স্মৃতির সরণী - সুনৃতা মাইতি
Posted in স্মৃতির সরণী
স্মৃতির সরণী
আগল খুলে... স্মৃতিপথে
সুনৃতা মাইতি
আমাদের মতো পাঁচপেচি লোকের আবার স্মৃতিকথা কি হে মশাই! এমন দুঃসাহসের কথা শুনলে ঘোড়াও হাসবে। এত সিধে সাপটা হিসেব। হিস্টিরি মানেই তো সব মান্যিগন্যি লোকেদের জীবনচর্চা। নয় বলুন? তবুও একখানি আশার কথা আছে বইকি! ওই ইতিহাস পরীক্ষা দিতে গেলে কিছু প্রশ্ন হয়না? এই অমুক যুগের পাব্লিকের সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক বেত্তান্ত বমন করুন।হে হে, এইরকমই অনেকটা ব্যাপার আর কি! আর ভারী আশ্চর্যের কথা যে, আজকাল ইতিহাসে নাকি ব্যক্তি মানুষের চেয়ে সামাজিক জীবনের কদর বাড়ছে? তাই কি? কি যেন বাপু? তবে এটাই যা ভরসা যোগান দিলো। তাই খাতাকলম নিয়ে বসলাম এই আর কি!
কিন্তু এই যে লিখতে বসেই এত ভ্যানতারা করে চলছি, তার একটাই কারণ দিদি ! এই একটু স্মৃতিকথাটথা লিখব ভাবলাম। তবে এর সাথে ইতিহাসের তুলনা আনাটা ঠিক হলো কিনা আদৌ জানিনা। কারণ আজ থেকে পনেরো কুড়ি বছর আগের সময়টা ইতিহাসের পর্যায়ভুক্ত হয়ে যায়নি সেটা বিলক্ষণ জানি। তবে স্মৃতির সারণীতে ঠাঁই পেয়েছে তো বটেই। আর কে না জানে, স্মৃতি মাত্রই খানিকটা ইয়ে গোছের। কোনও কোনও স্মৃতি খানিক বেয়াড়া, ফচকে হেসে ঠ্যাং দোলায় মগডালে।আবার কিছু স্মৃতি ন্যাকাবোকা কিংবা কাদাটে থকথকে। কেউবা আবার ভারী গুরুগম্ভীর, আগাপাশতলা ঈশপের গল্পের মতো শিক্ষণীয়।ধরে আনতে গেলে বেঁধে আনতে হয়।
সে যা হোক, সেই সময় নব প্রযুক্তি কড়া নাড়ছে দেশ কালের দরজায়। অর্থনীতি নব মূল্যায়ণের দোড়গোড়ায়। রূপোলী পর্দায় ম্যাজিক রিয়েলিজম ঢুকছে গুটি গুটি পায়ে। আত্মবিশ্বাস নিয়ে পর্দায় তুতলিয়ে চলেছেন শাহুরুখ। পাশে প্রথা ভাঙা সুন্দরী কাজল। ডুবু ডুবু সূর্য মাধুরীর মুখে একটি দুটি বলিরেখার চিহ্ন। রাস্তা ঘাটে কান পাতলেই শুনতে পাওয়া যাচ্ছে, কুছ কুছ হোতা হেয়। আজ্ঞে হ্যাঁ, সময়টা নব্বই এর দশক।
একেবারে ধূসর পাতায় ঠাঁই না পেলেও এখনকার থেকে সে সময়টা একটু অন্যরকম ছিলো বইকি! তার ওপর পাহাড়ের ছায়া মাখা আমাদের সবুজ মফস্বলী জীবন ছিলো অনেকটাই অন্য স্বাদের। উত্তর বঙ্গের অতলান্ত সৌন্দর্য মাখা গভীর অনুভূতিময়। একে ফ্রেমবন্দী করা অসম্ভব। তাই বেছে নিলাম জলপাইগুড়ির কলেজ জীবনের কিছু এলমেলো স্মৃতি।
উচ্চমাধ্যমিকে গাদাগুচ্ছের নম্বর পেয়ে আমরা ভর্তি হয়েছি ইংরেজী সাহিত্যে। উত্তরবঙ্গের একটি নামী কলেজে। মনের ভেতর আনন্দঘন এবং উচ্চস্তরীয় একটি অনুভূতি বুজকুড়ি কাটছে বটে, কিন্তু নিজেদের ইংরেজী জ্ঞানের বহরখানির কথা চিন্তা করেই মিইয়ে যাচ্ছি সময়ে সময়ে। একদল ঠেঁট কনভেন্ট থেকে আসা নাক উঁচু ছাত্রছাত্রী, অন্যদল ঘেমো ঘেমো ভীতুপনা বাংলা মিডিয়ম। বলা বাহুল্য, আমি দ্বিতীয়টিরই দলে। প্রথম দিন ক্লাসে ঢুকেই পৌষালী কে ফিসফিসিয়ে জিজ্ঞেস করলাম " এই, তুই ফ্লুয়েন্ট ইংরেজি বলতে পারিস ? ওই ওদের মতো?" পৌষালী মৌরী চাবাতে চাবাতে নির্বিকার মুখে এক্স কনভেন্ট পড়ুয়াদের দিকে তাকিয়ে জবাব দিলো " হ্যাঁ আ আআ... ওই এ টু জেড।"
যে যার দল বুঝে বসেছি ক্লাসে। তাকালেই শ্রেণীবিভাগটি বেশ বোঝা যাচ্ছে। সি এন টি এর ক্লাসটিই ছিলো প্রথম। তিনি মানুষটি মোটের ওপর ভালোই। দোষের মধ্যে কিঞ্চিৎ অর্ধেক আকাশ প্রেমি। প্রথম দিন ছাত্রী সংখ্যা একটু কম বলে তিনি পড়াতেই উৎসাহ পাচ্ছেন না। উপরন্তু পড়াতে বসেছেন মান্ধাতা আমলের ঘ্যানঘ্যানে শেক্সপীয়েরের সনেট। এমন সময় ক্লাসে ঢুকলো তুমুল সুন্দরী রিয়া। বকো মধ্যে হংসো যথা। অমনি জোড়ায় জোড়ায় চোখ ঘুরে গেলো তার দিকে। সি এন টি ও নড়েচড়ে বসলেন। এহেন পরিস্হিতিতে মিডিয়াম নির্বিশেষে বাকি সব কটি মেয়ে আপাদমস্তক জ্বলে একসা। এই জ্বলনটিই মেয়েদের মধ্যে তুরন্ত একটি অজীব একতার সৃষ্টি করে দিলো মুহূর্তে। ক্লাস শেষ হবার আগেই আমরা খুঁজে ফেল্লাম রিয়ার সৌন্দর্যের বিবিধ ত্রুটি। এর মধ্যে অন্যতম তার উচ্চকিত ওষ্ঠাধর। দেখলেই মনে হয় সদা চুম্বনোদ্যত। আর তৎক্ষণাৎ সামুহিক সিদ্ধান্ত হলো ... এটাই আসলে রিয়ার প্রতি ছেলেদের এত আগ্রহের কারণ ।
ক্লাসের বাইরে ছিলো অতলান্ত সবুজ। যেদিকে তাকাই। জানলা দিয়ে বাইরে তাকালেই থই থই নীলচে আলোর রোশনাই। চারিদিকে উপচে পড়ছে প্রেমরস। কলেজ মাঠের ঘন সবুজের প্রেক্ষাপটে প্রচুর সংখ্যক প্রেমিক প্রেমিকা যুগল। আর কলেজের ঠিক গেটের সামনেই অহোরাত্র দাঁড়িয়ে থাকতেন সানি দা। হুবহু সানি দেওলের যৌবনের প্রতিরূপ। চেহারা গুণে তার আসল নামটি সবাই ভুলে মেরে দিয়েছে। কলেজের পুরোনো পাপী। পাশটাস দিয়ে কওবে উৎরে গেছেন, তারিখ পে তারিখ পেরিয়ে গেছে, তিনি কিন্তু কলেজের মায়া ছাড়তে পারেননি। কলেজের উল্টো দিকে বিশুদার ক্যান্টিন। ছাত্র সংসদ এবং বিরোধী দল উভয়েরই কর্মাকর্মের সব ব্লু প্রিন্ট এখানেই তৈরী হতো। অসীম নিরপেক্ষতা সহ বোবা কালা গান্ধারী সেজে বিশুদা সকলের সমান তদারকি করে যেতেন।
ধীরে ধীরে জীবনটা মোটামুটি আকর্ষণীয় লাগতে শুরু হলো। কলেজে নানারকম পাব্লিক। নানাস্তরীয়। আশে পাশে প্রচুর চরিত্র। কোনওটা রাংতায় মোড়া ঝলমলে, কোনওটা বা বটের আঠার মতো চিটচিটে কিংবা শিরিষ কাগজের মতো খরখরে। বেশ লাগছিল। প্রতিদিন নতুন নতুন খোরাক। চরিত্রচর্চা? অঢেল। ধরুন সঙ্গীতা ছিলো বেশ কয়েকজন। অতএব প্রয়োজন ছিলো বিশেষীকরণের। অনেকটা এইরকম .. সিরিয়াস সঙ্গীতা, সঙ্গীতা বিজলানী এবং রঙ্গিলা সঙ্গীতা। বিজলানী সঙ্গীতার স্বভাবটাই ছিলো পরের বয়ফ্রেন্ডের প্রতি ছোঁকছোঁক করা। আর রঙ্গিলা সঙ্গীতা তখন পানওয়ালার সাথে সম্পর্কের ইতি ঘটিয়ে ফুচকাওয়ালার সাথে নতুন বন্ধুত্বের সূত্রপাত ঘটিয়েছে। সোজা মুখশুদ্ধি থেকে স্টার্টারে। উল্টোপথে। মাঝখানে মেইন কোর্সের কথা ভাবছেই না। ভাবখানা যেন....
"ফুচকা তোর সঙ্গে টকঝাল জীবন কাটাব
ফুচকা তোর সঙ্গে গোলগাল কাটাব জীবন।"
এর ওপর ছিলো সুচন্দ্রা। বিয়ে পাগলী। প্রতিদিন নতুন নতুন পাত্রের খোঁজ নিয়ে হাজির হতো সে। পাত্র তালিকায় সেইসময় তার নবতম সংযোজন জনৈক তবলাবাদক। তালমণি এবং তালভারতি উপাধি প্রাপ্ত। এ ছাড়া ছিলো অপালা। অপালা অতিশয় জ্ঞানী। ওর সাথে কথা বলা অত্যন্ত আরামপ্রদ। কিন্তু সমস্যা একটিই। ওর দৃঢ় বিশ্বাস একদিন সব লাল হো যায়েগা। প্রতিটি আলোচনার উপসংহারে সে গরুর রচনার মতো ওই বক্তব্যটিকেই প্রতিষ্ঠিত করে।
ইংরেজী সাম্মানিক বটে তবে আবশ্যিক বিষয় ছিলো বাংলা। আর বাংলার অধ্যাপক শিবেন্দুবাবু অতিশয় ভদ্রলোক। তার ক্লাসে অনবরত হই হট্টোগোল চলে। ধোপদুরস্ত শিবেন্দুবাবু তৎসম শব্দের বহুল ব্যবহার করেও সেই চেঁচামেচি থামাতে পারেন না। তার এই তৎসম ভদ্রতা সম্পর্কে একটি বহুল প্রচলিত জনশ্রুতি ছিলো। সত্য মিথ্যা জানিনা। তিনি নাকি দিনবাজারে মাছ কিনতে গিয়ে মাছওলাকে শুধিয়েছিলেন...
" বাছা, ওই পরলোকপ্রাপ্ত মৎসটির মূল্য কত হয়?"
বাংলা সাহিত্যের টিপু ইংরেজী ভাষাকে সাংঘাতিক সমীহ করে। একদিন সে হাঁপাতে হাঁপাতে কলেজে এসে হাজির। অবশেষে জানা গেলো ভাগ্যক্রমে অথবা দুর্ভাগ্যক্রমে এক সাহেব টুরিষ্ট তাকে ধরেছিলো। টিপু নাকি তার সঙ্গে ইংরেজী বলে কদমতলায় ভিড় জমিয়ে দিয়েছে। পরে জানা গেলো, সাহেব তার ঠোঁট নাড়িয়ে দুর্বোধ্য ভাষায় কি যেন জানতে চাইছিলেন। সবই যাচ্ছিল টিপুর মাথার উপর দিয়ে। তাই টিপু এইচ এসের সময় ঝেড়ে মুখস্থ করা "অটাম সিজন" রচনাটি দাঁড়ি, কমা সহ আগা সে গোড়া বলে দেয় সাহেব বাবাজি কে। তারপর তার প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষা না করেই একদৌড়ে দুদ্দাড় কলেজে এসে উপস্থিত হয়।
ক্রমে ক্রমে কলেজের বুকে একটি খতরনাক নারী বাহিনী গড়ে উঠলো আমাদের। ভালো মন্দ নির্বিশেষে সব ছেলেদের কাছে মুর্তিমান ত্রাস এবং সবিশেষ সমীহের বস্তু। সুতনুকা দলের পাণ্ডা। প্রভাতে ঘুম থেকে উঠেই চাট্টি বাছা বাছা না দিয়ে সে জলস্পর্শ করেনা। ওর মতো গালাগালির স্টক এ জীবনে আমি খুব কম লোকের মধ্যেই দেখেছি। অজন্তা ডাকসাইটে সুন্দরী। আর ছিলো রাজন্যা, তানিয়া, সঞ্চিতা ও মন্দিরা। এর মধ্যে আমি খানিক কবি স্বভাববিশিষ্ট। সেইসব সময়ে আমার নাক, মুখ, কান, জিহ্বা এবং ত্বক দিয়ে অনর্গল লাভাস্রোতের মতো কবিতা বেরিয়ে চলেছে। সেই আগুনে প্রবাহকে রুখতে না পেরে অবশেষে আমি একটি কাব্যোপন্যাস লিখতে শুরু করলাম। অতএব পড়াশোনার পাট শিকেয় তুলে একটি গাবদা খেরোর খাতা নিয়ে চাদ্দিকে ঘুরছি। যাকে পাই তাকেই কবিতা শোনাতে বসি। শেষে এমন হলো যে আমাকে দেখলেই যে কোনও ভীড় পাতলা হয়ে যায়। আশেপাশে শুনশান খাঁ খাঁ করে। কলেজের ঠিক ডানপাশ ঘেঁষে দীপুদার ঘর। দীপুদা কলেজের বেতনভূক দারোয়ান। কিন্তু ওই কাজটি ছাড়া সে বাকি সবরকম কাজ করতো। সকাল বিকেল ছাত্র পড়াতো, হেসে খেলে আড্ডা দিতো এবং উদ্বৃত্ত সময়ে দুটি পুরুষ্টু গতরবিশিষ্ট ছাগলের দেখভাল করতো। একদিন এক নীল নির্জন দুপুরে কাউকে না পেয়ে শেষে দীপুদাকেই কবিতা শোনানো মনস্থ করলাম। দীপুদা তখন অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে ছাগলদুটিকে জাবনা খাওয়াচ্ছিলো। খাতা সহ অকুস্থলে পৌঁছে দেখি দীপুদা ধাঁ। এমনকি তার দরজার সামনে খুঁটে বাঁধা ছাগলদুটো পর্যন্ত বেপাত্তা! কি হতাশাজনক বলুন ! কবিতা কি এতই খারাপ ?
কি কথায় কি এসে গেলো। সে যা বলছিলাম। নারীবাহিনীর অসাধারণ সব কীর্তির মধ্যে দুটি বলেই ফেলি। একদা বসন্ত সমীরণে আকূলিত দ্বিপ্রহরে তাদের মনে সহসা ধুম্রপান করবার ইচ্ছে মুকূলিত হলো। আসলে হাতে কলমে বুঝে নেবার ইচ্ছে ... ইহা কি এবং কেন? মুখের কথা খসতে না খসতেই জোগাড় হয়ে গেলো অজস্র সিগারেটের প্যাকেট, বিড়ির বান্ডিল এবং একাধিক দেশলাই। অজন্তা খানিক উচ্চমার্গীয়। বিড়ির দিকে বুর্জোয়া দৃষ্টিপাত করেই সে একটি ফকফকে সিগারেট তুলে নিলো সাগ্রহে। অমনি তার সিগারেটের ডগায় আগুন দিতে ছেলেদের ভীড় জমে গেলো রীতিমতো। রাজন্যা আবার কেন জানিনা বিড়ির প্রতিই দুর্বল। বিড়ি খানি জ্বালিয়েই সে ধোঁয়া ছুড়ে দিলো তার তত্কালীন প্রেমিকপ্রবর টনির মুখে। এর অনেক পরে যখনই "বিড়ি জ্বালাইলে জিগর সে পিয়া" গানটা শুনতাম অবধারিত ভাবে দৃশ্যগুলোর কথা মনে পড়ে যেতো।
শুধু কি বিড়ি ! আমাদের জলপাইগুড়ির মূল কেন্দ্র কদমতলা। ওই কদমতলা চৌমাথার ডান দিক ঘেষে পুরোনো আমলের একটা সিনেমাহল ছিলো। নামখানি তার দীপ্তি। অন্ধজনে আলোর নিশানা দেখাতো বলেই হয়তো তার এরূপ নাম ছিলো। তাতে সাংঘাতিক সব সিনেমা আসতো। এই যেমন ... "খাটিয়ামা জবানি কা লহর" কিংবা "টারজান অউর কামসুত্র"। ভদ্র ছেলেরা ওই তল্লাটের ছায়া পর্যন্ত মাড়াত না।পাছে কেউ দেখে ফেলে। এক শারদী বিকেলে কলেজের শেষ দুই তিনখান ক্লাস বাঙ্ক করে কয়েকটি অকালপক্ব অসীম সাহসী তরুণী দীপ্তি হলে হাজির হলো। কৌতূহলের বাপান্ত এবং ভ্রাতান্ত করে! হলে তখন রমরমিয়ে চলছে " জংলী জবানী উপচাইল বা"। হলের ভেতরে নিকষ অন্ধকার ! দর্শকাসনে কতিপয় মানুষ অপরাধী অপরাধী মুখ করে গুটিসুটি মেরে বসে আছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই খিকখিক, হি হি, ফ্যাঁক ফ্যাঁক, ফিচফিচ এবং ওই জাতীয় বহু মেয়েলী শব্দের জোরালো উদ্ঘোষে হলের মধ্যে একটি তুমুল গোলযোগ সৃষ্টি হলো। নীলছবির এইরকম অমনোযোগী, অসমঝদার এবং বেআক্কেলে দর্শক ভুভারতে কোথাও পাবেন না। ইতিমধ্যে হাফটাইম হতেই সুতনুকা রায়কত পাড়ার বুবুদাকে খুঁজে পেয়ে গেছে। সুতনুকা স্বভাবে এমনিতে খুব সামাজিক মেয়ে। পরিচিত লোক দেখলে সে তার পারিবারিক এবং সাংস্কৃতিক খবর না নিয়ে ছাড়ান দেয় না। তাই তিন চার রো দূর থেকেই সে বুবুদার সাথে কথোপকথনে প্রবৃত্ত হলো। বুবুদার তখন ধরণী দ্বিধা হও পরিস্হিতি। এর মধ্যেই পরিষ্কার চোখে দেখতে পেলাম বাবুপাড়ার হাবলু, কেরাণী পাড়ার সমীরন সিনেমা অসম্পূর্ণ রেখেই হলের বাইরে বেরিয়ে গেলো চুপিচুপি।
কথায় কথায় তিস্তা দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গেলো। অতএব সেন্সর করা যাক। আসলে স্মৃতি ব্যাপারটাই এরকম। একলা বা দোকলা আসেনা... আসে দলবেঁধে ...হুড়হুড় করে তুমুল গতিবেগে। আর তা গোছগাছের মুখাপেক্ষী নয় মোটেই। আসলে নাছোড়বান্দা চিটচিটে গুড়ের মতোই সে ঘাঁটি গাড়ে অস্তিত্ব জুড়ে। স্মৃতির হাওয়ায় বেসামাল বান্দা তাই হয়তো এক এক সময় মুখ ফসকে বলেই বসে
"আমি ভাবতে পারিনি... তুমি বুকের ভেতর ফাটছো আমার... শরীর জুড়ে তোমার প্রেমের বীজ
...এখন অনেক রাত... তোমার কাঁধে আমার নিশ্বাস... আমি বেঁচে আছি তোমার ভালোবাসায়...
অপূর্ব....অপূর্ব
ReplyDelete