undefined
undefined
undefined
ঋতু ম্যাডামের রান্নাঘর থেকে - মৈত্রেয়ী চক্রবর্তী
Posted in ঋতু ম্যাডামের রান্নাঘর থেকেনিউজফিড স্ক্রল করতে গেলে ক্ষুধার্ত মানুষের ছবির পরেই যখন দারুণ দারুণ রান্নার ছবি, এই দুর্দিনেও দশ পদে রেঁধে, ‘সামান্য আয়োজন’ ক্যাপশন দিয়ে, নিজেদের উৎসব উদযাপনের ছবি দেখি, নিজেকে অমানুষ মনে হয়। না, আমি কিছু পেটে কিল মেরে বসে নেই, কিন্তু ঘরে উপস্থিত সাধারণ উপকরণে রান্না করছি। এবং চেষ্টা করছি এমন রান্না করতে যাতে এক পদেই পরিবারের মানুষ তৃপ্তি করে খেয়ে ওঠেন। তেমনই একটি রেসিপি দিলাম। সম্পাদিকাকে কথা দেওয়া আছে বলেই রেসিপি দিচ্ছি। হঠাৎ করে কোনো বিভাগে লেখা জমা না দিলে তাঁকে বিপদে ফেলা হয়। ভালো থাকুন, সকলের জন্য খাবার থাকুক এই কামনা করি।
পুরভরা দই বেগুন
উপকরণ ::: বেশ বড় সাইজের বেগুন, পেঁয়াজ, আদা, টমেটো, কারি পাউডার, নুন, হলুদ, সামান্য চিনি, কারিপাতা, ধনেপাতা, টকদই, রান্নার জন্য তেল।
পদ্ধতি ::: বেগুনকে লম্বালম্বি চিরে দু’ভাগ করে নিয়ে তারপর টুকরো করুন। ইংরেজি D এর আকারের টুকরো হবে। টুকরোগুলি কিন্তু একটু মোটা কাটবেন কারণ পুর ভরতে হবে। এবারে টুকরোগুলি বইএর মতো করে চিরে নিন। তারপর বেশ এক খাবলা নুন ও হলুদ দিয়ে মাখিয়ে রাখুন। তেল গরম করে পেঁয়াজ, আদা কুচি ভাজতে বসান। ভাজার কম সাঁতলানোর বেশী এই রকম পর্যায়ে কারি পাউডার, টমেটো কুচি ও একটু চিনি দিয়ে মিডিয়াম আঁচে ঢাকা দিয়ে দিয়ে কষিয়ে নিন। ব্যস পুর তৈরী। আচ্ছা, হ্যাঁ, ইচ্ছে করেই এতে নুন দেওয়ার কথা বলিনি। কারণ একে তো বেগুনে নুন মাখানো আর কোনো কোনো কারি পাউডারেও নুন দেওয়া থাকে। পুরটা কিন্তু কড়াই থেকে নামাবেন না। হাতে ধরতে পারছেন এরকম গরম হলে বেগুনে পুর ভরতে হবে; তবে পুর ভরার আগে কিন্তু বেগুনের টুকরোগুলি ঠাণ্ডা জলে ভালো করে ধুয়ে নেবেন যাতে অতিরিক্ত নুন না থাকে। এবারে বই খুলে পুর ভরুন। হয়ত পুরো পুর ভরা হলো না তাতে কোনো অসুবিধা নেই; এবারে ওই পাত্রেই পুর ভরা বেগুনগুলি সাজিয়ে ঢাকা দিয়ে ঢিমে আঁচে রান্না করুন। এই সময়েই দইটা রেডি করুন। পেঁয়াজ-আদা-টমেটোর কাই আর ওই মশলা তৈরী করতে যে তেল লেগেছে ওই দিয়েই কিন্তু বেগুন রান্না হবে। একটু ছড়ানো বাসন হলে সুবিধা হবে হয়ত। একটু পরে হাল্কা হাতে এক এক করে বেগুনের D গুলির উল্টোপিঠ করে দিন, যাতে দুই পিঠই সুসিদ্ধ হয়। এবার বলি দইটা কিভাবে রেডি করবেন। বেগুনটা বসিয়েই রেডি করে রাখবেন, তাতে দই ঘরের তাপমাত্রায় এসে যাবে বেগুন রান্না সম্পূর্ণ হতে হতে। সামান্য নুন, চিনি, আর লঙ্কার গুঁড়ো দিয়ে ফেটিয়ে নিন। কাঁচা জল না দিয়ে ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে রাখা জল ব্যবহার করাই ভালো। কারণ, আমি দইটা রান্না করবো না। যে পাত্রে পরিবেশন করবেন তাতে অর্ধেক পরিমান দই গোলাটা দিয়ে রাখুন। বেগুন নরম হয়ে গেলে, ওই পাত্রে নামিয়ে ওপর থেকে বাকি দই ঢেলে, বাসনটা একটু নাড়া দিয়ে মিশিয়ে নিন। ধনেপাতা ছড়িয়ে পরিবেশন করুন। গরম ভাত, রুটি, পরোটা, কিন্যুয়া, বা কোনো কিচ্ছু না দিয়েও খাওয়া যাবে।
বেগুনে নুন মাখিয়ে রাখলে দেখবেন মজে যাবে বেগুন, রান্না হবে সহজে। পুরের মশলায় চাইলে একটু গরম মশলার গুঁড়োও দিতে পারেন। আর যদি মনে হয় বেগুন থেকে তেমন জল বের হলো না, সব পুড়ে উঠতে পারে তাহলে জল না দিয়ে একটু নারকোলের দুধ দিন। পুরটা আপনার নিজের ইচ্ছে মতোও করতে পারেন, সর্ষে বাটা বা অন্য কিছু দিয়ে। দই না দিয়েও খেতে পারেন, শুধু মশলা বেগুন। মা বানাতেন, বেঙ্গন মসাল্লম, সে অবশ্য ছোট্টো ছোট্টো বেগুনকে বোঁটায় জোড়া রেখে চার ফালি করে মশলা ভরতেন। সে ভাবেও কিন্তু এই পদটি করতে পারেন। আমি দই রান্না করতে গেলেই ফেটে যায় বলে কাঁচাই ব্যবহার করেছি। যদি মনে করেন আপনি পারবেন তাহলে বেগুন রান্না হলে ওই খানেই দই মিশিয়ে তারপর নামান। আর ঝাল, মিষ্টি অবশ্যই নিজের নিজের স্বাদ অনুযায়ী বাড়িয়ে কমিয়ে নেবেন। আর মাঝারি সাইজের বেগুন হলে গোল গোল কেটে বই বানাবেন। আমি দুই রকমেরই ছবি দিচ্ছি সঙ্গে।
0 comments: