প্রাচীন কথাঃ কৃষ্ণদেব রায়
Posted in ধারাবাহিক
প্রাচীন কথা
বিন্দুতে সিন্ধু দর্শন-পর্ব ২
কৃষ্ণদেব রায়
গরমে কি আপনার মাথাটা একেবারে গেছে রায়দা? নাসা যখন শুক্রাভিযান করছে, আপনি তখন আমাদের নিয়ে হরপ্পা, মহেঞ্জোদাড়োতে নিয়ে যাবেন কি উদ্দেশ্যে? আর আমরা যাবই বা কেন? হুঁ! যাবেন দুটো কারণে। নাসার শুক্রাভিযান আর আমার হরপ্পাভিযানের উদ্দেশ্য কিন্তু এক। সেটি হলো তথ্য সংগ্রহ, আর সংগৃহীত তথ্যের বিশ্লেষণের মাধ্যমে অজানাকে জানা। সে যাই হোক, আপনিও জানেন আর আমিও জানি যে নাসার শুক্রাভিযানের সফর-সঙ্গী আপনি জীবদ্দশায় হতে পারবেন না। তাই, যেটা পারবেন, যেটা করলে এই সিন্ধু-সভ্যতাকে নিয়ে হিন্দু মৌলবাদীরা যে মিথ্যে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তার ফাঁদে পড়ে আপনি যাতে আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গোটাগুচ্ছের মিথ্যে গল্প না শিখিয়ে যান, সেই উদ্দেশ্যেই আপনাদের নিয়ে আমার এই সিন্ধু-অভিযান। আমি কিন্তু মোটেই আপনাদের ইতিহাস পড়াবোনা। আমরা যাব সত্যান্বেষণে। আমরা একটা অজানা রহস্যের কিনারা করতে যাবো। তবে হ্যাঁ, এটুকু কথা দিচ্ছি যে ফাঁকতালে, মানে আমার কথা শোনার পুরষ্কার হিসেবে মাঝেমধ্যেই আপনাদের নিয়ে হরপ্পা আর মহেঞ্জোদাড়োতে উইন্ডো শপিং এ নিয়ে যাবো!
১৮৫৩ সালে কার্ল মার্ক্স বলেছিলেন, “কোনও ইতিহাস নেই ভারতীয় সমাজের, অন্তত কোনও পরিচিত ইতিহাস। এখানে ইতিহাস যাকে বলি তা হলো ধারাবাহিক অনুপ্রবেশের ইতিহাস; অপ্রতিরোধী, অপরিবর্তনশীল সমাজের নিস্ক্রিয় ভিতের উপর তারা তাদের সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলো।” মার্ক্স সাহেব কে সবিনয়ে জানাই যে, ধারাবাহিক অনুপ্রবেশের তথ্যটা ঠিক হলেও, ভারতীয় সমাজের কিন্তু এক সুপ্রাচীন এবং অত্যন্ত উন্নতমানের সভ্যতার ইতিহাস ছিলো। যেটা আমরা জেনেছি মার্ক্সের মৃত্যুর পরে।
আসলে সিন্ধুসভ্যতার আবিষ্কার যেমন আমাদের খুব সুস্পষ্ট ভাবেই বৈদিক সভ্যতা এবং আর্যরা এদেশে আসার বহু আগেই যে এখানে এক বিশাল এবং ব্যাপ্ত সভ্যতা ছিলো, তার ইঙ্গিত দেয়, আবার অন্যদিকে আমাদের ঠেলে দেয় অসীম রহস্য আর ধোঁয়াশার মধ্যে। অজস্র প্রশ্নের উদ্ভব হয় মনে। তার কারণ, সত্যি বলতে কি আমরা যতই হরপ্পা সভ্যতা হরপ্পা সভ্যতা বলে চেঁচাইনা কেন, আসলেবিশালত্ব ও ব্যাপ্তি এবং নগরায়ন, নগর-পরিকল্পনা এবং স্থাপত্য বিদ্যার চরম উৎকর্ষতা ছাড়া, সিন্ধু-সভ্যতা কিন্তু সমসাময়িক প্রাচীন সভ্যতাগুলির মত মোটেও উন্নত ছিলোনা। মহেঞ্জোদাড়ো আবিস্কারের পর প্রায় ১০০ বছর কেটে গেলেও হরপ্পা ও মহেঞ্জোদাড়োতে খনন কার্যের ফলে আমরা এ যাবৎ যা পেয়েছি তা দিয়ে সেই সময়ের সমস্তটা জেনে ফেলাটা খুবই দুরূহ ব্যাপার। সিন্ধু-সভ্যতার সমসাময়িক মেসোপটেমিয়া, মিশর, চীন, হেলমান্দ সভ্যতার বিষয়ে তখনকার যা বিবরণ এবং প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী ও লিপি এবং শিলালিপি পেয়েছি, তাতে করে সেইসব সভ্যতার ইতিহাস এখন আমাদের নখদর্পনে। কিন্তু সিন্ধু-সভ্যতার বিষয়ে আমাদের জ্ঞান এখনও প্রায় প্রাথমিক স্তরেই। আর যেহেতু আমরা এখনো অবধি হরপ্পা লিপির পাঠোদ্ধার করতে পারিনি এবং এমন কিছু নিশ্চিৎ প্রমাণ পাইনি, তাই পুরো ব্যাপাটাই এখনো এক উপন্যাসের রহস্যের কিনারা করতে নেমে পড়ার মত! এটা করতে হবে আমাদের সবাইকেই। যেটুকু পাওয়া গেছে, যতটুকু তথ্য আমরা পেয়েছি তার ভিত্তিতে প্রখর যুক্তি আর অনুমানের উপর ভর করেই আমাদের এগোতে হবে। তাই শুধু আমি একা নই, আমার সঙ্গে আপনারাও যোগ দিন এবং প্রাপ্ত তথ্য এবং তত্ত্বের বিষয়ে আপনার অনুমানটাও মন্তব্যের আকারে লিপিবদ্ধ করুন। তাহলে প্রথমেই আমরা একটা লিস্টি বানিয়ে নিই, আমরা কি কি পেয়েছি হরপ্পা এবং মহেঞ্জোদাড়ো খনন কালে। সেগুলি হলো:- হরপ্পীয় লিপি সংবলিত প্রায় চার হাজার শিলমোহর, যা সহজে নষ্ট হয়না। শিলমোহরগুলি স্টিয়ামাইট নামে একধরণের পাথর দিয়ে তৈরী এবং বিশিষ্ট চারিত্রিক বৈশিষ্টসম্পন্ন, স্থানিক বিভিন্নতার প্রভাব মুক্ত। পোড়ামাটির বালা, ঝিনুকের বালা, তামার ফলক, অল্প কিছু তামার হাতিয়ার, হাতির দাঁতের দণ্ডের উপর লেখা।মহেঞ্জোদাড়ো থেকে পেয়েছিপোড়া ইঁট, সেই সঙ্গে রোদে পোড়া কাদামাটির ইঁট, যেগুলির ত্রিমাত্রিক আয়তনের অনুপাত ১:২:৪, কুম্ভকারের চাকে প্রস্তুত করা বিশিষ্ট মৃৎপাত্র, মৃৎপাত্রের গায়ে নির্দিষ্ট ধরণের জনপ্রিয় কিছু নকশা, যেমনপিপুলপাতা, পরস্পরছেদী বৃত্ত, এবং ময়ূর। ১৩.৬৩ গ্রামের আপাতভাবে আদর্শ বাটখারা, শহর ও শহরতলীর জনবসতিতে সোজা পথ তৈরী করার প্রবণতা, যে পথ গুলি সমকোণে পরস্পরকে স্পর্শ করেছে। নিকাশী ব্যবস্থায় বিশেষ মনোযোগ। শহর সংলগ্ন অথচ পৃথক স্থানে নগরদুর্গ নির্মাণ। বাঁধানো কূপ এবং জলাধার। মৃতদেহ উত্তর-দক্ষিণ মুখে চিৎ করে সাধারণত শহরের বাইরে কবরস্থানে সমাধিস্থ করা। কিছু পাথরের বা মাটির তৈরি মূর্তি, দু’তিনটি ব্রোঞ্জ মূর্তি, আর কিছু গুপ্তভাঁড়ারের সন্ধান যেখানে সোনাদানা এবং দামী মণিমুক্তা এবং অলঙ্কারাদির উপস্থিতি। বেশ কয়েকটি নর-কঙ্কাল। আর সবথেকে মজার ব্যাপার হচ্ছে যে, আমরা এ পর্যন্ত যা পেয়েছি তার বেশিরভাগই আবর্জনা। মানে ধরুন, আপনার একটা তামার চুড়ি ভেঙ্গে গেছে, আপনি সেটা তুলে রেখেছেন ভবিষ্যতে ওটা গলিয়ে নতুন কোন অলঙ্কার বানানোর জন্যে। আর সেটাই আমরা খনন করে পেয়েছি।
বাস্তবে এত বিশাল ক্ষেত্রব্যাপী সিন্ধুসভ্যতার যুগপৎ উপস্থিতি এবং সাংস্কৃতিক বৈশিষ্টে এদের বিপুল সমরূপতায় বোঝা যায় যে, এই সভ্যতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে উদ্ভূত হয়নি। বরং একটি মূলকেন্দ্র থেকে বিভিন্ন অঞ্চলে বিচ্ছুরিত হয়েছিলো। সেই মূল কেন্দ্রটি কিন্তু এখনো সঠিক ভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে পণ্ডিতরা অনুমান করেন যে সিন্ধু সভ্যতার মূলকেন্দ্রটি সম্ভবত পঞ্জাব এবং উত্তর ও মধ্য সিন্ধের কোট-দিজি সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত ছিলো। মূল উৎস যাই হোক না কেন, একমাত্র রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমেই সিন্ধু সভ্যতার পরিব্যাপ্ত অঞ্চলগুলি এইসব বৈশিষ্ট অর্জন করতে পারে। বৈশিষ্ট বলতে, মাপের একক, নগর পরিকল্পনা এবং লেখন পদ্ধতির মত ক্ষেত্র গুলিতে এমন সমরূপতা কখনই, কিছুতেই সর্বত্র স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে উদ্ভুত হতে পারেনা। সম্ভবত যে প্রত্ন-সিন্ধু রাষ্ট্র ষাঁড়ে টানা রথ, ব্রোঞ্জের অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করতো সেটিই প্রাচীন সিন্ধু সংস্কৃতির বিভিন্ন ক্ষেত্রগুলোকে পদানত করেছিলো। এইভাবে ইতিমধ্যেই যে যে ‘সিন্ধু সাম্রাজ্য’ প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিলো, তার সর্বত্রই এই সভ্যতার অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক জীবনচর্যার মূল বৈশিষ্টগুলি আরোপিত হয়েছিলো। আপনারা নিশ্চয় লক্ষ্য করছেন যে আমি প্রতিটি ক্ষেত্রেই সম্ভবত শব্দটি ব্যবহার করছি কারণ সেই রহস্যময়তা, যেটা সিন্ধু সভ্যতা আবিস্কৃত হওয়ার পরে প্রায় ১০০ বছর কেটে গেলেও কোন সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার মত প্রমাণ দিতে পারেনি। সিন্ধুলিপির পাঠোদ্ধার সম্ভব হলে হয়তো এর থেকে আরো বিশদে কিছু জানা যেতো।
তাহলেই দেখতে পাচ্ছেন যে ইতিহাস এই প্রাচীন সিন্ধুসভ্যতার রহস্য এখনও ভেদ করার অপেক্ষায় আছে। এবং ইচ্ছে করলেই এই রহস্যটাকে আরো অনেকবেশি ঘন করে নেওয়া যায়। যেমন ধরুন, আমি প্রশ্ন তুলতেই পারি যে, যে কয়েকটি উপাদানে সিন্ধুসভ্যতা গড়ে উঠেছিলো, সেগুলির সবগুলি একত্রে ঐ স্থানে একত্রিত হলো কি করে ? বাস্তবে যেহেতু এই সমস্ত উপাদান, যেমনশহর, রাষ্ট্র, শীলমোহর, লেখনরীতি, পোড়া ইঁটএবং ষাঁড়-টানা গাড়ি—সিন্ধু উপত্যকায় একত্রিত হবার আগেই সবকটির পূর্বসূরী ছিলো মেসোপটেমিয়া, সে কারণে মেসোপটেমিয়া থেকে এ সমস্ত উপাদান এখানে এসেছিলো কিনা? অবশ্য দুটি অঞ্চলের মধ্যে প্রত্যক্ষ সংযোগের (অন্তত খ্রীষ্টপূর্ব ২৬০০ সালের আগে) কোনও প্রমাণ আমাদের কাছে নেই। ইরাক এবং সিন্ধু সভ্যতার লিপির মধ্যেও কোন সাদৃশ্য নেই। কিন্তু তবু, যেহেতু এটার বিরোধিতা করার মত যথেষ্ট প্রমাণও আমাদের হাতে নেই, তাই ঘোলা জলে মাছ ধরার আশায় যাঁরা নেমে পড়েছেন ইতিমধ্যেই, তাঁদের যুক্তি এবং প্রশ্নগুলি আমাদেরই দিতে হবে যুক্তি এবং প্রাপ্ত তথ্যাদি থেকে। মূল প্রশ্নোত্তর পর্বে যাওয়ার আগে আপনাদের বিচার-বুদ্ধি-যুক্তির সুবিধে হতে পারে এমন কিছু তথ্য আমাদের আরো ভালো করে জেনে রাখা উচিত।
প্রথমত, হরপ্পীয় লিপি এবং ভাষা। সিন্ধু-সভ্যতার চরম পর্যায়ে তাঁরা যে বহির্বাণিজ্যে যুক্ত ছিলেন, তার অকাট্য প্রমাণ কিন্তু আমাদের কাছে আছে। এখন এই বর্হিবাণিজ্য, বা যাকে আমরা বলি অন্যদেশের সঙ্গে বাণিজ্য, সেটা সার্থক ভাবে করতে গেলে কিন্তু একটা মোটামুটি চলনসই ভাষা আর ঐরকমই, খুব উন্নত না হোক, অন্তত একটি লেখ্য লিপির প্রয়োজন। এই প্রসঙ্গে একটা কথা মনে রাখা খুব জরুরী যে হরপ্পা লিপির পাঠোদ্ধার এখনো অবধি কেউ করতে পারেন নি। এর স্বরূপ উদঘাটন একেবারেই অসম্ভব থেকে যেতো যদি না দ্বিভাষিক একটি হরপ্পীয় শিলালিপি এবং লেখনের একটি পরিচিত রূপ আবিষ্কৃত হতো। কি সেই দ্বিভাষিক শিলালিপি? এই শিলালিপিতে রয়েছে মানুষ ও স্থানের নাম। আমাদের পরিচিত নামগুলো থেকেই এই চিহ্নগুলি কিভাবে উচ্চারিত হতো তার প্রাথমিক সূত্রটি পাওয়া যায়। হরপ্পার লিপি সাংকেতিক। এটিতে ৩৭৫ থেকে ৪০০ টি চিহ্ন আছে। কাজেই বর্ণ মালার ধারণাটি বাতিল হয়ে যায়, কেননা একটি বর্ণমালায় সাধারণত ছত্রিশটির বেশি চিহ্ন থাকতে পারেনা। সুতরাং, আবার সেই সম্ভবত!! সম্ভবত হরপ্পীয় ভাষা ছিলো যৌগিক অর্থাৎ এমন একটি ভাষা যেখানে একটি অপরিবর্তনীয় মূল চিহ্নের শেষে প্রত্যয় বিভক্তি কারক যুক্ত হতো। এই বিশিষ্টতা ঠিক ইন্দো-আর্য ভাষার মত নয়, বরং চারিত্রিক ভাবে এটি প্রাচীন দ্রাবিড়ীয় ভাষার সঙ্গে সাদৃশ্য যুক্ত। আর একটি প্রমাণিত তথ্য হলো, ইন্দো-আর্য ভাষার প্রথম পর্বের রচনাগুলিতে, যেমন ঋগ্বেদে, দ্রাবিড়ীয় ভাষার বেশ কিছু শব্দ ও প্রভাব। মোট ১২ টি দ্রাবিড় শব্দের উপস্থিতি ঋগ্বেদে আছে। (উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রাচীন ইন্দো-আর্যরা দ্রাবিড় ভাষাভাষী মানুষজনের সংস্পর্শে এসেছিলো এমন ইঙ্গিত মেলে)। এই দুটি বিষয় একত্রিত করলে এমন কথা বলা যায় যে, হরপ্পার মানুষজনের ভাষা ছিলো সম্ভবত দ্রাবিড়ীয় (লক্ষ্যণীয় যে, বর্তমানে দক্ষিণ বালুচিস্থানের পাহাড়ে যে ব্রাহুই ভাষার প্রচলন, সেটি কিন্তু একটি দ্রাবিড়ীয় ভাষা)।
আরো দুটি বিষয়ে আমাদের জেনে রাখতে হবে অকুস্থলে যাওয়ার আগে। প্রথমটি হলো সিন্ধু সভ্যতার ব্যাপ্তি বা বিশালতা। আধুনিক আঞ্চলিক সীমারেখার সংজ্ঞায়, এই সভ্যতা পাঞ্জাবের অধিকাংশ অঞ্চল (ভারতীয় প্রজাতন্ত্র ও পাকিস্তান উভয় দেশের), হরিয়ানা, উত্তর রাজস্থান এবং উত্তর প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন অংশ, সিন্ধ, গুজরাটের অধিকাংশ এবং উত্তরপূর্ব ও দক্ষিণ বেলুচিস্তানের কয়েকটি অংশে এবং কিয়ৎ পরিমাণে আফগানিস্তানেও বিস্তৃত ছিলো। বাস্তব অপরিহার্যতায় এটি ছিলো সমতলের সংস্কৃতি। মান্ডা(জম্মু ও কাশ্মীরে) এবং রোপার ও চণ্ডীগড় এর ক্ষেত্র দ্বারা চিহ্নিত নিম্ন হিমালয়ের পাদদেশ রেখা পর্যন্ত এই সভ্যতা বিস্তৃত ছিলো। এছাড়াআর একটি কথা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে হরপ্পা সভ্যতার অবস্থান অনুধাবন করার জন্যসিন্ধু সভ্যতা সহ ব্রোঞ্জযুগের সমস্ত সভ্যতায় তামা এবং তামা-সংকরের (টিন, সীসা বা আর্সেনিকের সংযোগে) উপর নির্ভরতার বিষয়টি বিশেষ তাৎপর্যময়। তাম্র-প্রযুক্তি নির্ভর একটি অর্থনীতি লৌহ-নির্ভর অর্থনীতির চেয়ে আলাদা হবেই। কারণ ভূপৃষ্ঠে সবচেয়ে অপর্যাপ্ত পরিমাণে যে ধাতুটি পাওয়া যায়, তা হলো লোহা।
অধ্যাপক অমর্ত্য সেন তাঁর ‘হিস্ট্রি অ্যান্ড দি এন্টারপ্রাইজ অফ নলেজ’ শীর্ষক রচনায় বলেছিলেন, ‘ইতিহাস ব্যাপারটা তো শুধু ঐতিহাসিকদের জন্য নয়, আমজনতার জীবনেও তার প্রভাব পড়ে।’ইতিহাস যে আমাদের মত অগণন সাধারণের বেঁচে থাকার গল্প, চলাচলের পদচিহ্ন। তাই আসুন, আমরা সেই ইতিহাসকে জানার জন্যে সত্যান্বেষী হই। (চলবে)
এই রকম লেখা আরও চাই! আরও অনেক চাই!
ReplyDeleteDarun darun
ReplyDelete