1

রম্যরচনা - পল্লববরন পাল

Posted in


রম্যরচনা


ডিম
পল্লববরন পাল


আমাকে বউ ডিম কিনতে দেয়না কিছুতেই। আমি ডিম কিনলে নাকি তারা বেশিক্ষণ আস্ত থাকেনা। বাড়ি ঢোকবার আগেই তারা ফেটে যায়। 

এই তথ্যটা আমাদের পাড়ার চেনাশোনা চৌহদ্দির সবাই জানে। বন্ধু শত্রু নির্বিশেষে। আত্মীয়স্বজন জ্ঞাতিগুষ্টি তাঁরাও সবাই। আমার বউয়েরা চার বোন - তাদের শ্বশুরবাড়ি, আমার নিজের দিদির আর ছোটভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি – আমার মাসতুতো খুড়তুতো পিসতুতো ভাইবোন, তাদের নিজের নিজের শ্বশুরবাড়ির লোকজন - তারাও জানে। আমার বউসহ এদের প্রত্যেকের মুখবই বন্ধুবান্ধবীরা পর্যন্ত জানে। তাদের কেউ কেউ আবার আমারও বন্ধুতালিকায় আছেন। তারা সবাই সামনে পেছনে হাসিচাঁদমুখ সাজিয়ে এই তথ্যটা আমার দেওয়ালে লিখে আমাকেও জানিয়েছেন। চাঁদমুখগুলো ভারি সুন্দর দেখতে - ডিমের কুসুমের মতো। 

আমার বউ কোনোদিন মিথ্যে বলেনা। যদিও আমার স্মৃতিতে একবার, মাত্র একবারই – বউয়ের নির্দেশমতো আমি ডিম কিনে চারশ’ ফুট অনুভূমিক আর চারতলা উল্লম্ব অতি সতর্ক হয়ে হেঁটেও চারটে আস্ত ডিম আমার বউয়ের হাতে তুলে দিতে পারিনি। অথচ আমি খুব দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, লোকনাথ ভাণ্ডার থেকে বাড়ির দরজা অবধি ওই চার শ’ ফুট এবং পরবর্তী চারতলা সিঁড়ি – এই পুরো পথটা আমি অত্যন্ত সতর্ক হাতে ব্যাগটা ধরে ছিলাম – একবারের জন্যও দোলাইনি, কোথাও ধাক্কা লাগাইনি। কারন, আমার বউ সেরকমই আদেশ দিয়েছিলো - আমার সতর্কতায় এক শতাংশ-ও খাদ ছিলোনা। আমি জানি। কিন্তু আমার বউ জানে যে আমি সতর্ক ছিলাম না। সুতরাং আমার সতর্কতায় অবশ্যই খাদ ছিলো। হয়তো বা আমার অজান্তেই। এবং তাই বউ বলে – ওই, আমি ডিম কিনলেই নাকি --- যেন এই সূর্য-চন্দ্র-দিবা-রাত্রির মতো বউবাণীও শাশ্বত সত্য, যেন সাকুল্যে অন্তত দু’শো ছাপ্পান্নবার ঘটে গেছে এমন, অর্থাৎ দোকান থেকে বাড়ি ফেরার মধ্যবর্তী সময়ে আমার হাতে ডিম ফেটে গেছে। আমার জানা নেই। কিন্তু আমার বউ তো আর মিথ্যে বলতে পারেনা। তাই আমি আর কোনোদিন ইচ্ছে হলেও ডিম কিনতে পারিনা। আমি ইচ্ছে না হলেও মাছ কিনি, মাংস কিনি, বাঁধাকপি আলু পালংশাক গরম মশলা দারচিনি, মাসকাবারে চাল ডাল চিনি চা-পাতা স্যারিডন এন্টাসিড সাবান শ্যাম্পু - সব কিনি। 

শুধু ডিম কেনে পাঁচুর মা। 

এই একটা ব্যাপারে আমি পাঁচুর মাকে খুব হিংসে করি। যদিও পাঁচুর মা ওই ডিম দিয়ে ফার্স্টক্লাস ওমলেট বানায়, ফ্রেঞ্চ টোস্ট বানায়। সেগুলো ব্রেকফাস্ট হিসেবে আমার ভীষণ প্রিয়। আমি ডিম খেতে খুব ভালোবাসি। আমার বউয়েরও ডিম হট ফেভারিট। আমাদের বিয়ের পরে ওকে নিয়ে একবার একটা ঝিংচ্যাক রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলাম। এয়ারকন্ডিশণ্ড আলোআঁধারি চুপচুপ রেস্টুরেন্ট। বিদেশী গানের ফিসফিস আবহ। আগে কোনদিন স্পর্ধাও হয়নি এমন রেস্টুরেন্টে ঢোকার। সেদিন সদ্য বিয়ে করা বউকে নিয়ে ঢুকে বেশ রাজাবাদশার মতো মেজাজে বললাম – বলো, কী খেতে ইচ্ছে করছে? বউ মেনুকার্ড তন্নতন্ন পড়ে একগাল হেসে বললো – ডিমের কারি আর পরোটা। 

অন্তত এই ডিমের বিষয়ে বিচার করলে আমরা দু’জন আদর্শ দম্পতি। 

ডিমের প্রতি এ হেন অপত্য প্রেম আমার আশৈশব। সপ্তাহে শুধু রবিবার সকালের ব্রেকফাস্টে একটা করে গোটা ডিমসেদ্ধ বরাদ্দ ছিলো আমাদের তিন ভাইবোনের জন্য। ওঃ, সে কতক্ষণ ধরে তারিয়ে তারিয়ে নুন গোলমরিচ লাগিয়ে আমি ডিম খেতাম। দিদি বা ছোটভাইয়ের এতো ডিমপ্রেম ছিলোনা। ওরা চটপট খেয়ে নিতো। তাই পড়তে বসতে দেরি হওয়ার জন্য শুধু আমিই মায়ের বকুনি খেতাম। নিয়মিত। ডিমে ডিমাকার অবস্থায় ওই বকুনিটাও আমার কাছে তখন গোলমরিচের ঝাঁঝের মতো, মন্দ লাগতো না। 

আমাদের বাবা ছিলেন পুরোনো দিনের কমিউনিষ্ট পার্টির সদস্য। প্রতি রোববার আমাদের বাইরের ঘরে বাবাদের পার্টি মিটিং হতো। আমরা তিন ভাইবোন ভেতরের দালানে বইখাতা খুলে বসতাম। আমার কান থাকতো খাড়া বাইরের ঘরের দিকে। হাওয়ায় ভেসে আসতো ‘মার্ক্সবাদ’ ‘পুঁজিবাদ’ ‘প্রলেতরিয়েত’ ‘সমাজতন্ত্র’ ‘সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্ত’-র মতো কঠিন কঠিন শব্দ। মানে বুঝতামনা। কিন্তু শব্দগুলোর মধ্যে একটা ভীষণ জোর আছে সেটা টের পেতাম। 
বুঝলাম কলেজে এসে। তবে সক্রিয় রাজনীতিতে আমার উৎসাহ তেমন ছিলোনা। আমার পছন্দের দিক নাটক, গান। সে সব নিয়েই মেতে থাকতাম। ইউনিয়ন লাল। তার ওপর আমি আবার কমিউনিষ্ট-সন্তান। সুতরাং একটু বেশিই ঘনিষ্ঠতা সুত্রে শব্দগুলোর অর্থ বুঝলাম। বুঝলাম, সোভিয়েত দুর্গ পতনের পরে সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্ত সারা পৃথিবী জুড়ে আরও বেশি শক্তিশালী। আরও হিংস্র। আরও সক্রিয় ও সর্বত্রগামী। কলেজ ক্যান্টিনে তখন 'পুঁজিবাদ' 'প্রলেতরিয়েত' 'সমাজতন্ত্র' 'সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্ত' মেখে পাঁউরুটি ডিমের ঝোল আমার রোজকার রুটিন। কী স্বাদ তার। আনন্দ। 

এখন এ বাড়িতে আমরা নিঃসন্তান দুটি প্রাণী। আমি আর বউ। না না স্যরি, বউ আর আমি। ছোটভাই ইঞ্জিনীয়ার। বিদেশে থাকে। সন্তান নেই বলে আমাদের দু'জনেরই মনে চাপা দুঃখ। আমাদের যেদিন দু:খ উপচে ওঠে, আমরা সেদিন ডিম খাই। যেদিন ওই দুঃখটা মনে থাকেনা, সেদিনও অবশ্য আমরা ডিম খাই। আমার বউয়ের আর কোনও দ্বিতীয় দুঃখ নেই। আমার দ্বিতীয় দুঃখ - আমাকে আমার বউ ডিম কিনতে দেয়না। আমি ডিম কিনলেই নাকি বাড়ি ঢোকবার আগেই তারা ফেটে যায়।

ওই একটাই গোপন কাঁটা আমার শুধু ডিম খাবার নয়, জীবনের বাকি সব আনন্দ মাটি করে দিয়েছে। 

আমার স্থির বিশ্বাস – এর পেছনে একটা গভীর চক্রান্ত আছে। কিন্তু চক্রান্ত থাকলে তার এক বা একাধিক কারণ থাকবে। এর পেছনে কে বা কারা, তাদের মতলবটাই বা কী – এই সব কঠিন কঠিন ব্যাপার নিয়ে চিন্তা শুরু করতে গেলেই আমার কেমন যেন বুক কেঁপে ওঠে, শিরদাঁড়া শক্ত হয়ে ওঠে, আমি ঘামতে শুরু করি। আর ঘাম হলেই আমি শারীরিকভাবে খুব চাঙ্গা হয়ে উঠি। তখনই ফেলুদার মতো সিগারেট ধরিয়ে ভাবতে থাকি – বিশ্লেষণ করতে থাকি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের - কার কার কী কী স্বার্থ থাকতে পারে। 

চক্রান্তকারী এক নম্বর – বউ। ধ্যুত্তেরিকা – এই লিস্টে বউ এলো কোত্থেকে? ছিঃ, বউ চক্রান্তকারী?? আমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেলো নাকি? বউকে নিয়ে এরকম অসম্ভব অসম্ভব চিন্তা করাও পাপ। বউ তো সবসময়েই সত্যি। ধ্রুব সত্য। সুপ্রিম কোর্ট। রাষ্ট্রসঙ্ঘ। যা ধ্রুব, তার আবার ডিসেকশন হয় নাকি? বউয়ের আবার কিসের স্বার্থ? বউ সব সন্দেহের উর্ধে। সুতরাং – বউ কাটা। 

দু’নম্বর – পাঁচুর মা। ওর সঙ্গে বাড়ির কাজের যা যা শর্ত, তার মধ্যে অবশ্যই নিয়মিত ডিম কেনা নেই। শুধুমাত্র ডিম কেনার জন্য ও মাসের মাইনেতে কোনও অতিরিক্ত বোনাস পায়না। মানে অতিরিক্ত দেওয়া তো হয়ই না, দেওয়ার কথা ভাবাও হয়না। শ্রেণীগত শোষণের চরিত্র বজায় থাকে। ডিম কেনার টাকা থেকে খুচরো ইচ্ছে হলেও লুকিয়ে আঁচলস্থ করার কোনও সুযোগ নেই। যদিও পাঁচুর মা মানুষটা খুবই নিরীহ ও সজ্জন। বাজার ফেরত আমার থেকেই রোজ পাই-টু-পাই হিসেব বুঝে নেয় বউ। পরিমলের দোকানে একদিন খুচরো বাটিতে ওর আধুলি ছিলোনা। আমি বলেছিলাম – ছাড়ো তো পরিমল, আট আনার জন্য অতো চাপ নিয়োনা, বাকি খদ্দেরদের দেখ, সবাই অফিস-তাড়ায় আছে - বরং মনে থাকলে পরে অ্যাডজাস্ট কোরো। রাত্রে আমি অফিস থেকে ফিরতে না ফিরতে চায়ের কাপ টেবিলে ঠকাস্ – সামনে কোমরে আঁচল জড়িয়ে বউ দাঁড়িয়ে - সকালে আট আনা কম ফেরৎ দিয়েছো। এরকম ঘটনা প্রথম প্রথম পাঁচুর মায়ের সাথেও হয়েছে। তবে নিতান্তই দু’একবার। তাড়াহুড়োয় সঙ্গে সঙ্গে ফেরৎ টাকাটা দিতে ভুলে গেছে হয়তো, কিম্বা হয়তো আমার অফিসের তাড়া বুঝে শিলনোড়ায় মশলাটা বেটে দিয়ে নইলে ঘরদোর ঝাঁট দিয়ে তারপর হিসেব করে ফেরৎ দেবে বলে ঠিক করেছিলো পাঁচুর মা। কিন্তু মিনিট দু’তিন অপেক্ষার পরেই আমার বউয়ের গলা ধৈবতে – কী হলো পাঁচুর মা? ফেরৎ আসেনি কিছু? ব্যাস, ঝাঁটা ফেলে কিম্বা গ্যাসউনুনের সুইচ ঘুরিয়ে দৌড়ে এলো পাঁচুর মা – দাদা বেরুবেন, তাই ভাবছিলুম ঝাঁটটা দিয়ে নি আগে, অথবা তরকারিটা নেগে যাচ্ছিলো তাই – কিন্তু ভবি ভোলেনি। ওই প্রথম দু’একবারের পরে পাঁচুর মা-ও আর ওই ভুল করেনি কোনদিন। কাজেই পাঁচুর মায়ের কেসটাও যুতসই দাঁড়াচ্ছে না। পাঁচুর মাও কাটা। 

বউ গেলো, পাঁচুর মাও গেলো। তিন নম্বর কে? এই চক্রান্ত রহস্যের মধ্যে আমাকে ছাড়া আর তো কোনও মনুষ্যচরিত্র নেই। মনুষ্যচরিত্রের বাইরে আছে ডিম। তাকে বিশ্লেষণ করে ফেসবুকের হাসিচাঁদমুখের মতো স্বর্ণালি কুসুম ছাড়া আর কিছু বেরবেনা। তার মানে, চক্রান্তটা গভীর এবং সুদূরপ্রসারী। সরাসরি মঞ্চে অবশ্যই আর কোনও চরিত্র নেই। কিন্তু উইংসের পাশে, ব্যাক স্টেজে? অডিটোরিয়ামের বাইরে? রাস্তার ওফুটে? গঙ্গার ধারে? অন্য শহরে? অন্য দেশে?

যেমন - লোকনাথ ভাণ্ডার। মানে যার মালিক শেখর। মানে যে দোকান থেকে আমাদের বাড়িতে ডিম আসে, মানে যে দোকান থেকে কিনে বাড়ি আসতে আসতে আমার হাতে চারটে ডিম ফেটে গিয়েছিলো কবে সেই দ্বাপর যুগে একবার – আচ্ছা, ডিমগুলো আমার হাতে ফেটেছিলো নাকি ফাটা ডিমই আমাকে দেওয়া হয়েছিল? সেই শেখর কি সন্দেহের আওতায় নেই? তার তো ডিম বিক্রি হওয়া নিয়ে কথা। সে আমিই কিনি বা পাঁচুর মা কিনুক। তাতে শেখরের কিছু আসা-যাওয়ার কথা নয়। সেই শেখর হঠাৎ আমাকে বেছে বেছে ফাটা ডিম দেবেই বা কেন? কী মতলবে? আমি কি ওর শত্রু? শেখরের বয়স চল্লিশের কোঠায়। আমার চেয়ে বছর কয়েক ছোটোই হবে। পাঁচুর মাকেও বলতে নেই দেখতে একেবারে অবিকল আর দশজন পাঁচুর মায়ের মতোন - হাড়গিলে ছিবড়ে চেহারা। শেখরের সেরকম উরুসন্ধির দোষ আছে কিনা জানিনা, থাকলেও এ ক্ষেত্রে তেমন ভাববার অবকাশ নেই। শেখর বিজেপি করে, তাই হয়তো দোকানের নাম রাখে লোকনাথ। আমি কংগ্রেস সিপিএম বা তৃণমূল সমর্থক - এমন কোনও তথ্যও ওর কাছে থাকার কথা নয়, কারণ, আমি কাকে ভোট দিই, সেটা আমার বউই জানেনা, শেখর তো কোন ছার। কাজেই আমাকে শুধুশুধু জব্দ করার কোনও কারণ নেই। এই ষড়যন্ত্রে কোনও রগরগে অথবা লোকাল রাজনৈতিক গন্ধও পাওয়া যাচ্ছেনা। 

তাহলে এই সম্ভাব্য চক্রান্তকারীদের তালিকা থেকে শেখর বাদ। ডিম বাদ। বউ বাদ। পাঁচুর মাও বাদ। মাও যখন বাদ, তখন মার্ক্সও বাদ। লেনিনও বাদ। পুঁজি অর্থাৎ ডিম তো আগেই বাদ হয়ে গেছে। তাহলে আর হাতে রইল সাম্রাজ্যবাদ। অর্থাৎ চক্রান্তটা আরও অনেক বড়ো এবং গভীর! এরকম কথা আগেও শুনেছি – সাম্রাজ্যবাদী শক্তি চায়, পৃথিবী থেকে কমিউনিজমকে একেবারে মুছে ফেলতে। ব্যাপারটা বিশদে বুঝতে পারবেন হয়তো পোড় খাওয়া রাজনীতিবিশারদরা। আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে যা মনে হচ্ছে – পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন কৌশলে যে কমিউনিষ্ট নিধন চলছে, সোভিয়েত পতন দিয়ে যার শুরু, আমার ব্যাপারটা তারই হয়ত একটা ব্যর্থ প্রচেষ্টামাত্র। আরে বাবা, আমি কমিউনিস্ট পার্টি করিনা ঠিকই, কিন্তু আমার বাবা তো কমিউনিস্ট ছিলেন। ওনার সেই কমিউনিস্ট রক্ত তো আমার শরীরেও বইছে। সেই বাঘ ও মেষশাবকের গল্প – তুই না হলে তোর বাবা ঝর্ণার জল এঁটো করেছিল - তাই হয়তো আমিও ওদের অন্যতম টার্গেট। 

হ্যাঁ, এই তো! এইবার পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি - কিভাবে সাম্রাজ্যবাদীর অদৃশ্য কালো হাত আমার হাতে ধরা ব্যাগের মধ্যে ঢুকে ঠোঙার দিকে সকলের নজর এড়িয়ে এগিয়ে আসছে। আমিও টের পাচ্ছিনা। ডিমগুলোকে গোপনে স্পর্শ করছে। এক একটা ডিম ফাটবার কথা ভয়ঙ্কর পারমাণবিক বোমার মতো। একের পর এক। নি:শব্দে। 

কিন্তু ফাটেনি। ফসকে গেছে। সেবার। ওরা ব্যর্থ হয়েছে। আমি বুঝিনি। আমার বউ নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছে। এবং এটাও নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছে যে, পৃথিবী থেকে কমিউনিষ্টদের বিনাশের জন্য ওরা আবার চেষ্টা করবে। আঃ, এতোদিনে বুঝলাম, আমার বউ কেন আমাকে আর কোনোদিন ডিম কিনতে পাঠায়নি।

বউ, তোমার জন্য গর্বে আমার বুক আরো ফুলে উঠলো। আর মিঃ আমেরিকান প্রেসিডেন্ট, আমার বিরুদ্ধে এই ঘৃণ্য চক্রান্তের জন্য আমি আপনাকে অভিযুক্ত করলাম।

1 comment:

  1. দেবজ্যোতি বর্মন21 April 2018 at 00:47

    বেশ একটা রমানাথ রায় রমানাথ রায় গন্ধ আছে রচনাটার বিস্তারে।

    ReplyDelete