0

সম্পাদকীয়

Posted in

সম্পাদকীয়



শূন্য করে ভরে দেওয়া যাহার খেলা
তারি লাগি রইনু বসে সকল বেলা...


হেমন্তের মাঠে মাঠে কবিতার পংক্তিগুলি গেয়ে ফেরে নবান্নের গান। আমার সব খোয়াবার সময় বুঝি হলো এবার...

দেখতে দেখতে পাঁচ বছর পেরিয়ে চার মাস। অর্থাৎ ষষ্ঠ বর্ষ, চতুর্থ সংখ্যা বা চৌষট্টিটা সংখ্যা। অনেক লেখা, অনেক লেখক। গুচ্ছ গুচ্ছ লেখা আসে প্রতিনিয়ত। তবে তার চেয়েও বড়ো কথা হলো গুচ্ছ গুচ্ছ লেখা বাদ পড়ে প্রতিনিয়ত। কিন্তু কেন? লেখার মান বা অন্য কারণ বাদ দিলে মূলত যে কারণটা পড়ে থাকে, তা হলো 'বানান'। বলতে খারাপই লাগছে... প্রতি মাসে বেশ কিছু লেখা বাদ পড়ে শুধু ওই কারণেই। আর, সবচেয়ে বড়ো কথা হলো, এই বাদ-পড়া লেখাগুলোর মধ্যে অনেকগুলো বেশ ভালোই লেখা। আফসোস হয়, কিন্তু নিরুপায়। এত বানান এডিট করা অসম্ভব।   

এমনিতে, বাংলা ভাষায় লেখার হার সর্বাত্মকভাবে যেমন বেড়েছে, তেমনই বাংলা বানানের মান হতাশাজনকভাবে নিম্নগামী হয়েছে, একথা অনস্বীকার্য। কিন্তু তাই বলে হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। বাংলা বানানের মানোন্নয়নের দায় গ্রহণ করতে হবে সর্ব্বস্তরেই। এবিষয়ে সামান্য ক'দিনের অভিজ্ঞতার ফলপ্রসূ কিছু সাজেশন রাখতে পারি এখানে, যদি কারোর কাজে লাগে, এই ভেবে --

প্রথমেই বলি, একটা অভিধান হাতের নাগালে রাখুন সবসময়। ণত্ববিধি - ষত্ববিধিটা একবার ঝালিয়ে নিলে বানান ভুল অনেকটা কমে - বাংলা বানানের এটা খুব গোলমেলে একটা অধ্যায়। এছাড়া, আমরা ঋতবাকে কিছু বানান বিধি মেনে চলি, যেগুলো একবার বুঝে নিলে বানান ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কমানো যায়। যেমন, হল - লাঙ্গল অর্থে, হলো - হইলো অর্থে; হত - নিহত অর্থে, হতো - হইতো অর্থে; ভাল - ললাট অর্থে, ভালো - উত্তম অর্থে। এ তো (এতো নয়) - এই তো অর্থে, এত - অনেক অর্থে। তেমনই ছোটো (ছোট-এর ব্যবহার -  হেঁটে গেলে ধরতে পারবি না, ছোট), বড়ো (বড়ো দাদা, কিন্তু সম্বোধনে - বড়দা), ইত্যাদি প্রভৃতি। আসলে এগুলো আমরা সবাই জানি, লেখার সময় খেয়াল থাকে না কেবল। কিন্তু খেয়ালটা এবার থেকে রাখতে হবে সচেতনভাবেই। 

লেখার সময় আরও একটা বিষয়ে সচেতন হতে হবে, সেটা হলো পাংচুয়েশন বা যতিচিহ্ন। আমরা সবাই জানি, পাংচুয়েশন ছাড়া লেখা অর্থহীন। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে - কোনও পাংচুয়েশনের আগেই স্পেস হয় না। একই নিয়ম খাটে ওপেন ইনভার্টেড কমার পরে এবং ক্লোজ ইনভার্টেড কমার আগে; দু'ক্ষেত্রেই স্পেস হয় না। 

গদ্য এবং পদ্য লেখার ক্ষেত্রেও একই শব্দের ভিন্নরূপে প্রয়োগ প্রচলিত। যেমন,

পদ্যে - সাথে, গদ্যে - সঙ্গে 
পদ্যে - আজি, গদ্যে - আজই
পদ্যে - তেমনি, গদ্যে - তেমনই
ইত্যাদি এবং ইত্যাদি...

এবারের ঋতবাক সংখ্যায় অনেক বানান ভুল। এবার থেকে আমি আর বানান ভুল ঠিক করবো না। এখন থেকে আপনাদের নিজেদের পত্রিকার মান রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের নিজেদেরই। নিজেরাই এডিট করে পাঠান আপনাদের লেখা। একমাত্র সচেতনতাই পারে সুঅভ্যাস গড়ে তুলতে। 

আমি আশাবাদী।

সুস্থ থাকুন, সৃষ্টিতে থাকুন, আনন্দে থাকুন

শুভেচ্ছা নিরন্তর 

0 comments: