মুক্তগদ্য - পল্লববরন পাল
Posted in মুক্তগদ্য
মুক্তগদ্য
অ-এ অজগর, স-এ সিল্প
পল্লববরন পাল
শহর জুড়ে মধ্যরাতের দাপাদাপি। দূষণে ডুবে গেছে সূর্যোদয়। সকালটকাল কী জিনিস – খায় না মাথায় দেয় – অজগর শব্দে ব-এ শূন্য নাকি ড-এ শূন্য - এ প্রজন্মের গুগুলিত মস্তিষ্কে আপডেট চাইলে স্ক্রিন জুড়ে ইয়াব্বড়ো জিজ্ঞাসাচিহ্নের খিলখিল হাসি। বাঁশের বাঁশরি বা রণতূর্যটুর্য নয়, হাতে হাতে এখন মোবাইল আর একে সাতচল্লিশ।
সহরে সহরে সুধু স্যামবাজারের সসীবাবুদের – না না, তালু বা মূর্ধা নয়, শুধু কুমড়োদাঁতের সিণ্ডিকেটসিল্পের রমরমা – মানুস সুখে আর সান্তিতে কচকচিয়ে ওয়াইফাই ঘাস খাচ্চে। সুখসান্তিরও সিণ্ডিকেট আচে – পয়সা ফেলো সুখ গেলো ঢকঢকিয়ে আর সান্তিতে সয্যারতি করো, ব্যাস
রোজকার এই যে অসংখ্য সদন্ত হসন্ত-হোঁচট, সেই হসন্তকে যাপনপংক্তিতে একটা গোটা মাত্রা দেওয়াটা ঠিক হবে কিনা – এ প্রশ্নের উত্তরের আশায় গিয়েছিলাম কফিহাউসে
সেখানে সুসীল সিণ্ডিকেট সালিসী ডেকে নিদান সুনিয়ে দিলো – সিস্ন কুচুৎ।
-----------------------------------------
ওং শান্তি
তুমি ঘুম থেকে উঠে আড়মোড়া ভাঙবে নাকি হাই তুলবে – সেটা ঠিক করার তুমি কে? আগে দাঁতমাজা নাকি পটি – ব্রেকফাস্টে টোস্ট নাকি ওমলেট – অফিস যাবার পথে দেখা হলে জীবনদাকে হাই নাকি ভালো আছেন তো – আদৌ মুখ তুলে হাসি বিনিময় করবে কিনা – ফেরার পথে কোন দোকান থেকে বাজার করবে – কোন ব্র্যাণ্ডের বিস্কুট – ডিনারে কাতলা না মাগুর – বউ আদরের সাপ্তাহিক ডেট ও স্টাইলের রুটিন
এ সবের কোনো কিছুই ঠিক করার এক্তিয়ার তোমার নেই – তুমি শুধু একটি শান্তিপ্রিয় ভোটার কার্ড, ডেমোক্র্যাসির ডেমো
ক্র্যাস করবো
আমি
আর আমার সিণ্ডিকেট
-----------------------------------------------
সম্বদ্ধোনা
বুদবার আউড্ডোর মঞ্চে - সাম্বাদিক পেস-ফেস ক্যামেরা আলো হৈচৈ – পোচুর মানুস মানে পাব্লিকের সামনে আম্মা আপনাকে সম্বদ্ধোনা দেবেন – নেবেন না মানে? আপনার আস্পদ্দা তো কম নয়? আপনি এতো বড়ো একজন ইয়ে, সারা দেস্ আপনাকে চেনে, সম্মান করে – আর আপনি আম্মাকে অসম্মান করচেন? সুনুন দাদা, ঠিক আড়াইটেয় গাড়ি পাটিয়ে দেবো – মাঞ্জাটাঞ্জা দিয়ে রেডি থাকবেন, ব্যাস্
গাড়ি যদি খালি ফেরে - মনে রাকবেন – বৌদি কিন্তু মেয়েচেলে –আমাদের কাচে পাঁচ থেকে পঁচাসি সব এক রে্ট - রাস্তাঘাটে কোতায় ককোন কী হয়ে যাবে - বাঁচাতে পারবেন তো? আপনার নামে আলিপুরদুয়ার বা সুন্দরবনে রেপকেস – ভিক্টিম রেডি আচে স্টকে – কোর্টে আপনাকে সনাক্ত করবে - ভাল্লাগবে?
আপনি বুদ্দিমান লোক – বুদ্দিজিবি – আম্মা আপনাকে সম্মান দিচ্চেন, আর আপনি আম্মাকে রিটান্ দেবেন না – কোন কোম্পানির মাল আপনি?
-----------------------------------------------
ঢ্যা র্যা র্যা র্যা
অহঙ্কার নাকি স্পর্ধা –গর্ব নাকি গরিমা - ঠিক কোন শব্দটা মানানসই হবে – টালবাহানা করতে করতে কলেজস্ট্রীট কফিহাউস থেকে শিবপুর বি ই কলেজ – সিধে রাস্তা সোয়া ঘন্টার পথ – দরজা খুলতেই জি বাংলা সারেগামাপাধানি – দত্তদা আর বৌদি এতোক্ষণ তোমার জন্য বসে বসে – এখন আর চা দিলামনা, হাতমুখ ধুয়ে খেতে বসো - জানো আজ নিউজে বললো – সিডনি না কোথায় রেস্টুরেন্টে ঢুকে ঢ্যার্যার্যার্যা – কাশ্মীরসীমান্তে ঢ্যার্যার্যার্যা – সারদা নারদা বরোদা ঢ্যার্যার্যার্যা
খাবার টেবিলে রুটির সঙ্গে ঢ্যার্যার্যার্যা – রাতবিছানায় রুটিন-রতির ঢ্যার্যার্যার্যা পেরিয়ে –
কই রে? কী যেন শব্দগুলো?
অহঙ্কার না গর্ব? নাকি স্পর্ধা?
কোথায় গেলি?
ঢ্যা র্যা র্যা র্যা
ঢ্যা র্যা র্যা র্যা
অসাধারন।
ReplyDeleteআমাদের মাথার মধ্যে ঢ্যা র্যা র্যা র্যা ......
ReplyDeleteএমনভাবে কেউ লেখে? আপনার কপালেও ঢ্যার্যার্যার্যা অপেক্ষা করছে।
ধন্যবাদ পল্লববাবু, আরো লিখুন।
আপনার লেখার ভঙ্গিটি তো বেশ। নমস্কার জানবেন।
ReplyDelete