0

কবিতা - তন্ময় ধর

Posted in













১।

আমাদের ভেতরে কথামাংসের খোঁজ করতে এসেছেন সেই সর্পতান্ত্রিক। তাঁর স্থির অঙ্গে বাঁধা আছে ঈশ্বরমূলের আলো, চোখের ফুটোয় দ্রুত অন্ধকার, শ্বদন্তে তীব্র শীতল বিষ। তাঁর ধৈর্য্যেই কথার ভেতর রঙের অন্ধ চলাচল থামিয়ে দিয়েছো তুমি। দৃঢ় রক্তবাহে কেঁপে ওঠা আগুন ও ঈশ্বরের তীব্র পর্ণমোচনে মাংসাশী পাতা উড়ে যাচ্ছে দৃশ্যাতীত বাতাসে। 

কথা না শুনে অন্নহীন ঘর থেকে নিরুদ্দিষ্ট হয়েছেন তান্ত্রিক। দংশনের গভীর চিহ্নের পাশে অদ্ভুত নীল রঙ নিয়ে বসে আছেন অন্ধ চিত্রকর। শ্বাসনালী থেকে একটি স্মৃতিভ্রষ্ট রঙ বারবার জাগিয়ে দিচ্ছে আমাদের। বর্ণিকাভঙ্গের নীচে অতল মাংস জমছে স্বাদগ্রন্থিতে।

তুমি আস্তে আস্তে ভেঙে ফেলেছো সেই কথা। সদ্যমৃত মাংসের নীচে তিরতির করে কাঁপছে শূন্যতা। গভীর ওষ্ঠ ফাঁক করে আমি ওই তরল চিৎকারের মাতৃচিহ্ন গিলে ফেলেছি। অবুঝ এই সর্পসত্র থেকে মুক্তি দাও স্মৃতিহীনতাকে। 


২।

কথায় কথায় রক্তনালীতে ঈশ্বর আসছেন। আর একটি রক্তিম মাছের বোবা কান্না ভেঙে পড়ছে মহাজিজ্ঞাসায়। পৃথিবীর ধ্বনি-প্রতিধ্বনি জড়ানো স্মৃতিহীন ফোঁটা ফোঁটা যন্ত্রণায় কিম্বা দারিদ্র্যদহনের জরায়ুমুখে লেগে আছে মহাকালের সংসার ও একটি নদী। ঈশ্বরবিম্বের দু’টি পা ভিজে যাচ্ছে তার পারানিতে। 

তার আস্তরণ থেকে তুমি সরিয়ে নিচ্ছো আমার খিদে। গোলাপী একটা রঙ শিল্পীর আঙুল ছিঁড়ে ঢুকে যাচ্ছে আমাদের প্রত্যঙ্গে ও আগুনে। অভিনয় থেকে বড় দ্রুত সরে যাচ্ছে ঠাণ্ডা হাওয়া। জিভের নীচে সরে যাচ্ছে জীবাশ্মবোধের রূপকথা। 

মাছের স্বাদগ্রন্থিতে নেমে এসেছে বোবা কান্নার আলো। একটি উত্তপ্ত জলস্রোত নষ্ট করছে তোমার-আমার প্রতিবিম্ব। মাছের কাঁটা বাছতে বাছতে আমাদের তলপেটে আলো রেখে দিলেন ভুলোমনা ঈশ্বর। কথার ব্যথা কমতে শুরু করল।

0 comments: