3

গল্প - বিকাশ মুখোপাধ্যায়

Posted in


গল্প


ইয়েস স্যর,ব্যাঙ্ক অফিসার স্যর 
বিকাশ মুখোপাধ্যায় 



(স্থান, কাল, পাত্রপাত্রী কাল্পনিক। কিন্তু বাস্তবে কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মিল পাওয়া গেলে তা আদৌ আকস্মিক কিংবা কাকতালীয় নয়।) 

এজলাস। বিচারক তাঁর চেয়ারে আছেন। বাদী বিবাদী সম্পর্কে স্বামী স্ত্রী। ডিভোর্স এর মামলা চলছে। বাদী ব্যাঙ্ক অফিসার অমুকচন্দ্র। 

জজসাহেব বললেন, ম্যাডাম আপনার উকিলকে নয়, আপনাকে সরাসরি কিছু প্রশ্ন করতে চাই। ম্যাডাম ঘাড় নাড়লেন। তিনিও তাই চান। 

জজ-আপনার স্বামী শ্রীযুক্ত অমুক আপনার ওপর শারীরিক অত্যাচার করে? 

ম্যাডাম -(স্বগত-সে মুরোদ নেই) না স্যর। 

জ-ওঁর কি কোনও অবৈধ প্রেম আছে? 

ম্যা-না স্যর। 

জ-উনি কি যৌন সংসর্গে অক্ষম? (প্রশ্নটা জজসাহেব ইংরাজিতে করলেন, বাংলায় বোধকরি অশ্লীল) 

ম্যা-না। তবে... না তেমন কিছু... 

জ-জোরে জোরে নাকডাকা, ঘনঘন সশব্দ বাতকর্ম, আপনাকে সবসময় সন্দেহ করা. . . এমন কোনও বাতিক? 

ম্যা-না। 

জ-আপনার চাহিদা মতো টাকা পয়সা পান? 

ম্যা-হ্যাঁ। 

জ-আপনার শাশুড়ি খুব দজ্জাল? 

ম্যা-উনি বেঁচে নেই। কোন ননদও নেই। 

জ-তাহলে আপনি ডিভোর্স চান কেন? 

ম্যা-স্যর, ও মিথ্যে পরিচয় দিয়ে আমায় বিয়ে করেছে। বলেছে, ও নাকি ব্যাঙ্ক অফিসার। 

জ-তাহ'লে উনি কি? 

ম্যা-সেটাই তো জানি না স্যর। 

জ-তাহ'লে ওঁর অফিসে গিয়ে জিজ্ঞেস করছেন না কেন? 

ম্যা-গিয়েছিলাম। ওর ওপরওয়ালাদের জিজ্ঞেস করতে তারা বলেছে, সে কী আপনি জানেন না? চলে আসার সময় শুনতে পেলাম তারা বলছে, অমুকের কি দুর্ভাগ্য, বউটার মাথা খারাপ। 

জ-তাহ'লে তো ল্যাঠা চুকে গেল। কেস তুলে নিন। 

ম্যা-ওখানে সাঁট আছে। 

ম্যাডাম হাত জোড় করে বললেন, ধর্মবতার একটু গোড়া থেকে বলি। জজ সম্মত হলেন। ম্যাডাম যা বললেন, তা হল... 

ম্যাডামের বাবাও ব্যাঙ্কে চাকরি করতেন। সকলে বলত, ব্যাঙ্কের চাকরি রাজার চাকরি। বাবা সকাল সাড়ে নটা নাগাদ ভালো করে খেয়েদেয়, টিফিনবাক্সসহ ব্যাগ বগলস্থ করে স্ত্রীকে হামি খেয়ে (এটা ম্যাডাম লুকিয়ে দেখতেন)অফিস বেরোতেন। সন্ধ্যাবেলায় ম্যাডামের মা যখন খালি গায়ের ওপর শাড়ি বিপজ্জনক সীমানার নিচে নামিয়ে পাউডার মাখছেন কিংবা চুল বাঁধছেন, বাবা হাসিমুখে হাজির। হাতে তেলেভাজা কিংবা রোলের প্যাকেট। তারপর টিভিতে "চাষীভাইদের বলছি"কিংবা পিড়িং পিড়িং সেতার শুনতে শুনতে ঘন হয়ে বসে প্যাকেট সাফ। আর তাঁর বেলায়... ম্যাডামের গলা কান্নায় বুঁজে আসে...সব স্যর পড়ার ঘর থেকে দেখা। 

জজসাহেব বিচলিত হন। 

জ-আপনার বেলায় কি হচ্ছে ? 

বলেই জজ তাঁকে থামিয়ে, চোখের ইশারায় শ্রীযুক্ত অমুককে উল্টোদিকের কাঠগড়ায় তুললেন। 

জ-এবার বলুন। 

ম্যা-ভোরবেলায় বেরিয়ে যাচ্ছে। তখন ব্যাঙ্ক খোলে না। বলে, গ্রামে গ্রামে ব্যাঙ্কের কাজে যাচ্ছি। 

জ- অমুকচন্দ্র, আপনার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ঠিক? 

অমুক-ইয়েস স্যর। 

ম্যা-বলে যেসব এরিয়ায় ব্যাঙ্ক নেই সেখানে লোন ফেরি করতে যাচ্ছে। "লোন নেবেন নাকি গো, লোন নেবেন নাকি গো"। কেউ না নিলে তাকে জবরদস্তি করছে। বাবা বলত, অফিসাররা সহজে লোন দিতে চায় না। তাহ'লে? এ তো দালাল স্যর। 

জ-ইনি ঠিক বলছেন? 

অ-ইয়েস স্যর। কি করব স্যর?তিনদিনে পঞ্চাশটা লোন দেবার টার্গেট। 

ম্যা-আপনার বিশ্বাস হয় স্যর? মনে হয় না, ও একটা কমিশন এজেন্ট? 

জ-(দীর্ঘশ্বাস ফেলে)প্রসীড। 

ম্যা-শুধু লোন নয়, ইনসিওরেন্সের দালালিও করে। আমার মাসতুতো ভাইবোনদের বুঝিয়েছে, এটা ব্যাঙ্কের কাজ। দুটো পলিসিও গছিয়েছে। তারা জামাইবাবু বলে কিছু বলতে পারেনি। কি ঘেন্নার কথা! 

জ- অমুক বাবু, ম্যাডাম ঠিক বলছেন? 

অ-ইয়েস স্যর। কি করব স্যর?অনেকে যা তা বলে, তাই নিজের লোক খুঁজতে হচ্ছে। ব্যাঙ্ক টার্গেট দিয়েছে স্যর। 

জ-(চশমার ফাঁক দিয়ে চোখ মুছে) ম্যাডাম, প্রসীড। 

ম্যা-সোনাও বেচছে স্যর। আমার দুই বান্ধবীকেও সোনা বেচেছে। লজ্জায় মুখ দেখাতে পারি না। বলুন স্যর, ব্যাঙ্ক অফিসার সোনা বেচে? 

জ- অমুক বাবু, এ অভিযোগ ঠিক? 

অ-ইয়েস স্যর। টার্গেট স্যর। 

জ-ব্যাঙ্কে গিয়ে সাধারণ মানুষ তো আপনার সাহায্য পায় না। আপনি তো ব্যাঙ্কে থাকেন না। 

অ-ইয়েস স্যর। কাস্টমার অফিসে না পেয়ে গুষ্ঠি উদ্ধার করে।ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের কাছে যায়, অবশ্য তিনি যদি থাকেন। এমনিতে যেদিন ভাগ্যক্রমে রয়ে গেলাম তো ঠিক আছে। নয়তো আমাদের মতো অফিসারদের সঙ্গে কাস্টমারদের ভাসুর ভাদ্রবউ, চোর কামারের সম্পর্ক। 

জ-(দুঃখের সঙ্গে ঘাড় নেড়ে)ম্যাডাম, প্রসীড। 

ম্যা-জানেন তো স্যর, এখন ব্যাঙ্কে মাসে দুটো শনিবার ছুটি। অথচ ঐ দুদিনও বাড়ি থাকে না। সকালেই বেরিয়ে পড়ে। বলে, ক্যাম্পে যাচ্ছি। লোক পাঠিয়ে খোঁজ নিয়েছিলাম। সে এসে বলল, বড়বড় লাল নীল ছাতার নিচে বসে কিসব কাগজপত্তর লেখালিখি করছে। অনেক লোক ঘিরে আছে। বাড়িতে এলে জিজ্ঞেস করলাম, কি করছিলে? বলল, খাতা খোলাচ্ছিল। বুঝুন, ব্যাঙ্কে খাতা খুলতে এসে লোকে ফিরে যায় আর এ ছুটির দিনে দিনে ডাস্টবিনের পাশে ছাতা খাটিয়ে খাতা খুলছে। আবার একদিন বলল, লোনের তাগাদা করছিল। বুঝুন ধর্মাবতার, গ্রামে গিয়ে লোন ফেরি করছে আবার তাগাদাও দিচ্ছে। মানে দুপক্ষের কমিশন খায়, অফিসার না ছাই. . . দালাল। 

জ-আপনি ছুটির দিনেও অফিসের কাজে... 

অ-ইয়েস স্যর। টার্গেট স্যর। 

জ-(হতভম্ব হয়ে)প্রসীড 

ম্যা-(একটু কিন্তু কিন্তু ভাব)আপনি তখন সেক্সের কথা বলছিলেন স্যর, সে তো কালেভদ্রে। বেশিরভাগ দিনই বাড়ি এসে কোঁতকোঁত করে চা গিলে কোন রকমে ফ্রেশ হয়ে রুটি খেয়ে শুয়ে পড়ে। ঠিক আছে, ক্লান্ত হয়ে এসেছ, সারারাত ঘুমোও। ও মা, মাঝরাতে ধড়মড় করে বিছানায় উঠে বসে বিড়বিড়োচ্ছে, "টেররিজম, টেররিজম, সন্ত্রাস, সন্ত্রাস"। 

জ-(অবাক হয়ে)অমুক বাবু, এটা ঠিক? 

অ-ইয়েস স্যর। 

ম্যা-স্যর, ও তো কাশ্মীরে গিয়ে পাকিস্তানের পতাকা ওড়ায়নি, কিংবা পাকিস্তান জিতলে বাজি ফাটায়নি। দলিতের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদও করেনি। গোমাংস খাওয়ারও মুরোদ নেই। কোনওদিন জে এন ইউ কিংবা যাদবপুরেও পড়েনি। কানহাইয়া, জিগনেশ, হার্দিকের পক্ষে কোনও বিবৃতি দেয়নি। তাহলে ওর সন্ত্রাস সন্ত্রাস করে চিৎকার করার কি আছে? আর ব্যাঙ্কে আবার সন্ত্রাস কোথায়? তার মানে ও ব্যাঙ্কে নয়, অন্য যে জায়গায় কাজ করে, সেখানেই কেউ ভয় দেখিয়েছে। কাকে ঠকিয়েছে কে জানে! 

জ- অমুকচন্দ্র, আপনি এমন করেন? 

অ-ইয়েস স্যর। 

জ-কিসের সন্ত্রাস? 

অ-ইকোনমিক টেররিজম। অর্থনৈতিক সন্ত্রাস। একটা লোক সতেরোটা ব্যাঙ্ক থেকে ন হাজার কোটি টাকা লোন নিয়ে তা শোধ না করে বিদেশে পালাল, কেউ কিছু করতে পারছে না। এসব যখন করছে সে তখন রাজ্যসভার সদস্য। ভাবুন একবার, পাঁচ বছর অন্তর ব্যাঙ্ককর্মীদের সঙ্গে সরকারের যে মাইনে, সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর চুক্তি হয়, তাতে সরকারের মোটামুটি এর অর্ধেক টাকা লাগে। আর একটা লোক দুবারের চুক্তির টাকা নিয়ে পালাল। এ কে কি বলবেন স্যর, সন্ত্রাস নয়? এ তো পথ দেখালো, এর দেখানো পথে একের পর এক লোন নেওয়া লোক ভাগলবা। সব সন্ত্রাসবাদী। আমার তো সবসময় ভয় ব্যাঙ্ক গুলো না উঠে যায়। 

জজসাহেব বললেন, ব্যাপারটা পুরো বুঝিয়ে বলুন তো। অমুক যা বললেন, তা মোটামুটি এই :- 

কিছুদিন আগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী,ব্যাঙ্কগুলি বিভিন্ন কর্পোরেট হাউসকে যে লোন দিয়েছে, তার মধ্যে অনাদায়ী খারাপ ঋণের পরিমাণ ৩,৬১,০০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১০০কোটি টাকা কিংবা তার চেয়েও বেশি অনাদায়ী ঋণ রয়েছে ৭০১টি অ্যাকাউন্টে, যার পরিমাণ ১,৬৩,০০০ কোটি টাকা। এর ওপর ২০০১ থেকে ২০১৩ অবধি ২ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ সরকারি ব্যাঙ্কগুলি কর্পোরেট হাউসদের মকুব করেছে। ফলত ব্যাঙ্কগুলি ফোঁপরা। গোদের ওপর বিষফোঁড়া, গত কয়েক বছরে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের সংখ্যা ৩৮ শতাংশ বেড়ে গেছে, যার পরিমাণ প্রায় ৬৭০০০কোটি টাকা। দেবীলাল গরীব চাষিদের লোন মকুব করেছিলেন আর কিনা কর্পোরেট হাউস! তারা হাজার হাজার কোটি টাকা লোন নিচ্ছে, একদিন এসে বলছে অত টাকা শোধ দিতে পারব না, সুদ দিতে পারব না। আসল ঋণের কিছু অংশ নাও, খাতা বন্ধ কর, নয়ত বাংলা বাজারে যাও। এসব মানতে গিয়ে সরকার গত কয়েক বছরে ১,১৫,০০০কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। ৯০০০কোটি নিয়ে পালানো বিজয় মালিয়া প্রস্তাব দিয়েছিলেন, বকেয়া আসল ৫০০০ কোটির মধ্যে তিনি ৪৩০০কোটি মিটিয়ে দেবেন। অর্থাৎ সুদ ছাড়াও আসলের ৭০০কোটি মায়ের ভোগে। তিনি কবুল করেছিলেন, আরও অনেক সংস্থা থেকে তিনি লোন নিয়েছেন। তাদের জন্যেও কিছু প্রসাদী ফুল তাঁকে ফেলতে হবে। প্রসঙ্গত ২৭টি ব্যাঙ্কের বাইরে তিনি আই. ডি. বি. আই থেকে ৭৫০ কোটি টাকা লোন নিয়েছিলেন, যার জন্যে তাঁর ১৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। যারা এই টাকা নিয়েছে, তারাও তো ছোট মাপের অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদী। নীরব মোদি, মেহুল চোকসি সব একসে বড় কর এককেস। 

এ সমস্ত পরিসংখ্যান দিয়ে অমুকচন্দ্র বিচারককে বলেন:- 

অ-এরা কি আই এস আই থেকে কম সন্ত্রাসবাদী? একটা জাতির টাকা লুঠ করে নিচ্ছে। এসব ভাবতে ভাবতেই ঘুমের ঘোরে চিৎকার করে উঠি, "টেরিজম টেরিজম"। 

জ-ম্যাডাম, এ ব্যাপারে আপনার কিছু বলার আছে ? 

ম্যা-লক্ষ কোটি শুনে আমার মাথা ঘুরছে , আমি. . . 

জ-তাহ'লে কেস ডিসমিস করি? 

ম্যা-না স্যর। অন্য কিছু বলার আছে। 

জ-বেশ বলুন। 

ম্যা-শুধু টেররিজম নয় স্যর, কোন কোন দিন ঐ মাঝরাতেই চিৎকার করে ওঠে , "মার্জার মার্জার"। "গেল সব গেল"। 

জ-তারপর. . 

ম্যা-আমি ওর গা ঝাঁকিয়ে বলি, "হ্যাঁগো, মার্জার মানে তো বেড়াল, বেড়াল কোথায় এ তো আমি"। ও ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। 

জ-আপনি এমন করেন? 

অ-ইয়েস স্যর। মার্জার মানে এটার সঙ্গে ওটা মিলিয়ে দেওয়া। 

জ-আমি জানি। বিশদে বলুন। 

উত্তরে অমুক বাবু যা বললেন তার সারমর্ম মোটামুটি এই:- 

সরকার থেকে বহুদিন ধরে চেষ্টা করা হচ্ছে, একাধিক ব্যাঙ্ক একসঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ার। দু একটা করাও হ'ল। ব্যাঙ্কের সংখ্যা কমা ছাড়া আর কি কাজের কাজ কিছু হবে? দুটো ব্যাঙ্কের এন. পি. এ(বাজেঋণ) একসঙ্গে মিলবে। তাতে তো নতুন ব্যাঙ্কের স্বাস্থ্য ভালো হবে না। আবার একটা ভালোর সঙ্গে খারাপ মিলিয়ে দেওয়া মানে বদরক্ত ঢুকিয়ে তাকে টেনে নামানো। খুব ঢাকঢোল পিটিয়়ে "গ্লোবাল ট্রাস্ট ব্যাঙ্ক"খোলা হয়েছিল। তার সর্বোচ্চ কর্তাকে"সেরা ব্যাঙ্কার"পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। আর তার কিছু দিন পর ব্যাঙ্ক মুখ থুবড়ে পড়তে তাকে সেই সময়ের সবচেয়ে ভালো ব্যাঙ্ক, "ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অব কমার্স"-এর সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়া হ'ল। ব্যাস, একদা জিরো পার্সেন্ট এন. পি. এ ব্যাঙ্ক তলায় চলে গেল। আর একটা কথা, প্রত্যেকটা ব্যাঙ্কের আলাদা আলাদা কালচার। ফিন্যানসিয়াল রিফর্মকরা তুলনায় সহজ, কালচারাল রিফর্মকরা অনেক কঠিন। এ তো আরফিউশন ফুড তৈরি করা নয় যে হাতা খুন্তি নেড়ে মিলিয়ে দিলাম। 

জ-তাতে কর্মচারিদের অসুবিধা কোথায়? তাঁদের যেখানে কাজ করতে বলা হবে তাঁরা সেখানে কাজ করবেন। 

অ-ব্যাপারটা অত সহজ নয়। ওপর থেকে নিচে অবধি কর্মীদের মধ্যে সংঘাত লেগে যাবে। তাছাড়া সর্বস্তরে লোক কমবে। বলুন স্যর, ছাঁটাইয়ের কথা মাথায় থাকলে কি রাতে ঘুম হয়? 

জ-ম্যাডাম, এ ব্যাপারে আপনার কিছু বলার আছে ? 

ম্যা-মাথায় ঢুকছে না, ও কি সব বলছে। তাহ'লে কি আপনি বলছেন স্যর ও. . . . 

জ-সে উত্তর দেবার আগে একটা কথা বলি। এখন মনে হচ্ছে, ব্যাঙ্ক জাতীয়করণের নিট লাভ রাজনৈতিক ফয়দা পাওয়া। ন্যাশালাইজেশন অফ ব্যাঙ্কস নয়, প্রাইভেটাইজেশন অফ পলিটিক্যাল গেইন। যারা যখন ক্ষমতায় আসে, তারা তখন ব্যাঙ্ককে তাদের অস্ত্র করে নেয়। হ্যাঁ ম্যাডাম, আপনার স্বামী অমুকচন্দ্র অবশ্যই ব্যাঙ্ক অফিসার। এসব ছাড়াও সবচেয়ে বড় প্রমাণ কি জানেন, ইনি সব কথাতেই "ইয়েস স্যর"বলেন। ব্যাঙ্ক অফিসাররা "নো" বলতে জানেন না। ওপরওয়ালারা যা বলছে, তাই ঠিক। তাতে সে নিজে কিংবা যে বা যারা চুলোয় যাচ্ছে যাক।

3 comments:

  1. মারহাব্বা! মারহাব্বা! আমি নিজে ওই অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। চমৎকার পরিবেশন।
    ব্যাংকের গল্প আরও হোক।

    ReplyDelete
  2. খুব সুন্দর উপস্থাপনা!

    ReplyDelete
  3. লেখক নিজের অভিজ্ঞতা সুন্দর উপস্থাপনা করেছেন! ভালো লেখা!

    ReplyDelete