1

অণুগল্প - দৃপ্ত বর্মন রায়

Posted in


অণুগল্প


আহ্বান
দৃপ্ত বর্মন রায় 

সবে ঠিক করলাম এবার একটু গড়িয়ে নেব, এমন সময় শুনতে পেলাম কে যেন ডাকছে। কি মুশকিল, এদের জ্বালায় একটু শান্তিতে বিশ্রাম নেবার জো নেই। কথা নেই বার্তা নেই, যখন ইচ্ছে ডাকতে শুরু করে। কি দরকার রে বাবা, তোদের খেয়ে দেয়ে কাজ নেই, খামখা কেন বুড়ো মানুষটাকে জ্বালানো। এতটা গিয়ে আবার ফিরে আসতে পরিশ্রমও তো হয়, নাকি? কিন্তু কি আর করা যাবে, ইচ্ছা না থাকলেও উঠতে হলো। 

মাঝে মাঝেই এরকম ডাক আসে। বেশীরভাগ সময়ই পাত্তা দিই না। কিছুক্ষণ ডেকে ডেকে ক্লান্ত হয়ে একসময় থেমে যায়। কিন্তু আজকের ডাকটা একটু অন্যরকম। বেশ ব্যক্তিত্বপূর্ণ ডাক। উপেক্ষা করা যাবে না। অতএব পা বাড়ালাম।

আওয়াজ শুনে আন্দাজ করে নিলাম কোথা থেকে ডাকটা আসছে। তারপর ঢুকে পড়লাম ঘরটাতে। দেখি একটা গোল টেবিলকে মাঝে রেখে তিনদিকে চেয়ারে বসে আছে তিনটে ছেলে। এদের মধ্যে দুজনকে আমি চিনি, আমার নাতি আর তার এক বন্ধু। তৃতীয় ছেলেটিকে আগে কখনও দেখেছি বলে মনে পড়ল না। তিনজনই চোখ বন্ধ করে বসে আছে। টেবিলের ওপর একটা মোমবাতি জ্বলছে। এছাড়া ঘরের বাকী সব আলো নেভানো। আধো অন্ধকারেই চোখে পড়ল টেবিলের ওপর আমার একটা ফটো।

আমি ঘরে ঢুকতেই মোমবাতির শিখাটা হঠাৎ করে একবার নিভে যেতে যেতেও কোনও মতে জ্বলে রইল। তিনটি ছেলেই যেন ভীষণ ঠাণ্ডায় একবার কেঁপে উঠল। অপরিচিত ছেলেটা চোখ বন্ধ অবস্থাতেই মাথাটা উঁচু করে টানটান সোজা হয়ে বসল। 

আমার নাতি একবার চোখটা পিটপিট করে বলল, “দ্ দাদু... সরি, স্বর্গীয় দেবেন্দ্র বিজয় চৌধুরী। আপনি কি এসেছেন?”

উত্তরটা আমিই দিলাম। কিন্তু একটা অপার্থিব কন্ঠস্বরে আওয়াজটা বেরোল মাঝখানে টানটান হয়ে বসা ছেলেটার মুখ থেকে।

– “হ্যাঁ, আমি এসেছি।”

1 comment:

  1. মারাত্মক ! কি অসম্ভব কল্পনা শক্তি !

    ReplyDelete