3

মুক্তগদ্য - শর্মিষ্ঠা ঘোষ

Posted in


মুক্তগদ্য


ঠাকুর 
শর্মিষ্ঠা ঘোষ



রবিঠাকুরের আপন দেশে কবির গুমোর সর্বনেশে। কবির মেঘ করলে প্রতিটি শস্যকণার মুখে ছায়া পড়ে। অন্নদাতা জলচিত্র চালচলন বদলে ফেলে দ্বীপান্তরী হয়। কবি রোদ্দুর বললে দেশোয়ালি ঘরকন্নায় চুলা জ্বলে। নিকোনো দাওয়ায় এসে বসে বাউলের উদাত্ত টান। জেগে ওঠে কুলুঙ্গিতে ঠাকুর বানিয়ে রাখা কবির মাটির বিশ্বাস। টাইট জিন্সের ছেলেটি টুইট করে খুশিয়ালি। প্রবাসী মেয়েটির গিটারে টুংটাং চাঁদের পাহাড়ের দূর। আগুন আর জল করমর্দন করে। বিয়োগান্ত দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ব্রহ্মসঙ্গীতের শান্তি। চলুন, এবার কবির অন্তরমহলে তাকাই। উনকোটি চৌষট্টি লক্ষ অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে জেরবার কবি শ্যাম রাখতে রাখতে কুল হারাতে হারাতে ন্যানো সুযোগের ছলাৎছলেই ভেসে যাচ্ছেন কয়েক নটিক্যাল। গোবেচারা অনুরাগী ফ্যালফেলিয়ে দিক্‌ভ্রান্ত হচ্ছে। ‘তারে ধরি ধরি মনে করি, ধরতে গেলে আর মেলে না’। উদয়াস্ত টান টান স্নায়ু যাপনের মিঠেকড়া পাকে চুবিয়ে রেকাবিতে থরে থরে সাজানো যেন রথের মেলায় ভাজা জিলিপি পাঁপড়। রথের রশি টানতে টানতে কবির কপালে বিন্দু বিন্দু পরিশ্রম। রথে অধিষ্ঠিত দেবতারা আলাদা করে কবিকে বর দেবেন না। সমষ্টির ওপর শান্তিজল ছেটালে কবির জোব্বায় এসে লাগবে ছিটেফোঁটা। হারানোর হাহাকার কবিকে বলতে নেই। কবির কেবল সান্ত্বনা হতে হয়। কবির কেবল ঠাকুর হতে হয় বেঁটে মানুষদের চোখে।


3 comments:

  1. শেষের লাইন্দুটো সব কথা বলে দিল। খুব ভাল

    ReplyDelete
  2. এরকম আগুন আর জলের আরো আরো করমর্দনের তেষ্টা নিয়ে রইলাম। - পল্লব

    ReplyDelete