1

ব্যক্তিগত গদ্য - শর্মিষ্ঠা নাহা

Posted in


ব্যক্তিগত গদ্য


আমি তোমার বিরহে রহিব বিলীন...
শর্মিষ্ঠা নাহা



(১)
কে গো? কে এলে? ওই শ্যামলাবরণ, পদ্মপলাশ আঁখি, কে তুমি পীতাম্বর? তুমি কি আমার কানু? আমার দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আমার সঙ্গে আবার মিলিত হতে এসেছ? এসো গো। তোমার জন্য সেই সে দিনের পর থেকে আজ দীর্ঘ বছর অপেক্ষা করে আছি।

কানু, আমার কথা তোমার আজও মনে আছে দেখে বড় বিস্ময় জাগছে! হ্যাঁ, এই আগাছার জঙ্গলটাই সে দিনের সেই কুঞ্জ। তুমি দেখছি পথ চিনে ঠিক চলে এসেছ!

আমাকে চিনতে পারছ কি তুমি? যমুনায় নিজের ছায়া দেখে আমি নিজেই বিশ্বাস করতে পারি না। হ্যাঁ গো, আমিই তোমার সেই রাধা। তোমার শ্যামল দেহের উপর বিপরীত রতিবিহারে আমার যে উজ্জ্বল গাত্রবর্ণ শাঁওন মেঘের বুকে বিদ্যুতের পীতরেখা বলে ভ্রম হতো, তা আজ পাঁশুটে হয়ে গেছে। সে দিন মিলনের শেষে আমার যে ময়ূরপাখার মতো ঘন কেশদাম তুমি বিবিধ কুসুমে সযত্নে সাজিয়েছিলে, তা আজ পক্ক জটায় পরিণত। যে স্তনসন্ধিতে চন্দন লেপন করে দিয়েছিলে, সেই স্তনযুগল আজ শিথিল, নিম্নমুখী। যে সরস জঙ্ঘায় তুমি খসে যাওয়া মেখলা পুনর্বিন্যস্ত করে দিয়েছিলে, তা আজ শুষ্ক, অনুভুতিহীন। সেই চরম রাতে আমার স্বামী কুঞ্জদ্বারে এসে আমাদের দু’জনকে মিলিত অবস্থায় হাতেনাতে ধরে ফেলার পর তুমি যখন যমুনার জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁতরে পার হয়ে মথুরা চলে গেলে, তিনি আমাকে কলঙ্কিনী বলে জন্মের মতো ত্যাগ করলেন। সেই থেকে আমি এখানেই। ভিক্ষাই আমার একমাত্র বৃত্তি। কোনওদিন ভিক্ষা পেলে ভাল, না পেলে অভুক্তই থাকি। আজকের গোপবালকেরা আশেপাশেই গোরু চরায় বাঁশিতে ইচ্ছেমতন সুর তুলে। তারা আমাকে এক পাগলি বলেই জানে। তারা কেউ আমার নাম জানে না।

তারা সবাই তোমার নাম জানে। তাদের কথাবার্তায় শুনতে পাই। মথুরা নরেশ শ্রীকৃষ্ণ। এই বৃন্দাবনের তিনি ভূমিপুত্র বলে তাদের কত গর্ব। তিনি কুরুক্ষেত্রের বিজেতাদলের অর্জুনের রথের সারথিবেশে প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধ নিয়ামক। যশোদা-নন্দের পালিত পুত্র, তিনি বৃন্দাবনের সম্পদ।

(২)
কানহাইয়া, এক দিন সমগ্র বৃন্দাবনবাসীর মত আমিও তোমাকে গভীর ভালোবেসেছিলাম। এক বৃষ্টি-দুর্যোগপূর্ণ রাতের শেষে সে এক নির্মল ভোর। খবর এল প্রতিবেশিনী যশোদার কোল আলো করে জন্ম নিয়েছে এক শিশুপুত্র। ছুটে গিয়ে তার মুখ দেখে বুক জুড়িয়ে গিয়েছিল। আমি তখন সদ্য কিশোরী। সবে বৌ হয়ে এ পাড়ায় এসেছি। মনে মনে কামনা করেছিলাম যেন আমারও কোল জুড়ে এমন ধন আসে।

তুমি তখন কোলেরটা। এক দেহাতি মেয়েছেলে দূরদেশ থেকে আসার পথশ্রমের ক্লান্তির আছিলায় তোমাদের ঘরের দাওয়ায় বসে তোমাকে নিজের দুধ খাওয়াতে গিয়েছিল। তুমি সদ্য ওঠা চারটে দাঁত দিয়ে তার স্তনবৃন্ত কামড়ে হা হা করে হেসে উঠেছিলে। ছেলেপিলে অমন একটু করেই থাকে। কিন্তু, তোমার কামড়টায় অন্য কিছু ছিল। ওই মেয়েছেলে, পুতনা, ব্যাথায় নীল হয়ে ছটফট করতে শুরু করেছিল। সেই বিকট আওয়াজে আমরা সবাই ছুটে এসে দেখি, তার স্তনবৃন্তে বিষ মাখানো। মনে ভেবেছিলাম গোকুলের শিশুদের হত্যা করার এ এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র। সমবেত জনতার গণপিটুনিতে মৃত্যু হয় পুতনার। তুমি হয়ে উঠেছিলে গোকুলের সকলের নয়নের মণি।

তখন তুমি নেহাত বালক। বৃন্দাবনের শান্ত জনপদের ওপর চোখ পড়েছিল আদিবাসী নেতা নাগরাজ কালীয়র। মাঠেঘাটে সহচরদের সঙ্গে খেলা করতে করতে কিভাবে তুমি তার গোকুলের ওপর আক্রমণের পরিকল্পনা জেনে গিয়েছিলে। তোমার মুখে এ কথা শুনে গোপরা সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলে নাগবাহিনীকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে নাগরাজ কালীয়কে হত্যা করেছিল। কালীয়র মৃতদেহের পাশে তোমার সেই উদ্যাম বিজয় নৃত্য যে দেখেছে, কোনওদিন ভুলতে পারবে না। 

এক বার টানা অনেক দিন মুষলধারে বৃষ্টি বৃন্দাবনকে ভাসিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু বৃন্দাবনের জনজীবন তত ক্ষতিগ্রস্ত হয় নি। গোধন সমেত সমস্ত বৃন্দাবনবাসীর লোকালয় ত্যাগ করে নিকটবর্তী গিরি গোবর্ধনের গুহাগুলিতে বাস করার পরিকল্পনা কথায় কথায় তুমিই বলেছিলে। গুরুজনেরা বালকের কথা মেনে নিয়েছিলেন মাত্র।

কেশব, তুমি বুদ্ধিমান, মেধাবী ছিলে বটে, কিন্তু বড় দুর্বোধও ছিলে। একরত্তি হলে কি হয়, তোমার দৌরাত্ম্যে বৃন্দাবনের সক্কলে অতিষ্ঠ ছিল। এমন কোনও ঘর ছিল না যাদের ননীর হাঁড়ি ভেঙে তুমি তোমার সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে চুরি করে খেয়েছো। বাকি গোপবালকেরা তোমায় শুধু সঙ্গ দিত। তুমি ছিলে আসল পালের গোদা। আমরা সবাই তোমার এই দৌরাত্ম্য হাসিমুখেই সহ্য করতাম। 

কিন্তু, সহ্য করতে পারি নি যমুনার ঘাটে স্নানরত গোপনারীদের বস্ত্র লুকিয়ে রেখে গাছের ওপর থেকে তাদের স্নান দেখা। কোনওমতে বস্ত্র আদায় করে নিজেদের একটু সম্বৃত করে তোমার পিতার কাছে নালিশ জানাতে গিয়েছিলাম।

নন্দ আর যশোদা মাথা হেঁট করে সে দিনই বলেছিলেন, তুমি গোপকিশোর নও। তোমার দেহে রাজরক্ত আছে। তুমি মথুরারাজ কংসের ভাগিনেয়। তুমি সম্ভাব্য কংস-হন্তা। পাপের বিনাশ হেতু ওঁরা নিজেদের সদ্যজাত কন্যাসন্তানের প্রাণের বিনিময়ে তোমাকে লালনপালন করে চলেছেন।

মাধব, আমরা তোমার এই আচরণের প্রতিবাদ করলে কি হবে, যমুনাতীরে যখন তুমি বাঁশি বাজাতে, আমাদের সকলেরই বুকের মধ্যে কেমন তোলপাড় করে উঠত। জল নেওয়ার আছিলায় যমুনায় ছুটতাম। তুমি আমাদের একেবারে পাত্তা না দেওয়ার ভান করতে। ওই নিতান্ত কৈশোরেই প্রেমিকপ্রবর ছিলে যে তুমি।

এমনি এক রাতে তোমার বাঁশির অমোঘ টানে আমি যমুনার তীরে চলে গিয়েছিলাম। কেউ জানতেও পারে নি। এয়োতির চিহ্ন পায়েল দুটিকে চীরবসনে বেঁধে নিয়েছিলাম যে। 

তুমি আমারই পথ চেয়ে ছিলে। সে দিন আর বাঁশির সুরে সুরে নয়, সরাসরি বলেছিলে গোপন ইচ্ছার কথা। কে জানে, ফুলের মত গোপকিশোরীদের ফেলে আমাকে কেন।

ততদিনে আমার কপালে লেগে গেছে বাঁজা মেয়েছেলের কলঙ্ক। দুঃসহ জীবনযাপন। স্বামী একই ছাদের নীচে থেকেও অনেক অনেক দূরে। তোমার ডাক আমার বদ্ধ জীবনে এক ঝলক টাটকা বাতাস ছিল। আমি তোমার প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলাম। তারপর এমন অনেক নৈশাভিসার আমাদের জীবনে এসেছে।

বিধাতা পুরুষের শরীরে কৌমার্যের আলাদা করে কোনও চিহ্ন রাখেন নি। কিন্তু, আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছিলাম, তোমার সেই প্রথম রমণী-সঙ্গম। 

এই মিলনকুঞ্জ সাক্ষী। তারপর কতবার এমন রাত এসেছে আমাদের দু'জনার জীবনে। আমি, সেই ভরপুর কামনার জ্বলন্ত আগুন নিয়ে জ্বলতে জ্বলতে শেষ হয়ে যেতে বসা আমি, তোমাকে পেয়ে উজাড় করে দিয়েছিলাম। অনেক অনেক সুখে ভরিয়ে দিয়েছিলাম তোমায়। তুমিও ক্রমশ নবীন কিশোরটি থেকে এক নটবর নাগরে পরিণত হয়ে উঠছিলে।

আমি ভুলে গিয়েছিলাম, এ সব কথা চাপা থাকতে পারে না। কে বা কারা আমাদের দেখে ফেলে আমার স্বামীকে বলে দিয়েছিল।

সে দিন সেই পরম সুখের শেষে আমার অবিন্যস্ত কেশপাশে অঙ্গুলি সঞ্চালন করে কিছুটা বিন্যস্ত করে স্থানচ্যুত মেখলা যথাস্থানে ফিরিয়ে দিয়ে তুমি নিজেকে আচ্ছাদিত করতে যাচ্ছ, এমন সময় কুঞ্জে প্রবেশ করলেন ভগ্নদূতবেশী আমার পতিদেব। তুমি প্রায় সেই অবস্থাতেই যমুনায় ঝাঁপিয়ে পড়লে। আমার স্বামী আমাকে তিরস্কার করে কত কি বললেন, আমাকে সে সব স্পর্শও করল না। আমি কুঞ্জে শুয়ে তোমার সঙ্গ সুখের কথা ভাবতে লাগলাম।

মাধব, আমি ভেবেছিলাম, ওই শয্যাতেই তোমার স্পর্শ সারা শরীরে মাখা অবস্থায় প্রায়োপবেশনে জীবন ত্যাগ করব। কত দিন, কত রাত সেইভাবেই ছিলাম মনে পড়ে না। কিন্তু মৃত্যু যে এল না। ফিরে এল জঠরে ক্ষুধার অসহ্য অনুভুতি। এল দীর্ঘদিনের অপরিচ্ছন্নতার দুর্গন্ধ। স্নান করতে যমুনায় গিয়ে নিজের ছায়া দেখলাম। যেন এক অস্থিচর্মসার প্রেতিনী। যমুনায় জল আনতে, স্নান করতে আসা প্রতিবেশিনীরা কেউই চিনতে পারল না আমায়। ভিখারিনী ভেবে কেউ কেউ কিছু খাদ্য দান করে গেল দয়া পরবশ হয়ে। কেউ পুরোনো বস্ত্র, লজ্জা নিবারণের জন্য। ওদের কথাবার্তায় জানলাম আয়ান ঘোষের বৌ যমুনায় ডুবে মরেছে। মা হতে না পারার যন্ত্রণাই না কি তার আত্মহত্যার কারণ। আমার চতুর পতিদেব পারিবারিক কলঙ্কের কথা সুকৌশলে চেপে গিয়েছিলেন।

এরপর আমার বেঁচে মরে থাকা ছাড়া আর কিই বা করার ছিল? অন্য কোনও জনপদে গিয়ে একাকী নতুন করে বাঁচার মতো সামর্থ যে আমার ছিল না। আর একাকিনী স্বামীপরিত্যক্তা নারীকে সে সমাজ কি সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে দিত? যে সমাজ এক জন নারীকে মৃৎপাত্র ছাড়া কিছু মনে করে না, যাতে এক বার ভোজন করলেই তা উচ্ছিষ্ট হয়ে যায়।

(৩)
হে কেশব, সে দিন তুমি সাঁতরে যমুনা পার হয়ে মথুরা চলে গিয়েছিলে। মাতুল কংসকে হত্যা করে মথুরাধিপতি হয়েছিলে। ব্যক্তিগত জীবনে তুমি রেবতীরমণ, রাজকুমার শাম্বের গর্বিত পিতা। লোকমুখে শুনেছি, তুমি মস্ত রাজনীতিবিদ। এ নিয়ে তোমার গর্বও খুব। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের আগে তুমি অর্জুনের রথের সারথি হয়ে বিরাট চাল দিয়েছ বলে ভেবেছিলে। অর্জুন আত্মীয়বধ করতে চান না বলে যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। তুমি তাঁকে কি না কি বলে ভুল বুঝিয়ে যুদ্ধে রাজী করিয়েছিলে। সেই যুদ্ধের ফল তুমি তো নিজের চোখেই দেখেছ। তোমার সখারা বিজয়ী হয়েছিলেন বটে, কিন্তু তাঁদের এক স্বজন হারানো শ্মশানে বাকি জীবন রাজত্ব করতে হয়েছিল। জয়ের স্বাদ ঠিকভাবে পাওয়া হয়নি তাঁদের। এহ বাহ্য, নিজের ভাগিনেয় অভিমন্যুকে হারাতে হয়েছিল তোমায়। এত কৌশল করে ঘটানো যুদ্ধ সত্যিই তোমায় কি দিয়েছিল? বড় জোর আর কেউ জীবিত না থাকার কারণে অভিমন্যুতনয় পরীক্ষিত যুধিষ্ঠিরের পর হস্তিনাপুরের রাজা হতে পেরেছিলেন যুধিষ্ঠিরের বংশ লোপ পাওয়ায়। একটাই ভালো কাজ করেছিলে ভরা রাজসভায় মহারানি দ্রৌপদীর সম্ভ্রম রক্ষা করে। বোধহয় এক দিন গোপিনীদের শ্লীলতাহানির সংবাদে হেঁট হয়ে যাওয়া যশোদা মায়ের মুখটা তোমার মনে পড়ে গিয়েছিল।

আসলে নরাণাং মাতুলক্রমঃ। তোমার মাতুল কংসও তো তোমার মাতাকে তোমার পিতার সঙ্গে এক কারাগারে বন্দী করার মুর্খামি করেছিলেন তাঁর অষ্টম গর্ভের সন্তান নিজের হত্যার কারণ হবেন জেনেও। কি জানি, হয়ত রাজনীতির আবর্ত এতটাই পঙ্কিল।

হে মথুরা নরেশ, আমি তোমার জীবনের লক্ষ্য কোনওদিনই ছিলাম না। আমার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল খুব ক্ষণিকের। বৃন্দাবনের বীজতলা ছেড়ে মথুরার জনারণ্যে তোমাকে প্রবেশ করতেই হতো। কিন্তু, আমার কেমন যেন মনে হয়, তুমি আমাকে কখনও ভোলোনি। বিবাহের মধুযামিনীতে তোমার প্রতি মুহূর্তে মনে হয়েছে কৌমার্যের সমাপ্তির সেই পবিত্র ক্ষণ। প্রসব গৃহের বাইরে অধীর প্রতীক্ষায় থাকতে থাকতে, সদ্য পিতৃত্বের গর্বে গর্ব্বিত হতে হতে তোমার মনে বারংবার মনে পড়ছিল আমার না পাওয়ার দীর্ঘশ্বাস। দেশশাসনের দায়িত্ব কিংবা যুদ্ধক্ষেত্রে রক্ত ঝরানোর মাঝে ক্ষুদ্র অবসর সময়ে তোমার প্রবল ইচ্ছে হয়েছে বাঁশিতে একবার সুর তোলার। বলো, কতবার ইচ্ছে হয়েছে এই কুঞ্জে একবার এই রাধার সঙ্গে মিলিত হতে। তোমার কর্তব্য তোমার ইচ্ছার গলা টিপে মেরেছে প্রতি মুহূর্তে।

কিন্তু আমি আজও তোমার অপেক্ষায় এই কুঞ্জে রয়ে গেছি। আমার মন বলছিল এক বার তুমি আসবে। এক বার আমার নাম ধরে ডাকবে। সেই দিন তবে আজ এল! এসো, এসো হে সখা।

না, না। তুমি কে? তুমি আমার কানাই কেমন করে হবে? কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ তো কবে শেষ হয়েছে। তারপর কত বছর রাজত্ব করে পৌত্রসম পরীক্ষিতের হাতে রাজত্বভার দিয়ে রাজা যুধিষ্ঠির নিতান্ত বৃদ্ধ অবস্থায় সপরিবারে মহাপ্রস্থানের পথে বিলীন হয়ে গেছেন। তুমি তবে কি করে সে দিনের সেই নওল কিশোর থাকো? সত্য বলো, কানু নও, তার ছদ্মবেশে তুমি সাক্ষাৎ মৃত্যু।

না না, তুমি কানু, তুমিই আমার গোপাল। 

তুমি মথুরাধিপতি। তোমার চক্রের নাম 'সুদর্শন', শঙ্খের নাম 'পাঞ্চজন্য', মণির নাম 'স্যমন্তক'। কিন্তু এই যে বংশীখানি এই কুঞ্জে সে দিন ফেলে রেখে গিয়েছিলে, এর কোনও নাম নেই। আজ এক বার সেই অনামী বংশীতে বাজাও তোমার রাধিকার সেই প্রিয় সুর। তোমার বুকে বুক রেখে আমার এই দীর্ঘ বিরহের চির অবসান হোক।




1 comment: