কবিতা : নৈরিৎ ইমু
Posted in কবিতা
কবিতা
আর কোন প্রশ্ন ক'রো না
নৈরিৎ ইমু
যদি তুমি বলো, এই বিতৃষ্ণার জীবন নিয়ে আমি কী করবো ?
তবে আমি বলবো তারও অধিক জীবন আমি ব্যয় করেছি ভালোবাসাতে।
আর যদি বলো, এই যে দেহ কোষ নির্মাণাধীন শক্তি সঞ্চারে কী লাভ?
আমি বলবো, এরচে উত্তম দক্ষ কারিগরি চলেছে আমার মননে।
তুমি হাসবে, হেমন্তের ঘাস মাড়িয়ে যেতে যেতে ভাববেও
হাতের কোন আঙুল আমি আগে ছুঁয়েছি কতদিন পূর্বে কেমন শিহরনে
যদি আমি আগুনের মতো বক্ষ পিঞ্জর তোমার সম্মূখে রেখে বলি -
দাও একে ছাই করে দেখাও, জ্বলছে তো জ্বলছে জ্বলনের সমাপ্তি আনো
তুমি হতবিহ্বল হয়ে অশ্রু ঝরালে সে জল নিতান্তই অগ্নি নির্বাপণে কম পড়ে যাবে!
আমি বলি এখানে আমার কন্ঠস্বর উপড়ে তুলে দিলাম
কম্পমান কিছু শব্দ এখনো লেগে আছে দেখো
এমন ঝংকার যা কিনা তুমি ইতিমধ্যে আর শুনতে পাবে না
অথবা তোমার জন্মাবধি শুনতে পাও নি পর্যন্ত!
তারপর আমি ছুটেছি অনেক শীতের রাত, অপ্রেমের প্রেতাত্মারা নিয়েছে পিছু
বারংবার আমাকে শাসিয়ে কাঁদিয়ে শান্ত হয় নি কিছুতেই
আমার যাত্রা পথে বহুবার বিভ্রান্তির সূত্রপাত করে
লগ্নের সময়কে সংকুচিত করেছে আর তোমাকে দিয়েছে ধোঁকা কুয়াশার মতো
তুমি মাঝে মাঝে হয়ে গেলে অবিশ্বাসিনী মাঝে রহস্যনায়িকা
আমি কেবল অপেক্ষার জপমালা গুনে গুনে থেকেছি প্রচন্ড আশায় ঋতুকাল ধরে।
আর যদি তুমি বলো, কী পেয়েছো এসব সব কিছুর বিনিময়ে?
প্রতিউত্তরে আমি কেবল তোমার দিকে তাকিয়ে থাকাই যথেষ্ঠ মনে করি
যদি বলো, কী দিয়েছো আমায়? নয় চন্দ্রিমা, কূল ভাঙা নদী
বলি, ফেনিত রক্ত নাচে তোমার জন্য দেখ রঙিনত্ব সর্ব উৎকৃষ্ঠ রাঙাও নিজেকে।
এরপরও তুমি দন্ডিত করো আমায়, হয়তোবা লঙ্ঘন বা অপরাগতায়
আমি বিধি সিদ্ধ সাধ্যের উর্ধ্বে চেয়েছি বলে তোমায় এবং চরম উগ্রপন্থী।
তবুও তুমি এক অমাবস্যার রাত কে স্বাগত জানাবে
আমার ঘাড় থেকে বুক বরাবর চেপে বসবে আঁধার
কেবল শ্বাসের সাথে তোমার নাম ধরে ডাক আসলে
তোমার ব্যাকুলতা যেন চাপা পড়ে ভয়ঙ্কর পর্বতের পাদদেশে।
আর আমাকে প্রশ্ন করো না, তুমি মূর্তিমান হলে কেন ?
হ্যাঁ একমাত্র তখন আমি উত্তরে নীরব থাকবো
জানতে চেয়ো না , তোমার ঘ্রাণ পাচ্ছি কী? কিংবা সে মুহূর্তের আবদার!
পৃথিবীর ছায়া মাড়িয়ে যাওয়া কেউ তা পায় না, আমিও না।
0 comments: