0

কবিতাঃ প্রান্ত পলাশ

Posted in




কবিতা



মাসি, নেমে যাব?
প্রান্ত পলাশ



(উৎসর্গ : কবি শৈলেশ্বর ঘোষ)


রাস্তাদু’ ভাগ, মাসি, আমার এক পা খাদে। আরেক পা দাঁড়িয়ে রয়েছে অনিশ্চিত ফাঁদে। তুমি কোন পা-কে নেবে, কোন পা অসাড় আর কোন পা সচ্ছ্বল? তুমি এনেছো অভয়াশ্রম, নাভির সৌরভ ছল। এক রাস্তা ফুরোতেই অন্য রাস্তা এসে নিকটে দাঁড়ায়। আমার হাঁটাই সার, শহরের স্ট্যাচু সমুখে খাড়ায়। একে তোমরা ভাস্কর্য বলো, তোমরা পরাও মালা জাতীয় দিবসে। আমি হাসি, আমার উচ্ছন্ন দিনে মুখের পোশাক যায় খ’সে। মাসি, নেমে যাব? স্নায়ুর ক্ষরণ বেয়ে উঠেছি শরীরে। আমাকে ভাসাবে তুমি স্খলনসাগরে?



মাসি, কে করেছে খুন আর কারা দিয়েছে সন্ধান; কুকুরের বন্ধু হয়ে এসে কারা নিয়ে গেছে ঘ্রাণ — কাউন্টার খোলা, সামান্য টাকায় যারা পেয়েছে টিকেট, তাদের স্ত্রীলোক এসে বলেছে, ‘হৃদয়, পুরুষের সহবাস, ইন্দ্রিয়সোচ্চার, ক্ষুধার শ্মশানে দাঁড়ালে মন্দির, লিঙ্গস্পর্শী যোনি আনেনা তো ক্ষীর! মাসি, নেমে যাব? কতদূর মাতৃসদন, কতদূর গণিকার অন্তর্বাস? নক্ষত্র ছড়ায় আলো, পরিত্যক্ত শরীরের দাস। মরুসন্ধ্যা নেমে আসে, ঝুলে যায় সভ্যের নগ্নতা। শিশুর বলাৎকারে ভেঙে যায় স্রাব-স্বাধীনতা। মাসি, আমার কাঁপছে হাঁটু, ঝ’রে পড়ছে চুল। আমাকে জাপটে ধরো, নয় তোলো ঘৃণার ত্রিশূল। আমার ক্ষুধার্ত গ্রন্থ, উদোম অক্ষরজ্ঞান, তৃষ্ণার্ত শাশ্বতী। যে-শরীরে দুধগন্ধ আজও, পুঁজির মোড়কে, আহা, সেও ঋতুমতী! মাসি, আমাদের হৃদপিণ্ড গাঁথা আছে রেস্তোরাঁর শিকে। এত বৃষ্টি, এত কাদা, সুপেয় ড্রেনের জল, জীবন মানায় হার বাংলা চটিকে!



মাসি, ভালোবাসা দীর্ঘ অভিশাপ। আত্মমৈথুন শেষে কোনো এক মহাশক্তির হাতে, আমরা দিয়েছি তুলে আমাদের শৌচাগার রাতে! ধর্ষিতা নিয়েছে মেনে এই তার তিক্ত ভালোবাসা, খুনিরা গিয়েছে ভুলে খুলে নিতে রক্তাক্ত পোশাক। উত্তেজনা নিভে গেলে শ্বাসরোধ গোঙানির ভাষা, ব্যবসা বসন্তহীন, হৃদপিণ্ড কেউ খুঁটে খাক! মাসি, নেমে যাব? উবু হব সংলগ্ন জানুতে? একবার অনুমতি দাও অনুর্বর যোনিদেশে শুতে! তোমার ফলন নেই, তবু কাঁদে তোমার কন্যারা; অজস্র পুরুষ আর অজস্র তাদের পিতারা... 





মাসি, নেমে যাব? নেমে যাবে ভিখারি-মাতাল? ধর্মছেঁড়া যোনিদেশে ইতিহাস ধ্রুপদী জঞ্জাল!

0 comments: