ধারাবাহিক : সুজিত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়
Posted in ধারাবাহিক
ধারাবাহিক
এক কিশোরীর রোজনামচা ৩
সুজিত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়
Diary Entry - 01
14th. June 1942, Sunday.
শুক্র বার ১২ই জুন, সকাল ছ’টার সময় আমার ঘুম ভাঙল। এত তাড়াতাড়ি ঘুম ভাঙার জন্য অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ ঐ দিনটা ছিল আমার জন্মদিন। তা’না হলে অত তাড়াতাড়ি, সকাল ছ’টার ঘুম ভাঙা, আমার রোজকার অভ্যাস বা রেওয়াজের মধ্যে নেই। এমন’কি বাড়ীর বড়রাও অত সকালে আমাদের উঠতে দেন না। তাই কিছুটা সময়, প্রায় সকাল পৌনে সাতটা পর্যন্ত, ইচ্ছা না থাকলেও জন্মদিনের সমস্ত উৎসাহ আর কৌতুহলকে চেপে, আমায় বিছানায় শুয়ে থাকতে হল। কিন্তু বেশিক্ষণ কৌতুহল আর উৎসাহ চেপে রেখে বড়দের কথায় বিছানায় শুয়ে থাকা আমার পক্ষে অসম্ভব ছিল। পৌনে সাতটা নাগাদ উঠে, প্রথমেই গেলাম আমাদের খাবার ঘরে। সেখনে গিয়ে দেখি, আমাদের পোষা বিড়াল ‘মোটজী’ (Moortje) এমন ভাবে বসে আছে, যে, মনে হল যেন আমার জন্যেই অপেক্ষা করছে। আমি যাওয়া মাত্র আমার কোলে ঝাঁপিয়ে এসে উষ্ণ অভ্যর্থনায় আর আদরে আমায় ভরিয়ে দিল।
1942 সালে অ্যানিরা এই বাড়িতে থাকত। এখান থেকেই
তারা সপরিবারে আত্মগোপন করে 1942-র জুলাই মাসে।
সাতটার পর আমি আমার মা বাবার কাছে গেলাম। মা বাবা আমায় বসতে বললেন, কিন্তু তাঁদের কথা কিছুটা অগ্রাহ্য করে আমি বসবার ঘরে গেলাম। সেখানে তুমিই অপেক্ষা করছিলে আমায় প্রথম উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর জন্য। বলতে দ্বিধা নেই, তোমার অভ্যর্থনা, অন্তত আমার কাছে, সকলের থেকে আলাদা। বসবার ঘরে টেবিলের দিকে তাকিয়ে দেখি, সেখানে এক গুচ্ছ গোলাপ, কিছু গুল্ম আর সাদা, লাল, গোলাপী ফুলের স্তবক রাখা আছে। সেদিন প্রায় সারাদিন ধরে এ’রকমই নানাকিছু উপহার আমার জন্যে এসেছিল।
মা বাবার কাছ থেকেও সেদিন নানারকম উপহার পেয়েছিলাম। ইতিমধ্যে অবশ্য তার অনেককিছুই বন্ধুদের সাথে খেলার সময় নষ্ট হয়ে গেছে। তবে এ’ছাড়াও আমি বেশ ভালো ভালো কিছু উপহার পেয়েছিলাম। যেমন, অবসকিউরা (Obscura) ক্যামেরা, একসাথে সবাই মিলে খেলার মত কিছু গেম, মিস্টি, চকলেট, ধাঁধাঁর বই, ব্রঊচ, জোসেফ কোহলের লেখা “Tales and Legends of the Netherlands”, “Daisy’s Mountain Holidays” নামে দুটো দুর্দান্ত বই। এ’সব ছাড়াও কিছু আর্থিক উপহারও পেয়েছিলাম। তখনই ঠিক করে নিয়েছিলাম, এই টাকাটা দিয়ে আমি “The Myths of Greece and Rome” বইটা কিনব। সত্যি ব্যাপারটা দারুণ হবে !
কিছুক্ষণ পরেই, আমার বন্ধু লীস (Lies) আমায় স্কুলে যাওয়ার জন্যে ডাকতে এল। আমরা দুজনে একসাথে স্কুলে যাই। সেদিন স্কুলে গিয়েও অনান্য বন্ধুদের সাথে একসাথে আমার জন্মদিন পালন করা হল। ওদের সবাইকে আমি আমার থেকে মিস্টি, বিস্কুট খাওয়ালাম। এ’ভাবেই টিফিন সময় কাটিয়ে, টিফিন শেষ করে আমরা আবার ক্লাসে চলে গেলাম।
ব্যাস, অনেক কিছু লেখা হল। এবার সবাইকে গুডবাই জানিয়ে আমরা সবাই একসাথে শুতে যাব।
টীকা - লীস - অ্যানির স্কুলের বন্ধু। অ্যানিদের বাড়ীর পড়শি।
শুরু হল অ্যানির নিজের উপলাব্ধি প্রকাশ করার পর্ব যার সারলতা সত্যি উপভোগ করার মত । পরবর্তী পর্যায় এর অপেক্ষায়ে রইলাম।
ReplyDeleteভাল লাগল। এ এক নতুন অভিজ্ঞতা। ছোট কিশোরীর চোখ দিয়ে ক্ষমতালোভীর অমানবিক যুখ দেখার অভিজ্ঞরা।
ReplyDeleteভাল লাগল।এ এক নতুন অভিজ্ঞতা। ছোট কিশোরীর চোখ দিয়ে ক্ষমতালোভীর অমানবিক মুখ দেখার অভিজ্ঞতা।
ReplyDeleteIts really good
ReplyDeleteLike to read other episode. How can I get. Pl.state in FB
ReplyDeleteএই ধরণের প্রচেষ্টা ওয়েভ জার্নালের এই প্রচেষ্টা শুধু সাহসি নয়, অভিনব।প্রশংশা করতে হয় কতৃপক্ষের রাজনৈতিক চেতনা। আমি পড়তে চাই। প্রশ্ন নিয়মিত প্রকাশিত হবে ত ? নাকি মাঝপথে বন্ধ হয়েযাবে না ত'?
ReplyDelete