1

গল্প - শঙ্খদীপ ভট্টাচার্য

Posted in
রেনেসাঁ
শঙ্খদীপ ভট্টাচার্য


নাফিসা


তোমার নাম?
— নাফিসা।
— আচ্ছা নাফিসা, যখন সূর্য ওঠে, পৃথিবীর মানুষ খুব ব্যস্ত হয়ে এটাসেটা করে, তখন তুমি কী করো?
— আমি মৌসম আর ওর বন্ধুদের নিয়ে ওই যে দূরে পাহাড় আছে না, সেখানে যাই। 
— মৌসম কে?
— আমাদের অনেক ভেড়া আছে। ওদের চরাতে নিয়ে যাই। মৌসম সবচেয়ে ছোট। নিজের হাতে ওকে কচি পাতা আর ঘাস খাইয়ে দিই। ওর গায়ে সাদা আর কালো দুটো রংই আছে। সাদা আর কালো দুইই আমার প্রিয় রং।
— তোমার পাহাড় ভাল লাগে?
— হ্যাঁ। মৌসম আর ওর বন্ধু যখন ঘুরে বেড়ায়, আমি পাহাড় দেখি। আসমানের ঠিক আগে একটার ওপর আর একটা পাহাড়। ওদের মাথায় সাদা বরফ। আইসকিরিমের মতো বরফ! মাঝে মাঝে পাখি উড়ে যায়। আমি এসব রোজ দেখি। মৌসম আর ওর বন্ধুরা গুটুর গুটুর করে হাঁটতে হাঁটতে ওই নদীটার দিকে যাতে না চলে যায় সেদিকেও খেয়াল রাখি। আব্বাজান আম্মিজান আমার মতোই ওদেরকেও ভালবাসে। আমিও মৌসমকে খুব আদর করি। ওর গায়ে আমি গাল ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে দিই। ঠান্ডা হাওয়া দেয়। ওই হাওয়া কোথা থেকে আসে জানো? ওই যে দূরে পাহাড় দেখতে পাচ্ছ, তার ওপার থেকে। হাওয়া এসে আমার মাথার চুল আর মৌসমের পশম গায়ের মধ্যে দিয়ে গলে নদীর উপর দিয়ে গিয়ে ওই জঙ্গলে গিয়ে মেশে। সূর্য উঠলে আমি এই কাজই করি। চুপ করে বসে থাকি। পাহাড় আসমান বরফ দেখি। দেখি, আর মৌসম আর ওর বন্ধুদের খুব ভালবাসি। আমার কোনও তাড়া নেই। চুপচাপ বসে থেকে আমি এই সবই করি।
—তার পর কী হল নাফিসা?
— মৌসমের পশম গায়ে মাথা রেখে আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আমার স্বপ্নে তখন সাদা পাখি, নদীর জল আর আইসকিরিমের মতো বরফ। কত বরফ! আমার মুখটা চেপে ধরল খুব শক্ত, লোহার মতো শক্ত হাত। মৌসম খুব জোরে ডাকছিল। কী দেখেছিল ও কে জানে! আমার চোখ দুটো বন্ধ ছিল। লোহার মতো শক্ত হাতের নখ আমার চোখের পাশে বিঁধে গিয়েছিল। আমার আব্বাজানের কথা মনে পড়ল। আম্মিজানের কথা মনে পড়ল। আব্বাজান আমায় কোলে তুলে খুব করে চুমু খেত। আম্মিজান আমার মাথায় হাত বুলিয়ে ইউসুফ চাচার গল্প শোনাত। আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। ওই দূরের পাহাড় আর পাহাড়ের মাথায় সাদা বরফ, আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। আমার মাথা ঘুরছিল। খুব ব্যথা করছিল। আমি ঘুমিয়ে পড়লাম।
— যখন ঘুম ভাঙল? তখন কী দেখলে নাফিসা?
— আমার সারা শরীরে খুব ব্যথা। আমার চোখ ভিজে গিয়েছিল । যন্ত্রণায়। এত ব্যথা আমি কখনও পাইনি। আমি শুয়ে ছিলাম। হাত পা বাঁধা ছিল। খুব ঠাণ্ডা লাগছিল। খালি গায়ে ছিলাম কিনা। দূরে কোথায় ঘণ্টা বাজছিল। আব্বাজানের সঙ্গে আমি মন্দিরে গিয়েছি। মন্দিরে আমি ফুল রেখে এসেছি কত বার! সেখানেই আমি এই রকম ঘণ্টার আওয়াজ শুনেছি। আমার মুখে নোংরা কাপড় গোঁজা ছিল। খুব গন্ধ সেই কাপড়ে। কষ্ট হচ্ছিল নিঃশ্বাস নিতে। বমি পাচ্ছিল। বমি নেমে যাচ্ছিল আমার গাল বেয়ে। খুব জোরে ঘণ্টা বাজছিল তখন। আব্বাজানকে, আম্মিজানকে, মৌসম আর ওই দূরের পাহাড়কে আমি আর কোনও দিন দেখতে পাব না। আমার আবার খুব ঘুম পেল।
— তার পর আবার যখন ঘুম ভাঙল নাফিসা? তখন?
— আমার তো আর ঘুম ভাঙেনি! আমার বুকে, পেটে, সারা শরীরে কারা কামড়াচ্ছিল। নখ দিয়ে আঁচড়াচ্ছিল। ঝাঁপিয়ে পড়ছিল ধারালো কোপের মতো। সবাই মিলে আমার শরীরে গর্ত খুঁড়ছিল। খোঁড়ার শব্দ শুনছিলাম বুকের ভেতর দিকে। আমি চিৎকার করতে পারছিলাম না। এত যন্ত্রণা! আমার পিঠের নীচে রক্ত আর পেচ্ছাপ জমে গিয়েছিল। আমি আস্তে আস্তে মরে যাচ্ছিলাম। মরতে কী কষ্ট, বুঝতে পারছিলাম। সারা শরীরে। কী যন্ত্রণা! আব্বাজান আম্মিজান মৌসম আর ওই আইসকিরিমের মতো বরফে ঢাকা পাহাড় থেকে অনেক দূরে এই মন্দিরে আমি একা একা মরে যাচ্ছিলাম। তখন খুব জোরে জোরে ঘণ্টা বাজছিল। 


নীলাঞ্জনা

আপনার নাম?
— নীলাঞ্জনা।
— আচ্ছা নীলাঞ্জনা, যখন সূর্য ওঠে, পৃথিবীর মানুষ খুব ব্যস্ত হয়ে এটাসেটা করে, তখন আপনি কী করেন?
— আমি কি কম ব্যস্ত না কি! সবার আগে আমি আয়নার সামনে দাঁড়াই। নিজেকে দেখি। দেখে নিই আমার গালে কোনো পিম্পল উঠেছে কি না। আসলে কী জানেন, সেলফি তুললেও পিম্পলটা ঠিকই দেখা যায়। ওটাকে ঢাকা যায় না। ওই সুন্দর ফোয়ারার পাশে অদ্রিজা আর মঞ্জিষ্ঠাকে জড়িয়ে আজ বিকেলেই যে সেলফিটা তুলব, তাতে আমি চাই কম করে যেন সাড়ে সাতশো লাইক পড়ে।
— লাইক?
— ফেসবুক। লাইক। এক-একটা লাইক আমার কাছে সূর্যের ফোটন কণা। এনার্জিতে ঠাসা। ওগুলো আমার মেজাজ চনমনে রাখে। সারাটা দিন আমি ফড়িঙের মতো উড়ে বেড়াই। আমার ঠোঁটের কোণে হাসি লেগে থাকে। 
— তার পর?
— তার পর আমি আমার মেয়ের কথা ভাবি। ও ভাল ছবি আঁকে। পাহাড়ের ছবি। পাহাড়ের মাথায় হোয়াইট স্নো। গানও শিখছে। ক্লাসিকাল, ফোক, ফিউশন। সাঁতারে দিয়েছি। সুইমিং করলে ফিগার ভাল থাকে। ফিগার ভাল থাকলে মন ভাল। মন ভাল হলে এগজামে অনেক অনেক মার্কস। খুব বেশি মার্কস পেলে দেখবেন এক দিন আমার মেয়ে সুইটজারল্যান্ড গেছে। সেখানে স্নো মাউন্টেনকে পেছনে রেখে হবু হাবির সঙ্গে সেলফি তুলছে।
— হাবি?
— হাবি মানে হাজব্যান্ড। সে হবে খুব বড় কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট। ছোটবেলায় সে ছিল টুকটুকে ফর্সা হাসিখুশি এক ছেলে। সে আয়নায় নিজেকে দেখত পার্সোনাল রুমে। যত দেখত, ততই সে নিজের বাইসেপের প্রেমে পড়ত। উল্লাসে বলে উঠত, দেখো আমি বাড়ছি মাম্মি। তার পর বড় হয়ে পুরুষমানুষ হয়ে রেকর্ড মার্কস পেয়ে ক্লাসিক স্যুট পরে সে চিৎকার করে এক দিন পৃথিবীকে বলবে, আজ আমি দারুণ সফল! এমনই এক জনের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হবে এক দিন।
— আপনার মেয়ের বয়স কত?
— এখন সবে আট।
— নাফিসার বয়সও আট। 
— কে নাফিসা?
— সেই যে মন্দিরে কিছু পুরুষমানুষ ওকে ধরে নিয়ে গিয়ে দিনের পর দিন... নিশ্চয়ই শুনেছেন?
— আহা রে। কী ভয়ঙ্কর! ছিঃ ছিঃ। সে জন্যেই তো মেয়েকে ক্যারাটে শেখাচ্ছি। জিত কন ডু। আসুক না সামনে, দেবে না এমন পেটের মধ্যে! ওকে নিয়ে আমার খুব চিন্তা, জানেন। ও যেন ভাল খায়। ভাল দেখে। ভাল শোনে। সমস্ত নোংরামি থেকে আমি ওকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাই। কী সুন্দর দেখতে আমার মেয়ে! ফর্সা, টুকটুকে। ঠিক যেমনটি চেয়েছিলাম। মন্দিরে কম পুজো দিয়েছি! পোয়াতি শরীরে সিঁড়ি ভেঙে পুজো দিতাম সপ্তাহে এক বার। গুনে গুনে পঞ্চাশটি বার ঘণ্টা বাজাতাম। ভগবান সাড়া দিয়েছেন। এই আমার মেয়ে। এই আমার পৃথিবী। সব কিছু। সূর্য চাঁদ তারা সব কিছুকে তাচ্ছিল্য করতে পারি মেয়ের জন্য, জানেন?
— জানি তো। আর নাফিসা?
— নাফিসা! বললাম তো। খুব খারাপ। কী জঘন্য! বার বার এসব শুনতে ভাল লাগে না। কী করবেন বলুন? দেশের যা অবস্থা! আপনি চা খাবেন? দার্জিলিং টি?
— না। আরও কিছু বলুন না। বেশ লাগছে শুনতে। ফড়িঙ, লাইক, জিত কন ডু আর সফল হওয়ার গল্প। 
— আমার খুব ভাল লাগে, জানেন! এই সব বলতে। এই সব ভাবতে। আমি চাই ও জীবনের সমস্ত সুখ পাক। আমার বাবা-মা যেমনটি আমার জন্য চেয়েছিলেন। মার বাবা-মা যেমন আমার মায়ের জন্য। এ ভাবেই শরীর থেকে শরীরে, রক্ত থেকে রক্তে, মন থেকে মনে সঞ্চারিত হতে থাক আমাদের সুখে থাকার গল্প। সফল হওয়ার গল্প। 
— এখন অবশ্য অনেক রকমের সুখ নাগালের মধ্যে। তাই না?
— একদম ঠিক বলেছেন। স্যাটারডে মার্কেটের ফ্রেশ ভেজিটেবিল, রুফটপ গার্ডেনে স্কাইওয়াক। এসব কি আগে ছিল? অস্ট্রেলিয়ায় আমার কাজিন রবীন্দ্র-জয়ন্তীতে গান করল। আরও প্রেমে আরও প্রেমে মোর আমি ডুবে যাক নেমে। মোরে আরও আরও আরও দাও প্রাণ। লাইভ পারফরম্যান্স দেখলাম আইফোনে। সত্যিই এখন কত সুখ!
— আপনি হাই তুলছেন। আপনার ঘুম পাচ্ছে?
— হ্যাঁ। খুব টায়ার্ড। একাই সব করতে হচ্ছে। হাবি তো পাঁচ বছর হল স্টেটসে আছে। মেয়েকে স্কুল থেকে আনা, তার পর গান, ক্যারাটে। অফিস করে এই সব করতে হয়। ঘরেরও দেখভাল করতে হয়। চেহারার কী অবস্থা হয়েছে দেখুন। দু’সপ্তাহ হয়ে গেল পার্লারে যাওয়া হয়নি। সত্যিই খুব টায়ার্ড। এ বার আমি ঘুমোব। 
— ঘুমোবার আগে?
— ওই সবাই যা করে। ফেসবুকে দেখে নেব এই পৃথিবী কেমন আছে। কে কোথায় বেড়াতে গেল, কে কোন রেস্টুরেন্টে কী খেল। লাইক আর কমেন্টগুলো দেখলে মোটামুটি আন্দাজ করে নিতে পারি কার ভেতর কী চলছে। মেয়েকে জড়িয়ে ধরে এ বার আমি ঘুমোব। স্বপ্নে আমার খুব সুখী ফড়িঙ উড়বে...আমার মেয়েকে নিয়ে আমিও ডানা মেলে উড়ব ফড়িঙের মতো ... এই এত সুখের মধ্যেই আমার মেয়ে আস্তে আস্তে সফল হয়ে উঠবে। 


রেনেসাঁ

আপনার নাম?
— রেনেসাঁ।
— আচ্ছা রেনেসাঁ, যখন সূর্য ওঠে, পৃথিবীর মানুষ খুব ব্যস্ত হয়ে এটাসেটা করে, তখন আপনি কী করেন?
—আপাতত আমি স্টারবাকসে বসে আছি। সামনে কফি। রাস্তায় এখনও বরফ জমে রয়েছে। চিকচিক করছে। গতকাল রাতে বেশ খানিকটা স্নোফল হয়েছে। উইকেন্ডে স্নোফল হলে কোনও কথাই নেই। রাতের টাকিলা শটের আমেজ এখন অনেকটাই ম্লান। তবুও রাতের কিছু কথা মনে পড়ছে। এই যেমন রাজদীপের মাতাল হয়ে স্নেক ডান্স। কিংবা সোহিনীর পুরনো প্রেম নিয়ে সবার দারুণ খিল্লি। পরের উইকেন্ডের প্ল্যান অলরেডি ছকে নেওয়া হয়েছে। ফিলাডেলফিয়া। রাজদীপরা যখন এত পয়সা খরচ করে নিউ জার্সি এসেছে, ওদের ওখানে একবার না গেলেই নয়। সে নয় হবে পরের উইকেন্ডে। আমার উল্টোদিকে সঞ্চয়ন। আমরা বছর দশেক হল নিউ জার্সিতে সেটল করেছি।
— তার পর?
—-তার পর আর কী। কাছেই আছে রাজদীপ আর সোহিনী। গাড়িতে বড়জোর মিনিট দশেক। ওয়ালমার্টে কী সব কেনাকাটা করছে। নিউ জার্সিতে নাকি ওগুলো সস্তা। ডলার বাঁচাচ্ছে, বুঝলেন! এই দেখুন আমরা সবাই এখন গাড়িতে চড়ে বসলাম।যাত্রা হল শুরু। গন্তব্য আমিশ গ্রাম। সবুজে ঘেরা আমিশ গ্রাম। ওখানে ওয়াটার মিল আছে। ওই গ্রামের লোকজন শহরে আসে না। রোটি কাপড়া মকানের বন্দোবস্ত ওরা নিজেরাই করে। এসব দেখে চমকে যেতে আমরা সবাই যাচ্ছি আমিশ গ্রামের দিকে। 
— খুব ভাল কথা। আপনাদের আনন্দে আমি আনন্দিত। কিন্তু লক্ষ্য করছি আপনার গা হাত পা ভীষণ কাঁপছে। মোবাইল ফোনটাকে একটু বেশিই শক্ত করে ধরে আছেন। আপনার চোখের কোণে মনে হচ্ছে জল জমছে। আপনি কি কাঁদছেন? আপনার মোবাইল স্ক্রিনে ওটা কার ছবি? 
— নাফিসা। 
— নাফিসা কে?
— সেই যে মন্দিরে কিছু পুরুষ যাকে ধরে নিয়ে গিয়ে দিনের পর দিন... 
— কী আশ্চর্য! এমন সুন্দর উইকেন্ডে, এমন সুন্দর হাওয়ায়, এই আনন্দযাত্রায় আপনি নাফিসার কথা ভাবছেন? তা বেশ। জানেন, সে দিন সিডনিতেও এ রকমই একটা ঘটনা ঘটেছে। 
— কী ঘটনা?
— একটি মেয়ে সে দিন অফিসে কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একটা ইম্পর্ট্যান্ট মিটিঙে বিজনেস স্ট্র্যাটেজি নিয়ে কথা বলতে বলতে হঠাৎ হাউহাউ করে কেঁদে ওঠে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনি কাঁদছেন কেন? এমন সুন্দর অফিস, এমন সুন্দর ভবিষ্যৎ আপনার, আপনাদের সবার ইনশিয়োরেন্সও আছে। তা হলে আপনি কাঁদছেন কেন? মেয়েটি শান্ত হল, স্থির হল। কিন্তু কান্নার ঘোর কাটল না। মৃদু কাঁপা গলায় বলল, নাফিসা। ব্রিস্টলেও একই ঘটনা ঘটেছে। নিজের ছেলেকে স্কুল থেকে আনার জন্য বেরিয়েছিল মেয়েটি। রাস্তায় কিছু লোক একসঙ্গে জোট বেঁধে হাঁটছিল। হাতে প্ল্যাকার্ড। মেয়েটি কী আজব কাণ্ড করল জানেন? ছেলের স্কুলের রাস্তা ছিল ডান দিকে। ডান দিকেই যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু মেয়েটি বাঁ দিকে ঘুরে ওই লোকগুলোর সঙ্গে হাঁটতে শুরু করল তাল মিলিয়ে। আমি সঙ্গে সঙ্গে জিজ্ঞেস করলাম, কী ব্যাপার বলুন তো? এমন তো হওয়ার কথা ছিল না! আজকে তো দারুণ হাওয়া। কথা ছিল ছেলেকে নিয়ে সার্কাস দেখতে যাবেন। মেয়েটি কিছু বলল না। আমার হাতে প্ল্যাকার্ড ধরিয়ে দিল। প্ল্যাকার্ডে নাফিসা। উজ্জ্বল চোখে আমার দিকে তাকিয়ে।একটা আট বছরের বাচ্চা মেয়ে হাসিমুখে যে ভাবে তাকায়। নাফিসার চোখে ...
— আমি জানি।
— কী জানেন?
— নাফিসার চোখেমুখে আসমান, পাহাড় আর আইসকিরিমের মতো বরফ। সারা শরীর জুড়ে ওর মৌসমের আদর। আমার রাতে ঘুম আসে না। আমি জেগে থাকি আর ভাবি নাফিসার কথা।
— এই সুখের পৃথিবীতে সিডনি আর ব্রিস্টলেও ওই দুটি মেয়েও ঘুমোতে পারছে না বেশ কয়েক রাত হল। কিন্তু কথায় কথায় আমি ওদের নাম জিজ্ঞাসা করতেই ভুলে গেছি।
— আমি জানি ওদের নাম।
— আপনি জানেন! কী নাম?
— আমাদের নাম রেনেসাঁ। 

1 comment: