3

ধারাবাহিক - প্রিয়াঙ্কা চ‍্যাটার্জী

Posted in


নরকবাসিনী

পর্ব-২

সৈন্য সহযোগে কুমার, অত্যাচারী রাজপ্রতিনিধি দারুকের গৃহের সম্মুখে এলেন। তাঁকে কারারুদ্ধ করতে বেশী সময় লাগল না কুমারের। বাকি বিদ্রোহীগণ আত্মসমর্পণ করে।

দারুক মধ্যবয়সী গৌরবর্ণ, খর্বকায়, তার চক্ষুদ্বয় ক্ষুদ্র। দারুকের চোখে ভয় থাকলেও ক্ষণিকের জন্য তার মুখে বিদ্রুপাত্মক হাসির ঝলক দেখা গেল। সহদেবের চক্ষু এড়িয়ে যায়নি, অজানা আশঙ্কায় তার মন কেঁপে ওঠে। কুমার দয়াপরব‌শতঃ দারুককে ক্ষমা করে দিলেন। সহদেব বললেন --কুমার, সত্য কি একে বিশ্বাস করা যায়?

মৃদুভাষী কুমার বললেন --আরেকটা সুযোগ দেওয়া যাক। তুমি ভয় পেওনা।

সৈন্যদলের মধ্যে সেনানী হয়ে রইল দারুক। শ্যেণপক্ষীর মত দারুকের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি যেন অন্য অভিসন্ধি ব্যক্ত করে।



মাসাধিক কাল পূর্বের ঘটনা:

সময় বড় বিষম বস্তু। নদীর মত প্রবহমান, তিলমাত্র স্থির নয়। সাক্ষী হয়ে আছে যুগযুগ ধরে হাজারো ইতিহাসের।

তিনশত খ্রীষ্টপূর্বাব্দ।

মগধের রাজগৃহ। এক বিশেষ কারণে গোপন সভার আয়োজন হয়েছে। ঘৃতের প্রদীপ জ্বলছে। সভাসদ বিশেষ বিশ্বস্ত পার্শ্বচরকিছু সেখানে আছেন। রাজজ্যোতিষী সুবলের মুখমণ্ডলে গভীর ভ্রুকুটি। মহামাত্য রাধাগুপ্ত ও বিরূপাক্ষ উপস্থিত।

--রাজন, ভাবগতিক শুভ নয়। রাজ্যে ঘোর অমঙ্গলের সূচনা হতে পারে।

--আপনি আবার দেখুন রাজজ্যোতিষী।

রাজজ্যোতিষী সুবল বললেন --ক্ষমা মহারাজ, কিন্তু গণনায় যে ভুল নেই।

মহামাত্য বিরূপাক্ষ বললেন --মহারাজ, তক্ষশীলায় প্রজাগন নিয়োজিত প্রতিনিধির দারুকের অত্যাচারে রুষ্ট। আপনি কুমারকে তথায় পাঠিয়ে দিন। কুমার সিদ্ধহস্ত এই বিষয়ে।

মহারাজের চিন্তামগ্ন মুখমণ্ডল হতে ধীরে ধীরে চিন্তা দূর হয়ে মৃদু হাসি দেখা গেল।

রাজজ্যোতিষী সুবল বললেন --গণনা নির্ভুল রাজন, বিপদ আসন্ন। কুমারের যাওয়া নিষ্প্রয়োজন। কুমারের বাইরে যাওয়া, অশুভকে ডেকে আনবে।

--রাজজ্যোতিষী, কুমার রাজ্যের বাইরে থাকলে রাজ্যের উন্নতির জন্য শ্রেয়, জ্যেষ্ঠ্য ভ্রাতার সাথে তার দুর্বিনীত আচরণ উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মহারাজ কুমারকে ডেকে বললেন --পুত্র, তক্ষশীলায় তোমাকে বড় প্রয়োজন। সম্ভব হলে কাল প্রাতঃকালেই যাত্রা শুরু কর। রাধাগুপ্তের পুত্র সহদেব যাবে তোমার সাথে।

পরদিন প্রাতঃকালেই কুমার তার শতাধিক সৈন্য ও প্রিয়পাত্র সহদেবকে নিয়ে যাত্রা করেন তক্ষশীলার উদ্দেশ্যে।

3 comments:

  1. শেষ থেকে ১৩ নম্বর লাইনের প্রথমে প্রতিনিধি হবে। "র" অতিরিক্ত। পড়ছি...

    ReplyDelete
  2. দুর্দান্ত এগোচ্ছে গল্পটা.... খুব ভালো লাগছে লেখাটা...বেশ ভালো একটা ঐতিহাসিক গল্প আমরা পেতে চলেছি 😊

    ReplyDelete