পথে প্রান্তরে - চয়ন
Posted in পথে প্রান্তরে
পথে প্রান্তরে
রেশম পথের রুদ্ররূপ
চয়ন
যাওয়া হয় কি না হয়, তা নিয়ে সংশয় ছিল। শেষ মুহূর্তের পরিকল্পনা। টিকিট পাওয়ার অনিশ্চয়তা। কিছু মান, কিছু অভিমান, কিছু ভুল বোঝাবুঝি। শেষমেশ দেখলাম, অক্টোবরের নয় তারিখে সাঁতরাগাছি থেকে নয়াজলপাইগুড়ির যাত্রী পুজো স্পেশাল রেলগাড়িটির সওয়ার হয়েছি আমরা সাড়ে ছয় জন। আমাদের দলের সর্ব কনিষ্ঠা এক অতি পরিশীলিতা ভদ্রমহিলা। তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়লেন গান আর বই নিয়ে। আইপ্যাডে ছোটদের ইংরিজি গান, হাতে ইনিড ব্লাইটন। আর কী চাই তাঁর? অন্য কামরায় আছে আরেক বন্ধু পরিবার। তাদের যমজ সন্তান দুটি কনিষ্ঠার বন্ধু এবং আমার প্রাণ। তাঁকে বিনীত ভাবে প্রশ্ন করলাম, "দেখা ক'রে আসবে নকি?" নাকে নেমে আসা চশমাটা ওপরে ঠেলে তুলে সাত বছরের মিষ্টি মুখটা যতটা সম্ভব গম্ভীর ক'রে তিনি বললেন, "যাওয়া যেতে পারে।" তাদের কাছে গিয়ে বসা মাত্র আনন্দের ঢেউ খেলে গেল। খিলখিল হাসি, ঠেলাঠেলি খেলা, বড়দের নিজেদের মধ্যে খুনশুটি। তিনশিশুর মধ্যে তাদের চয়নকাকুর ভাগ নিয়ে নকল ঝগড়া। দুহাতে আমায় জড়িয়ে ধরে যমজ ভাই বোনের একজন ঘোষণা করল: "যদি একটা ফেইরি আমায় তিনটে উইশ গ্রান্ট করে তো আমি চাইব আমি যেন গ্রেট সিঙ্গার হতে পারি, বোন যেন গ্রেট আর্টিস্ট হয় আর আমার চয়নকাকু যেন ফেমাস্ হয়।" এ.সি.টা বড্ড বেশী ঠাণ্ডা ক'রে ফেলেছে কামরাটা। তাই বোধহয় গলাটা ব্যথা আর চশমার কাচ ঝাপসা।
নিউজলপাইগুড়ি পৌঁছতে রাত সাড়ে 'নটা। আজ রাত হোটেলে থেকে কাল আমাদের যাত্রা শুরু। সকাল বেলায় গাড়ি হাজির। হাসিখুশি স্বভাবের রাজেশ গান ছাড়া গাড়ি চালাতে পারে না। আর কথায় কথায় ব'লে "পান পরাগ, দিমাগ খারাব।" অর্থ কী, ঈশ্বর জানেন। সাড়ে তিনঘন্টার পথ পেরিয়ে রংলি। ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম। মঙ্গলদীপ রিসর্ট ঠিক রিসর্ট নয়। এখানে হোম স্টে ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই থাকার। কনিষ্ঠা অতি গম্ভীরভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ক'রে রায় দিলেন, "এটা রিসর্টই নয়। রিসর্টে গার্ডেন থাকে, ফাউন্টেন থাকে, সুইং থাকে, স্লাইড থাকে। চয়নকাকু ওদের নামটা বদলে দিতে বলে দিও।" আশ্বাস দিলাম যে অবশ্যই বলব। পাহাড়ের এক খাঁজে রংলি শান্ত হয়ে শুয়ে আছে। কুয়াশার গন্ধমাখা বাতাস, সবুজ গাছপালার মধ্য দিয়ে পায়ে চলা পথ, তিরতিরে তন্বী তিস্তা। আমি দেখামাত্র প্রেমে পড়লাম। দু'দিন থাকতে হবে এখানে। অনুমতি পত্র বানানোর ব্যাপার আছে একটা। আমরা যে পথে চলেছি সেখানে চলতে এটা প্রয়োজন।
সেই অর্থে দেখার কিছু নেই এখানে। তাতে কী? আমরা তো আছি। আমরা, বন্ধুরা। পঁয়ত্রিশ বছর আমরা পরস্পরকে চিনি ঠিকই কিন্তু আরও চেনা বাকী। জমাট আড্ডায় চলল সে চেনাচেনি। আমার মিষ্টুর সঙ্গে গল্প, ঝুপুলের নদী আর ঝর্ণা দেখলেই ছুট মারা, হতাশ দেবাশিসের কাতরোক্তি, " তুমি তো শালা আমার বউয়ের সঙ্গে ঘরে বসে ফস্টিনস্টি করছ। আর ওদিকে তোমার বউ খালি দৌড় মারে। বাজার করব না ওকে সামলাবো? বেঁধে রাখতে হবে ওকে।" এগুলোই প্রাপ্তি। বন্ধু তো আমরা ছিলামই। এখন সখ্যের সঙ্গে যোগ হচ্ছে আত্মিক বন্ধন। নেই নেই করলেও পাহাড়ের বারবার নিজেকে নতুন চেহারায় বদলে নেওয়া দেখছি আমরা। নদীর সঙ্গে হুটোপুটি করছে ছোট্ট দিশুন আর তার ঝুপুল মানি। আমি দু'চোখ ভ'রে দেখছি।
বিকেলে দেখতে গেলাম অরিতার লেক। পাহাড়ের ওপর প্রাকৃতিক হ্রদ। জলের ওপর সবুজ গাছের ছায়া। ঘন নীল আকাশ। বনের মধ্যে পায়ে চলা পথ ধ'রে মানখিম। বনের একটা তীব্র আদিম গন্ধ আছে। খানিক বাদে শরীর জেগে উঠতে থাকে। নাম না জানা লাল, সাদা বুনো ফুল, টাওয়ারের ওপর থেকে মেঘ জড়ানো পাহাড়ের ছবি তোলা। হামিন্ অস্ত্ ওয়া হামিন্ অস্ত্। তবে কাঁটা ছাড়া গোলাপ হয় না। বনপথ ছেড়ে কনক্রিটের পথে এসে গোড়ালিতে এক শিরশিরে অনুভূতি হওয়াতে জিন্স তুলে দেখি তিনটি প্রমাণ সাইজের জলৌকা রক্তপানে স্ফীতোদর হয়ে আছে। পার্থ আর দেবাশিসেরও একই হাল। মহিলারা হেসে কুটিকুটি। তাঁরা বনপথে চলেননি কি না; সড়ক পথেই ছিলেন। "নুন দে, নুন দে, এই পার্থ, জোঁকের মুখে নুন দিতে হয়;" দেবাশিসের আর্তনাদ। "আমি কি শালা পকেটে ক'রে নুন নিয়ে এসেছি? পারিসও বটে তোরা!" বলতে বলতে এক এক টানে জোঁকগুলো ছাড়িয়ে ফেলে দিল পার্থ। চায়ের দোকানে ব'সে মহিলারা মোমো খেয়ে চলেছেন পরিতোষ সহকারে। এদিকে রক্ত যে বন্ধ হয় না। কাতরভাবে তাঁদের পরামর্শ চাইতে মিষ্টু বলল, "চিনি লাগিয়ে দাও বন্ধ হয়ে যাবে। এই নাও চিনি নিয়ে যাও।" চিনি নিয়ে আসতেই দেবাশিস তেলে বেগুনে জ্বলে উঠল: "ফ্যাল্! ফেলে দে এখুনি। বারবার ক'রে তোকে বলছি বৌদের কথা শুনবি না।" চিনি ফেলে দেব? তার চেয়ে খেয়েই নিই। চিনি খেতে খেতেই শুনলাম পাশ থেকে এক জ্ঞানী ব্যক্তির উপদেশ: "কিচ্ছু ভাববেন না। রক্ততঞ্চিত হয়ে এখনই বন্ধ হয়ে যাবে।" বাব্বা! ভাগ্যিস বলেননি, "জলৌকাক্রান্ত হননি তো?"
বিজয়া দশমী। পার্থর মতো জোগাড়ে ছেলে খুব কম আছে। বিজয়ার জন্য মিঠাই, মহুয়া, ঝুপুল, মিষ্টুর সিঁদুর খেলার সিঁদুর থেকে শুরু ক'রে সেই রাতে ভদকার সঙ্গে খাওয়ার জন্য রোস্টেড পর্কের ব্যবস্থা পর্যন্ত - সব ক'রে ফেলল। আর রাতেই নামল বৃষ্টিটা।
পরদিন জুলুখের পথে রওনা। আকাশ মেঘলা। বৃষ্টি ধরেছে। আমরা পাহাড়ি পথ বেয়ে উঠছি। সাড়ে নয় হাজার ফুট উঁচুতে জুলুখ। পথে পড়বে হাম্বি পয়েন্ট আর কিউখোলা ঝর্ণা। হাম্বি থেকে পাহাড়ের শিখর দেখতে পাওয়ার কথা। আমরা দেখলাম ঘন মেঘ ক্রমে ভয়াল রূপ নিচ্ছে। ঝর্ণা আসতে আসতেই শুরু হলো মুষল ধারে বৃষ্টি। মিষ্টুর উৎসাহের শেষ নেই। ছাতা মাথায় নেমে গেল ছবি তুলতে। ঝুপুলকেও টেনে নামালো। আমরা গাড়ীতেই থাকলাম। অত উৎসাহ আমাদের নেই। এঁকেবেঁকে উঠছে গাড়ী। এই জুলুখ? এখানে তো রাস্তাই নেই? কাদা মাখা পায়ে চলা পথে লাফিয়ে লাফিয়ে নামছে রাজেশের স্করপিও। ডানহাতে সেনা ছাউনি। পাহাড়ের গায়ে আটকানো পরিচিতিলিপি দেখে ইংরিজি সাহিত্যের ছাত্রী মিষ্টুর উচ্ছ্বাস: The Cloud Warriors? How romantic! বল চয়নদা?" বললাম, "হুঁ, পর্জন্যযোদ্ধা।" ভাগ্যিস কলিকালে নয়নবহ্নি ভস্ম করে না!
গাড়ি যেখানে থামল সেখান থেকে অন্তত পঞাশ ফুট উঁচুতে এক টিলার ওপর আমাদের পান্থনিবাস। পাশের নালা দিয়ে খর স্রোতে কলকল ধ্বনি তুলে জল ছুটছে। আকাশ ভেঙে পড়ছে যেন মাথার ওপর। রাজেশের অনুরোধ, "শাব থোড়া হাথ লাগাইয়ে না। আদমি জেয়াদা নহি হ্যায় ইঁহা।" পথভোলা পথিকের মতো চারপাশে চাই। কোনওখানে জনমানব নাই। সবাই আমায় ছেড়ে উঠে গেছে। আমি দাঁড়িয়ে রয়েছি বাক্স ইত্যাদির দায়িত্ত্বে। এ কাজে আমার চেয়ে দক্ষ আর নাকি কেউ নেই বলে সবার ধারণা। কারণ আসার পথে ছাদ থেকে এক বাক্স ছিটকে পড়তে দেখে আমি গাড়ি থামাতে না বললে তা পথেই পড়ে থাকত। বাক্স প্রায় সবই উঠে গেছে। প্লাস্টিক জড়ানো এক বাক্স ধরে ছাতা মাথায় আমি ত্রিভঙ্গমুরারি মূর্তিতে দাঁড়ানো। ধুত্তোর! তোর আপন জনে ছাড়বে তোরে, তা ব'লে ভাবনা করা চলবে না। একাই তুলব এ বাক্স। হে কারিয়াপিরেত, তুমি আমার সহায় হও। তোমার উৎপাটনমন্ত্র আমার কার্যসিদ্ধ করুক: "মারেজ্জুয়ান্ হেঁইয়া / অওর ভি থোড়া হেঁইয়া / পর্বত তোড়ি হেঁইয়া...." গেল গেল! ছাতা উড়ে পাশের নালায়। গায়ে সুঁচের মতো বিঁধছে বৃষ্টি। দাঁতে দাঁতে ঠক ঠক। "ছোড় দিজিয়ে শাহাব। ম্যই লেতা হুঁ।" এতক্ষণ কোথায় ছিলে বৎস বিকশিত দন্ত বাঞ্ছারাম? ওপরে উঠে দেখলাম তিনটি ঘর। অতি আরামপ্রদ। কিন্তু, তখন আমার আর কিছু মাথায় ঢুকছে না। বাক্স ভর্তি জামাকাপড় ভেজা, বই ভেজা, খামে ভরা টাকা ভেজা। "চাপ নিও না" ব'লে ঝুপুল নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ল। আমি ভ্যাবলার মত চেয়ে রইলাম।
সেদিন বেরনোর প্রশ্নই নেই। চিকেন পকৌড়া, চেরি ব্র্যাণ্ডি এবং ভদকার অনুপান সহযোগে তুমুল আড্ডা চলল বিকেল থেকে মাঝরাত। খেলা হলো কানেক্ট এবং ট্রুথ অর ডেয়ার। এই খেলার মধ্য দিয়ে চিন্তার বিদ্যুৎ বিনিময় চলল মস্তিষ্ক থেকে মস্তিস্কে। হঠাৎ আলোর ঝলকানিতে আমাদের চরিত্রের এক এক দিক ঝলসে উঠতে লাগল, যা আমরা আগে জানতাম না। খেলা শেষ হওয়ার পর দেখলাম আমি, দেবাশিস, পার্থ হয়ে উঠেছি অত্যাগসহন বন্ধু; মিষ্টু তার বেস্ট ফ্রেণ্ড চয়নদার মধ্যে খুঁজে পেয়েছে তার নিজের অস্তিত্বের বিস্তার; মহুয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে আমরা শ্রদ্ধা করছি; ঝুপুলের প্রতি এক বাৎসল্য মেশানো স্নেহ অনুভব করছে পার্থ।
পরদিন, বৃষ্টির মধ্যেই বেরনো হলো। নাথাং ভ্যালি, কুপুফ, আঁকাবাঁকা রেশম পথ, এলিফ্যান্ট লেক, পুরনো বাবা মন্দির। এই আমাদের দ্রষ্টব্য। বৃষ্টির পর্দার মধ্য থেকে দেখলাম আবছা এক প্রেত লোকের আলো ঢেকে রেখেছে চারদিক। কুপুফেই যাত্রা শেষ। শীতে কাঁপিয়ে দিচ্ছে আমাদের। কী দেখছি কিচ্ছু ঠাওর পাচ্ছি না। বাকীরা গাড়ি থেকে নামছে আবার উঠছে। একসময় জানলা দিয়ে দেখলাম ওইই নীচে এক অপার্থিব আবছা আলো আঁধারির মধ্য দিয়ে দেখা যাচ্ছে এলিফ্যান্ট লেক। পাশে চেয়ে দেখি আমার দিকে সহানুভূতি মাখানো চোখে চেয়ে আছে দুই বিষণ্ণ ইয়াক। আমরা এসে পৌঁছেছি চোদ্দ হাজার ফুট উঁচুতে। এই কুপুফ। আঁকা বাঁকা পথ কুহেলী বিলীন।
ফেরার পথে বৃষ্টি বাড়তে লাগল। বিকেল পাঁচটা নাগাদ পান্থশালায় ফিরে দেখি বিজলী নেই। মোমবাতির আলোয় আড্ডা বসল। আর ঠিক সেই মুহূর্তটিতেই কাঠের বাড়ির ওপর এসে আছড়ে পড়ল এক প্রবল ঝড়। বাড়ি কেঁপে কেঁপে উঠছে। কাঁপছে মোম বাতির শিখা। বাইরে বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ। আমার কেমন অস্বস্তি হতে লাগল। মনে হতে লাগল এই ঘরে আমরা ছাড়াও আরও যেন কারা আছে। আমার শ্রবণ সীমার ঠিক বাইরে দাঁড়িয়ে ফিস ফিস স্বরে কথা কইছে তারা। মনে হতে লাগল বাইরে ছুটে বেরিয়ে আকাশের দিকে বদ্ধ মুঠি তুলে বুড়ো লীয়রের মত চীৎকার ক'রে উঠি, "Blow, winds, and crack your cheeks! rage! blow! / You cataracts and hurricanoes, spout / Till you have drench'd our steeples, drown'd the cocks।"
পার্থর চিন্তিত স্বরে ঘোর কাটল। "দার্জিলিং এ ধ্বস নেমেছে। শিলিগুড়ি পৌঁছতে আট থেকে দশ ঘন্টা লাগছে। একটা ডিসিশন নিতে হবে এখুনি।" দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছন হলো। যদি পনের তারিখ প্লেন ধরতে হয় তাহলে চোদ্দ তারিখ ইচ্ছাগাঁওতে থাকা চলবে না। চোদ্দ তারিখ শিলিগুড়ি পৌঁছতে হবে যত রাত হোক। ট্যুর অপারেটর কৌশিককে ফোন করে তখনই শিলিগুড়িতে হোটেল ঠিক করে ফেলল পার্ত্থ। রাত কাটলে আমরা রওনা হব।
পরদিন সকাল দশটায় গাড়ি ছাড়ল রাজেশ। সাড়ে বারোটার মধ্যে রংলি। পথে আশ মিটিয়ে দেখে নিলাম কিউখোলাকে। রংলি থেকে রওনা দিলাম দেড়টায়। গাড়িতে বসে আবার হাসি, গান, দিশুন আর তার মাকে ভূতের গল্প শোনানো। হঠাৎ রাজেশ দাঁড়িয়ে পড়ল। দেখলাম পাহাড়ি পথে গাড়ির সারি। শম্বুক গতিতে এগিয়ে চলল রাজেশের স্করপিও। দেখলাম ধ্বসের করাল রূপ। বিশাল বিশাল বোল্ডারকে রাস্তার পাশে সরিয়ে রাখা হয়েছে। পাহাড়ের গা যেন ছুরি দিয়ে চাঁচা। শিলিগুড়ি পৌঁছলাম রাত দশটায়। ঠিক বারোঘন্টার সফর।
পরদিন সকাল এগারোটায় যাত্রা। হংকং মার্কেট ঘুরে বাগডোগরা বিমানবন্দর। সিকিউরিটি চেকিং, জিনিসপত্র ওজন, কফি স্যাণ্ডুইচে সময় কেটে গেল দেখতে দেখতে। স্পাইসজেটের কলকাতাগামী বিমানে নিজের নিজের জায়গা খুঁজে নিয়ে বসে সিটবেল্ট বেঁধে নিলাম। জানলার বাইরে তাকালাম। প্লেন ছুটতে শুরু করেছে। মিষ্টু আমার দিকে চেয়ে একমুখ হেসে বলল, "কী দারুণ ঘুরলাম আমরা, বল?" আমি একবার মনে মনে সবটা ভেবে নিলাম। নাঃ, প্রাপ্তির পাল্লাটাই বেশী ভারী। আমরা পরিস্কার আবহাওয়া পাইনি বটে কিন্তু দেখেছি প্রকৃতির রুদ্রাণীরূপ; তার সৌন্দর্যও কিছু কম নয়। আমি কল্পনায় পেয়েছি এক অজানা লোকের ইঙ্গিত; আর আমরা সবাই মিলে পেয়েছি নিজেদের। ওর দিকে চেয়ে হেসে মাথা নাড়লাম। প্লেন টেক অফফ্ করল। আর পঞ্চাশ মিনিটের মধ্যে কলকাতা।।
ভালো লাগলো লেখা ও ছবি গুলো । কিন্তু ঐ পাকদণ্ডি রাস্তার ছবি টা না থাকায়, জুলুক ঠিক চেনা গেলনা ।।
ReplyDelete