0

মুক্তগদ্য : শর্মিষ্ঠা ঘোষ

Posted in



মুক্তগদ্য



খেলতে খেলতে
শর্মিষ্ঠা ঘোষ



আমি জানি এসব খেলাধুলো নয় । ইচ্ছেমত খেলব না বলা বোকামি । আমরা যদিও তুমুল খেলছিলাম। তুমি তো অনেক দেরী করে এলে। তার আগেই উবু দশ কুড়ি নাড়ি ভুঁড়ি গুনে চোর পুলিস আর পাল্টে পাল্টে দাড়িয়াবান্ধা বা কুমিরডাঙ্গা শুরু হয়ে গ্যাছে । মাঝপথে খেলা ভাঙ্গাতে হল বলে তুমি নিজেকে অতিরিক্ত ভাবতে শুরু করলে । আহা , তোমার সঙ্গে তো প্রাণের খেলা শুরু করেছি গো ... খেলারা ধারাবাহিক প্রজন্ম বেয়ে নিয়ম বদলায় না । ফ্রক শার্ট ছোট করে সকলের ছোটবেলা পায়ে পায়ে স্মার্ট সিগারেট আর প্রথম ঋতুমতি । টাউন ক্লাবের ঘাস আমার মা বাবার ‘বনলতা সেন’ মার্কা প্রেম দেখেছে । আমার দুরন্ত হাতভাঙ্গা ক্রিকেট । আমার মেয়েরা বইমেলায় হাঁটতে হাঁটতে দুদণ্ডে তিন প্রজন্ম মেখে নিয়েছে বিছানো খোলা পায়ে ঘাসের আদরে ...

আমার ডাকাবুকো বোনটা খেলতে ভালোবাসতো । গোটা স্কুললাইফ ক্যাপ্টেন ।
বাস্কেট করতে পারতো খুব ভালো । আইডলসের ক্রিকেট ম্যাচে বাপিকে বাড়ি
পাঠিয়েছে বলে বলে । আকাশের হাসি আর রোদ্দুরের দুষ্টুমি মাখা মুখটা এখন
ভেনটিলেশানে , একমাথা কোঁকড়া চুলের বদলে স্কাল জুরে হানিকম্ব । আড়াই
বছরের বাচ্চাটা বারবি নিয়ে খেলছে না ক’দিন । মা আসবে বলে চব্বিশঘণ্টা হাট করে রেখেছে ফ্ল্যাটের দরজা ...

খেলতে খেলতে প্রথম উত্তম সুচিত্রার ভুমিকায় নিজেদের দ্যাখা । খেলতে খেলতে
প্রথম বড়দের মত ঠোঁটে ঠোঁট । খেলতে খেলতে আমরা বর বউ । খেলতে খেলতে ফুটে গ্যাল শরীর জুড়ে ঘাসফুল । খেলতে খেলতে আমাদের খেলা আর খেলার সাথী আলাদা হয়ে গ্যাল । খেলতে খেলতে আমার বয়সী পাশের বাড়ির কাজের মেয়েটাকে ছিবড়ে করে ফেলল সে বাড়ির মেজ ছেলে । খেলতে খেলতে মা আমায় শিখিয়ে দিল সবার সাথে খেলতে হয় না ...

0 comments: