কবিতা - সবর্না চ্যাটার্জ্জী
Posted in কবিতাকবিতা
দাবী
সবর্না চ্যাটার্জ্জী
কি করছ তুমি? কি করছি আমি?
এই যে এত এত মানুষ কাঁদছে আগুনে পুড়তে পুড়তে
ভেসে যাচ্ছে পানাফুলে জড়ানো ক্ষত বিক্ষত শবদেহ, গরু ছাগলের সাথে
কখনও এক ফোঁটা কষ্টের জলও ফেলিনি, গঙ্গার বুকে।
স্বার্থপরের মতো হাত গুটিয়ে তোমায় প্রেমপত্র লিখেছি রাতের পর রাত,
তবুও সাহসী একখানা চিঠিতে চিৎকার করে বলিনি আমি কাপুরুষ।
আমার সাধের দেশ, তার জঙ্গল ফল ফুল, পাহাড়-বরফ, সাগর-তলদেশ,
এমনকি আকাশ বাতাস নিঃশ্বাস গোগ্রাসে গিলছে বুলেট।
পেলেট গানে ফুটোফুটো শরীর থেকে ফিনকি দিয়ে বেড়িয়ে এসেছে রক্ত ক্রমাগত বাঁধভাঙা জলের মতো!
থিকথিকে পিঁপড়ের মতো চষে বেড়াচ্ছে সমস্ত শহর, দুষ্কৃতজীপের ভারী চাকা।
তবুও শুধু নিজেদের কথা বলে সেলফি তুলে শান্ত হচ্ছি রোজ দুবেলা ঘন্টায় ঘন্টায়।
পাপড়ি ছাড়া ফুল, পালকহীন পাখি, নারীর মাংস আর নেকড়ের মুখ, দেখতে দেখতে আজ অভ্যস্ত বহুযুগ।
যেদিন সমুদ্র স্নানে উন্মত্ত তোমার শরীরে ঢেউএর সাথে জড়িয়ে এসেছিল ভাঙা মিশেইলের ধ্বংসাবশেষ, তুমি আঁতকে উঠেছিলে,
সেই প্রথম।
মৃত শুকনো রক্ত শিরা উপশিরার জীবাশ্ম মাখা কিছু অচেনা শরীর ভাসত তোমার আতঙ্ক ঘুমে।
পালাতে চেয়েছিলে শিউলি ভোরের এক ফালি শান্ত আকাশে, স্বস্তির সন্ধানী নিঃশ্বাসে।
নিজেকে গুটিয়ে শামুকের বৃত্তি শিখেছ অসাধারণ নিপুণতায়,
আমি আজও রক্তে খুঁজি পূর্বপুরুষের মাটি।
সেই ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, মায়া, সবুজের পাড়,
প্রেমের কবিতার খোঁজে মরিয়া হয়ে ঘুরি সাম্রাজ্যবাদী ধ্বংসস্তূপের আস্তাকুঁড়ে!
যুদ্ধ বিমানের বেশে ছুটে আসে বোমাগুলি, আগুনে দাউ দাউ করে জ্বলছে আমার ভালোবাসার গীতবিতান।
সার্জিক্যাল অ্যাটার্কের ছকে যদি তুমি ধরা দাও কোনোদিন দুঃস্বপ্নের সন্ত্রাসবাদী হয়ে,
হাতে মারণাস্ত্র নিয়েছ ত্রিশূলের ছলে,
মানববোমার আলিঙ্গনে আত্মসমর্পিত
দেশদ্রোহীপ্রেমে বিভোর তোমার চোখ....
যেখানে আমি নেই একফোঁটাও,
সাদা পায়রার ঠোঁটে তোমায় নিয়ে লেখা প্রেমের আশ্বাস নেই,
আমি আত্মহত্যা করব সেদিন--
শেষ সাদা চিঠিটুকু গায়ে সেঁটে, গলার ফাঁসে রেখে যাব শান্তির দাবী অগ্নিরণক্ষেত্রে।।
0 comments: