0

সম্পাদকীয়

Posted in








একটি গান কোনও এক বিশেষ ভাষাগোষ্ঠীর অধরাশ্রয়ী হয়ে উঠেছে, এমন ঘটনা বিরল নয়। কিন্তু একটি বা দুটি গান রচনা করে, সেগুলিতে সুর এবং কন্ঠ দিয়ে একটি সংস্কৃতিতে চিরন্তন জায়গা করে নেওয়া সহজ কথা নয়। ভিড়ের মধ্যে অনায়াসে অনেক অগুনতি মাথার সঙ্গে অবলীলায় মিশে যেতে পারতেন যিনি, সেই সদ্যপ্রয়াত প্রতুল মুখোপাধ্যায় ঠিক এই রকমই এক উদাহরণ হয়ে রইলেন।

তাঁর নিজস্ব অননুকরণীয় উচ্চারণে তিনি যখন গেয়ে ওঠেন, 'পুবের আকাশ রাঙ্গা হল সাথী/ঘুমায়ো না আর' তখন আর এগুলি কোনও গানের পংক্তি থাকে না। রচয়িতা, সুরকার আর গায়কের স্তর ছাপিয়ে জেগে থাকে সচেতন একটি মানুষের অস্তিত্ব।

২০১৬ সালে বব ডিলানকে সাহিত্যের নোবেল প্রদান নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। কিন্তু নোবেল কমিটি তাঁদের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। সত্যি বলতে কী, উৎকৃষ্ট কবিতার পরম আশ্রয়েই তো একটি গান হয়ে ওঠে সঙ্গীত। সেই অর্থে গান রচনা তো সাহিত্যচর্চাই!

এ বছর ১৭ ফেব্রুয়ারি ১২৬ বছর পূর্ণ করলেন জীবনানন্দ দাশ। ঠিক তার দুদিন আগেই থেমে গেল প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের হাঁটা। প্রসঙ্গত দুজনেরই জন্ম অবিভক্ত বঙ্গের বরিশালে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য যে অঞ্চলের খ্যাতি সুবিদিত। প্রতুলের মননও কি জীবনানন্দের মতো ছেয়ে নেই সেই অপরূপ প্রকৃতি? শেষ বিচারে তিনিও তাই এক অনন্য ভাষাশিল্পী।

আজ ভাষাদিবসে এই ভাবনা খুব সঙ্গত মনে হল।

সুস্থ থাকুন, দায়বদ্ধ থাকুন।

শুভেচ্ছা অফুরান।

0 comments: