0

প্রবন্ধ - ধ্রূবজ্যোতি চক্রবর্তী

Posted in

প্রবন্ধ


জন্মশতবার্ষিকিতে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: একটি শ্রদ্ধাঞ্জলি
ধ্রূবজ্যোতি চক্রবর্তী


(১)

সাগরময় ঘোষের “হিরের নাকছাবি” বইটিতে একটি সুন্দর অ্যানেকডোট আছে।

প্রতিভাবান এবং রূপোলী পর্দায় প্রতিষ্ঠিত লক্ষ্মীর বরপুত্র এক নামী-দামী লেখক বিভূতিভূষণকে বলেছিলেন যে বনজঙ্গল আর গ্রামগঞ্জের মাঠঘাটের গল্প না লিখে বরং সামাজিক জীবনে নারী-পুরুষের বিচিত্র সম্পর্কের টানাপোড়েনের গল্প লিখতে। লক্ষ্মীর বরপুত্র সাহিত্যিকের কথায় বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস বনজঙ্গল, গ্রামগঞ্জের লেখক বিভূতিভূষণকে ওইসব লেখার জন্য মনে রাখবে না বরং ওঁর লেখাই বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে।

খুব দুঃখ হয়েছিলো বিভূতিভূষণের। অতঃপর তিনি সেই প্রখ্যাত লেখকের টালার বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে টালিগঞ্জে কালিদাস রায়ের কাছে ছুটে এসেছিলেন। কালিদাস রায় তখন একজন বিখ্যাত বাংলা সাহিত্য সমালোচক। সব শুনে হেসে তিনি বিভূতিভূষণকে বলেছিলেন যে অমুক সাহিত্যিক বঙ্গসাহিত্যের দেবী সরস্বতীকে যতই স্বর্ণালঙ্কারে সাজানোর চেষ্টা করুন না কেন, দেবী সরস্বতীর নাকের হিরের নাকছাবিটা কিন্তু বিভূতিভূষণেরই থাকবে।

কি যে অসাধারণ দূরদৃষ্টি ছিলো কালিদাস রায়ের, আজ তা বাংলা সাহিত্যের পাঠক মাত্রেই উপলদ্ধি করতে পারছেন।

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্মের শতবার্ষিকি তর্পণকালে এই লেখাটি লিখতে বসে আমার সাগরময় ঘোষ কথিত ওপরের অ্যানেকডোটির কথাই সর্বপ্রথমে মনে এলো।

এই প্রসঙ্গে আমার অত্যন্ত ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে, হিরের নাকছাবিটা না হয় বিভূতিভূষণেরই থাকলো, তবে হংসেশ্বরী দেবী সারদার অঞ্জলিদান প্রকল্পে বঙ্গসাহিত্যের উৎকৃষ্ট কিছু পুষ্পচয়ন কালে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের নামটা যে অন্যতম হিসেবে অবশ্যই বিবেচিত হবে, এ বিষয়ে আমার কোনও সন্দেহ নেই।

কিশোর বয়সে অনেকের মতো আমারও নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখার সাথে প্রথম পরিচয় অতি অবশ্যই ওঁর অমর সৃষ্টি টেনিদার মাধ্যমে। টেনিদা ঘনাদা নন; নন তিনি ফেলুদা অথবা ঋজুদা। বঙ্গসাহিত্যে আমরা যে ক’টি দাদা চরিত্রের সন্ধান পাই, তার মধ্যে থেকে বয়স ভোলানো, প্রজন্ম পেরোনো এক অবাক করা চরিত্র এই টেনিদা। পটলডাঙ্গার চারমূর্তির মহানায়ক টেনিদা ওরফে ভজহরি মুখুজ্জে এক কিংবদন্তী চরিত্র। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের টেনিদাকে নিয়ে লেখা পাঁচটি উপন্যাস, বত্রিশটি গল্প আর একটা নাটিকা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। পাঠক-পাঠিকা মহলে টেনিদার এতই প্রভাব ছিলো যে আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত টেনিদা সমগ্রের সংকলক জানাচ্ছেন,সংকলনটির কাজে হাত দিয়ে তাঁর টেনিদা নামে এমন গল্প-উপন্যাসও দু-একটা বাজার-চালু গ্রন্থে চোখে পড়েছে, যা কিনা নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর প্রকাশিত এবং সেগুলো তাঁর লেখা নয়। সেইসব সৃষ্টি তিনি সেই সংকলনে স্থান দেওয়া সঙ্গত মনে করেননি। সেই সঙ্গে তিনি অতি বিনয়ের সঙ্গে জানিয়েছেন যে এই পাঁচটি উপন্যাস, বত্রিশটি গল্প আর একটা নাটিকা ব্যতীত নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের আর কোনও লেখা যদি কোন সহৃদয় পাঠক-পাঠিকা’র সন্ধানে আসে, তবে তাঁরা যেন অনুগ্রহ করে প্রকাশকের গোচরে আনেন।

উপন্যাস হিসেবে “চারমূর্তি”-ই টেনিদা সিরিজের প্রথম উপন্যাস। ১৯৫৭ সালে অভ্যুদয় প্রকাশ মন্দির থেকে চারমূর্তি যখন গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়, ভূমিকায় নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছিলেন, “ছোটদের একটুখানি খুশি করবার আশা নিয়ে চারমূর্তি ধারাবাহিক ভাবে শিশুসাথী’তে লিখেছিলাম। ছোটরা আশাতীতভাবে সাড়া দিয়েছে। সেই ভরসাতেই বইয়ের আকারে প্রকাশ করা গেল।”

(২)

এখন কথা হচ্ছে, এই অদ্বিতীয় টেনিদা কি পুরোপুরি নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের কল্পনা? আর চাটুজ্জেদের রোয়াক কি সত্যিই কোথাও ছিলো? এতদিন ধরে যাঁরা এসব জানতে চেয়ে এসেছেন, তাঁদের কৌতূহল নিরসন করার জন্য টেনিদাভক্ত এক সাংবাদিক দীপঙ্কর চক্রবর্তী পটলডাঙ্গায় গিয়ে সেই সত্যি টেনিদার সাথে দেখা করে তাঁর সাক্ষাৎকার প্রকাশিত করেছিলেন আনন্দবাজার পত্রিকায়।

সাক্ষাৎকারের পর তিনি যে কথাটা বলেছেন সেটা আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি - “টেনিদা আর লেখক নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় একই বাড়িতে থাকতেন, টেনিদা বাড়িওয়ালা, লেখক ভাড়াটে।”

২০ নম্বর পটলডাঙ্গা স্ট্রিটের বাসিন্দা প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় ওরফে আদি ও অকৃত্রিম টেনিদা বললেন, “ওটা আসলে মুখুজ্জেদের রোয়াক। নামটা একটু পালটে দিয়েছিলেন নারায়ণদা। আর ‘ডি-লা-গ্র্যান্ডি’ও আদতে ওঁরই মুখের কথা, গল্পের খাতিরে আমার মুখে বসিয়ে দিয়েছিলেন।”

এবার একটু নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের জীবনপঞ্জির দিকে নজর দেওয়া যাক।

ইং ১৯১৮ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি তৎকালীন অবিভক্ত বাংলাদেশের দিনাজপুরের বালিয়াডিঙ্গীতে জন্মগ্রহণ করেন নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়। বাবার নাম ছিলো প্রমথনাথ গঙ্গোপাধ্যায়। গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারের আদিবাড়ি ছিলো বরিশাল জেলার বাসুদেবপুরের নলচিরা গ্রামে।

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের পারিবারিক নাম ছিলো তারকনাথ। সাহিত্য জগতে তিনি নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ছদ্মনামেই প্রকাশিত হন। বলা যেতে পারে এটাই তাঁর প্রথম ছদ্মনাম। এরপরে অবশ্য তিনি সুনন্দ ছদ্মনামেও প্রকাশিত হয়েছিলেন।

বাবার বদলির চাকরির সুবাদে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়কে দিনাজপুর, ফরিদপুর আর বরিশাল ঘুরে ঘুরে স্কুল আর স্নাতক পর্যায়ের পড়াশোনা শেষ করতে হয়েছিলো।

এই সময়ে তাঁর জীবনের দুটি ঘটনা অবশ্যই উল্লেখযোগ্য।

১৯৩৫ সালে ফরিদপুরে রাজেন্দ্র কলেজে পড়াকালীন বিপ্লবী কার্যকলাপের জন্য তাঁকে কলেজ ছাড়তে হয়। ভাবতে বসলে আশ্চর্য হতে হয় যে, ইংরেজ সরকারের অধীনে পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত পিতার সন্তান হয়েও দেশমাতৃকাকে সেবা করার ডাকে সাড়া দিতে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় পিছপা হন নি।

অবশেষে ১৯৩৬ সালে নন-কলেজিয়েট ছাত্র হিসেবে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন বরিশালের বি.এম কলেজ থেকে।

দ্বিতীয় উল্লেখযোগ্য ঘটনাটি হলো, স্নাতক স্তরে পঠন-পাঠন কালে তিনি জীবনানন্দ দাশকে পেয়েছিলেন তাঁর শিক্ষক হিসেবে। নিয়তির লিখনে এই সাক্ষাৎকারই হয়ত ভবিষ্যতে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়কে সাহিত্য জগতে প্রবেশের প্রেরণা দিয়ে থাকবে।

অবশেষে ১৯৩৮ সালে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পঠনপাঠনের জন্য নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের কলকাতায় আগমন। তারপর থেকে আমরা দেখতে পাই পূর্ণবিকশিত নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়কে।

১৯৪১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে এম.এ পাশ করেন তিনি আর সেই সঙ্গে প্রাপ্ত হন ভুবনেশ্বরী স্বর্ণপদক। এরপর শুরু হয় তাঁর অধ্যাপনা আর বাংলা সাহিত্যসেবা। জলপাইগুড়ি কলেজ, কলকাতার সিটি কলেজ ঘুরে তিনি ১৯৫৬ সাল থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর অধ্যাপনা জীবন শুরু করেন। ইতিমধ্যে ‘বিচিত্রা’পত্রিকায় তাঁর প্রথম গল্প প্রকাশিত হয়। তারপর থেকে লেখক নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখনী বঙ্গসাহিত্যকে নানাভাবে সমৃদ্ধ করেছে। যে বঙ্গসাহিত্যের সেবা তিনি শুরু করেছিলেন কবিতা সৃষ্টির মাধ্যমে, অতঃপর তাঁর সেই প্রচেষ্টা পূর্ণাঙ্গ রূপ পায় ছোট গল্প, উপন্যাস, নাটিকা আর পত্রিকায় কলাম লেখার মধ্যে দিয়ে। “সম্রাট ও শ্রেষ্টী”, “শিলালিপি”,“উপনিবেশ” সহ তাঁর অনেক উপন্যাস বাঙালী পাঠক মহলে যথেষ্ট সমাদৃত হয়েছে। 

সেই সময়ের প্রখ্যাত সাহিত্য পত্রিকা সজনীকান্ত দাশ সম্পাদিত “শনিবারের চিঠি”-র নিয়মিত লেখক ছিলেন তিনি। এছাড়া সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকায় সুনন্দ ছদ্মনামে লেখা ‘সুনন্দ’র জার্নাল’ বাঙালী পাঠক-পাঠিকা মহলে অভূতপূর্ব সাড়া ফেলে দিয়েছিলো। এই দেশ পত্রিকার মাধ্যমেই নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের সাহিত্য জগতে প্রথম প্রকাশ কবি হিসেবে। 

পুরস্কার-প্রাপ্তির ঝুলিও তাঁর খালি থাকে নি। ১৯৪৬ সালে আনন্দ পুরস্কারে সন্মানিত হন তিনি। অধ্যাপনা আর সাহিত্য সেবার সঙ্গে সঙ্গে বাংলা ছোট গল্পের ওপর তাঁর অনুসন্ধানমূলক কাজও চলতে থাকে। অবশেষে এই কাজের জন্য ১৯৬০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ডি.ফিল উপাধিতে ভূষিত করে। এছাড়া ১৯৬৮ সালে বসুমতি পত্রিকার সাহিত্য পুরস্কারটিরও প্রাপক হিসেবে তিনি মনোনীত হন।

(৩)

যদিও কিশোর বয়সে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের সাথে পরিচিত হই টেনিদা সিরিজের মাধ্যমে, তবুও স্কুলছাত্র জীবনের প্রথম পর্যায়ে মাঝে-মধ্যে দেশ-এ নিয়মিত প্রকাশিত হওয়া সুনন্দ’র জার্নাল-এর সাথে পরিচয় হয়েছিলো। সত্যি কথাটা স্বীকার করতে লজ্জা নেই যে সেই সময়ে বয়সের অপরিণতির জন্য তার সঠিক স্বাদ তখন পাইনি। তবে পরে কলেজ জীবনে পুনরায় এর স্বাদ গ্রহণ করে প্রভূত তৃপ্তি পেয়েছি। 

অবাক হয়েছি এই ভেবে যে কি অসাধারণ কুশলতায় তিনি সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের অনিয়মগুলোকে কখনও তীব্র জাতীয়তাবোধের কশাঘাতে, কখনও বা ব্যাঙ্গাত্মক তির্যক বক্রোক্তির দ্বারা দিনের পর দিন অক্লান্তভাবে জনসমক্ষে হাজির করে গিয়েছেন। চোখে আঙুল দিয়ে সমাজের আইনরক্ষক, বুদ্ধিজীবি, নীতি নির্ধারকদের দেখিয়ে দিতে চেয়েছেন সামাজিক কৃষ্ণগহ্বরগুলোকে। 

কলকাতার এক বিখ্যাত প্রকাশনা সংস্থা দু-মলাটের মাঝখানে সুনন্দ’র সমস্ত জার্নালগুলোকে একত্রে প্রকাশ করে বাংলা সাহিত্য পাঠককুলের জন্য একটি মহৎ কাজ করেছেন। আজ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্মশতবার্ষিকিতে তাঁর প্রতি আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন কালে “সুনন্দর জার্নাল” নিয়ে দুকথা লেখার লোভ সামলাতে পারছি না।

মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্সের প্রকাশিত “সুনন্দর জার্নাল”-এর অখণ্ড সংস্করণটি (২০১৬ সালে প্রকাশিত অষ্টম মুদ্রণ) হাতে পেয়ে মনটা খুশিতে ভরে উঠে উঠলো। ঝকঝকে হার্ড বাউন্ড জ্যাকেট লাগানো বইটা যে কোন পুস্তকপ্রেমীর বইয়ের আলমারির শোভা যে বাড়িয়ে তুলবে সে বিষয়ে আমি একেবারে নিঃসন্দেহ। বইটার বাড়তি আকর্ষণ হচ্ছে চণ্ডী লাহিড়ী অঙ্কিত অসামান্য সব কার্টুন। সংগ্রহে রাখার মত একটি প্রকাশনা।

আরও যেটা ভাল লাগলো সেটা হচ্ছে যে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় সুনন্দর জার্নালগুলি ১৯৬৩ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত নিয়মিত ভাবে সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকায় লিখেছিলেন “সুনন্দ”ছদ্মনামে। মিত্র ও ঘোষ একটি ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থা হলেও আনন্দবাজার পত্রিকা গোষ্ঠী তাঁদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন এই অসাধারন সঙ্কলনটির জন্মলগ্নে। প্রকাশকের ভাষায়, “সুনন্দর জার্নালের এই অখণ্ড সংস্করণে এমন অনেক লেখা আছে যা ইতিপূর্বে প্রকাশিত গ্রন্থে ছিলো না। এইসব ইতিপূর্বে অগ্রন্থিত রচনাগুলির উদ্ধার আনন্দবাজার পত্রিকা এবং তাঁদের লাইব্রেরির সহযোগিতা ভিন্ন সম্ভব ছিলো না। এজন্য আমরা তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। সুনন্দর জার্নালে মুদ্রিত শ্রীচণ্ডী লাহিড়ীর কিছু অনবদ্য চিত্র এই গ্রন্থে মুদ্রিত হয়েছে। সেজন্যেও আমরা চণ্ডীবাবু ও আনন্দবাজার পত্রিকার কাছে কৃতজ্ঞতার ঋণে আবদ্ধ।”

বঙ্গসাহিত্যের আপামর সনাতন পাঠক সম্প্রদায়ের তরফ থেকে আমি হাজার কুর্ণিশ জানাই আনন্দবাজার পত্রিকা গোষ্ঠী এবং চণ্ডীবাবুকে। ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দিতার উর্ধ্বে উঠে ওঁরা যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন, তা এককথায় অতুলনীয় এবং অতি অবশ্যই অনুকরণীয়।

