পের ঝুলি খুলে বসতাম।
জীবনের সব কু্ঁড়িরা সেই দিনই ফুটে উঠেছিল!
ওই দূরে আকাশবাণী দেখতে পেলেই আবেগে আপ্লুত আমি!
মনে আছে, আমার তখন প্রথম ফোন Nokia 800,
আর তোর Motorola
প্রতিবার আমার জন্মদিনে তুই Caesarian English এ মেসেজ পাঠাতিস।

আজও আমাদের সেইরকম একটা রবিবার!
এক শহর থেকে অন্য শহরে যাওয়ার পথে সেই পুরোনো দিনের মতো কলকাতায় আসা,
boarding pass বুকের পকেটে রেখে,
হাতে মাত্র পৌনে তিন ঘন্টা!
পাহাড়ের শহর থেকে নীল ফুল তুলে এনে আমার হাতে দিয়েই
পরের গন্তব্য সমুদ্রের শহর।

পাহাড় - সমুদ্রের মাঝখানটুকু আমাদের বন্ধুত্বের সুরে ভরে উঠুক।
0

কবিতা - অজয় চক্রবর্ত্তী

Posted in






কিছু কথা নির্দ্বিধায় ঢুকে যায় বুকে,
কিছু কথা ভেসে থাকে টলটল চোখের তারায়,
কিছু কথা অবশেষে কথা-ই থাকে না
হয়ে যায় গুঁড়ো গুঁড়ো শব্দের কাঁপন,
যা কিছু একান্ত আপন তাহাদের ফাঁকে ফাঁকে
নানা বাঁকে চুপিসারে মিলে মিশে যায় ।

কিছু কথা ঝনঝন, যখন তখন ভেঙ্গে পড়ে
নিজস্ব খেয়ালে, কিছু কথা ফিসফিস্
ভিজেভিজে শ্যাওলা পড়া মনের দেওয়ালে,
কিছু কথা উচ্চকিত ঘোষণার মতো
হৃদয়ের ত্রস্ত উঠানে, কিছু কথা পথ-ভোলা
আনমনে পৌঁছে যায় কানাগলি গভীর বিজনে।

কিছু কথা ঘোমটা ঢাকা,
কিশোরীর লজ্জা-চোখে চকিতের ফুটে ওঠা
ভীরু ভীরু আধফোটা কুঁড়ির মতন,
কিছু কথা নিতান্ত সুড়সুড়ি, ইশারায় আদুরে উসকানি,
কিছু কথা হরিরলুঠ, উঁচু থেকে ছুড়ে দেওয়া একআনি দুআনি,
কিছু কথা রাশ ভারী, হিসেবের কথা,
গুনেগেটে তুলে রাখে ঘাটের পাড়ানী ।
0

কবিতা - কাজল আচার্য

Posted in






যেভাবে ঠোঁট গিয়েছিল
ঠোঁট স্পর্শ করে।
দূরের মন্ত্র উচ্চারণে শরীর একগুঁয়ে
চোখের গভিরে কোথাও ছিল ঘৃণা
যা হোক প্রতিবেশী তো
দুঃখে সান্ত্বনা দেব না।
নির্ভরতা হাতের ভাষায়
আকুলতা বুকের কোথাও
মুখের কথা অগ্রাহ্য করে
ফিরতে পারি তোমার ঘরেও
কোন দীপ কোন ভিত
জীবনে জরুরি।
উঠা নামা দাঁড়িপাল্লার সামনে
স্বাচ্ছন্দ ঘেরা নিজস্ব চৌহদ্দি
ভালবাসা ভালবাসায় অবতরণ।
0

কবিতা - নিরজিতা শ্রীনিবাসন

Posted in


আমি বিজযী, আমি বিশ্বজয়ী
আমি চাঁদকে করেছি জয়
আমি শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী
এই মোর পরিচয়
দূর দিগন্তে আমি পাঠিয়েছি মোর দূত
বিক্রম নাম তার, সে অতি নিখুঁত
সৌরজগতে জুটী নাই আর
যাত্রা পথে আসে নাই কোনো বাধা তার

চাঁদকে করেছ জয়, অতি উত্তম
কবি হেঁসে কয়
আর সে মোর কবিতায় স্থান না পায়
কেমনে করি চাঁদের গুণগান
সে যে দেখি অতি সাধারন
নীরস প্রাণহীন রুক্ষ কায়
দিন কাল ক্ষণ সবই যেন তাতে অসহায়

প্রেমিক কাদিঁয়া বলে
এ কি বিপদ
রুপসী প্রেয়সী মোর
এতদিন জেনেছি
চাঁদপানা তার মুখ
কেমনে ডাকিব আজ
দেখিয়া চন্দ্রমার আসল রূপ
শত ক্ষত দেহ ভরি অতি রুক্ষ মুখ
প্রেমিকা মোর রুঠিবে বেজায়
উপমা চন্দ্রমার যদি রাখা হয়।

কোথায় সেই সুন্দরী রহস্যময়ী শশী
রূপকথার অপরূপা জগতের প্রতিবেশী
আসিবে কি সে শিশুর মায়ের ডাকে
সরোবরে তার প্রতিবিম্ব তেমনি কি
লাগে মনোহর গাছের ফাঁকে ফাঁকে
কেন সে ভিন্ন কল্পনার চাঁদ থেকে

হায় কবি, হায় প্রেমিক
কেন এ অনুশোচনা, কেনো এ দ্বন্দ্ব
চাঁদ তোমার চাঁদ আমার, চাঁদ অনন্ত
চাঁদ জগতের
সে আছে সাহিত্যে, গদ্দে, পদ্যে, আনন্দে
তাকে পাবে বিশ্ব ব্রহ্মান্ডে।
0

কবিতা - সন্তোষ ভট্টাচার্য

Posted in






দেখিনি অনেকদিন কোথায় গেছিলেন
ফিরলেনও বহুদিন পর। কেমন খবর?
হাঁটছেন তাও এতো ইতস্তত কেন?
কিছু ভাবছেন? পড়েটড়ে গেছিলেন নাকি?
পায়ে ব্যথা? নাকি মাতালের মতো
টালখান ক্রমাগত। কেঁপে কেঁপে উঠছেন যেন।

চোখদুটো অর্ধজাগা, ঈশানের ঘুমলাগা
পা দুটো ইতস্তত, কাঁপা হাত তুষারের মতো
তুষার পাতের মতো শাদা হাত, ভঙ্গিমায়
অর্ধভঙ্গিমায় যেন ফিরে যেতে চান, আর ধ্বনি,
অর্ধধ্বনি ফিরানোর ডাক দেয় তবু এসেছেন।
তবে থেকে যান, এখানেই থেকে যান তবে।

আপনার পায়ের কাছে কী ওটা, কুকুর না বাঘ
এনেছেন কেন ওকে? গন্ধ শুঁকে সব বলে দেবে?
অস্থায়ী, অন্তরা, থেকে পাপ সব বলে দেবে?
অনেক ক্ষমতা, তবে চোখদুটো এতো শ্রান্ত কেন?
বাতাসে ভগ্নাংশের গন্ধ পায়, তাই পিছনে চায়?
আপনারা থেকে যান, থেকে যান আপনারা তবে।

ঘর এত অন্ধকার কেন? এ ঘর আপনারই ছিলো
এ মন্দির আপনারই ছিলো, এতদিন পরে
লোক সব ভুলে গেছে এতদিন পরে, পাথরের চোখ
আপনার চোখ পাথরের নাকি? জ্বলছিলো যেন
ভুল করেছিলো এখন পাথরের মতোই দেখি
খুলে পড়ে গেছে, কালকে লাগিয়ে দেবো। আজ অন্ধকার।

যুগান্তর পার কুকুরটা বড় শ্রান্ত, চাটাই দিয়েছি পেতে।
বাইরে ঘুমাক, আমি আসি, ভোগ আর এবেলা হবে না।
0

কবিতা - ঝানকু সেনগুপ্ত

Posted in

এখানে কোন সমুদ্র নেই। গাঙচিলের স্বপ্নও তাই অধরা।
অতএব, বন্দী থাকতে হবে। এটাই নিয়ম এদেশে।

স্বাধীনতা উৎসবের ফ্রেমবন্দি ছবি পাঠাতে হবে বিচারের ঘরে। এটাই আদেশ এখন।
গুণতির লাইনে দাঁড়াতে হবে, মিলিয়ে দেখার জন্য চোখের মণি আর আঙ্গুলের ছাপ।

তারপরও কথা আছে। জানতে চাইবে কবিতা লেখা হয় কিনা। অথবা বুকের মধ্যে কোনো প্রেমের শব্দ।
এসব অনুভূতি থেকেই শুরু হতে পারে বিদ্রোহ।

সুতরাং, এখানে কোনো সমুদ্র থাকার প্রশ্নই ওঠে না!!