সম্পাদকীয়
Posted in সম্পাদকীয়
অতিথি সম্পাদকের কলম
আরো একটি ওয়েব পত্রিকা আত্মপ্রকাশ করল – ‘ঋতবাক’ । ‘আরো একটি পত্রিকা’ কথাটার মধ্যে একটা তাচ্ছিল্য ভাবও খুঁজে পেতে পারেন কেউ কেউ । অন্তর্জালের বাড়-বাড়ন্তের এই সময়ে ওয়েব পত্রিকার সংখ্যাও বড় কম নয় । বাংলা শিল্প-সাহিত্যের প্রসারে মুদ্রিত ছোট পত্রিকা বা লিটল ম্যাগাজিনের অবদান কম নয়, আমরা জানি । ওয়েব পত্রিকা, লিটল ম্যাগাজিনের প্রতিদ্বন্দী বা পরিপূরক কোনটিই নয়, কারণ, উভয়ের টার্গেট পাঠক ভিন্ন । কিন্তু লক্ষ্য অভিন্ন । একটি ওয়েব পত্রিকা আর একটির প্রতিদ্বন্দীও নয় নিশ্চিত ভাবেই। বরং বলা ভালো ‘শত পুষ্প বিকশিত হোক।
ওয়েব দুনিয়ায় আমাদের চেনা ঘোরাফেরায় আমরা জানি,এই সময় অনেকগুলি ওয়েব পত্রিকা শিল্প-সাহিত্য নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে চলেছে । ‘ঋতবাক’ তাদের সঙ্গে সামিল হ’ল । এখন অন্তর্জালের ‘ফেসবুক’ আমাদের পারস্পরিক ভাবনা বিনিময়ের প্রধানতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে এই সত্য থেকে আর মুখ ঘুরিয়ে থাকা যাচ্ছে না । বেশ কয়েকটি ‘ফেসবুক গ্রুপ’ তাদের ওয়েব পত্রিকা প্রকাশ করছে নিয়মিত, তৈরী করছে মননশীল পাঠক-মন্ডলী, উঠে আসছেন অনেক নবীন লেখক । তাঁরা সময়ের শব্দ শোনাচ্ছেন, এই সময়, সমাজের ছবি লিখছেন, এবং নিশ্চিতভাবেই বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করছেন ।
এবং একথাও সত্য যে, প্রকাশ করার চেয়ে পত্রিকাকে টিকিয়ে রাখা, পাঠক-মন্ডলীর বিশ্বাস অর্জন করা আরো কঠিন । পাঠকের বিশ্বাস অর্জন করাটা অবশ্যই হয় একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে । এবং পত্রিকায় প্রকাশিত লেখাগুলির কনটেনট’এ জীবন-বোধের প্রকাশকে এই প্রক্রিয়ায় সংপৃক্ত করতে না পারলে সে পত্রিকা নিজস্ব কোন চরিত্র অর্জন করতে পারে না ‘আরো একটি পত্রিকা’ হয়েই থাকে অথবা থাকে না । আমি জেনেছি, ‘ঋতবাক’ তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য অর্জনের প্রক্রিয়ায় নিরন্তর সংপৃক্ত থাকার অঙ্গীকার করেছে ।
স্বাধীনতা-উত্তর কাল থেকে সাতটা দশক পেরিয়ে এলাম। প্রতিটি দশকেরই বিশেষ যুগলক্ষণ থাকতে পারে, থাকেও । সবগুলিই শিল্প-সাহিত্যের ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব হয়তো ফেলেনা । কারণ সমাজ বন্দোবস্তের বা সেই সমাজের মানুষের‘বোধ’এর তেমন কোন হেরফের হয়না । ধরা যাক মধ্য আশি থেকে এই দুহাজার দশ – বিশ্বায়ন পরবর্তী এই চার দশকে বাঙালির সমাজ বন্দোবস্তে দৃশ্যমান কোন পরিবর্তন এসেছে কি ? কিংবা তার সৃজনশীলতাকে একটা নতুন বাঁকে এনে দাঁড় করিয়েছে,খুঁজে পেয়েছে আমাদের নাড়া দেওয়ার মত কোন উপাদান ? না আসেনি। প্রবল ভাবে এসেছে এক শূণ্যতা বোধ । এই সময়ের সাহিত্য সংস্কৃতিতে তাই শুধুই শূণ্যতা বোধ, শুধুই মধ্যবিত্ত মানুষের আত্মযুদ্ধ । সাহিত্য-নাটক –গান বা বুদ্ধির চর্চায় এই চারটি দশক আগামী প্রজন্মের কাছে গর্ব করার মত কোন উপাদান দেয়নি। ‘এই সময়’ অতএব শূন্যতাবোধের সময়, অন্তত আমার উপলব্ধিতে । হয়তো আরো অনেকের কাছে ।
‘ঋতবাক’সেই শূন্যতা বোধ থেকে ছিটকে বেরোনোর কথা ধরে রাখবে তার শরীরে এটাই কাম্য । এটাই এই সময়ের প্রার্থিত সত্য । আর ‘ঋতবাক’ মানে সত্যকথন । সময়ের সত্যকথনে সে অঙ্গীকারবদ্ধ, তার শরীরে জীবনবোধের প্রতিভাস থাকবে, এই বিশ্বাস রাখা যেতে পারে ।
‘ঋতবাক’এর প্রথম সংখ্যাটিতেই আমাকে অতিথি সম্পাদকীয় লেখার গৌরব প্রদান করেছেন এর পরিচালক মণ্ডলী । তাঁদের পথচলায় অনেকের সঙ্গে আমারও শুভেচ্ছা থাকলো । ‘অলমিতি শুভায় ভবতু’ ।
ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়
ঋতবাক –এর তরফে ফাল্গুনীদাকে জানাই অশেষ কৃতজ্ঞতা
ReplyDelete"Potrikatike tikiye rakha , pathok mondolir bishwas orjon kora aro kothin" Phalgunu Da kothata ekdom khanti kotha. Potrikatir swotontro gate up ache ja pathok ke akorshon korte badhyo. Lekhok mondoli (ami bad) sokolei suporichito. ঋতবাক’সেই শূন্যতা বোধ থেকে ছিটকে বেরোনোর কথা ধরে রাখবে তার শরীরে এটাই কাম্য ।
ReplyDelete