নান্দীমুখ সেরে নিয়ে এবার “সুনন্দর জার্নাল” বইটির পাতা ওল্টানো যাক।

মোট একশো আশিটি ফিচারধর্মী লেখা নিয়ে মিত্র ও ঘোষ প্রকাশনাগোষ্ঠী তাঁদের অনবদ্য অখন্ড “সুনন্দর জার্নাল” বইটি পাঠকদের দরবারে হাজির করেছেন। সঙ্কলনটিতে ১৯৬৩ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত প্রায় অবিচ্ছিন্নভাবে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “সুনন্দ” ছদ্মনামে লেখা জার্নালগুলি সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকায় স্থান পেয়েছে। আমার কাছে লেখকের এই প্রয়াসটি বেশ অনবদ্য লেগেছে। ছদ্মনামধারী লেখক লিখছেন নতুন একটি ছদ্মনামে! জানিনা এই রকম প্রয়াস পৃথিবীর আর কোনও লেখকের ঝুলিতে আছে কিনা! একই লেখকের এক বা একাধিক ছদ্মনাম থাকতেই পারে তবে প্রথম থেকেই ছদ্মনামেই পরিচিত লেখক আবার ছদ্মনামে লিখছেন এরকম ঘটনা আমার নজরে আসেনি।

এই একশো আশিটি নাতিদীর্ঘ সাপ্তাহিক লেখার দ্বারা নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় সমকালীন সময়ের একটি রেখাচিত্র অঙ্কন করে গেছেন অত্যন্ত অধ্যাবসায়ের সঙ্গে, যা বাংলা পাঠক সমাজে সেই সময়ে একটা গভীর অভিঘাতের সৃষ্টি করেছিলো। প্রতি সপ্তাহে পাঠককুল অধীর আগ্রহে উন্মুখ হয়ে থাকতো দেশ পত্রিকা প্রকাশ মুহূর্তের জন্য। শারীরিক অসুস্থতার কারণে এবং অনিবার্য কারণবশতঃ দু-একবার জার্নাল প্রকাশ বন্ধ হয়েছিলো বলে পাঠকসমাজ যারপরনাই উতলা হয়ে উঠেছিলো বললে ভুল বলা হবে না।

বাঙালির সুখ-দুঃখ-আশা-হতাশা-আনন্দ-উৎসব, তার আগমার্কা অলসতা, সংস্কৃতিপ্রিয়তা এবং বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া ছাড়াও সমসাময়িক রাজনৈতিক উত্থান-পতন, শিক্ষাব্যবস্থা, নামী-দামী লেখক আর মনীষীদের কথা, আন্তর্জাতিক ঘটনাপঞ্জীসহ প্রায় সমস্ত বিষয়ের ওপরেই সুনন্দ’র লেখনী সতত চলমান থেকেছে। সত্যি অসাধারণ জঙ্গম এই জার্নাল।

(৪)

এই প্রসঙ্গে দেখছি প্রকাশকের এপিটাফের শেষ লাইনটিতে লেখা আছে, “এই গ্রন্থ একাধারে এই সময়ের বাঙালির জীবন ইতিহাস এবং সমাজের দর্পণ।” এব্যাপারে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই বললে মোটেই অত্যুক্তি করা হবে না। 

সুনন্দর জার্নালের বিষয়গুলি আজ প্রায় অর্ধশতাব্দী পথ অতিক্রম করে এলেও আজকের ডিজিটাল-এজের সামাজিক পরিস্থিতিতেও তারা কত প্রাসঙ্গিক তা ভাবলে আশ্চর্য হতে হয়। এইখানেই লেখকের আসল সার্থকতা।

মহাকালের অবশ্যম্ভাবী সময়ের পলিমাটির প্রলেপ আমাদের জীবনের পুরোনো বহু প্রাসঙ্গিক ধ্যানধারণাকে প্রতিনিয়ত অপ্রাসঙ্গিক করে তুলছে। সময়ের বালুকণারাশির পর্বত ডিঙিয়ে যা কিছু মাথা তুলে নিজস্ব মর্যাদা বজায় রাখতে পারে, তাই চিরকালীন বলে বিবেচিত হয়। সুনন্দর জার্নাল টেস্ট অফ টাইম-এর পরীক্ষায় জলপানি নিয়ে পাশ করে গেছে বলে আমার ব্যক্তিগত ধারণা।

কয়েকটি উদাহরণ দেবার লোভ সামলাতে পারছি না।

“ভ্রম-সংশোধন” লেখাটিতে সুনন্দ লিখছে, “আমরা সেই পর্যন্ত সত্যনিষ্ঠ, যে পর্যন্ত আমাদের গায়ের চামড়া নিরাপদ। আজ সারা বাংলা দেশে, সারা ভারতবর্ষে এই সুবিধাবাদী সত্যেরই সাধনা চলছে, আদর্শের জামাটাকে মাপসই করে ছেঁটে নেওয়া হচ্ছে সুবিধের প্রয়োজনে।”

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হই এই ভেবে যে আজকের যুগেও কতখানি প্রাসঙ্গিক এই বক্তব্যটি!

সুনন্দর লেখাগুলো পড়তে গিয়ে পাঠকের একটা ধারণা হতে পারে যে সামাজিক জীবনের মূল সমস্যাগুলোর বোধহয় চরিত্রগত কাঠামোর কোনও বদল হয়নি, যে বদলটা হয়েছে সেটা হচ্ছে প্যাকেজিং-এর। 

তাই “উপহার-টুপহার” নামক ফিচারটি লিখতে বসে সুনন্দ যখন লেখে, “আজকাল অযাচিতভাবে এই সব উপহার প্রাপ্তি – বাস্তবিক, এ এক রোমহর্ষক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যত্রতত্র পেয়ে যাচ্ছি চায়ের পেয়ালা, প্লাস্টিকের বাটি, স্টীলের চামচে, ডট পেন, ছোট তোয়ালে, দাড়ি-কামানোর ব্লেড। পেতে পেতে এমন অভ্যেস হয়ে গেছে যে এক দিস্তে কাগজ কিনে একটা ফ্রী ফাউন্টেন পেন কেন পেলাম না – এই ভেবে মন খুঁত খুঁত করতে থাকে।”

এককথায় অসাধারণ উপলব্ধিমূলক স্বীকারোক্তি!

সঙ্গে গাদা খানেক টুথপেস্টের মাঝখানে বসে থাকা বিরক্ত এক প্রৌঢ়ের ছবিযুক্ত চণ্ডী লাহিড়ীর কার্টুনটিও এক কথায় যাকে বলে অনবদ্য। কার্টুনের ক্যাচ লাইনটি হলো “লাকি কুপনের লোভে বাজার উজাড় করে টুথপেস্ট কিনতে শুরু করুন।”

ঠিক সাড়ে-সাতচল্লিশ বছর আগেকার লেখার বিষয়বস্তুর সাথে আজকের দিনের পরিস্থিতির কি আশ্চর্য মিল!

সুনন্দ তার একটি লেখাতে “দেয়ারস নাথিং নিউ আন্ডার দা সান” এই ইংরেজি প্রবচনটি স্মরণ করে বলেছে, “পরদিন স্বাভাবিক নিয়মেই ট্রেন বন্ধ। কোনও ব্যবস্থা চালু হওয়ার আগেই যাত্রীদের অবধারিত বিক্ষোভ – তারপর নিদারুণ ক্রোধ হলেই সামনে যাকে পাওয়া যাবে, তাকেই ঠ্যাঙানো আমাদের একটা আত্মিক কর্ত্যব্য। তাই পত্রপাঠ স্টেশন তছনছ,কাগজপত্র ছাই, টেলিফোন বিচূর্ণ, স্টেশন মাস্টার এবং সহযোগীবৃন্দ প্রহৃত, আহত, পলাতক (অবশ্য পালাবার মতো শরীরের অবস্থা থাকলে)।”

সত্যি, আজকের পরিস্থিতির বিচারেও সুনন্দ বর্ণিত উপরিউক্ত ঘটনাপ্রবাহ কতখানি জীবন্ত! তাই সুনন্দর সাথে গলা মিলিয়ে বলতে চাই, “দেয়ারস নাথিং নিউ আন্ডার দা সান!”

একের পর এক লেখাতে সাবলীলভাবে সুনন্দ চমক সৃষ্টি করে গিয়েছে তার জীবন্ত ভাষা, চিন্তাধারা আর তৎকালীন উপযুক্ত বিষয় নির্বাচনের অভিনবত্বের মাধ্যমে। সনাতন বাঙালী পাঠক এই সব বিচিত্র বিষয়ের ব্যাপ্তির মাধ্যমে উপলব্ধি করতে পারে সুনন্দর মর্মবেদনা। ব্যঙ্গাত্মক রচনাগুলোর মধ্যে দিয়ে সুনন্দ যেন বাঙালির জড়রূপী চেতনার গোড়া ধরে টান দিয়ে তাকে প্ররোচিত করতে চায় এক সুস্থ্য সবল নির্ভিক জাতির হৃত গৌরব উদ্ধার প্রকল্পে। এ যেন স্বামী বিবেকানন্দ কথিত উপনিষদের সেই বিখ্যাত বাণী, “অ্যারাইজ, আওয়েকঅ্যান্ড স্টপ নট টিল ইউ রীচ ইওর গোল।” আর ঠাকুর রামকৃষ্ণের ভাষায়, “চৈতন্য হোক।”

এই স্বল্প পরিসরে সুনন্দর সব লেখার গুণগত মূল্যায়ন করা সম্ভব নয় আর সে বিষয়ে আমি একজন অবার্চীন মাত্র। তাই সে প্রচেষ্টা না করাই ভাল। তবে যে বিষয়টি আমার চেতনাকে সবচেয়ে বেশী করে নাড়া দিয়েছে, সেই বিষয়টা হলো আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় নিজে যেহেতু শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে ছিলেন, তাই রাজ্য আর কেন্দ্রীয় এই শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে সুনন্দর লেখাগুলি রীতিমতো ওজনদার। এই বিষয়ে বেশ কয়েকটি জার্নাল সুনন্দ লিখেছে এবং তার সেইসব লেখা আজকের দিনেও সবাইকে যথেষ্ট ভাবাবে বলেই আমার মনে হয়।

(৫)

এই প্রসঙ্গে সুনন্দর লেখনী শিক্ষাক্ষেত্রে আত্মহননকারী ধ্বংসাত্মক রাজনীতির প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে ক্ষুরধার আলোচনা করেছে।

সুনন্দর লেখা নিয়ে অনেক কথা লেখা হয়ে গেলেও আরও বহু কথা বাকি থেকে গেল। তাই বঙ্গ পাঠক-পাঠিকা মহলের কাছে আমার একান্ত অনুরোধ যে এই অপ্রাসঙ্গিক লেখাটার ওপরে ভরসা না করে তাঁরা যেন সুনন্দর জার্নাল বইটা আদ্যোপান্ত পড়েন, একবার নয় বারবার পড়েন।

পরিশেষে একটা ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ।

বইটা পড়তে পড়তে আমার একটা কথা বারবার মনে হয়েছিলো যে “নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়” ছদ্মনামধারি তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর নবতম ছদ্মনাম “সুনন্দ”র জন্য কোনও উপাধি নির্ধারণ করেছিলেন কিনা।

ছোটবেলাকার স্মৃতি হাতড়াতে গিয়ে খুব আবছা ভাবে মনে পড়ছিলো আমার পিতামহের কথা। উনি কোন এক ঘরোয়া আলোচনায় যেন সুনন্দর উপাধিটা উল্লেখ করেছিলেন বলে মনে হয়। তবে তা আমার স্মরণে থাকার কথা নয়, কারণ দেশ পত্রিকাটি তখন আমার কাছে সচিত্র অরণ্যদেবের আকর্ষণের জন্যই পরিচিত ছিলো। সেই কারণে সাহিত্য অনুরাগীদের মহলে পিতামহের সুনন্দ’র উপাধি নিয়ে আলোচনাটা তখন আমার মনে বিশেষ দাগ কাটেনি, তবে অবচেতন মনে হয়তো তার ছাপ থেকে গিয়ে থাকবে। তাই দু’মলাটের মধ্যে সুনন্দকে পেয়ে তার সাথে আবার পরিচিত হবার সময়ে শ্যেণদৃষ্টিতে নজর রেখেছিলাম প্রতিটি পাতায়।

অবশেষে ফল মিলেছে। ১৪৪তম লেখা “সুরভি সমাচার”-এ দেখছি সুনন্দ লিখছে, “সুনন্দ রায়ের মতো কমন ম্যানদের অনুভূতিগুলোও মোটামুটি কমন......।”

অতএব “সুনন্দর জার্নাল” আসলে হলো গিয়ে “সুনন্দ (রায়-এ)’র জার্নাল।”

সুনন্দর একজন দুর্মুখ ভক্ত ছিলো। সুনন্দ তাঁকে প্রোফেসর বা অধ্যাপক হিসেবে পাঠকদের কাছে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। ভগ্নদূতের মতো যখন তখন উদয় হয়ে সে সুনন্দর সাথে কূট তর্কে অবতীর্ণ হয়। বিষয়ের বিচিত্রতায় এই দুজনের তর্কের ফলস্বরূপ পাঠককুল আরও ঋদ্ধই হয়েছে বলা যেতে পারে।

অবশেষে রচনাটিতে দাঁড়ি টানবার সময় এসে গেছে।

শেষ কথাটা লিখবার আগে একটা ছোট্ট কথা বলে নেওয়া যেতে পারে। সম্প্রতি লালমাটি প্রকাশনা সংস্থার “রোমান্স” নামে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি হাসির গল্পের সংস্করণ হাতে এসেছে। নিবেদনে দেখছি অরিজিত গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন রোমান্স বইটি নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম হাসির গল্পের সংকলন এবং সেই সময়ে তাঁর বয়স ছিলো মাত্র চব্বিশ বছর। প্রথমদিকের লেখা হলেও গল্পগুলি বাংলা সাহিত্য জগতের রম্যরচনা অধ্যায়ে পাকাপাকি ভাবে জায়গা করে নিয়েছে। এখানেই লেখক হিসেবে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের সার্থকতা। 

গল্পগুলি খুব সম্ভবত “শনিবারের চিঠি” পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিলো চল্লিশ দশকের প্রথমদিকে।

খুব যত্ন নিয়ে লালমাটি এই সংকলনটি প্রকাশ করেছে। উপরি হিসেবে পাঠক পেয়েছে শিল্পী নরেন্দ্র মল্লিকের আঁকা প্রতিটি গল্পের সঙ্গে অসাধারণ কৌতুকচিত্রগুলি।

লালমাটি আরেকটি যে জিনিস পাঠকদের উপহার দিয়েছে, সেটা হচ্ছে বন্ধু সাহিত্যিক নবেন্দু ঘোষের উদ্দেশ্যে লেখা নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের অনবদ্য “নবেন্দু ঘোষ” কবিতাটি যা লেখকের কবি প্রতিভারও পরিচয় দেয়।

সেই কবিতার একটি ছত্র এখানে তুলে আনতে চাই সনাতন পাঠকদের জন্য।

(৬)

নবেন্দু ঘোষ
বন্ধুবরেষু
স্বাধীনতা এল, আকাশে জেগেছে নবজাতকের দিন,
ধন্য হল কি রক্তের অভিসার?
তোমার আমার জীবনের ’পরে গুরুভার দুঃসহ
কাঁটাবন আর শঙ্খচূড়ের ফণা
কিউ, কন্ট্রোল, কালোবাজারের অযুত অক্টোপাস,
এপারে গঙ্গা ওপারে গঙ্গা – ভারত – পাকিস্থান,
মাঝখানে বালুচর।
আমাদের বালুচর,
যুথীবন নেই, বিকচ কেতকী কোথা,
ভাগাড়ের হাড়ে হাতছানি দেয় প্রেত পঞ্চাশ সাল
এল কি বন্ধু, নবজাতকের দিন?

শেষকথা লিখবার এবার সময় এসে গেছে।

“সুনন্দর জার্নাল”-এর প্রকাশকের নিবেদন-এ সবিতেন্দ্রনাথ রায় লিখেছেন, “দেশ পত্রিকার একেবারে গোড়ায় ১৯৩৪ সালে ৩’রা নভেম্বর তারিখে নারায়ণবাবুর প্রথম কবিতা‘অবরুদ্ধ’ প্রকাশিত হয়। সেইটেই যতদূর জানি, তাঁর প্রথম মুদ্রিত কবিতা। আর ছত্রিশ বছর পরে ১৯৭০ সালে সেই নভেম্বর মাসেরই একটি দিনে তাঁর শেষ রচনা প্রকাশের বেদনা আমাদের অনুভব করতে হল। ১৯৬৩ সাল থেকে দেশ পত্রিকার পাঠক যে-সুনন্দ’র সঙ্গে নিত্য সম্বন্ধ স্থাপন করেছিলেন, আগামী সংখ্যা থেকে তাঁকে আর খুঁজে পাবেন না – এ দুঃখ সকলেরই। পরলোকগত শ্রীনারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রতি আমরা আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করি।”

শেষকথা এখানেই শেষ হলো বটে, তবে বাংলা সাহিত্য জগতে সুনন্দ রায় ওরফে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ওরফে তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের অবদান টেনিদার ভাষায় যাকে বলে, “ডি-লা-গ্র্যান্ডি মেফিষ্টোফিলিস, ইয়াক-ইয়াক-ইয়াক!”

0 comments: