0

ধারাবাহিক - গার্গী বসু

Posted in


(পর্ব ৪) 

“গুড মর্নিং মিস ভায়োলেট, আপনার শরীর কি ঠিক নেই?” 

স্কুলের গেটেই প্রশ্নটা উড়ে এল। প্রশ্নের সাথে সাথে এগিয়ে এল প্রশ্নকর্তাও। প্রিন্সিপ্যাল জেমস ফীপ্স। লম্বা চওড়া মানুষটি গম্ভীর প্রকৃতির নন মোটেই। স্কুলের নিয়মনীতি ঠাসা বেড়াজালে ঘেরা পরিবেশে প্রাণ এনে দেয় তাঁর উপস্থিতি। সদা হাসিখুশি, সহজ বাচনভঙ্গির মাঝবয়সী মানুষটাকে সবাই পছন্দ করে। বিশেষ করে বাচ্চারা। প্রত্যেকটি ছাত্র-ছাত্রীর খোঁজ নেওয়া তার নিত্যকাজ। এবং অবশ্যই শিক্ষক শিক্ষিকাদের কারুর কোন অসুবিধা হচ্ছে কিনা সেদিকে সবসময় খেয়াল থাকে তাঁর। ধর্মপ্রান ক্যাথলিক এবং সবাইকে নিয়ে চলতে ভালোবাসেন। লাইব্রেরীয়ান মিস ভায়োলেটের যোগ্যতা তাঁর অজানা নয়। কিন্তু স্কুলের অন্যান্য সদস্যদের সহায়তা না পেলে তাঁর একার পক্ষে একজন কৃষ্ণাঙ্গী লাইব্রেরীয়ানকে শিক্ষিকার পদমর্যাদা দেওয়া সম্ভব নয়। তবুও তিনি প্রস্তাব রেখেছেন বোর্ডের কাছে। এবং সবার কুঁচকে যাওয়া ভ্রূ আর কঠোর আপত্তিকে পাত্তা না দিয়ে একা একাই অসম লড়াই লড়ে চলেছেন; যাতে ভবিষ্যতে চামড়ার রঙ কারুর স্বপ্নপূরণের পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। স্কুলের প্রত্যেকেই গভীর শ্রদ্ধার চোখে দেখেন তাঁকে। ভায়োলেটও তার ব্যতিক্রম নয়। 

হাসিমুখে সুপ্রভাত জানায় সে। বলতে পারেনা কাল সন্ধ্যের ঘটনা। গল্পের বইয়ের সাথে হুবহু মিলে যাওয়া দৃশ্যপট। বললেও বা বিশ্বাস করবে কে? ভায়োলেট নিজেও কি পারছে বিশ্বাস করতে? কিন্তু ঐ একটা ঘটনার জেরে সারারাত না ঘুমোতে পারেনি সে, স্কুলেরই এক ছাত্রীর মুখ মনে করে অজানা আশঙ্কায় বুক কেঁপে উঠেছে বারবার, তথ্য সংগ্রহ করতে আজ ভোরবেলাতেই স্কুলের লাইব্রেরীতে এসে উপস্থিত হয়েছে, এসব কিছুই যে ভীষণ সত্যি। সেই উদ্বেগ তার চোখে মুখে স্পষ্ট। 

স্কুল শুরু হয়নি এখনো। ফাঁকা স্কুল প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে সকালের নরম আলোয় ফীপ্স তার সহকর্মী মিস ভায়োলেটের চেহারা স্পষ্ট দেখলেন। শান্ত স্বভাবা মেয়েটির দুশ্চিন্তা লুকনোর চেষ্টা ফীপ্সের অভিজ্ঞ চোখকে ফাঁকি দিতে পারলো না। কেউ কিছু বলতে না চাইলে তাকে বারবার জিজ্ঞেস করে বিব্রত করাটা অসভ্যতা। তাই প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে দিলেন তিনি। বললেন, 

“সালেমে থাকতে আপনার কেমন লাগে মিস ভায়োলেট?” 

“ভালই”, ভায়োলেট হাসে। 

“আচ্ছা, আপনি কি জানেন এই জায়গাটার একটা দুর্দান্ত ইতিহাস আছে?” 

স্বীকার করতেই হয় ভায়োলেটকে, সালেমের ইতিহাস তেমন খুঁটিয়ে পড়া হয়নি তার। 

“জানেন, আমাদের পরিবারই বোধহয় এই অঞ্চলে টিকে থাকা বাসিন্দাদের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন। আপনি শুনলে অবাক হবেন, আমারই এক পূর্বপুরুষ ছিলেন এখানকার গভর্নর স্যর উইলিয়াম ফীপ্স। মজার ব্যাপার কি জানেন? তিনি ছিলেন একজন রাখাল বালক মাত্র। ভেড়া চড়িয়ে দিন কাটত তাঁর। তারপর দীর্ঘ সময়-যাত্রা করে ম্যাসাচুসেটস বে কলোনিতে এসে তিনি একেবারে গভর্নরের আসন গ্রহণ করলেন। পড়াশোনা খুব বেশি করেননি কিন্তু সূক্ষ্ম বুদ্ধিতে তাঁর জুড়ি মেলা ছিল অসম্ভব।“ 

এতটুকু বলে হাসলেন ফীপ্স। 

“নিজের পরিবারের কথা বলতে কার না ভালো লাগে বলুন? চলুন, আমার অফিসে গিয়ে বসি । লাইব্রেরীর জন্য কিছু নতুন বই এসেছে। সেগুলি আপনাকে দিয়ে দেবো।“ 

ফীপ্স কে অনুসরণ করে অফিসে এসে বসল ভায়োলেট। মনটা হাল্কা লাগছে একটু। আর ইতিহাস তো প্রিয় বিষয়। ফীপ্সের বলার ভঙ্গিমাটিও চমৎকার। মুগ্ধ শ্রোতার মতো প্রশ্ন করলো ভায়োলেট। 

“আপনি বলছিলেন সালেম শহরের একটা দুর্দান্ত ইতিহাস আছে। কি সেই ইতিহাস?” 

একমাত্র শ্রোতাটির আগ্রহ দেখে ভালো লাগলো ফীপ্সের। 

মুচকি হাসলেন ফীপ্স, “শহর? যে সময়কার কথা তখন সালেম ছিল একটা ছোট গ্রাম বা বড়োজোর জনপদ বলতে পারেন। ১৬৯২ সালে এখানেই ঘটে যায় এমন এক ঘটনা যার কালিমা আমরা নিরন্তর বয়ে চলেছি। আগামী দিনেও বয়ে চলব। আমরা যারা নিজেদের সভ্য মানুষ বলে দাবী করি তাদেরই লজ্জার কথা এটা। সালেম উঈচ ট্রায়ালের কথা জানেন কি আপনি?” 

“উঈচ”!!! অর্থাৎ ডাইনী? কি বলছেন আপনি মিস্টার ফীপ্স?” 

ভায়োলেটের বিস্ময় সীমা ছাড়িয়ে গেলো। শুধু ডাইনী শব্দটা শুনে নয়। বরং একজন ধর্মপ্রাণ ক্যাথলিকের মুখে ডাইনী কথাটা শুনে। আরও বিস্ময়কর যেটা সেটা হল কালকের বইটায় সালেম উঈচ ট্রায়ালের বিষয়ে সে নিজেই বিস্তারিত পড়েছে বলে। 

“পৃথিবীতে এমন অনেক কিছু আছে বুদ্ধিতে যার ব্যাখ্যা হয়না মিস ভায়োলেট। সালেম উঈচ ট্রায়ালের কথা ইতিহাসে লেখা আছে ঠিকই তবে স্বর্ণাক্ষরে নয় রক্তবর্ণে। এক শ্রেণীর শাসন এবং আরেক শ্রেণীর শোষণের কাহিনী হিসেবে। আমারই এক পূর্বপুরুষ স্যার উইলিয়াম ফীপ্স এই নিন্দাজনক ট্রায়াল বন্ধ করতে তৎপর হয়েছিলেন। আজকের যুগে হলে কি বলতেন আপনি এই ঘটনাকে বলুন? “ 

হ্যাঁ এই ঘটনার কথা ভায়োলেট নিজেও জানে বৈকি। অন্তত ১৫০ থেকে ২০০ জন নিরপরাধ ব্যক্তিকে ডাইনী অপবাদ দিয়ে তাদেরকে কাঠগড়ায় তোলার এবং দীর্ঘ সময়ব্যাপী বিনা দোষে তাদের বিচারাধীণ করে রাখার ঘৃণ্য ইতিহাস সে জেনেছে কালকেই ঐ বইটা থেকে। নারী পুরুষ, বাচ্চা-বুড়ো নির্বিশেষে ধরপাকড় করে আনা হয়েছিল কিছু মানুষকে। ১৯ জনের ফাঁসি, এমনকি জলজ্যান্ত একটা মানুষকে শুইয়ে তার ওপরে ভারী ওজন চাপিয়ে পিষে মেরে ফেলার মত ঘটনাও সেই সময়ে ঘটেছিল জনসমক্ষে। রাতের আঁধারে চুপিচুপি বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া, ভয় দেখিয়ে দোষ স্বীকার করতে বাধ্য করা আরও কতশত কীর্তি। ঘৃণার যে কি ভয়ানক রূপ হতে পারে তার জ্বলন্ত নিদর্শন। 

তবে ঠিক যেখানটায় আটকে গেছিল চোখ তা হল এই- 

সালেম উঈচ ট্রায়ালে সর্বপ্রথম অভিযুক্ত হয়েছিলেন যে নারী, তার নাম ছিল তিতুবা। 


সেই যে জাহাজটা পাড়ি দিয়েছিলো সমুদ্রপথে, সেটা এসে নোঙর ফেলল বার্বাডোসে। হাট বসেছে সেখানে। মানুষ বেচাকেনার হাট। ধনী অভিজাত মানুষরা সেখানে অর্থের বিনিময়ে দাস কিনতে আসে। শিশু কিশোর জোয়ান কেউ বাদ গেল না। হাট শেষে তারা পেল খাবার, মাথা গোঁজার ছাত। তিতুবা পেল দাসত্ব। তিতুবা পেল প্রভু। স্যামুয়েল প্যারিস নামে এক ক্ষমতাবান অভিজাতের সাথে সওদা হল। তার বাড়িতে ঠাই হল তিতুবার। আদিবাসী কিশোরীর পুরুষ্টু কালো পা ঢাকল নিখুঁত সেলাইয়ের লম্বা সাদা মেয়েলি পোশাকে। অবাধ্য কালো মেঘ আড়াল করল মাথা ঢাকা সাদা টুপি। কাকের পালক হারিয়ে গেল শক্ত করে বাঁধা চুলের গোছায়। জেগে থাকলো গনগনে আগুনের মত দুটো চোখ আর জোড়া ভ্রূর উপরে আঁকা একটা সাদা দাগ। বিধর্মী নিম্নবর্গীয় এক উজ্জ্বল কালো মেয়ের উপস্থিতি গমগম করতে লাগলো সারা বাড়িতে। বাড়ির ছোট সদস্যদের দেখাশোনার ভার পড়ল তার ওপরে। ছোট মেয়েরা ভালোবেসে ফেলল তিতুবাকে। দিন-রাত তিতুবার সঙ্গে আঠার মত লেগে থাকে তারা। তিতুবা তাদের গল্প শোনায়। তার জন্ম যেখানে হয়েছিল, সমুদ্রের পাড়ে দাঁড়িয়ে দেখা যেত আকাশ সমুদ্রে মিশে গেছে, সেখানকার মাটিতে, বাতাসে যাদু ছিল। জীবন ছিল সাধারণ কিন্তু ফুর্তিতে ভরা। মানুষ ছিল অল্পেই সন্তুষ্ট। প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাইতে জানত না তারা। সাধ্যের বাইরে চাইলে প্রকৃতি রুষ্ট হয় এমন বিশ্বাস ছিল তাদের। আকাশের সাথে সমুদ্রের সাথে মিলেমিশে বুঁদ হয়ে থাকা মানুষগুলোর ভেতরটাও ছিল ওইরকম বিশাল মাপের। 

তিতুবা জানে গভীর সমুদ্রের ভেতরের কথা। জলের নিচেও নাকি গাছপালা থাকে। মেয়েরা হাঁ করে গালে হাত দিয়ে শোনে সেইসব কথা। আকাশে যে পাখিরা ওড়ে তাদের ডানা ঝাপটানো দেখে দিক নির্দেশ করতে পারে তিতুবা। মেয়েরা বলাবলি করে তিতুবা নাকি পাখিদের ভাষা বোঝে। গাছপালা সম্বন্ধেও তার জ্ঞান অসীম। ছোট ছোট চারা গাছকে হাতের যত্নে বড় করে তোলে তিতুবা। বাগানের গাছগুলো ফুলে ফুলে ভরে ওঠে। ভোরবেলায় বাগানে গিয়ে দাঁড়ায় তিতুবা। বুক ভরে শ্বাস নিয়ে নেয় সারাদিনের জন্য। গাছগুলো ডালপালা দুলিয়ে তাদের আনন্দ প্রকাশ করে। বাগানে ফুটে থাকা ফুল দিয়ে অসাধারণ টিয়ারা তৈরি করে দেয় তিতুবা মেয়েদের জন্য। সেই টিয়ারা মাথায় পরে খুশিতে হাততালি দিয়ে ওঠে ছোট ছোট মেয়েগুলো। তারা একসাথে খেলে, গান গায়। মেয়েরা মনের কথা বলে তাকে। তাদের সমস্যার কথা, দ্বন্দের কথা, আশা, আকাঙ্খা, কার কি চাই সব তারা তিতুবার সামনে বলে দেয় অকপটে। তিতুবা স্মিত হাসে। নিজের মত করে তাদের বুঝিয়ে বলে সাধ্যের বাইরে চাইলে প্রকৃতি রুষ্ট হয়। তাদের শেখায় অল্পেই যখন ভাল থাকা যায় তখন বেশি চাওয়ার কি প্রয়োজন? তিতুবা অল্প দিনেই তাদের মুস্কিল আসান করার একমাত্র মানুষটি হয়ে ওঠে। মনে হতে থাকে তাদের সব জিজ্ঞাসার উত্তর বুঝি তিতুবা দিতে পারবে। এইভাবেই দিন কাটতে থাকে। হঠাৎ তাদের মধ্যেই কেউ লক্ষ্য করলো তিতুবা রোজ রাত্রে বাড়ির পেছনে একটু দূরের জঙ্গলে চলে যায়। জিজ্ঞেস করলে সে উত্তর দেয়, প্রার্থনা করতে সবাই যেমন চার্চে যায় সে তেমনই জঙ্গলে যায় প্রকৃতি দেবতার আরাধনা করতে। আর‍্যাবাক উপজাতির আরাধ্য দেবতা প্রকৃতি। তাদের মতে প্রকৃতি সর্বশক্তিমান। এই জল, হাওয়া, সমুদ্র, আকাশ সবকিছুর সাথে জুড়ে আছে প্রাণশক্তি। সেই প্রাণশক্তিকে কুর্নিশ তো জানাতেই হবে। 

হাওয়ায় হাওয়ায় সে কথা ওঠে প্রভুর কানে। তার মত প্রভু থাকতে তার দাসীটা কিনা আরাধনা করছে অন্য কারুর! এটা কি করে সম্ভব? লোকে শুনলে কি বলবে? কেমন প্রভু সে! শাসন করতে জানে না সে কেমন শাসক! কানাঘুষো শুরু হতে শাসন বাড়ল। রাত্রে বাড়ির মেয়েরা শুয়ে পড়লে ঝিয়ের কাছেও আলো থাকা চলবে না। আলো বলতে মোমবাতি। ব্যাটারিচালিত আলোর প্রচলন তখনও হয়নি। সব আলো নিভিয়ে দেওয়া হত রাত্রে। কিন্তু তিতুবাকে আটকানো গেল না। সে রোজই রাত্রে উঠে একা একা জঙ্গলের দিকে যায়। একদিন রাত্রে স্যামুয়েল পারিসের মেয়ে এলিজাবেথ প্যারিস আর তার ভাগ্নি আবিগেইল উইলিয়ামস পিছু নিল তিতুবার। কৌতূহলের বশে পিছু নিয়ে তারা সাক্ষী হয়ে গেল এক অলৌকিক ঘটনার। আলোবিহীন পথে চলেছে তিতুবা জঙ্গলের দিকে। মাথায় সাদা টুপি নেই তার। বাঁধভাঙা কালো চুল অন্ধকার করে রেখেছে তার পিঠ। দুই হাতে জামার গোছ খামচে ধরে পা দুটোকে উন্মুক্ত করেছে তাই চলার ছন্দে সাহস। আর কিভাবে যেন তার কপালে একটা চোখ খুলে গেছে। সেই চোখ থেকে জ্যোতি বেড়িয়ে বনের অন্ধকার পথ আলোকময় করে তুলেছে। সেই আলোয় ভয়ে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাওয়া দুটো মেয়ে দেখল অতিকায় একটা কালো কাক এসে বসল তিতুবার হাতের ওপরে তার কাঁধ ঘেঁষে। 

জেমস ফীপ্স কে ধন্যবাদ জানিয়ে উঠে পড়ে ভায়োলেট। ক্লাস শেষ হলেই বাচ্চারা লাইব্রেরীতে এসে ভিড় করবে। তাছাড়া বিলির ব্যাপারে যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে মনে সেটারও নিরসন হওয়া দরকার। কিন্তু অফিসঘর থেকে বেরোতেই ফীপ্স পিছু ডাকলেন। 

“আপনার বইটা যে এখানে পড়ে রইল মিস‍!” ভায়োলেট পেছন ফিরে টেবিলের দিকে এগিয়ে গেল। টেবিলের ওপরে নীল মলাটে বাঁধানো বইটার ওপরে সোনালি রঙে লেখা “সালেম উইচ ট্রায়াল”। 

ফীপ্স ঠোঁটের কোণে একটা রহস্যময় হাসি ছড়িয়ে রাখলেন কিছুক্ষণ। তারপর বললেন, “ইতিহাস বলছে, তিতুবার একটি কন্যাসন্তান ছিল। আপনি কি জানেন তার নাম কি ছিল?” 

স্বীকার করতেই হল এই তথ্য অজানা। 

“ভায়োলেট! তার নাম ছিল ভায়োলেট” গম্ভীরভাবে বললেন ফীপ্স। 

(ক্রমশ)

0 comments: