0

ধারাবাহিক - অনিন্দিতা মণ্ডল

Posted in




















৬ 



“Maybe sadness was a kind of hunger, she thought. Maybe the two went together.” 



অতসী আজকাল একা থাকতে ভালোবাসেন। তাঁর স্তাবকরা যে মাঝে মাঝে ফোন করেনা তা নয়। তবে তিনি আর সাড়া পান না। কী যে একটা হয়ে গেল! ছেলেটা চলে গেল! প্রথম প্রথম তিনি যেন অনুভব করতে পারছিলেন না। যত দিন যাচ্ছে তত ফাঁকা লাগছে। মাঝে মাঝে সুপ্রর ঘরে ঢুকে এটা ওটা ঘাঁটতে থাকেন। খুঁজতে চেষ্টা করেন। অসুখের কারণটা কি? কেন ও এরকম হয়ে গেল? অথচ ওই ছবিটা দেখলে কে বলবে সুপ্র এরকম কাজ করতে পারে? 

কস্তুরীর সঙ্গে উনি যোগাযোগ রাখেন। মেয়েটা অত এগ্রেসিভ নয়। ওদের ইন্টারভিউটা এয়ার হলে উনি দেখেছিলেন। খুব সংযতভাবে প্রেজেন্ট করা হয়েছে। কখনও কাউকে ছোট করা হয়নি। শুধু এটুকুই বলা হয়েছে যে নামী স্কুলের নামী বাপমায়ের ছেলেমেয়েরা এমন হয়ে যেতে পারে। সবার এদিকটা দেখা উচিত। একটু সতর্কতা। একটু কাছাকাছি থাকা। যদিও এক্ষেত্রে এটা একটা এক্সিডেন্ট। কেউ বুঝতেই পারেনি যে ওখানে একটা ফাঁকা জায়গা আছে। সুপ্র পড়ে যেতে পারে। 

ইন ফ্যাক্ট কস্তুরীই ওনাকে কতগুলো প্রিন্ট আউট দিয়ে গেছিল -দেখুন দিদি। ব্যাপারটা অনেক গভীরে। ইন্টারনেটের মিসইউজ নিয়েও আমাদের সাবধান হওয়া উচিত। একটা অসংগত আগ্রহ কোথায় টেনে নিয়ে যায় দেখুন। 

অতসী দেখেছেন। শিউরে উঠেছেন। জিজ্ঞেস করেছেন -তুমি এগুলো কোথায় পেলে? কস্তুরী বলেছিল -অফ দ্যা রেকর্ড একদম কিন্তু। অতসী মাথা নেড়েছেন। কস্তুরী বলেছে -ওদের একজনের কাকা আমাদের এনজিওটা চালান। তিনিই দিয়েছেন। অতসী বিস্মিত -ভয় হলনা? ওনার ভাইপো তো বেঁচে! কস্তুরী হেসেছে -একটা রাস্তা তো সবাই খুঁজছে দিদি। ফেরাতে হবে তো! ভয়ংকর অসুখ কিনা! শরীরের অসুখের চেয়ে এই মনের অসুখটা বেশি ভয়ের কিনা। 

সুনন্দ এখন আবার নিজের জগতে। আজকে টিভিতে একটা সেমিনার আছে। এপিডেমিক নিয়ে একটা আলোচনা সভা। কী আশ্চর্য! সেখানেও সুনন্দ! অতসী বসলেন টিভির সামনে। শুক্লা ছাড়া আর কেউ নেই। ‘পত্রিকা’ থেকেও চাপ আসছে। সরকার কিছু অ্যাড দেবে। ইতিবাচক কাজগুলো তুলে ধরতে হবে। আলোচনাটা শোনা দরকার। সুনন্দ ছাড়াও এখানে অর্ণব গুপ্ত আছেন। ডাক্তার অর্ণব গুপ্ত। সুপ্রর আর্চ এনিমি, শুদ্ধ গুপ্তর বাবা। সে রাতে সুপ্রর অন্যতম অতিথি। 

সাড়ে সাতটা বাজলে শুরু হল ‘পত্রিকা’র নিজস্ব চ্যানেলের আলোচনা সভা। 

-দিদি কিছু খাবেন? শুক্লা এসে দাঁড়িয়েছে। ওঃ! সারাটা দিন কি এরা খাওয়ার কথা ভাবে? এত খিদে পায় কেন? বিরক্ত হন অতসী। আর তারপরেই অনুভব করেন, খিদে পেয়েছে। পেয়েছে তো! অথচ শোকে নাকি মানুষের খাওয়া কমে যায়? খিদে নাকি থাকে না? তাহলে কি শোক নেই? তিনি অদ্ভুতভাবে শুক্লার দিকে তাকান। শুক্লা স্নেহ নিয়ে তাকিয়ে আছে। ভীষণ যত্নে ট্রে নিয়ে এসে দাঁড়িয়েছে। সে না দেখলে অতসীকে দেখবে কে? 

চশমার তলা দিয়ে গড়িয়ে আসা জলটুকু রুমালে মুছে অতসী প্লেটটা নিলেন। পর্দায় তখন একে একে অতিথিরা ঢুকছেন। একজন দক্ষিণী ভদ্রলোক, ডক্টর মণি স্বামীনাথন এলেন। প্রায় তাঁর হাত ধরেই এলেন ডক্টর অর্ণব গুপ্ত। শুদ্ধ গুপ্তর বাবা। বাজে ঝলসে যাওয়া একটা চেহারা যেন। অতসীর বুকটা ধ্বক করে উঠল। শুদ্ধ তো বেঁচে! ওর বাবার এত শোক কেন? ডেড ম্যান ওয়াকিং? নাকি ডেড সোল? 

ওদের ‘উই কেয়ার’ এর ঘরে বসেছিল ওরা কজন। শিবু আসেনি। সাহিল সরিতা তন্ময় আর কস্তুরী ছিল। সাহিল বলছিল অতীনকে। শিবুর দাদা মারা গিয়েছে রাস্তায় পড়ে। জল নেই খাবার নেই। মাইলের পর মাইল ফাঁকা হাইওয়ে ধরে আসার সময় ওরা ক্লান্ত হয়ে পড়ছিল। অনেকেই ছিল দলে। হাইওয়েতে গাড়ি নেই। ওরা রাস্তা জুড়ে হাঁটছিল। শহরের কাছাকাছি হলে দৌড়ে দৌড়ে অনেক মানুষ আসছিল। ওদের জল, খাবারের প্যাকেট, চটি, কত কিছু দিচ্ছিল। কিন্তু সে তো আর সারা রাস্তা জুড়ে নয়! ওরা ক্লান্ত হয়ে পড়ছিল। রামুয়ার মেয়েটা আগে গেল। তারপর শিবুর দাদা। ওরা অনেক সময় গরম আর রোদ্দুর থেকে বাঁচতে দিনের বেলায় গাছ দেখে সেখানে বিশ্রাম নিচ্ছিল। পথের পাশে পুকুর জলা দেখতে পেলে জল নিয়ে খাচ্ছিল। সারা রাত ধরে হাঁটার চেষ্টা করছিল। তারপর আবার রাতে রাস্তায় দল বেঁধে বেরনো নিষেধ হল। ওরা দিনের বেলায় হাঁটা শুরু করল। 

রামুয়ার মেয়ে আর শিবুর দাদা, দুজনেই মরে যেতে ওরা ওদেরকে টেনে পথের ধারে গাছের ছায়ায় রেখে এসেছিল। ওদের শরীরে শক্তি ছিলনা যে ওদের সৎকার করে। যারা ফিরতে পেরেছে তারা যেন কতই অপরাধী। ওরা বেঁচে ফিরেছে। বাকিরা পারেনি। কথার মাঝে অতীন কস্তুরীর দিকে ফিরল -আপনার কথা অনেক শুনেছি। সাপোর্ট দেন এত! অথচ সামনাসামনি আলাপ হয়নি। আসলে একটা ভয়ানক দুর্যোগ মিলিয়ে দেয়। কস্তুরী হাসে -আপনি তো এদের মেসায়া। আমি সামান্য লোক। কিইবা পারি। অতীনের মুখে একটা ছায়া খেলে যায় -না না। আমি অক্ষম। খুবই অক্ষম। স্বার্থপরও। 

সাহিল কস্তুরীর দিকে তাকায় -দিদি চলো। ছেড়ে আসি। গৌতমদা চিন্তা করবে। 

কস্তুরী সাহিলের স্কুটারে আর না উঠে হেঁটে ফিরবে ভাবল -তোরা কাজ কর। আমি চলে যাবো। আসি অতীনবাবু। 

পথে ফুটপাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে কস্তুরী ভাবছিল। অতীন গুপ্ত ডাক্তার অর্ণব গুপ্তর ভাই। অতসী চক্রবর্তীর ছেলের ক্লাসমেট অতীনের ভাইপো। তাহলে চ্যাটের প্রিন্ট আউটগুলো অতীন কস্তুরীর হাতে পৌঁছে দিলো কেন? নাহ, কিছুতেই মেলানো যাচ্ছে না। সাহিল একটা মুখবন্ধ খামে এনে দিয়েছিল। কস্তুরী নিশ্চয় ওগুলো দিয়ে স্টোরি করবে না? অন্তত অতীন গুপ্তর উদ্দেশ্য তাই নয় নিশ্চয়। 

টিভিতে তখন ডক্টর স্বামীনাথন একাই একশো -আরে বাবা, ইউ হ্যাভ টু বি এক্সট্রা কশাস। পেসেন্ট যেন কোনোভাবেই মনের জোর না হারায়। ফাইট করলে এ থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। ইন এনি কেস মর্টালিটি রেট খুবই কম। বিরোধী কেউ বললেন -তাহলে বলছেন এই রোগটা অত মারাত্মক নয়? মানে এপিডেমিক ঘোষণা করাটা অন্য কোনো ভেস্টেড ইন্টারেস্টে? স্বামীনাথন মাথা নাড়লেন -লুক, ইউ আর টুইস্টিং মাই ভার্সন। আই, অ্যাজ আ ডক্টর ক্যান টেল ইউ হাও ইউ ক্যান ডিল উইদ দ্যা সিচুয়েশান। এনিওয়ে দ্যা কার্ভ হ্যাজ ফ্ল্যাটেনড অলরেডি। লেট আস টেক সাম প্রিকশান সো দ্যাট ইট ডাজনট কাম ব্যাক এগেইন। ইউ নো দ্যা সেকেন্ড অ্যাটাক। 

সঞ্চালক বললেন -আচ্ছা এবার আমরা প্রফেসর সুনন্দ চক্রবর্তীর কাছে যাবো। শুনে নেবো ওনার মতামত। আমাদের আজকের বিষয়ঃ এই অসুখ আমাদের কি কি ক্ষতি করল আর ভবিষ্যতে এ থেকে আমরা কিভাবে সাবধান হবো। 

সুনন্দ চক্রবর্তী মোটা কাঁচের চশমাটা খুলে একবার মুছে নিলেন -আমাকে ক্ষমা করবেন, আমি এই রোগের কোনো প্রতিষেধক জানিনা। জানা সম্ভবও নয়। কারণ আমি সাহিত্যের মানুষ। তবে এই রোগ থেকে তৈরি হওয়া আতঙ্ক জনমানসে যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে তা নিয়ে আলোচনা চলতেই পারে। যেমন ধরুন এই সময়ে আমরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রেখে চলব। পরিবারের সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটাবো। বন্ধু পরিজনদের সঙ্গে বেশি বেশি যোগাযোগ রাখব। যেন কখনও না মনে হয় আমরা একা। 

সুনন্দ যখন কথা বলছেন, অতসী লক্ষ করলেন অর্ণব গুপ্ত হাঁ করে তাকিয়ে ছিলেন তাঁর দিকে। যেন কি অসম্ভব কথা শুনছেন! সকলেই অনেক রকমের এক্সপ্রেসান দিচ্ছেন। কিন্তু লাইভ শো’তে অর্ণব গুপ্তর প্রতিক্রিয়া দেখার মতো। সেটে বসা কেউই যে অর্ণব গুপ্তকে বুঝতে পারছেন মনে হয়না। শুধু স্বামীনাথনকে দেখা গেল অর্ণব গুপ্তর টেবিলে রাখা হাতটার ওপরে হাত রাখলেন। অতসীর মনে হল, অর্ণবের হয়তো ওই পারিবারিক অন্তরঙ্গতার কথাটা অদ্ভুত লেগেছে। কিংবা সুনন্দর এই স্বাভাবিক কথা বলা। স্বাস্থ্যসচিব উপস্থিত। আজ ডক্টর স্বামীনাথন আর ডক্টর অর্ণব গুপ্তকে বিশেষ সম্মান জানানো হচ্ছে। এপিডেমিকে ওঁদের অক্লান্ত সেবা ও আরোগ্যদানের জন্য। সম্মানপত্র হাতে তুলে দেবার সময়ে সচিব অর্ণব গুপ্তকে অনুরোধ করলেন -আপনি কিছু বলুন ডক্টর। আমরা সবাই জানি, আপনি কথায় বিশ্বাস করেন না। কাজে করেন। অর্ণব ভাবলেশহীন চেয়ে রয়েছে দেখে স্বামীনাথন বললেন -স্পেয়ার হিম প্লিজ। ওর মেনটাল স্টেট ঠিক নেই। হি রিয়েলি নিডস রেস্ট। অর্ণব যন্ত্রের মতো হাত তুলে একটা নমস্কার করল মাত্র। সঞ্চালক ম্যানেজ দিলেন দারুন -আমরা ডাক্তার গুপ্তর কথা নয় ওঁর সেবা পেতে অভ্যস্ত। উনি ভালো থাকুন। ওনার রুগিরাও সেরে উঠুন এই কামনা করি। 

অতসী উঠে পড়লেন। শুক্লা ওঁর ঘরে প্লেটে কটা জুঁই ফুল এনে রেখেছে। গন্ধটা নাকে লাগছে। ফুলের গন্ধ আর ধুপের ধোঁয়া ইদানীং বিশ্রি লাগে ওঁর। কেন যে অর্ণব গুপ্তকে ডাকা হল? মনে পড়ল, হ্যাঁ, যাতে কেউ না ভাবে যে সুনন্দ বা অতসী কোনো ইলফিলিং পুষে রেখেছেন। এভরিথিং সিমস নরমাল। 

কাকামনি তুমি আজ আমার সঙ্গে থাকবে? অতীন এসেছিল আজ মনীষার গাছের খাবার পৌঁছতে। আসফাক বলে যে ছেলেটি বাজারে সবজি নিয়ে আসত, অনেকদিন পর আবার এসেছে। তাকে বলে রেখেছিল অতীন। সার ছাড়া টেরেসের গাছ মরে যায়। ও ভিন্ন ভিন্ন গাছের ভিন্ন ভিন্ন সার এনে দিয়েছে। মনীষা এখন স্কুলের অনলাইন ক্লাস না থাকলেই গাছ নিয়ে পড়ে থাকে। তুতুন যে বাড়িতে আছে সেদিকে লক্ষই নেই। অতীন প্রশ্ন নিয়ে তাকায়। -থাকো না প্লিজ? আমার ভয় করে। -কিসের ভয়? বাবা তো ফিরছে এখন! মা আছে, মাধুদি আছে। কিসের ভয়? আর তাছাড়া আমি এখানে থাকলে চলবে না রে। ওদিকে অন্যখান থেকে গরীব মানুষগুলো ফিরছে। আমাদের সাধ্য অনুযায়ী ওদের দেখতে হবে। রাতে আমাদের অনেক কাজ থাকে। বিভিন্ন জায়গা থেকে ফান্ড আসছে, সেসব হিসেব করে ঠিকমতো কাজে লাগানো। বেশ চাপে আছি রে। তুতুনের গলাটা বসে যায় -কাকামনি তুমি আমাকে ঘেন্না করো, না? অতীন এবার এসে তুতুনের খুব কাছ ঘেঁষে বসে -কি হয়েছে রে? ঘেন্না করব কেন? -তুমি মেসেজগুলো দেখোনি? তুতুন চোখ তুলতে পারেনা। অতীন ওর মাথায় হাত রাখে -দ্যাখ, তোকে যদি ঘেন্না করি তবে নিজেকেও ঘেন্না করা উচিত। তোর সঙ্গে কথা বলা দরকার ছিল আমাদের। এখন এই নিয়ে বসে থাকলে তো হবে না। আমি জানি তোর বন্ধু চলে গেছে। ডিপ সেন্স অফ লস। এটা কষ্টের। কিন্তু এটা সত্যিই এক্সিডেন্ট। অন্যরা কেমন আছে? খোঁজ নিয়েছিস? তুতুনের চোখে জল। অতীন লক্ষ করল ছেলেটা কেমন যেন রোগা ফ্যাকাসে মেরে গেছে। তুতুন থেমে থেমে বলল -ওরা কেউ কনট্যাক্টে নেই আর। জানো কাকামনি, আমাদেরকে স্কুল থেকে রাসটিকেট করেছে। আয়াম নো মোর আ স্টুডেন্ট অফ দ্যাট স্কুল। 

এতদিনে ছেলেটা ভেঙে পড়েছে। এরকম যে হতে পারে সেটা মনে হয় ভাবতে পারেনি। স্কুল নিয়ে একটা অহংকার তো ছিলই। সমাজের উঁচু তলা। ও স্কুলে সবাই চান্স পায়না। পেলেও পড়তে পারে না। বাইরে মেঘের আস্তরণ একটুও সরেনি। আকাশের তারারা অন্ধকারে লুকিয়ে আছে। ওপরের টেরেসে গন্ধরাজ গাছটার পাশে মনীষা বসে আছে। উল্টোদিকের বাড়ির সেই অল্পবয়সী বউটির সঙ্গে অল্প অল্প কথা বলছে। মাধুদি রান্না সারছে। দাদা বাড়ি ফিরে খাবে। অতীন হঠাৎ তুতুনকে জড়িয়ে ধরল -চল, তুই আজ আমার সঙ্গে থাকবি। আমার কাজে একটু হেল্প করবি। কেমন? ওর গায়ের মধ্যে মুখ গুঁজে তুতুন বলে চলছিল -বিশ্বাস করো কাকামনি, আমি কিচ্ছু করিনি। ও নিজেই ভীষণ নেশা করেছিল। রিয়ার সঙ্গে খুব…। থেমে যায় তুতুন। অতীন ওর মাথাটা চেপে রেখেই বলে -আমি জানি। ওটা সত্যিই এক্সিডেন্ট। হয়ে গেছে। ওখানে তোর কিছু করার ছিলনা। কিন্তু মেসেজগুলো আমি দেখেছি তুতুন। ওইটা এই এক্সিডেন্টের একটা শুরুয়াত বলতে পারিস। ওই মেসেজগুলো না থাকলে আমি তোকে ক্লীনচিট দিতাম। যাই হোক, ভাবিস না। মানুষ ভুল করে, অপরাধও করে। ইউ ডিডনট কিল হিম। চল, উঠে পড়। যাই। 

মনীষা কিছুই বলেনি। যেখানে যেতে চায় যাক। বেরোবার আগে অতীন অর্ণবকে বলেছিল -দাদা ও বলতে পারেনি। স্কুল থেকে ওদেরকে রাসটিকেট করেছে। 

অর্ণব যে মন দিয়ে শুনেছে সেটা অতীনের মনে হয়নি। আর কি আশ্চর্য! যে তুতুনকে কাকামনির সঙ্গে মিশতে পর্যন্ত দিতো না মনীষা, সেই অতীনের সঙ্গে তাকে ছেড়ে দিলো? সত্যিই অসুখ কত কিছু বদলে দিয়েছে!

0 comments: