0

অণুগল্পঃ সংযুক্তা মজুমদার

Posted in

অণুগল্প




চিরকুট
সংযুক্তা মজুমদার



সবে কলেজ শেষ করে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হয়েছি। কাকিমা বললেন ওঁর জায়ের মেয়েকে ইংরেজি পড়াতে। অনার্স নিয়ে পড়ছে শান্তা। শুরু হল সপ্তাহে তিনদিন কাকিমার বাড়ি যাওয়া। শান্তার সাথে শেক্সপিয়র, শেলী, কিটস, ডি এইচ লরেন্স নিয়ে দিব্যি চলছিল। 

একদিন আমি একা বসে, জানলার পরদা উড়ছে, মনে হল উল্টো দিকের বাড়ির ছাদ থেকে কেউ তাকিয়ে আছেন। তথাকথিত সুপুরুষ নন তিনি। তবে আমি কিছু না ভেবেই বড় লজ্জা পেলাম। সেই শুরু। শান্তা থাকলে কোনোদিনই আসতেন না। আমি আরও একদিন করে যাওয়া বাড়িয়ে দিলাম। 

সেদিন কলেজে নবীনবরণ উৎসব ছিল। শাড়ি, কানে ঝুমকো, আর একটা ঢিলে হাতখোঁপা। কলেজ ফেরত কাকিমার বাড়ি। পড়িয়ে বেরিয়েছি যেই পায়ের কাছে এক টুকরো কাগজ এসে পড়ল –

"তোমায় এইই মানায় অজানা ঝুমকো, খোঁপা, তাঁতের শাড়িতে স্বপনে আনাগোনা ।" - শান্তনু 

অবশ হয়ে গেলাম। একদম ভেসে গেলাম। শুধু একটু দেখা, কয়েকটা বকুল ফুলের বৃষ্টি আর ভালবাসার ঝড়। বেশ চলছিল। পার্ট টু পরীক্ষা শেষ। শান্তাকে বললাম, তৈরি হ’ এবার ইউনিভার্সিটির জন্য । শান্তার চোখে ভীষণ লজ্জা। কাকিমা বললেন, " না রে, ও আর পড়বে না। ওর বিয়ে। হাতের কাছে এমন পাত্র ছাড়া যায়? ওই উল্টো দিকের বাড়ির শান্তনু। খুব মানাবে ওদের… 

আরও কত কথা বললেন কাকিমা, শুনিনি। বেরিয়ে পরলাম। ভাগ্যিস অন্ধকার হয়ে এসেছিল। অবাধ্য চোখকে বোঝানো দায়। আজও একটা চিরকুট এসে পড়ল পায়ের কাছে – "শান্তনুর যোজনগন্ধা তুমি মিষ্টি মেয়ে বাসি তোমায় ভালো আমি জেনো সবার চেয়ে ।" 

হলদে হয়ে যাওয়া চিরকুট গুলো আজও রাখা। আজও ভাবি "ভালবাসতে?"

0 comments: