0

বিশেষ প্রতিবেদন: সিয়ামুল হায়াত সৈকত

Posted in




বিশেষ প্রতিবেদন



ক্যান্সার হাসপাতাল, হুমায়ূন আহমেদের স্বপ্ন এবং …
সিয়ামুল হায়াত সৈকত



একটি স্বপ্ন। হ্যাঁ, পরিস্কার একটি স্বপ্ন দেখেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। বাংলাদেশ হবে ক্যান্সার চিকিৎসার পীঠস্থান। স্বপ্নটি বোধহয় একটু বড়। কিন্তু স্বপ্ন দেখতে দোষ কি? যেখানে স্বপ্ন পূরণ হওয়াও দূরের কিছু নয় (!)

হুমায়ূন আহমেদ ২ নভেম্বর ২০১১-এ প্রথম আলোতে 'নো ফ্রি লাঞ্চ' শিরোনামে
একটি মর্মস্পর্শী লেখা লিখেছিলেন। লেখাটির শেষ দিকে তিনি বাংলাদেশে একটি বিশ্বমানের ক্যান্সার হাসপাতাল ও গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের স্বপ্নের কথা জানিয়েছেন। লেখাটির শেষটুকু ছিল এরকম -

'সর্বাধুনিক, বিশ্বমানের একটি ক্যানসার হাসপাতাল ও গবেষণাকেন্দ্র কি বাংলাদেশে হওয়া সম্ভব না? অতি বিত্তবান মানুষের অভাব তো বাংলাদেশে নেই। তাঁদের মধ্যে কেউ কেন স্লোয়ান বা কেটারিং হবেন না? বিত্তবানদের মনে রাখা উচিত, কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ব্যাংকে জমা রেখে তাঁদের একদিন শূন্য হাতেই চলে যেতে হবে। বাংলাদেশের কেউ তাঁদের নামও উচ্চারণ করবে না। অন্যদিকে আমেরিকার দুই ইঞ্জিনিয়ার স্লোয়ান ও কেটারিংয়ের নাম তাঁদের মৃত্যুর অনেক পরেও আদর-ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে সমস্ত পৃথিবীতে স্মরণ করা হয়। আমি কেন জানি আমেরিকায় আসার পর থেকেই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি, হতদরিদ্র বাংলাদেশ হবে এশিয়ায় ক্যানসার চিকিৎসার পীঠস্থান। যদি বেঁচে দেশে ফিরি, আমি এই চেষ্টা শুরু করব। আমি হাত পাতব সাধারণ মানুষের কাছে ।' 

-লেখাটিতে হুমায়ূন আহমেদের ইচ্ছে আর অভিব্যক্তি সম্পূর্ণ রূপে পরিস্ফুটন ঘটেছে। কেন সম্ভব নয়? প্রশ্ন জাগে আমারও। বাংলাদেশে ব্রাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবিদ, ম্যান পাওয়ার এক্সপোর্ট ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা মুসা বিন সামসুর, বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ আকবর সোবাহান, সাচৌ এর প্রতিষ্ঠাতা আবুল হোসাইনের মতো উচ্চবিত্তশ্রেণীর লোকদের একটু সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গিই গড়ে তুলতে পারেন সবচেয়ে চমৎকার আর প্রথম শ্রেণীর একটি ক্যান্সার হাসপাতাল। তাছাড়া বাংলাদেশ উন্নত নয়, উন্নয়নশীল। এদেশের বড় বড় হর্তাকর্তারা তা ভালো করেই জানেন। জানেন চিকিৎসার জন্য কতটুকু অসহায় চাহনি নিয়ে চিকিৎসকের দ্বারে ঘুরে মরতে হয় শ্রেণীবৈশম্যময় মানুষগুলোর। 

হুমায়ূন আহমেদ পথদৃষ্টা হিশেবে আছেন, কাজ আমাদের। হর্তাকর্তাদেরও। যে বীজ রোপণ করা হয়েছে একটু সাহায্যের হাত পেলেই তা বড় করা সম্ভব। জানা আছে মানুষের মন থেকে কখন এতখানি আকুতি বের হয়। ওনার জীবদ্দশায়; দুরারোগ্য ক্যান্সারের চাপে মস্তিষ্কের বিভুঁই কি সব কাজ করেছে, তা না হলে এমন একজন লেখক হাত পাতার কথা বলেন? 

হুমায়ূন আহমেদ একজন স্বপ্ন তৈরীর কারিগর। স্বপ্নের সাথে বুনে দিয়েছেন ইচ্ছেও। তার প্রত্যেকটি লেখায় আমরা ইচ্ছের প্রতিচ্ছবি পেয়েছি। ইচ্ছের মৃত্যু হয়না। ইচ্ছেরা বাঁচে। আমরাই পারি বাঁচাতে। হুমায়ূন আহমেদের স্বপ্নযাত্রা কখনই বিফল হবেনা একজন হুমায়ূন ভক্ত হিশেবে বলছি। হ্যাঁ, সাহায্যের খুব দরকার। আছেন কেউ পাশে ?

0 comments: