কবিতা - সব্যসাচী রায়
Posted in কবিতা২৬ নম্বর গলির খুন
লাল, লাল, লাল—
পায়ের কাছে ঝুলে
বাদামি, বাদামি, বাদামি
অন্ধকার চামড়া।
মাথা কাত?
চোখের ইশারা?
একটি দৃষ্টি, এক বিনিময়—
না?
হুঁশ! রাত।
রাতপাখি ডাকে।
লাল, লাল, লাল—
ছিটকে পড়ে
বাদামি, বাদামি, বাদামি
অন্ধকার চামড়ায়।
বিপরীত যুক্তি
ফিকে আকাশের নিচে জন্ম— প্রকৃতির রসিকতার উত্তরাধিকার। রক্তের ভেতর মিশে থাকে মিষ্টি বিষ,
পতনশীল পাতারা অক্ষরে গাঁথে ভাঙা কবিতা। শকুনের মতো তীক্ষ্ণ ডানা মেলে উড়ি, পরিত্যক্ত হতে হতে বংশলতিকা হারিয়ে ফেলে। বৃক্ষহীন স্বপ্নের বনে হারিয়ে যাই প্রতিধ্বনির ভেতর, প্রতিটি কান্না যেন এক বিষাক্ত ইতিহাস- অপূর্ণতার রক্ত। একটি ছেঁড়া আত্মার পাশে লেখা টীকা: কফির দাগে মোড়ানো প্রান্তে লিখি গান, সিনেমার সংলাপ, পরিত্যক্ত স্বপ্ন। ডায়েরিটা ব্যর্থ মীম? একদিন ভাবতাম শব্দে পূর্ণ হবে শূন্যতা— ওটাকে আঁকড়ে ধরা ছিল ঝড়ে উড়তে থাকা কাগজের মতো। এখন প্রতিটি কমা টেনে নেয় ভুলে যাওয়া, অর্ধেক স্মৃতির দিকে। একটা বাজারের তালিকা, হয়ে যায় নৈরাজ্যের অঙ্গীকার, আশার শেষ টুকরো উড়ছে তার ফাঁকে ফাঁকে। একবার মধ্যরাতে বসে ছিলাম— নিজের হাতের লেখায় হারিয়ে যেতে যেতে বুঝলাম, বিশ্ব আসলে পরোয়া করে না।
ম্লান ছায়ার প্রাসাদ
একদিন আয়নার রাজ্য গড়েছিলাম,
তারারাও ভেঙে পড়েছিল সেখানে—
ভুলে যাওয়া প্রতিশ্রুতির মতো।
সিংহাসন ছিল বাঁকা হাসি,
নিয়ন চাঁদের নীচে দাঁড়িয়ে থাকা একটা ছায়া।
কলামগুলো ছিল পুরাণের গল্প,
যা ভেঙে পড়ে, একটা ব্যর্থ স্বপ্নের মতো।
গৌরব এখানে কেবলই বিদ্রূপের প্রতিচ্ছবি,
নক্ষত্রেরা কপালে বসে ঠাট্টা করে।
একদিন নিজেই নিজের রাজ্য ছিলাম—
শুধু জানতে পারিনি, আমার মুকুটটাই ছিল একটা ব্যঙ্গ।
পরমাণু তিমি
একটা সংবাদ শিরোনাম দেখলাম,
যেন খারাপ স্বপ্নের মতো—
পরমাণুর তিমিরা সাঁতার কাটছে বিশৃঙ্খলার গভীরে।
আমরা বেঁচে আছি ধার করা সময়ের ওপর,
ভাগ্যের ছেঁড়া পাতায় লিখিত একটা ছোট ভুল।
ক্ষমতার জাদুকরেরা তাদের কারসাজি চালিয়ে যাচ্ছে,
একটা সার্কাস,
যেখানে বড় বড় কথারা ভেঙে পড়ে,
রাতের মীম হয়ে যায়।
একটা সস্তা বিয়ার চুমুক দিই, মাথা নাড়াই,
ভাবি
অচেনা মুখ: অস্থিরতার আয়না
জানো না তুমিই লক্ষ্যবিন্দু
নিঃসঙ্গ এক ছায়া দাঁড়িয়ে থাকে
শীতের বাতাসে কাঁপে চোখের পাতা
মুহূর্তটা পুরোটাই আমাদের
একটা খেলা, কিছুটা লোভ
আর শরীরের বোবা কৌতূহল
ভোর হতেই হয়তো শেষ হবে
কারণ শরীর প্রেম বোঝে না
প্রত্যেক স্পর্শের সহযাত্রী হতে পারে ভালোবাসা?
0 comments: