প্রচ্ছদ নিবন্ধ : শ্রীশুভ্র
Posted in প্রচ্ছদ নিবন্ধ
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
প্রতিবাদের ভাষা যখন চুম্বন!
শ্রীশুভ্র
সমাজে গেল গেল রব, এ কী দেখি! প্রাকাশ্য রাজপথে শিক্ষার্থীকুল প্রলম্বিত চুম্বনে আলিঙ্গনাবদ্ধ। একি অনাচার! সমাজে শিষ্টাচার আর তবে কিছুই বাকি রইল না? এ কোন অন্ধকার যুগ ঘনিয়ে এল তবে? এরপর আরও কত কি বীভৎস দৃশ্য অবলকোন করতে হবে ভেবে শিহরিত হয়ে উঠতে হয়। আমরা কি কেবলই অন্ধের মতোই পাশ্চাত্যের অনুকরণ করে যাব তবে? হারিয়ে যাবে ভারতীয় মূল্যবোধের সনাতন ঐতিহ্য! ব্যক্তি স্বাধীনতার নামে যাবতীয় অনাচারকে প্রশ্রয় দেওয়াই যদি আধুনিকতার সংজ্ঞা হয়, তবে ধিক্ সেই আধুনিকতা, যা পাশ্চাত্যের অন্ধ নকল নবিশী ছাড়া আর কিছুই নয়। ভাবতে আশ্চর্য লাগে, এই কি মহাত্মা গান্ধীর দেশ? এই কি শঙ্করাচার্যের হিন্দুত্বের উত্তরাধিকার? এই কি রামকৃষ্ণ বিবেকান্দের ভারতবর্ষ? এই কি সেই দেশ যে দেশের বীর রমনীকুল জওহরব্রত করে নারীর সম্মান অটুট রেখে গিয়েছিলেল ইতিহাসের এক ক্রান্তিকালে? যে দেশের পবিত্র ভূমি পতিব্রতা নারীর কতশত আত্মত্যাগের কাহিনীতে মহিমান্বিত! সেই পবিত্র ভারতভূমি আজ এ কাদের কাছে কলুষিত হচ্ছে দিনে দিনে! এরপর তো প্রকাশ্য রাজপথে মৈথুনবিপ্লব সংগঠিত হতেও বুঝি আর বেশিদিন দেরী নাই!
ধন্য নবীন প্রজন্ম! তোমাদের চুম্বন বিপ্লবের আজকের তান্ডবে কাল যে সরলমতি কিশোর কিশোরীদের হাতেখড়ি হবে তাদের অধঃপতনের দায়ভার কে নেবে? সমাজে চারিদিকে এত যে নারী নিগ্রহের ঘটনা কেবলই বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতেও কি এই পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণের কুফল সম্বন্ধে আমাদের বোধদয় ঘটবে না? আজ থেকে শত বৎসর পূর্বে কই এত তো নারী নিগ্রহের ঘটনা ঘটত না! কারণ তখন সমাজের একটা শাসন ছিল, কোনটা ভালো কোনটা মন্দ সেই বিষয়ে অর্বাচীনদের সতর্ক করে দেওয়ার একটা সামাজিক রেওয়াজ ছিল। শ্লীলতা অশ্লীলতা সম্বন্ধে একটা সামাজিক বোধ ছিল আপামর জনমানসের। তার পরেও কোথাও কোনো অনৈতিক বিচ্যুতি ঘটলে তাকে শাসন করার একটা কার্যকরী সামাজিক অনুশাসনের বন্দোবস্ত ছিল। ফলে সমাজের সর্বস্তরে এমন কলুষতার কালিমা লেপনের সহজ সুযোগ ছিল না। হায় আর আজ, এ কোন সকাল! রাতের চেয়েও অন্ধকার। কচিকাঁচারা বয়স্কদের সম্মান দিতে জানে না। দেশের আইনকে কত সহজেই বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েও পার পেয়ে যায়! সামাজিক অনুশাসনকে কোনো রকম তোয়াক্কা করে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সম্মান করতে শেখে না! কোনটা শ্লীল কোনটা অশ্লীল, এদের না আছে সে সম্বন্ধে কোন ধারণা, না কোনো সুশিক্ষা। তবে কি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যেই কোনো ত্রুটি রয়ে গেল, ভাবতে হবে সেই কথাই। কারণ এরা তো আমাদেরই সন্তান! আমরাই তো এদেরকে প্রকৃত শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাই। তবে কেন? কোন ছিদ্র পথে ঘটে চলেছে এদের এহেন নৈতিক অধঃপতন? দায় কার!
সত্যিই তো দায় কার? কিন্তু কিসের দায়! নৈতিক অধঃপতনের! ঠিক তো! তবে কি একবার ইতিহাসের দিক চোখ ফেরাবো না আমরা! খুব বেশিদিন আগের কথাও তো নয়। বছর তিনশ হবে! বাল্য বিবাহ, সতীদাহ প্রথা, পুরুষের বহুবিবাহ, মন্দিরে মন্দিরে দেবদাসী প্রথার বহুল প্রচলনে মহিমান্বিত সুমহান ভারতবর্ষ! কুলীন ব্রাহ্মণের পৈতের পাকে পাকে কতশত অনাচার অত্যাচারের জমাট পাঁক। আর সেই জমাট অন্ধকারের মধ্যে প্রথম আলোর সলতে জ্বেলে উঠে দাঁড়ালেন একজন বাঙালি, রামমোহন রায়! সমাজের ঘাড় ধরে দিলেন সজোরে এক রামধাক্কা! নড়েচড়ে বসল ঘুমন্ত অসাড় সমাজ! কিন্তু সেই কাল ঘুম কি সহজে ভাঙার! কতশত শাস্ত্রীয় বিধান ফণা তুলে বিষ ঢালতে উদ্যত হল! সমাজরক্ষার দায় বলে কথা! বিধবা কন্যার নির্জলা উপবাসেই যে সমাজের ঐহিক উন্নতি! কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার পারলৌকিক মুক্তির জন্যেই কুলীন ব্রাহ্মণকুলের উদ্ভব! সে সমাজ কি অত সহজেই আলোর মুখাপেক্ষী হবে? না। হয়ও নি। কিন্তু তাই বলে কি চুপ করে বসে থেকে অন্ধ কুসংস্কারাচ্ছন্ন জড়ভরত সামাজিক বিধিনিষেধের বেড়াজালে আবদ্ধ থাকতে পারে শুভবোধসম্পন্ম মানুষ! তাই তো বিদ্যাসাগরকে এগিয়ে আসতে হল বীর বিক্রমে। বিধবা বিবাহের প্রচলনে তাঁর যুগান্তকারী উদ্যোগকেও সম্মুখীন হতে হল চরিত্রহীন সমাজের বিষাক্ত ছোবলের। কিন্তু তাই বলে তো থেমে থাকলে চলবে না! সমাজের পরতে পরতে জমে থাকা জমাট অন্ধকারের শতাব্দীব্যাপি গিঁট খুলতে কাউকে না কাউকে তো এগিয়ে আসতেই হবে, নয়ত সমাজ এগোবে কি করে?
আসলে আমরা কোন বিষয়েই একটু গভীরে গিয়ে তলিয়ে দেখতে চাই না! সব বিষয়েই একটা চটজলদি ধারণার বশবর্তী হয়ে কোনো না কোনো একটা পক্ষ নিয়ে নিই দ্রুত। ভারতবর্ষের ইতিহাস বহু প্রাচীন ইতিহাস! বস্তুত পৃথিবীর অন্যতম সুপ্রাচীন এই ইতিহাস সবচেয়ে অধিক বৈচিত্রপূর্ণ। অনেকেই ভাবেন ভারতবর্ষের ইতিহাস মানেই আর্য সংস্কৃতি এবং ইসলাম ও বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের ভারত দখলের ইতিহাস। কিন্তু আদপেই তা নয়। আর্যসংস্কতি, ইসলাম ও সাম্রাজ্যবাদী বৃটিশের প্রভাবের বলেয়ের বাইরেও এক আদি ভারতবর্ষ চিরকাল প্রচ্ছন্ন থেকে গিয়েছে নেপথ্যে। কজন অমরা খোঁজ রাখি সেই ইতিহাসের! ফলে চট করেই যখন আমরা বলে বসি এটা ভারতীয় সংস্কৃতির সাথে খাপ খায় না তখন সতিই কি আমাদের খেয়াল থাকে এই ভারতীয় সংস্কৃতির কতটুকুই বা জানি আমরা? যে পাশ্চাত্য সংস্কৃতিকেই আমরা আধুনিকতার শেষ কথা বলে ধরে নিই, আমরা কি সত্যিই জানি, আধুনিকতার সেই প্রকরণগুলি কোনোকালেই ভারতবর্ষে বিদ্যমান ছিল, কি ছিল না? কিংবা এখনো এই বিশাল ভূখণ্ডের আনাচে কানাচে আমদের শিক্ষিত চোখের পরিধির আড়ালে তা আছে কি নেই? বা থাকলোও তার রূপভেদ কি রকম?
এই প্রসঙ্গে ইতিহাসের একটি সুস্পষ্ট ছবি একবার অন্তত দেখে নিলে আলোচনার পক্ষে বিশেষ সুবিধে হতে পারে। বস্তুত ভারতে ইসলাম বিজয়ের আগে প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতা তার আর্য ও অনার্য সংস্কৃতির যুগপৎ মিশ্রণ ও স্বাতন্ত্রের যৌথ পরিমণ্ডলে উন্নতি ও আধুনিকতার এক উচ্চতম শিখর স্পর্শ করেছিল ইতিহাসের এক দীর্ঘকাল ব্যাপি পর্বে। সে কথা আমরা অল্পবিস্তর সকলেই জানি। কিন্তু এই প্রসঙ্গেই আমরা অধিকাংশ সময়েই ভুলে যাই যে ইতিহাসের নিয়মেই একদিন কালে কালে অবক্ষয়েরও সূত্রপাত ঘটে ছিল সেই উন্নত সভ্যতার সার্বিক পরিমণ্ডলে। যার ফলস্বরূপ বিদেশী শক্তির অনুপ্রবেশ! ফলে ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে ইসলামের ভারত বিজয়ের প্রেক্ষিতে, সুপ্রাচীন সেই উন্নত সভ্যতা কালক্রমে তার ভেতরে ধরে ওঠা ঘুণকেই আঁকড়ে ধরে আপন স্বতন্ত্রততা বজায় রাখতে মরিয়া হয়ে উঠল! শুরু হল শুষ্ক ধর্মীয় বিধিনিষেধের বেষ্টনীতে গোটা সমাজকে আটকে রেখে বৈদেশিক ইসলামী সভ্যতা থেকে আপন বৈশিষ্ট বাজায় রাখার প্রয়াস। ইতিহাসের পরবর্তী আর এক পর্বে ঠিক যে ঘটনা ঘটেছিল; সাম্রাজ্যবাদী বৃটিশের হাতে পরাজিত হয়ে ভারতীয় মুসলিম সমাজের। তখন তারাও তাদের পূর্বের উন্নত সভ্যতার আত্মশক্তিকে সম্পূর্ণ বিস্মৃত হয়ে কেবলমাত্র ধর্ম পুস্তকের সংকীর্ণ পরিধিতে ঘুণে ধরা ধর্মীয় বিধিনিষেধের বেড়াজালে আটকে ফেলল গোটা সমাজটাকেই। ফলে দুর্ভাগ্যবশতঃ ইতিহাসের এই দুই পর্বেই ভারতবর্ষের সমাজ ব্যবস্থায় জাঁকিয়ে বসে অন্ধ কুসংস্কার ও অর্থহীন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের বাড়বাড়ন্ত।
আর তখনই আমরা শালীনতা অশালীনতার নতুন সজ্ঞা দিতে শুরু করলাম। সামাজিক পরিসরে নারী পুরুষের সহজ স্বাভাবিক স্বচ্ছন্দ মেলামেশার নান্দনিক সৌন্দর্যকে সম্পূর্ণরূপে বিস্মৃত হয়ে নারীকে করে তুললাম পুরুষের ভোগ্যা। তখনই শুরু হল পর্দা প্রথার। কেননা নারী তখন পুরুষের একান্ত অধিকারের সামগ্রী মাত্র! সমাজজীবনে যখন অবক্ষয়ের সূত্রপাত ঘটে, সমাজ তখন বড়ো কিছু করার পথে চলতে পারে না। সে বড়ো কিছু ভাবার ক্ষমতাই রাখে না আর। তাই ইউরোপে যখন শিল্প বিপ্লবের সূচনা ঘটে ভারতবর্ষ তখন অন্ধকারের মধ্যে গুটিয়ে যেতে থাকে ক্রমশই। এই ভাবেই ভারতবর্ষের উপর সামগ্রিক অন্ধকারের অবতরণ! সুপ্রাচীন সেই ভারতীয় সভ্যতা নিজের সমস্ত অর্জন বিস্মৃত হয়ে এরপর একদিকে যেমন চর্চা করতে থাকে সামাজিক অবক্ষয়ের, অন্যদিকে মুষ্টিমেয় একটি শ্রেণী বৃটিশের শাসনে বৃটিশের স্কুলে বৃটিশের ভাষা শিখে তাদেরই হাত ধরে নিতে থাকে আধুনিকতার প্রথম পাঠ! এই তো আমাদের আসল ইতিহাস!
সেই ইতিহাসের হাত ধরেই আজও আমাদের চিন্তা চেতনার ক্রম ক্রমাগত ঘুরপাক খায় বলেই আমরা বিষয়ের গভীরে গিয়ে মূল বিষয়টিকে অনুধাবনে ব্যর্থ হই বারংবার। সৃষ্টি হয় অনাবশ্যক জটিলতা! তাই চারিদিকে এই গেল গেল রবের সাথে কণ্ঠ মেলালেই হবে না, তার আগে দেখে নেওয়ার প্রয়োজন আমরা ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে আছি, এবং কিভাবে? আমাদের সমাজে জমে ওঠা অন্ধকার দূর করতেই আবির্ভাব ঘটে ছিল রামমোহন, বিদ্যাসাগর, বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ, অরবিন্দ প্রমুখ যুগাবতার মনীষীদের। তারাই আমাদের প্রথম সচেতন করলেন, কোন ঘোর অন্ধকারকে আমরা আমাদের উত্তরাধিকার বলে ভুল করে হারিয়ে ফেলেছি আমাদের আসল ঐতিহ্য ও আধুনিকতা! সেই সূত্রেই আমাদের ব্যক্তিত্বের নির্মল উদ্ভাসন, আত্মশক্তির পরিপূর্ণ উদ্বোধন, আধুনিক মননশীলতার সাথে শাশ্বত ঐতিহ্য ও মানবিক মূল্যবোধের ঐকান্তিক উত্তোরণের পথনির্দেশ রেখে গেলেন আমাদের জন্য! সেই পথরেখার বিস্তৃত পরিসরে আমরা যদি সত্যিই হাঁটতে সক্ষম হতাম, তাহলে কি এই একবিংশ শতকে এসে কোনটা ভারতীয় সংস্কৃতি আর কোনটা নয়, কোনটা শ্লীলতা আর কোনটা নয়, কোনটা আধুনিকতা আর কোনটা নয়- সেই কূট তর্কে সময়ের অপব্যবহার করতে হতো আমাদের? ভাবতে অবাক লাগে এই আধুনিক যুগেও আমাদের সমাজে এখনো ব্যক্তি স্বাধীনতা কত ভাবেই না ক্ষুণ্ণ হতে থাকে। আঘাত এসে পড়ে ব্যক্তির মৌলিক অধিকারের গোড়াতেই।
নারী পুরুষের পারস্পরিক সাহচর্যের মধ্যে যে একটি অনিন্দ্যসুন্দর নান্দনিকতা রয়েছে সেইটি আমরা যখন ভুলতে বসি, বুঝতে হবে ঘুণ ধরে আছে আমাদের চেতনার বলয়েই। নরনারী পরস্পরকে আদরের সৌকর্যে বরণ করে নেবে, এইটাই প্রকৃতির বিধান। সেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে যাদের দৃষ্টি আহত হয়, বুঝতে হবে গন্ডগোল তাদের শিক্ষার গোড়াতেই। আর তখনই বুঝতে পারি ভারতবর্ষের ইতিহাসে অবক্ষয়ের অভিশাপ কাটেনি এখনো! এখানেই এসে দাঁড়ায় শিক্ষার প্রসঙ্গ। ঠিক, গলদ আমাদের শিক্ষার পরিমণ্ডলেই। আমরা এখনো মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতার মৌলিক অধিকারগুলিকে সম্মান দিতে শিখিনি। তাই দুটি নরনারী পারস্পরিক আদরের আলিঙ্গনের মুগ্ধ হবে কখন কোথায়, আমরা সেই ব্যক্তি স্বধীনতার বিষয়েও মাথা না গলিয়ে পারি না। আমাদের সমাজ সংসারের পরিসর থেকেই আমরা অন্যের মৌলিক অধিকারকে খর্ব করার মধ্যেই এক ধরণের ক্ষমতাচর্চার আনন্দ অনুভব করতে শিখে যাই। এমনকি স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসরেও এই প্রবণতা বিশেষ ভাবে পুষ্ট হতে থাকে। যার মারাত্মক প্রকাশ দেখা যায় ইঞ্জীনিয়ারিং কলেজগুলিতে প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীর উপর মানসিক ও শারীরীক নির্যাতনের ঘটনায়। এই ভাবেই অন্যের মৌলিক অধিকারের উপর ছড়ি ঘোরানোর বদ অভ্যাস আমাদের সমাজচেতনার মজ্জাগত হয়ে পড়ে। আর সেই বদ অভ্যাসকেই পুষ্ট করতে আত্মপক্ষ সমর্থনে তখন আমরা শ্লীলতা অশ্লীলতার রেখা ধরে টানাটানি করি। হ্যাঁ, ইহাই দীর্ঘদিনের চর্চিত ভারতীয় সংস্কৃতি!
তাই আজ যারা গেল গেল রবে বাতাস কাঁপাচ্ছেন বস্তুত তারাই সমাজের দুষ্ট ক্ষত! আধুনিকতা বিদেশ থেকে আমদানি করলেই হয় না। আধুনিকতা পরিপূর্ণ সুস্থ শিক্ষার্জন ও তার ক্রম প্রসারেই অর্জন সাপেক্ষ এক পরিপূর্ণ জীবনবোধ। সেই জীবনবোধের আলোতে সামাজিক পরিসরে প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিস্বাধীনতা ও তার মৌলিক অধিকারকে সুরক্ষিত রাখার দায়বোধ যেদিন প্রতিটি ভারতবাসীর চেতনার অধিগম্য হবে, সেদিনই ভারতবর্ষের শাপমুক্তি ঘটবে। সেদিন আর কোথায় কখন কে কাকে কিভাবে চুম্বনের নিবিড়তায় আদরের আলিঙ্গনে বরণ করে নিচ্ছে, সেইটির দিকেই তাকিয়ে ব্যস্ত হতে হবে না সমাজের স্বঘোষিত মাতব্বরদের! খবরের শিরোনাম ভরে উঠবে না ব্যক্তির মৌলিক অধিকার খর্বের লজ্জাজনক ঘটনাগুলিতে। এবং সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কচিকাঁচাদেরও রাজপথে নেমে মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষার্থে সমাজের ঘাড় ধরে এমন সজোরে নাড়া দেওয়ার জন্যে চুম্বনকেই প্রতিবাদের ভাষা করে তুলতে হবে না আর।
হায়,এই অর্বাচীনেরা জানে না,প্রতি চুম্বনে আট কোটি ব্যাকটেরিয়া মুখান্তরে ধায় ।
ReplyDeleteChatro chatri ra biplob korbei .biplober pontha hoteo pare chumbon.er cheye onek nongra kaj rastay hoy.
ReplyDeleteশুধু ভালো নয়, বেশ ভালো লাগলো শুভ্র। দীর্ঘ দিন মুসলিম এবং ব্রিটিশ শাসনে থেকে আমরা আমাদের সাবেকী ঐতিহ্য টাই ভুলতে বসেছি !
ReplyDelete