Next
Previous
Showing posts with label কবিতা. Show all posts
0
undefined undefined undefined

কবিতা - অমৃতেন্দু মুখোপাধ্যায়

Posted in




















তুমি আসবে বলে
একাকী তপস্বিনী
পম্পা সরোবরের তীরে কাটিয়ে দিল সারাটা জীবন।

তোমায় একবার দেখবে বলে
মহর্ষি ফিরিয়ে দিল ইন্দ্রের রথ।
বারংবার।

শুধু একবার
ঝরা বকুলের অর্ঘ্য তোমার চরণে রাখবে বলে
আশ্রমিকেরা অপেক্ষায়।

হে পুরুষোত্তম
তুমি আরেকবার এস
এ‌ই ধুলোর ধরণীতে।

0
undefined undefined undefined

কবিতা - সমরেন্দ্র বিশ্বাস

Posted in




















ছন্দের উদাসীন ঝংকার। তাই দেখে টু্পটাপ গলে গলে পড়ে সূর্য।
উদভ্রান্ত মন সাঁতরে যেতে চায়। মায়াবী আলোর নদী।
বুকের মধ্যে উথাল পাথাল। সূর্য-গলা নদীর জল লাল।
নাকি তোমার শালোয়ার কামিজ প্রতিবিম্বিত? তারই রঙ নদীতে।
স্টীলের ব্রীজ হাওয়ায় দোলে, তরঙ্গে তরঙ্গে বিদ্রোহিনী উচ্ছ্বাস?
নাকি তুমি এসেছো, তাতেই হাওয়ারা পাগল পাগল? গ্যালন গ্যালন প্রজাপতি!
সবাই মাতাল। নরম পাখনায় উড়ছে সবাই - তোমাকেই দ্যাখে।
অথচ আমি গান গাইতে পারছি না। পঙ্গুগ্রস্ত একটা দোতারা।
না কি আমার মধ্যেই ভয়! তোমাকে না পাবার! তোমাকে হারাবার?
গলে যাওয়া সূর্যটার জন্যে নদীর জল ঘোলা ও হলুদ।
সূর্যকে গিলে নদী ভেসে যাচ্ছে দূর সমুদ্রে, তুমিও সরে যাচ্ছো অজানায়?
নদী পাড়ে আমি একলা, শরীরে শাপ ভ্রষ্ট প্রেম, আমার দূহাত শূণ্য!
সামনে স্মৃতিভ্রষ্ট ছায়াছবি। আকাশ লাল। তোমার সালোয়ার কামিজ উড়ছে।
ডেকে ডেকে দূরে চলে যাচ্ছে ব্যথার পাখি। বেবাক আমি স্থানু।
সূর্য-গলা নদী জল অপসৃয়মান। লাল দৃশ্যের ঝঙ্কারে আমিও উদাসীন।
ছুঁতে যাই, পিছলে যায় মহাকাব্য। পিপাসার্ত আমি, নদীর জলও অচ্ছুত।
চাতক-বারি মন ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়, তবু দিনানুদিন স্বপ্নেরা আসে, জলে ভাসে।
অচ্ছুত নদী ধারে অস্পৃশ্য-আমি যুগ যুগ তোমার অপেক্ষায়!
সূর্য-গলা লাল নদী ছুঁতে পারি কই? শালোয়ার কামিজের প্রতিবিম্ব অধরাই!
ছুঁতে পারি না তোমাকেও। আমার রাস্তায় জবরদস্ত রোড-রোলার প্রতিদিন।
একটা স্বপ্নালু আত্মা তোমাকে চায়। অথচও রৌদ্র গলা পীচে তালাবন্দী দুটো পা।
                                            দেখো কি?
অথচ কত অনায়াসেই প্রাত্যহিক লাল পোষাকে তুমি নির্বিকার হাঁটো!
ছন্দের উদাসীন ঝংকারে নিয়তই আহত আমি। টুপ করে গলে পড়ে সূর্য।
সূর্য-গলা নদী লাল? জলস্রোতে তোমার কামিজের রঙ, না কি আমার বুকের রক্ত?
0
undefined undefined undefined

কবিতা - অমিতাভ মুখোপাধ্যায়

Posted in






চোখের পাতার
সামান্য নাড়াচাড়ায়
রাধিকার চাহনিতে

যূথিকানগরের ইতিহাস
ভেসে উঠে ওরই চোখে

ওর ওই বিস্তৃত চাহনিকে
গ্রহণের অন্ধকার
আড়াল করে দেয়

বৃষ্টি আসে গ্রহণের শেষে

যৎসামান্য আলোকে
উত্তেজিত করে
বৃষ্টি
অস্পষ্ট আলোয়

ওই ইতিহাসের বাকি আশাকে
গ্রহণের অন্ধকার এড়িয়ে

রাধিকা
এক চোখে
আরেক চোখে
নিজের করে রাখে
হিসেব মতো

খিদের সময় দুই
হাত রাখে টেবিলে

তিনটে কলাপাতা
তিনজনের জন্য
এক এক করে সাজিয়ে দেয়

খোলা বাতাসে
দেখতে পায়
রাধিকা
সবুজ কলাপাতার
প্রতিটি ঘটনার সাথে
ও নিজেই জড়িয়ে আছে

বাতাস পরিষ্কার হয়
ওরই নিশ্বাসে

ধুলো ও মৃত্যু
রাধিকার
চাহনিতে থেকে সরে যায়

থাকে শুধু
রাধিকার দুই চোখে
যূথিকানগরের বাকি ইতিহাস...
0
undefined undefined undefined

কবিতা - সব্যসাচী রায়

Posted in
অধ্যায় ১: শূন্যতার পদার্থবিদ্যা

প্রত্যেক ক্রিয়ার জন্য একটি সমান ও বিপরীত শূন্যতা থাকে।
কফি ঠাণ্ডা হয়- 9.8 m/s²-এ, তোমার ছোঁয়ার মতো।
এনট্রপি চামচ নাড়ায়, চিনির বাটিতে নীরব এক ভাঙচুর।
আমি আমাদের x-এর সমাধান করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সমীকরণ ভেঙে গেল—
ডিনোমিনেটরে এক ভৌতিক উপস্থিতি।
তোমার কণ্ঠ, স্পেকট্রাল তরঙ্গ: শোনা যায় কিন্তু দেখা যায় না,
তোমার পিছু হটার ডপলার শিফটে হারিয়ে যায়।

এখন সকালগুলো মেপে দেখি মিস করা দৃষ্টির অর্ধ-আয়ুতে,
উপস্থিতির ক্ষয় গুনে গুনে
যখন বাজপাখি চক্কর দেয় পিছনের উঠোনে, দেহাবশেষের অপেক্ষায়
বা এক অলৌকিক ঘটনার।

বাইরে, বাতাস আমায় ঠাট্টা করে—এ এক বিশৃঙ্খলার ক্যালকুলাস
যেখানে প্রতিটি ভ্যারিয়েবল একাকীত্ব।

আর আমি এখানে,
অস্তিত্বের গরম পাথরে লিখি,
দেখি প্রান্তগুলো বাদামি হয়ে যায়
যখন আরেকটি প্যানকেক কবিতা
শূন্যতায় বুদবুদ তোলে।

অধ্যায় ২: মার্চের গাণিতিকতা

একাকীত্বের সমাধান করো।
দরজায় দাঁড়িয়ে
নিজেকে দিগন্ত দিয়ে ভাগ করি।
বাতাস আমার পাঁজরে
সমীকরণ ঝাঁকায়।
একটি জ্যাকেট যথেষ্ট নয়,
উষ্ণতার অসমতা।

সূর্যাস্ত ≠ শান্তি।
মেঘে অনিশ্চয়তার গ্রাফ,
বক্ররেখাগুলি ঢলে পড়ে
অসীম ধূসরতার দিকে।

বাতাসের দাঁত আছে।
আমার ভগ্নাংশে খায়।
চামড়া ফাটে,
রক্তের সমাধান হয়।

আমার ছায়া ভেঙে যায়—
উপাংশ উপরে,
গুণাংশ নিচে।

রাত প্রমাণ হিসেবে নামে।
আমি এক অনির্ধারিত উপপাদ্য,
যেখানে ছিলাম আর যেখানে হতে পারতাম
তার মধ্যে আটকে থাকা এক অনুমান।

অধ্যায় ৩: বাইনারিতে পাখির গান

কিছু সুর ডিকোড করা যায় না।
01110100 01101000 01100101
পাখিরা গান গায়—
না হয় হয়তো তা শুধুই স্ট্যাটিক।
আমি ভুলে গেছি
কীভাবে শুনতে হয়
স্ক্রিনের ফিল্টার ছাড়া।

কখনো স্বপ্নে দেখেছিলাম রবি।
এখন তাদের স্থানাঙ্ক খুঁজি:
অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ,
বিলুপ্তির হার।
তাদের ডানা অ্যালগরিদম,
তাদের উড়ানের পথ
অবাক হওয়ার জন্য খুব সোজা।

তাদের বিশৃঙ্খলা আমি হিংসা করি।
তাদের সুর কোনো হ্যাশট্যাগ নয়।
তাদের মৃত্যু কোনো ডেটা পয়েন্ট নয়।

যদি আমি খুব স্থির থাকি,
তাহলে হয়তো শুনতে পাই:
এক পৃথিবীর অ্যানালগ ফিসফিসানি,
যা আনপ্লাগড,
এক বধির আকাশে
পালকের স্পন্দন।

অধ্যায় ৪: রাসায়নিক হৃদয়

ভালবাসা এক ভুল প্রতিক্রিয়া মাত্র।
C₂H₅OH আমার মধ্যে প্রবাহিত হয়—
স্মৃতির মলোটভ ককটেল।
তোমার হাসি দাহ করে
আমার ত্বকে,
প্রেমের ছাই রেখে যায়।

আমরা ছিলাম এক্সোথার্মিক বিশৃঙ্খলা,
সামঞ্জস্যের জন্য খুব বেশি প্রজ্জ্বলিত।
তুমি ছিলে NaCl,
আমি H₂O—
আমরা মিলে কিছুইতে দ্রবীভূত হলাম।

এখন আমি শ্বাস নিই
তোমার রেখে যাওয়া অণু,
বিদ্রূপমাখা অক্সিজেন।
আমাদের ভালোবাসা,
একটি অস্থিতিশীল আইসোটোপ:
অর্ধ-আয়ু চিরকালীন,
কিন্তু শুধুই স্বপ্নে।

অধ্যায় ৫: বিষাদের অ্যালগরিদম

ইনপুট: নিঃশ্বাস, চিন্তা, বাসনা।
আউটপুট: একটি যন্ত্র
খুবই মানবিক, তাই কাজ করতে পারে না।

নিয়ম ১: বিষাদ বাধ্যতামূলক।

সমীকরণ থেকে সব আনন্দ বাদ দাও।
একজন চিত্রশিল্পীর হতাশা যোগ করো,
একটি খালি গ্যালারির নীরবতায় গুণ করো।

নিয়ম ২: সেক্স এক ভুল।

তার শরীর ছিল এক প্যারাবোলা,
তার স্পর্শ, এক অ্যাসিম্পটোট।
তারা কখনো ছেদ করেনি,
কিন্তু গ্রাফটি ছিল অশ্লীল।

নিয়ম ৩: কেউ পরিবর্তন হয় না।

পাহাড় রয়ে যায় পাহাড়।
নদী উল্টো প্রবাহিত হয়।
চরিত্রগুলো অনন্ত লুপে ঘুরে,
তাদের ট্রমা রিওয়াইন্ড করে
একটা ক্ষতিগ্রস্ত ভিনাইলের মতো।

চূড়ান্ত আউটপুট: এক জীবন।
না তোমার। না আমার।
শুধু আরও একটি সিমুলেশন,
এক স্ক্রিনে ঝলমলানো পিক্সেল
যা খুবই ম্লান
যত্ন করার জন্য।
0
undefined undefined undefined

কবিতা - অমৃতেন্দু মুখোপাধ্যায়

Posted in

মহাকাল উদাসীনের মত হেঁটে চলেছে—
মানুষের খেলনা-বাটি সংসার
গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে তার পায়ের ধুলো।
এক হাঁটু ধুলো নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছানো কি ভালো?
0
undefined undefined undefined

কবিতা - আশীষ কুমার বিশ্বাস

Posted in








নদী ভাসা খড়-কুটো
কবিতার খুঁটি
এ ভাবেই সাজিয়েছি
কবিতার গুঁটি ।

নাই তার ভরসা
ভেসে ভেসে চলে
এ কবিতা জীবনের
অন্য কথা বলে ।

অভাব অনটন আছে
আয় করার পথ খোঁজে
বাঁধা আছে পদে পদে
অপরাধে মাথা গোঁজে ।

মায়ের প্রবল অসুখ
বাবার বেতন নেই
দিদির বিয়ের বয়স
মন তাই সুখে নেই !

ভাইয়ের স্কুল আছে
বোনের পড়া নেই
বেটি বাঁচাও , বেটি পড়াও
তাঁতে আর তাড়া নেই ।

সুখের কথা ভাবি নাকো
দুঃখে দিন যাপন
দুঃখেই কবিতা লিখি
এ ভাবেই উদযাপন ।
0
undefined undefined undefined

কবিতা - অমিতাভ মুখার্জী

Posted in








সত্যি করে বলছি
তোমাকে আমি দীপিকা
বলে ডাকিনি

তোমাকে হলফ করেছি
আমি আর দীপিকার সাথে একই
ফ্লাইটে বিজনেস ট্রিপে আর যাব না

তোমাকে আগেই বলেছি
আমি যখন ভুট্টার ক্ষেতে ঘুরে বেড়াই
সূর্যের আলোয় যে মুখ বারবার
ভেসে আসে, সে ত’ দীপিকারই

তুমি জানতে আমি চোখ
রেখেছিলাম ঐ রাঙা মেয়েটির দিকে
সে কেউ নয়, সেই চোখ দীপিকারই

তোমার বারংবার বারণ শোনার পর
আমি বলিছি
আমি দীপিকাকেই চুম্বন করেছি

তোমাকে এটা বলতে ভুলে গেছি
প্রতি রাতে যে তারা গুলোর আলো
খসে পড়ে তাদের ত্বকে
তাদের সবাইয়ের ত্বক দীপিকারই ত্বক

তুমি এত রাগ করে থেকো না
আমার চোখে সব লুকোনো
ভালোবাসা দীপিকার চোখেরই

আমি যেদিন শীতের সকালে
ব্রেকফাস্ট টেবিলে তোমার নাম ভুলে
দীপিকা বলে ডেকেছিলাম
তুমি তাকিয়ে ছিলে আমার দিকে
কিছু বলে ওঠোনি

তুমি মাধুরী সেদিন আমায় কিছুই বলনি
শুধু তাকিয়ে ছিলে
আমি তোমার চোখে গোপনে চোখ রেখেছিলাম
সত্যি বলছি সেও দীপিকারই

আজ সন্ধ্যেতে ডিনার শেষে
পোর্ট ওয়াইন নিয়ে মাধুরী
তোমার সাথে যে গল্প হয়েছে
তা বেশীর ভাগ দীপিকাকে নিয়ে

তোমাকে কথা দিয়েছি
দীপিকাকে নিয়ে
আর কিছু বলবো না ২০২৪-এ

মাধুরী আছ, যেমন ছিলে
বছর বছর আমার দীপিকা
পালটে যায়
এবার নতুন কোনো দীপিকা

কিছু মনে করো না—সহজ হয়
সহজ ভাবে নাও

গোপন তারা গুলোর আলো
খসে পড়ে তাদের ত্বকে

আর দীপিকার নাম লেখা নেই
হয়ত বা অন্য কেউ
হয়ত বা সেই দীপিকা
আবার দীপিকাই হয়ে।
0
undefined undefined undefined

কবিতা - সব্যসাচী রায়

Posted in









আজকে আকাশ ঘুড়ি আর ওয়াইফাই সিগনালের সেলাই।
হোলির কথা মনে পড়ে, রং মাফ করে, যতক্ষণ না বৃষ্টি আসে।

চায়ের দোকানে কেউ বলে, "ভারত তো আমেরিকা, সাবটাইটেল দেওয়া।"
সবাই হাসে, যেন সত্যি। হয়তো তা-ই।

এখানে, বলিউডের স্ক্রিপ্ট নিজেকে পাল্টায়: হিরো আগেই মরে যায়,
ভিলেন একটি স্টার্টআপ চালায়, আর কোরাস গায় ভাঙা কোডে।

স্বপ্নগুলো আবার বিগড়ে গেছে। গঙ্গার জল উল্টো দিকে বইছে,
গরু আর ক্রিকেট ব্যাট ভাসিয়ে নিচ্ছে, ব্যর্থতার রেখাচিত্র আঁকছে।

ট্রেনে বাড়ি ফেরার পথে গুগলে সার্চ দিই "বিশ্বাস পুনর্জীবিত করার উপায়"
উত্তরে পাই ডালের রেসিপি। বিদ্রূপের স্বাদ বেশ বাড়ির মতো।
0
undefined undefined undefined

কবিতা - অমৃতেন্দু মুখোপাধ্যায়

Posted in






তোমাদের শরীরজুড়ে

মাধবীলতার মত জড়িয়ে আছে সুখ।


জীবনের ধুলো

আমাদের সারা গায়ে।


এ‌ই ধুলো অসহ্য মনে হয়। 


0
undefined undefined undefined

কবিতা - রঞ্জন রায়

Posted in







তোমরা এবার পথে নামো
ফুলের দল।
নইলে আজকে সুন্দরকে
কে বাঁচাবে!

তোমরা এবার হামলা করো
ফুলের দল,
নয়তো যত সবুজ ছিল
শুকিয়ে যাবে।

আমার দিকে তুলছ আঙুল!
হার মেনেছি।
জোয়ার এলে বৈঠা ফেলে
পালিয়ে গেছি।

রঙিন কাগজ, রাংতা মোড়া স্বপ্নগুলো,
তাকের উপর আছে তোলা,
জমছে ধুলো।

কথার পিঠে কথা জুড়ে
কানামাছি,
ঢের খেলেছি এখন তোদের
আশায় আছি।।
0
undefined undefined undefined

কবিতা - অমিতাভ মুখার্জী

Posted in






গোপিকা
তোমার প্রতিদিনের
ফেলে আসা সময়কে
লাল জুতোর ফিতে দিয়ে
বাঁধা ছিল
যেমন তেমন করে

তোমার
আক্ষেপ ছিল
মন খারাপ ছিল না

দিন পেরিয়ে যায়
দিন
পালটেও যায়
তোমারই ওই দিনযাপনে

সময়কে এড়িয়ে যাবার জন্য
তুমি
নিজেকে চালিয়ে নিয়ে যাও
ইঁদুরের মতো
তোমারই অবুঝ মনের মাঝে

সে তোমাকে মনে করুক
বা
দূরে সরিয়ে দিক

তুমি একটা জঙ্গলকে
জ্বালিয়ে দিতে পারো
বা
একটা ভালুককে
হত্যা করতে পারো
তারই সামনে

সে তা ভালো করেই জানে—

তোমারই মধ্যে হৈচৈ,
উত্তেজনা
তোমারই রাগের গভীর
অন্তরালে থাকে
রাগগুলো তোমার
আলজিভ থেকে বেরিয়ে
আসে,
তোমার ঠোঁট কেঁপে উঠে

তুমি
কাঞ্চনজঙ্ঘা ছাড়া
একটা পৃথিবী
গড়তে চেয়েছিলে

তোমার চারিপাশে
রাস্তা দিয়ে চলে যাওয়া
গাড়িগুলোর
টায়ার থেকে
বাতাস বেরিয়ে আসে
চক্রাকারে

তোমারই আশেপাশে
কেউ নেই
সে তো নেই
তোমার কাছের
আর কেউ নেই

তোমার চারিদিকে
গোলাপগুলো ফুটে উঠেছে
গোপিকা ওরাই তোমার
সাথে থাকবে
তোমারই দিনযাপনে

আর কেউ নেই…।
0
undefined undefined undefined

কবিতা - অমৃতেন্দু মুখোপাধ্যায়

Posted in






হায়েনার দল হরিণীটিকে পেছন থেকে খাচ্ছিল।
তখনও বেঁচে ছিল সে—
জানান দিচ্ছিল তার অসহায় পা ছোঁড়া।

দূর থেকে চিতাকে আসতে দেখে
অনাগত ভ্রূণ চিরে বার করে নিয়ে পালাল হায়েনা।

তারপর চিতা
লাল লাল নরম মাংস দ্রুততার সঙ্গে ছিঁড়ে খেতে লাগল।

আমি পৃথিবীর কাছে এর চেয়ে বেশী কিছু আশা করেছিলাম।

যে গর্ভ থেকে জন্ম,
যে গর্ভ থেকে সৃষ্টি,
যে গর্ভকে ঈশ্বর বলি—
সে‌ই হিরণ্যগর্ভের শিরায় শিরায় শুধু আদিমতা!

আমি কার কাছে ন্যায় ভিক্ষা করব?
0
undefined undefined undefined

কবিতা - কুমকুম বৈদ্য

Posted in






ভলিউম যত বাড়ছে মাথার শব্দকোষে
হারিয়ে যাচ্ছে কথার মানে মুদ্রাদোষে
কথা যে সব দেওয়াই ছিল অনুচ্চারে
ভুলিয়ে দিচ্ছে ঝুলিয়ে রাখা অনুস্বারে
হারিয়ে গেলেও কথার মালা খুঁজতে নেই
ফুরিয়ে গেলে কথার কবর খুঁড়তে নেই
0
undefined undefined undefined

কবিতা - সুস্মিতা মজুমদার

Posted in






ক্রমশ জটিল হচ্ছে দিন
আবার ইতিহাস ফুঁড়ে যেন জেগে উঠেছে গুহামানবের দল ।
দুচোখ জুড়ে রয়েছে তাদের কাঁচা মাংসের উল্লাস,
মানুষ যখন সভ্যতার চাপে
এগিয়ে চলেছে দিন প্রতিদিন
কিছু মানুষের জিহ্বায় লেগে আছে
এখনো রক্তের স্বাদ ।
সময় যেন কিছু মানুষকে পৌছেঁ দিয়েছে সেই অন্ধকার পাথুরে সভ্যতায়
যেখানে মানুষ ক্ষুধার্ত, নেশাগ্রস্ত, হতাশাগ্রস্ত ।
ক্রমশ আবছা হতে হতে ঘণ কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে
কথোপকথনের অসমাণ সিঁড়িপথ।
সামনে এসে দাঁড়ায় কিছু উন্মাদ মানুষ
তীক্ষ্ম দহনে তাঁরা চেঁচাচ্ছে
সবকিছু থাক তাদের ইচ্ছেমতো ।
অস্থির মাতাল হাওয়ায় করে চলেছে
জাতের নামে বজ্জাতি
সমস্ত হাড়ের ভিতর আধশোয়া ঘৃণার দল !
আর্তনাদ শুনবে না কেউ
অগোচরে রক্তপাত শুধু
হৃৎপিন্ড জুড়ে নিঃশর্ত সমপর্ণে।
0
undefined undefined undefined

কবিতা - আশীষ কুমার বিশ্বাস

Posted in







একটা কবিতা
তাঁর ভালো লাগা , মন্দ লাগা ।

তারপর প্রিন্টিং প্রেস
অচেনা প্রচ্ছদ
তাঁর জন্ম , লিটিল ম্যাগজিন ।

একটা যুদ্ধ জয়
প্রকাশিত কবিতা
বার বার তাঁর ওপর চোখ বোলানো ।

মনে কবি হওয়ার শখ জাগে
রবীন্দ্রনাথ , জীবনানন্দ , নজরুল , সুকান্ত
মনের গভীরে সুপ্ত বাসনা ।

আবার কলম-কাগজ , নির্জনে চিন্তা
ভাবনার গোড়ায় শিকড় গজানো ।

অক্ষরে অক্ষরে , শব্দে শব্দে
নতুন লাইন ।
আরো একটা কবিতার জন্ম ।

ঠিক এই ভাবেই - আরো একটা
কিম্বা অন্য ভাবে
আরো একটা ।



0
undefined undefined undefined

কবিতা - অমৃতেন্দু মুখোপাধ্যায়

Posted in





ঈশ্বর যাদের ভাত বরাদ্দ করেনি
ঈশ্বরে গভীর আস্থা তাদের।

ক্ষিদে নত হতে শেখায়।

আস্থার পরাকাষ্ঠা মানুষগুলো
অলৌকিকের কাছে ভিক্ষাবৃত্তি করে।

0
undefined undefined undefined

কবিতা - শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

Posted in






হিজল কাশের দেশে একদিন গিয়েছি বেড়াতে
সবুজ সুপুরি ক্ষেতে জোলো হাওয়া
উদার আকাশ জুড়ে তারাদের দিয়েছে প্রশ্বাস
ধূসর জগত থেকে জেগে ওঠে স্টিমারের সুর
গোয়ালন্দ কতদূর, গোয়ালন্দ আর কত দূর...

কেন এত ব্যবধান ভাটিয়ালী বাউলের মাঝে ?
এপারে ওপারে ব্যথা
এপারে ওপারে কান্না
এপারে ওপারে বাঁশি একই কথা বলে
গোয়ালন্দ আমাদের ধূসর জগত
গোয়ালন্দ একদিন ছিল ।

হিজল কাশের দেশে ফের আমি গিয়েছি বেড়াতে
সবুজ গ্রামের সীমা পার হয়ে ঝকমকে শহরের পথে
উদার আকাশ জুড়ে আজও তারা ফোটে
মেছুয়া মাঝির দল আজও সেই এক সুর বুকে নিয়ে
ভেসে যায় জোয়ারের বুকে
তিরতিরে জোলো হাওয়া আজও ঠিকই বয়
ফিসফিস বলে যায় –
দূরে নয়, গোয়ালন্দ বেশী দূরে নয়...

2
undefined undefined undefined

কবিতা - ঝানকু সেনগুপ্ত

Posted in







একটা নদী বুড়ো হলে
পাল্টে যেতে পারে তার বোধ
জেগে উঠতে পারে উচ্চারণের বহুত্ব

একটা নদী বুড়ো হলে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে।
0
undefined undefined undefined

কবিতা - রঞ্জন রায়

Posted in





নিশির ডাকেৱ মত
মাঝরাতে তিনবার সমুদ্রগর্জন।
দরজায় খিল আঁটা তবু জাগে ওরা তিনজন।

বাইরে ফুঁসছে ঝড়
ফুলে ওঠে সিংহের কেশর,
সমুদ্রঘোড়ায় চড়ে চলে গেল ওরা তিনজন।

ঝড় কবে থেমে গেছে
মরা চাঁদে লেগেছে গ্রহণ।
নৌকো সব ফিরে এল
ফেরেনি তো ওরা তিনজন।

বালিতে পায়ের দাগ মুছে দিল জোয়ারের জল,
একা একা ঘরে ফিরি
হা-হা করে চন্দনের বন।।
0
undefined undefined undefined

কবিতা - ঋজু রেজওয়ান

Posted in






বিজ‌য়ের সব মুহূ‌র্তেই...
                                      তার অ‌ধিকার!
কেন্দ্র হোক আর কেন্দ্রা‌তিগ ব‌লের আসন;

কেউকেউ বোরকায় রমনীয় স‌ঙ্গানুসঙ্গের;
ওহ‌মের কাছা ও কা‌ছির অ‌ভিবাবকসুলভ
নিঃশ‌ব্দে ব‌সে আছে... মিস না ম্যাডাম?

ক্লা‌শের সবাই উঠে দাঁড়াইল [ধর‌তে পা‌রেন]
নত-ই হইল
কোন সমস্যা দে‌খি না— Monotonously.
বেহালার স্টীলপ্লে‌টে যে স্ট্রিং, বাঁধায় বাজে।

সিল্কের মতই টানটান— উত্তেজিত গুনগুন
যেন, প্রান্তটি ধরেই নিয়ন্ত্রণও করছে কেউ!

তবুুও করছে দাবী, ভেতরের অদৃশ্য তরঙ্গ।
হাতের ভাঁজগুলিও খুলে গেল!
কেন জানি, শুকনো ঠোঁটেও বিজয় দেখছি..