অণুগল্পঃ অনামিকা সরকার
Posted in অণুগল্প
অণুগল্প
শ্যামা
অনামিকা সরকার
রাতে চিহ্ন রাতেই গেছে ধুয়ে
কালশিটে দাগে আছে ভরা মন
ভুলে যা না ও উদাসী মেয়ে
কি ঘটেছে কবে, কোথায়, কখন?
জয়ার নিন্দায় কান পাতা দায়। সে আজ পুড়িয়ে মেরেছে ওর মদ্যপ বর কে! কি মেয়েরে বাবা…নিজে মরলি না…পালালে হতো…রেল লাইনে মাথা দিলে হতো …মেয়ে হয়ে পারলি নিজের স্বামীকে পুড়িয়ে মারতে? জয়া যখন বিয়ে হয়ে আসে হতদরিদ্র মদ্যপ কিরণের ঘরে তখন আমি অবাক হয়েছিলাম, কি দেখে এলো এই ঘরে! রূপ তো নয়, যেন ভুবন মোহন আলো। ভালোবাসায় ! খুব গর্ব করে বলতো ও।
প্রায় দিন কালশিটে পরা হাতের দাগ গুলো দেখাতো, ভালোবাসার নমুনা ভেবে হাসি মুখে রাত্রের পিটুনির বর্ননা দিত। শুনে আমার গা পিত্তি জ্বলে উঠতো।কিন্তু শিক্ষা দিতে ভয় লাগে যে ! অন্যায়ের প্রতিবাদ করো…মার গুল, ভালোবাসা নয়…থানায় যাও …৪৯৮ ধারা আছে মেয়েদের পক্ষে…।কারণ “ফর্সা হাতে কালশিটে গুলো দেখতে পান দিদিমনিরা…আর ভিতরের খবর তো জানো না” “তোমরা চাকরি করতে এসেছো সমাজ শোধরাবার দরকার কি?” “স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া, ও তে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ভালো না”!!
কিন্তু ভালোবাসার অত্যাচার আর বোধহয় সইতে পারেনি ও সেদিন …যেদিন ওর মাতাল লম্পট স্বামী ভর্তি বাজারে ওর পরেনের শাড়ীটা খুলে…দূরে ছূঁড়ে ফেলে এলোপাথারী মারলো; আর বাজার ভর্তি লোক …রিক্সাওয়ালা…বাস যাত্রী…দোকানদার অর্ধনগ্ন সুন্দরী জয়ার কাপড় তুলে নিজের শালীনতা ঢাকার আপ্রাণ প্রয়াসকে উপভোগ করছিল।।
অসুর নিধন করতে হবে
আপন ভাগ্য নিজেই লেখ
ঘরে ঘরে অসুর মরবে
তুইও পারবি, শ্যামাকে দেখে শেখ…
এই কবিতাটা তো জয়া পড়ে নি? তবে ? সেই রাত্রেই নিজের অপমানের বদলা নিতে মাতাল স্বামীকে হাতে পায়ে দড়ি বেঁধে পুড়িয়ে মারে জয়া! ভালবাসার আগুন আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে গেলো…আজ কি যেন ? ওওওও…বসন্ত!!!!
0 comments: