0

ঋতু ম্যাডামের রান্নাঘর থেকে - মৈত্রেয়ী চক্রবর্তী

Posted in


পাঁচমিশালি শীতের তরকারি


শীত যাই যাই করেও ফিরে ফিরে আসে। বাজারেও শীতের সব্জি রয়েছে, ফলে মোটামুটি একঘেয়ে হতে শুরু করেছ মেন্যু। আবার বহু সময়েই একটু এটা একটু ওটা পড়ে আছে, যা দিয়ে একটা সব্জির তরকারি করা মুস্কিল। অতএব, সব অল্প পরিমান সব্জি দিয়ে, একটু স্বাদ বদল প্লাস সহজে রান্না এবং সহজপাচ্য একটি রেসিপি বলি শীতের সব্জি দিয়েই। অল্প ফুলকপি, একটু গাজর, একটা আলু, একটু বিনস, একমুঠ কড়াই শুঁটি আর একটা বিট। মূলতঃ এইগুলোই ব্যবহার করেছি। ফুলকপির ডাঁটা পাতা দিয়ে আর চচ্চড়ি বা বাটা খেতে ইচ্ছে না করলে সেগুলোও আরামসে মিশিয়ে দিতে পারেন। তাতে তরকারির পরিমানও বাড়বে, ফ্রিজও হাল্কা হবে। সব সব্জি নিজের ইচ্ছে মতো কেটে ধুয়ে আলাদা আলাদা করে রাখুন। তবে, সব্জি কাটাটা কিন্তু একটা আর্ট; এবং রান্নার স্বাদ অবশ্যই নির্ভর করে তার ওপর। কাজেই চেষ্টা করবেন, সামঞ্জস্য রেখে কাটতে। তেল গরম করে তাতে পাঁচফোড়ন, কালোজিরে বা কোনো ফোড়ন ছাড়াও রান্না করতে পারেন। মিহি করে পেঁয়াজ কুচি আর একটা বা দুটো কোয়া রসুন কুচি তেলে দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে নিন। সাঁতলানোর থেকে বেশী আবার ভাজার থেকে কম। তারপর এক এক করে সব্জিগুলো দেবেন। যে সব্জি সেদ্ধ হতে সময় বেশী নেয় সেটা আগে দেবেন। আর, বিটকে আলাদা সেদ্ধ করে নিন, তাহলে তরকারির রক্তাক্ত রঙ হবে না। নুন, কারি পাউডার ব্যস আর কোনো মশলার প্রয়োজন নেই। একটু জল দিয়ে, সব সব্জি সেদ্ধ হয়ে এলে বিট সেদ্ধ মিশিয়ে দিন। এরপর নারকোলের দুধ মিশিয়ে বেশ গাঢ় ঝোল করে নিতে পারেন। অথবা, এমনি দুধে একটু ময়দা ভালো করে গুলে সেটাও দিয়ে দিতে পারেন। আঁচ বন্ধ করে একটু আদার গুঁড়ো বা এক চিমটি আদা বাটা আর গোলমরিচ গুঁড়ো ছড়িয়ে মিশিয়ে দিন। চাইলে একটু ঘিও দিতে পারেন।

এবার বলি, শুধু সব্জি ছাড়াও এতে পনির, চিকেন বা মাছও কিন্তু মেশাতে পারেন। ছোটো করে টুকরো করা চিকেন অথবা সেদ্ধ চিকেন হাত দিয়ে অসমান ভাবে টুকরো করে মেশাতে পারেন। কম গন্ধওলা মাছের ফিলে একটু সাঁতলে নিয়ে মেশাতে পারেন। অথবা পনির হাল্কা ভেজে বা না ভেজেও মেশাতে পারেন। গরম ভাত, রুটি, ব্রেড সব দিয়েই খাওয়া যাবে মোটামুটি একই পদের ভিন্ন ভিন্ন রূপ। এতে মোটামুটি এক পদেই কাজ সারা হয়ে যায়। যদিও বেশিরভাগ বাঙালী বাড়ীতে ‘এক পদে খাওয়া সারা’ শুনলেই আঁতকে ওঠেন মানুষ। তাও, সাজেস্ট করলাম। শীতের সময়ে, রাতে বিশেষ করে, যিনিই রান্না করুন, কষ্ট কিন্তু হয়ই। কাজেই একটা পদ অথচ সুস্বাদু, স্বাস্থ্যকর, দেখতে সুন্দর সবই একসাথে হবে। বানালে কিন্তু জানাতে ভুলবেন না। অবশ্য বানাতে গেলে তো রেসিপি পড়তে হবে; কেই বা পড়েন কে জানে…


0 comments: