কবিতা - সুপ্রিয় মিত্র
Posted in কবিতাথেকে যাওয়া এক ভ্রমণ
সুপ্রিয় মিত্র
১.
অথচ শহর, তবু এমন কুয়াশা-বীজ কীভাবে যে হাওয়ায় ছড়ালো,
না কি পাখি খেয়ে গেছে পাকা মেঘ
তারপর এই ছত্রখান? ঘেরা ঘেরা মাঠ,
এ যেন গ্রামের ভূত, অনঙ্গ আলো সারি সারি,
হাসি-কান্না-ব্যথাদের কুশপুত্তলিকা জ্বলে ফোনের ভিতরে,
বাইরে ন্যাড়া পোড়া।
আমনের ধান ওই ভাত হয়ে শিশিরের মতো
পড়ে রইল ক্যানে, কার উপহার,
না কি ক্ষুধা বিদ্যুতের মতো, এক ঝলকানিতে যতটুকু হবে, হলো। তা-ই সই।
কিন্তু এই উচ্ছিষ্ট নেবে কে, কেনই বা নেবে
আবিরে পায়ের দাগ,
ছায়াপথ চৌকাঠে সেই থেকে থেমে আছে তো আছেই
চুঁয়ে পড়া রঙ, ভেজা শাড়ি— অপরূপ হাওয়া দিচ্ছে তবু
থমকে আছে ভেসে যাচ্ছে না,
এ কেমন বাফারিং দেখা
অন্যের বাঁচা দেখে বেঁচে থাকা ভিডিও জীবন
এত এত শীঘ্রতা নিয়ে স্থির, ঋজু, মৃদু-মন্দ মুখ
নতুন ধূসর ইটে অপত্য ফ্ল্যাটবাড়ি কী রঙই বা মানুষকে দেবে?
উঁচুতে রডের ঝোপ তোমাকে দেবে কি কিছু
আকাশের হাতছানি ছাড়া? উচ্চতার তুড়ি দেবে?
তুমি কি খ্যাতির ডাকনাম?
তোমার কিছু তো হবে, হবে কিছু
কিছু তো হবেই
কিন্তু কিছুই যেন ভালো নেই, খারাপও কতটা ঠিক
জানা নেই, জানা নেই নেই
দেশের বাড়িতে মা— পড়ে আছে একা একা, একা
সন্তানরা পড়ে আছে রাষ্ট্রের একা পাঁকে পথে
কী তবে ঠিক? কী যে অনর্গল?
কী সেই সর্বজনগ্রাহ্য মতবাদ— অবিনশ্বর ফোড়ন, মশলাপাতি?
কিছু একটা, এই কিছু মাত্র জানা আছে।
আছে যখন, তোমরাও তো আছ, কেমনই বা আছ?
অমিয় কুশল বিনিময়— এই কিছু রয়ে গেছে বাকি।
আর বাদে গেছে দোল— কী যে নাগরদোলা
হাওয়ায় হাওয়ায় ঘরে ছবি দোলে পেন্ডুলামের মতো
মৃত বন্ধু, মৃত বয়সের ছবি; মৃত দিন, দাগী ক্যালেন্ডার
পুরনো এক রঙে তারা দোলে...
দারুণ পুরনো তাতে ঠিক যেন কালশিটে ভাব
নিহত রঙের নাম ছাই দেব ভাবি, এই ভাবি
ভাবি তার গ্রহে গ্রহে দোষ, ভাবি তার নক্ষত্র-সন্দেহ
আলোকবর্ষ দূরে আছে বলে যা যা কিছু এহ গ্রাহ্য হল
হল যখন না-হওয়াও কি নেই?
আছে তো। ছড়ানো, ছড়ানো পড়ে আছে। বিছানার অনন্তে
ঘুমের মধ্যে কিছু জেগে থাকা, জেগে জেগে থাকা।
আজ।
২.
উত্তর জানা থাকলেও মাঝেসাঝে প্রশ্ন করতে হয়
প্রশ্ন, যা উত্তর থেকে শীতের সঙ্গে ধেয়ে আসে
উত্তরের খোঁজ তাকে সহজেই একাকিত্ব দেয়
একা, কঠিন কিছু নয় তাকে দুঃখ দেওয়া সহজ
কঠিন, বরফের মতো কঠিন… জলকে চিবিয়ে
খাওয়ার আস্ফালন সে এভাবে পেয়েছিল
পেয়েছিল উত্তর, যা পাহাড়ের বানানো দেওয়ালে ঢাকা
দেওয়াল, যেখানে কোনও ভোট নয় প্রশ্নপ্রার্থীর নাম
তাকে দাড়ি চিহ্নে ভোট দিন
দাড়ি, যা উত্তরকে সম্পূর্ণ করে।
অথচ সম্পূর্ণ হতে চায় না সে,
সে, সে মানুষ... পাহাড় ভালোবাসে
ভালোবাসে আর শিমূল গাছের কাছে মেঘ চায়
তুলো তুলো মেঘ, রক্ত আহত হলে
ক্ষতয় যেন চেপে ধরতে পারে…
ক্ষত, যার জন্য উত্তর পাওয়া খুবই প্রয়োজন
উত্তর সে চায় না… প্রশ্ন করে থেমে যায়,
তার এই না-চাওয়া বড় একলা, বড় ভারী
কোত্থাও না-যাওয়াও যেমন একধরনের থেকে যাওয়া
থেকে যাওয়া জাস্ট… এমনিই থেকে যাওয়া।
থেকে যাওয়া— এক ভ্রমণ।
স্থির। ওম। অনঙ্গ নিষ্ঠুর।
১.
অথচ শহর, তবু এমন কুয়াশা-বীজ কীভাবে যে হাওয়ায় ছড়ালো,
না কি পাখি খেয়ে গেছে পাকা মেঘ
তারপর এই ছত্রখান? ঘেরা ঘেরা মাঠ,
এ যেন গ্রামের ভূত, অনঙ্গ আলো সারি সারি,
হাসি-কান্না-ব্যথাদের কুশপুত্তলিকা জ্বলে ফোনের ভিতরে,
বাইরে ন্যাড়া পোড়া।
আমনের ধান ওই ভাত হয়ে শিশিরের মতো
পড়ে রইল ক্যানে, কার উপহার,
না কি ক্ষুধা বিদ্যুতের মতো, এক ঝলকানিতে যতটুকু হবে, হলো। তা-ই সই।
কিন্তু এই উচ্ছিষ্ট নেবে কে, কেনই বা নেবে
আবিরে পায়ের দাগ,
ছায়াপথ চৌকাঠে সেই থেকে থেমে আছে তো আছেই
চুঁয়ে পড়া রঙ, ভেজা শাড়ি— অপরূপ হাওয়া দিচ্ছে তবু
থমকে আছে ভেসে যাচ্ছে না,
এ কেমন বাফারিং দেখা
অন্যের বাঁচা দেখে বেঁচে থাকা ভিডিও জীবন
এত এত শীঘ্রতা নিয়ে স্থির, ঋজু, মৃদু-মন্দ মুখ
নতুন ধূসর ইটে অপত্য ফ্ল্যাটবাড়ি কী রঙই বা মানুষকে দেবে?
উঁচুতে রডের ঝোপ তোমাকে দেবে কি কিছু
আকাশের হাতছানি ছাড়া? উচ্চতার তুড়ি দেবে?
তুমি কি খ্যাতির ডাকনাম?
তোমার কিছু তো হবে, হবে কিছু
কিছু তো হবেই
কিন্তু কিছুই যেন ভালো নেই, খারাপও কতটা ঠিক
জানা নেই, জানা নেই নেই
দেশের বাড়িতে মা— পড়ে আছে একা একা, একা
সন্তানরা পড়ে আছে রাষ্ট্রের একা পাঁকে পথে
কী তবে ঠিক? কী যে অনর্গল?
কী সেই সর্বজনগ্রাহ্য মতবাদ— অবিনশ্বর ফোড়ন, মশলাপাতি?
কিছু একটা, এই কিছু মাত্র জানা আছে।
আছে যখন, তোমরাও তো আছ, কেমনই বা আছ?
অমিয় কুশল বিনিময়— এই কিছু রয়ে গেছে বাকি।
আর বাদে গেছে দোল— কী যে নাগরদোলা
হাওয়ায় হাওয়ায় ঘরে ছবি দোলে পেন্ডুলামের মতো
মৃত বন্ধু, মৃত বয়সের ছবি; মৃত দিন, দাগী ক্যালেন্ডার
পুরনো এক রঙে তারা দোলে...
দারুণ পুরনো তাতে ঠিক যেন কালশিটে ভাব
নিহত রঙের নাম ছাই দেব ভাবি, এই ভাবি
ভাবি তার গ্রহে গ্রহে দোষ, ভাবি তার নক্ষত্র-সন্দেহ
আলোকবর্ষ দূরে আছে বলে যা যা কিছু এহ গ্রাহ্য হল
হল যখন না-হওয়াও কি নেই?
আছে তো। ছড়ানো, ছড়ানো পড়ে আছে। বিছানার অনন্তে
ঘুমের মধ্যে কিছু জেগে থাকা, জেগে জেগে থাকা।
আজ।
২.
উত্তর জানা থাকলেও মাঝেসাঝে প্রশ্ন করতে হয়
প্রশ্ন, যা উত্তর থেকে শীতের সঙ্গে ধেয়ে আসে
উত্তরের খোঁজ তাকে সহজেই একাকিত্ব দেয়
একা, কঠিন কিছু নয় তাকে দুঃখ দেওয়া সহজ
কঠিন, বরফের মতো কঠিন… জলকে চিবিয়ে
খাওয়ার আস্ফালন সে এভাবে পেয়েছিল
পেয়েছিল উত্তর, যা পাহাড়ের বানানো দেওয়ালে ঢাকা
দেওয়াল, যেখানে কোনও ভোট নয় প্রশ্নপ্রার্থীর নাম
তাকে দাড়ি চিহ্নে ভোট দিন
দাড়ি, যা উত্তরকে সম্পূর্ণ করে।
অথচ সম্পূর্ণ হতে চায় না সে,
সে, সে মানুষ... পাহাড় ভালোবাসে
ভালোবাসে আর শিমূল গাছের কাছে মেঘ চায়
তুলো তুলো মেঘ, রক্ত আহত হলে
ক্ষতয় যেন চেপে ধরতে পারে…
ক্ষত, যার জন্য উত্তর পাওয়া খুবই প্রয়োজন
উত্তর সে চায় না… প্রশ্ন করে থেমে যায়,
তার এই না-চাওয়া বড় একলা, বড় ভারী
কোত্থাও না-যাওয়াও যেমন একধরনের থেকে যাওয়া
থেকে যাওয়া জাস্ট… এমনিই থেকে যাওয়া।
থেকে যাওয়া— এক ভ্রমণ।
স্থির। ওম। অনঙ্গ নিষ্ঠুর।
0 comments: