সম্পাদকীয়
Posted in সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয়
ক্যালেন্ডার যেই সবেমাত্র বর্ষার বিদায় ঘোষণা করতে আরম্ভ করেছে, ওমনি, এ কি রে বাবা... আকাশ ভেঙে বৃষ্টি এবং কয়েক ঘন্টায় পুরো শহর টইটম্বুর! বেচারা ক্যালেন্ডারেরই বা কি দোষ? সে না দ্যাখে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেল, না পায় আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের খবর। এমনকি সম্প্রতি রাষ্ট্রসঙ্ঘের যে সমীক্ষা বলছে পৃথিবীর পরিমণ্ডলে স্বাভাবিকভাবে শ্বাসগ্রহণযোগ্য বাতাসের মেয়াদ বড়ো জোর আর তিন দশক, সেই সমীক্ষার খবরও বেচারা ক্যালেন্ডার রাখে না।
অবশ্য তাতে আমাদের ঘাবড়ানোর কিছু নেই। ভারতবর্ষ এগোচ্ছে। ইসরোর চন্দ্রযান চাঁদের মাটিতে নামলো বলে। ভারতবর্ষ ছাড়া আর যে সাতটি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা চন্দ্রাভিযান করেছে, সেই অ্যামেরিকা, রাশিয়া, ইওরোপীয় জাতিসঙ্ঘ, চীন, জাপান এবং ইসরায়েল উন্নত অর্থনীতি হিসেবে পরিগণিত। সুতরাং আমাদের চন্দ্রযানের চন্দ্রাবতরণের সঙ্গে সঙ্গেই যে দেশের অর্থনীতির ‘দানবিক উল্লম্ফন’ ঘটবে, তাই নিয়ে নিশ্চয়ই আপনাদের কারও কোনও সন্দেহ নেই! থাকলে এই মুহূর্তে সে সব দূর করুন। নিশ্চিন্তে থাকুন এবং মন দিয়ে আদার ব্যাপার করুন।
আরও আনন্দসংবাদ হলো, এবার কাশ্মীরিরাও নিশ্চিন্তে আদার ব্যাপার করতে পারবে। যে অগণতান্ত্রিক ৩৭০ ধারা এতদিন তাদের সেটা করতে দিচ্ছিলো না, তা এবার সমূলে উৎপাটিত। আর কোনও চিন্তা নেই। পাকিস্তানকে কদলী প্রদর্শন করে কাশ্মীর এবার ভারতকে আবার জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসনে বসাবার জন্য সবেগে ধাবিত হবে। খালি সেদিন যে কার্টূনটা দেখলাম – একটা বাড়িতে আগুন লেগেছে... দাউ দাউ করে বাড়িটা জ্বলছে... তার ভিতরে আটকে পড়া লোকজনের আর্তনাদ ভেসে আসছে... আর বাইরে কারা যেন অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে দেওয়ালের একটা ফাটল সারাচ্ছে – এইরকম কার্টূন-আঁকিয়েদের অবিলম্বে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দিলেই আমাদের আশু অগ্রগতির পথ নিষ্কন্টক!
যাই হোক...ঋতবাকের পঞ্চম বর্ষ পূর্ণ হয়ে ষষ্ঠ বর্ষ প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হলো। এখন এসব জাহাজের খবরে আমাদের কাঁচকলা! আমরা মন দিয়ে সাহিত্যচিন্তা-রূপী আদার ব্যাপার এবং বিনিময় করতে থাকবো। সঙ্গে থাকবেন। ভালো থাকবেন।
শুভেচ্ছা নিরন্তর
0 comments: