0

কবিতা: সাঈদা মিমি

Posted in


কবিতা

কীর্তনখোলা
সাঈদা মিমি




কীর্তনখোলা ১
সে নিস্কলঙ্ক, অধরা
মসলিন, তার আকাশে
আমি রেবতি, বুকে
মাঘধোঁয়া, উড়ছে কিশোরী,
এগারোয় প্রথম
চিনেছি দেবীস্রোত ।



কীর্তনখোলা ২

অন্ধকার তখনও ডোবেনি,
এ্যাটলাস সান? এখুনি
ভিড়বে, তোড়জোড়, দড়াদড়ি
ছুঁড়ে দেয় ক্লান্ত নাবিক,
'নোঙর লাগা রে মন' মুচড়ানো
তেরপল, জেগে থাকা ডেক ।



কীর্তনখোলা ৩

কার্তিকের ডুবোচরে
সাঁতরায় হাঁড়িচাচা দল,
কাশের শুভ্রসুখ মিশে
গেছে কালোর আঁচড়ে,
বৃষ্টিশেষ.. বিহ্বল ইনুচের
বাপ, ঘের ভাঙা
বাঁশচটি ভেসে গেছে
পলাতক চিংড়ির সাথে ।


কীর্তনখোলা ৪

আদিম সন্ধ্যাচরে পরিযায়ী
বালিহাঁস, সূর্য পশ্চিমনগরে-
হোগলানিবিড়ে ঢাকা
চর উপেন, লুকিয়ে রাখা
ডিমে স্বপ্নচখা, নিরালা উষ্ণতায়...
ডোবে নদী ও আঁধার ।



কীর্তনখোলা ৫

বলেছি তো হোগলার
বনে, ধারের গহনে বসে
দু'পেয়ে শ্বাপদ, দিশি
চোলাইয়ের গন্ধে থেমে
চলে জননীর ঢেউ, বিক্রীত
নারীদেহ পড়ে থাকে
অচল জমিনে,
ভেসে যায় বাগানের চাঁদ ।



কীর্তনখোলা ৬

ইলশে রঙের নদী-
জলঘোলা
স্নানে আজ বিভিন্ন বয়স,
খেয়ার উজান - ভাটি...
বেদেবহরের পাশে
গয়নার নৌকা এসে
খুলছে বাদাম ।



কীর্তনখোলা ৭ 

খেয়াঘাটে বৈশাখ; সুন্দরী
ভয়, আকাশে লেপ্টে
থাকা কৃষ্ণগহ্বর, আলের
বিজনে ছুটি উড়ছে মাথাল,
সবুজ ওড়না
আর আসক্তি অচেনা ।



কীর্তনখোলা ৮

হেলানো ধঞ্চের ডালে
চড়ুই নর্তক,
গুচ্ছগ্রামের ঢালে হিজল
সুন্দরী, হরবোলা
দামা পাখি পেয়ে গেছে
পোকাদের খনি,
তন্বি ঢেউয়ের চূড়া, ভেসে
চলে হিজলের ফুল ।



কীর্তনখোলা ৯

মরশুম ছলকায়,
চোখামুখো ইলিশের
নৌকাজটলা,
ব্যাপারীর হাঁকঝড়...
মাতোয়ালী
ঘ্রাণের বাজার ।



কীর্তনখোলা ১০

নাইওরী যায়নি গেলো শীতে
মাহিনুর, নদীস্নানে ভেসে
ওঠে মায়ার উঠান,
কচুরিপানার দল শেকড়েরা
মাটিকে চেনে না

0 comments: