0

ধারাবাহিক - নন্দিনী সেনগুপ্ত

Posted in













১৪ 

পরবর্তী সময়ে দিনের চব্বিশ ঘণ্টার বেশির ভাগটাই ফ্রান্সেস্কো চার্চে পৌরোহিত্যের কাজ, একাগ্রচিত্তে ঈশ্বরের প্রার্থনা, ধর্মগ্রন্থ পাঠ, কঠোরভাবে সংযম পালন করা- ইত্যাদি ব্যাপারে নিজেকে ব্যস্ত রাখছিলো। অতীতে সে কখনো ভাবেই নি যে তাকে এমন অসহায়ভাবে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে হবে, যাতে স্থূল, পঙ্কিল, মাংসল এক অদ্ভুত যুদ্ধের মধ্য থেকে সে জয়লাভ করে বেরিয়ে আসতে পারে। ভালো এবং মন্দ- এই দুয়ের প্রবল কী দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল তাঁর বুকের মধ্যে! প্রবল ভীতি ঘিরে রেখেছিলো তাঁকে; তাঁর মনে হয়েছিল ঈশ্বর এবং শয়তান যেন লড়াইয়ের ময়দান হিসেবে তাঁরি বুকের ভেতরটা বেছে নিয়েছেন। 

তাঁর অস্তিত্বের সবচেয়ে দায়হীন অংশ, এমনকি তাঁর ঘুম- সেখানেও শান্তি পাচ্ছিলো না তরুণ যাজক। একদম ঠিক মাঝরাতের অরক্ষিত সময়টাকে শয়তান তাঁর আক্রমণের জন্য বেছে নিয়েছিল। ঘুমের মধ্যে শয়তান হামলা চালাতো নিষ্পাপ, নির্দোষ ফ্রান্সেস্কোর উপরে; অদ্ভুত প্রলোভনকারী এবং হানিকারক ঠাট্টা, স্বপ্ন এসবই ছিল শয়তানের অস্ত্র। একদিন ভোররাতে, সে জেগে ছিল না ঘুমিয়ে ছিল, ঠিক বুঝতে পারছিলো না; সে দেখলো এক অপার্থিব চাঁদের আলোয় ভেসে যাচ্ছে তাঁর ঘর, তাঁর বিছানা। সেই দুধসাদা আলোয় দাঁড়িয়ে আছে সেই সামন্তপ্রভুর তিন কন্যার শ্বেতশুভ্র মর্মরমূর্তি। সে তাঁর বিছানায় বসে খুঁটিয়ে দেখছে সেই মূর্তিগুলি এবং অবশেষে মূর্তিগুলি সেই মন্‌টে ক্রোশের আল্পসে দেখা কিশোরী মেষপালিকার অবয়বে ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে। 

ফ্রান্সেস্কোর ঘরের জানালা দিয়ে দূরে আল্পস পর্বতের ঢালে খেলনার মত দেখাচ্ছে স্কারাবোটাদের জনপদ। নিঃসন্দেহে এক অদ্ভুত যোগসূত্র তৈরি হল এই দুই স্থানের মধ্যে, তবে এই সূত্রের বাঁধনটা অবশ্যই দেবদূতেরা বুনে দেয়নি। ফ্রান্সেস্কো স্বর্গের ক্রমবিভাগের শ্রেণি সম্পর্কে অবগত, এবং নরকের শ্রেণিভেদ সম্পর্কেও কিছু কম জ্ঞান নেই তাঁর; অতএব, সে বুঝতে পারছিল এই কাজ কার! ফ্রান্সেস্কো ডাকিনীবিদ্যার বিষয়ে জানতো, এই বিষয়েও বিশেষ পাণ্ডিত্যপূর্ণ জ্ঞান থাকার দরুন সে বুঝতে পারছিলো যে গ্রহতারার অবস্থান ও বিশেষ সময়ের মুহূর্তগুণকে কাজে লাগিয়ে শয়তানের প্রভাব দ্বারা কেউ তাঁর ক্ষতি করবার চেষ্টা করে চলেছে। সে জানতো যে জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, মানুষের উপরে গ্রহতারার বিশেষ প্রভাব আছে। মানুষের মনে দেবদূতের প্রভাব প্রকট হলে, ঈশ্বরের আশীর্বাদ পাবে সে; কিন্তু ঈশ্বর পথভ্রষ্ট দেবদূতদের অনেক সময় প্রশ্রয় দেন, এবং সেই বিশেষ সময়ে তারা ঈশ্বরের পথ থেকে মানুষকে সরিয়ে দিয়ে শয়তানের রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এছাড়াও একটা সাময়িক, শারীরিক প্রভাব, যা নরকের প্রেতাত্মা বিস্তার করে, অবশেষে মানুষের ধ্বংসের কারণ হতে পারে। সব মিলিয়ে, তরুণ যাজকের অন্তরাত্মা ভয়ে কেঁপে উঠেছিল- ডায়াবোলির বিষাক্ত কামড়ের ভয়ে, জান্তব রাক্ষস বেথেমোথের ভয়ে, এবং বিশেষভাবে অসমোডিয়াস, ব্যভিচারের দানবের ভয়ে। 

প্রথমে সে মনস্থির করতে পারছিলো না, ভাবতে পারছিলো না সত্যিই এরকম হতে পারে। সে ভাবতে পারেনি যে সেই অভিশপ্ত ভাই বোন তাঁর উপরে কালা যাদু প্রয়োগ করবার মত পাপ করতে পারে! কিন্তু দিনে দিনে নানা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে তাঁর সন্দেহ পাকাপোক্ত হতে লাগলো। প্রতিদিন, সমস্ত ধর্মাচরণ কঠোরভাবে পালন করেও তাঁর অন্তর থেকে সেই মেষপালিকার ছবি মুছে ফেলতে পারছিলো না সে। বরং সেই ছবি আরও পরিষ্কারভাবে শিকড় গেড়ে বসছিল তাঁর মনে। সেই ছবি কোথায় আঁকা? কেমন ক্যানভাস? নাকি কোনো কাঠের টুকরো... যা জলে ভেসে যায়না, কিম্বা আগুনে পুড়ে যায়না! 

ছবিটা নিঃশব্দে সর্বত্র ছড়িয়ে যাচ্ছে, সে অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করছিলো। একদিন সে বই পড়ছিল, হঠাৎ তাঁর মনে হল সেই বইয়ের পাতায় রয়েছে অদ্ভুত মেটে বাদামী রঙের চুলে ঘেরা সেই নরম মুখমণ্ডল। দীঘল আয়ত চোখে গভীর দৃষ্টিতে চেয়ে আছে সেই কন্যা, যেন এখনই কথা বলে উঠবে। সেই পাতাটা উল্টে অন্য পাতায় গেলো, মনে হল সেখানেও দেখা যাচ্ছে সে ছবি। ছড়িয়ে যাচ্ছে প্রতি পাতায়। পরে হয়তো আবার বইয়ের পাতায় নয়, অন্য কোথাও, পর্দার উপরে, দরজার পাল্লায়, ঘরের দেয়ালে, এমনকি গির্জার দেয়ালেও ভেসে উঠতে লাগলো সে মুখের ছবি। 

তরুণ যাজক অধৈর্য হয়ে উঠতে লাগলো এরকম দ্বিধাদ্বন্দ্ব এবং উদ্বেগের মাঝে, কারণ স্যান্ট আগাথার শিখরে তাঁর বিশেষ সেবামূলক কাজের তারিখ আরও দেরিতে। সে ঐ কাজটি তাড়াতাড়ি করতে চাইছিল যাতে নরকের রাজপুত্রের কবল থেকে ঐ মেষপালিকাকে বাঁচানো সম্ভব হয়। তাঁর আরও একটা সুপ্ত ইচ্ছে ছিল, তা হল সেই কন্যাকে আরেকটিবার দেখতে পাওয়া। কিন্তু যা সে ভীষণভাবে চাইছিল, তা হল মুক্তি; সমস্ত কুৎসিত, অত্যাচারী মুহূর্ত, বীভৎস, উৎকট, উদ্ভট খেয়ালখুশি থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিল সে। ফ্রান্সেস্কো খাওয়াদাওয়া কমিয়ে দিয়েছিল, রাতের অধিকাংশ সময়ে জেগে থাকছিল। আরও ফ্যাকাসে হয়ে উঠেছিল সে। কঠোর সংযমের মধ্য দিয়ে সে আগের চেয়েও আরও মহৎ, আরও বেশি এবং প্রায় দৃষ্টান্তস্বরূপ এক ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি হয়ে উঠলো। 

অবশেষে সেই সকাল উপস্থিত হল। হতদরিদ্র সেই পাপীদের স্যান্ট আগাথার শিখরে সুগারলোফ পর্বতের চ্যাপেলে জমায়েত হওয়ার দিন। ফ্রান্সেস্কো তাদের মধ্যে ঈশ্বরের বার্তা পৌঁছে দেবার জন্য যাত্রা শুরু করবে। দুঘণ্টার কমে সেই স্থানে আরোহণ করা সম্ভব নয়; অসম্ভব কায়িক শ্রম প্রয়োজন সেই দুর্গম পথে যাত্রা করবার জন্য। সকাল নটা নাগাদ পৌরোহিত্যের কর্তব্যের জন্য প্রস্তুত হয়ে ফ্রান্সেস্কো রওনা দিলো। সোয়ানা গ্রামের কেন্দ্রস্থলের সেই চতুষ্কোণ মাঠের মধ্য দিয়ে প্রফুল্লচিত্তে, জগতকে দেখবার এক নতুন চোখ নিয়ে যাত্রা শুরু করলো তরুণ যাজক। মে মাসের আরম্ভ, বড় সুন্দর দিন! কিন্তু প্রকৃতির মায়া ছাড়াও সে একইরকম সৌন্দর্য অনুভব করেছে। সে যেন ঐশ্বরিক স্পর্শ অনুভব করছে। সে স্বর্গের ইডেন উদ্যানের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তাঁর এই ধরণের অনুভব হতে লাগলো। 

সেই এলাকার স্ত্রীলোক এবং কিশোরীরা যথারীতি সারকোফাগাসের* পাশে উপচে পড়া ঝর্ণা এবং ফোয়ারার জলের আশেপাশেই ছিল। তারা উচ্চস্বরে ফ্রান্সেস্কোকে সকালের শুভেচ্ছা জানাতে লাগলো। তাঁর ভঙ্গি এবং অভিব্যক্তির মধ্যে এমন কিছু ছিলো, যার ফলে, যারা জল নিতে এবং কাপড়চোপড় কাচতে এসেছিলো, তারা যথেষ্ট সাহসী হয়ে উঠে তাঁর সঙ্গে কথা বলা শুরু করেছিল। হাওয়ায় তাদের স্কার্ট দুপায়ের ফাঁকে আটকে গিয়ে পায়ের গোছ এবং হাঁটু অবধি দৃশ্যমান হচ্ছিল, যখনই তারা নিচু হয়ে কাচাকুচি করছিল। তাদের উন্মুক্ত পরিপুষ্ট বাদামী হাতগুলি অবিরত শ্রমে নিযুক্ত ছিল। ফ্রান্সেস্কো একটা দলের সামনে দাঁড়িয়েছিলো। সে তাদের সঙ্গে কোনো ঐশ্বরিক আলোচনা করছিলো না, বরং সময়টা কেমন, আবহাওয়া কেমন, সবার মেজাজ-গতিক, এবছরে কেমন ওয়াইন বানানো সম্ভব- এসব নানা জাগতিক বিষয়ে কথা বলছিল তাদের সঙ্গে। 

যিনি প্রসিদ্ধ ভাস্কর ছিলেন, সেই কাকার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে, সম্ভবত সেখানেই- শিশুকালে প্রথম সারকোফাগাসের সূক্ষ্ম অলঙ্কৃত ছাঁচ দেখেছিলো ফ্রান্সেস্কো। ব্যাকাস যাদের আরাধ্য দেবতা, সেই বিশেষ সম্প্রদায়ের পুরোহিতরা সারকোফাগাস নিয়ে রাস্তা দিয়ে শোভাযাত্রা করে যাচ্ছিল। সারকোফাগাসের গায়ের অলংকরণে দেখা যাচ্ছিল এক অদ্ভুত রোমান দেবতা, স্যাটিয়ার- যার শরীর মানুষের মত, অথচ কান ঘোড়ার মত, তাঁর লাফিয়ে লাফিয়ে চলার চিত্র। সেই অলঙ্করণের চিত্রে নেচে নেচে বাঁশি বাজাতে বাজাতে যাচ্ছিল কেউ, নেকড়েরা ডায়োনিসাসের রথটা টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছিলো, ডায়োনিসাসের মাথায় আঙুরের মুকুট, তিনি ওয়াইনের দেবতা। শিশুবেলায় তাঁর কাছে এই প্রাচীন রীতি অদ্ভুত বলে মনে হয়নি; সেসময় তাঁর এটা দেখে আশ্চর্য লাগেনি যে মৃত্যুর কঠিন নির্মোক ঘিরে উচ্ছ্বাস এবং উচ্চকিত জীবনের জয়গাথা খোদাই করা রয়েছে। এই মুহূর্তে তাঁকে গ্রামের কত নারী এবং কিশোরীর দল উচ্ছ্বাসে ঘিরে ধরে কথা বলে চলেছে, এরা অনেকেই ভারি সুন্দর, অদ্ভুত সুন্দর... যেন সেই সারকোফাগাসের অলংকরণের সুন্দরী মেনাড, অর্থাৎ ডায়োনিসাসের অনুগামিনী মদমত্ত সঙ্গিনীদের মত, যারা তাঁর রথটিকে ঘিরে ঘিরে নাচছিল- এরাও সেরকমভাবে তাঁকে ঘিরে ধরে নানা কথা বলে চলেছে। 

ফ্রান্সেস্কোর এই দ্বিতীয়বারের পর্বতারোহণকে যদি প্রথমবারের সঙ্গে তুলনা করা হয়, এখন যদি তা চোখ কান খোলা কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের পথ চলা হয়ে থাকে, তাহলে প্রথমবারের যাত্রা ছিল মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হওয়া কোনো জন্মান্ধ শিশুর পথে বেরোনো। এক অদ্ভুত, অনিবার্য স্বচ্ছতার সঙ্গে যেন সে সবকিছু দেখতে পাচ্ছিলো। সেই অর্থে সারকোফাগাসের এই অলঙ্করণ অর্থহীন নয়, সে যেন এইমাত্র বুঝতে পারলো। এই সমাধির মাঝে মৃত্যুর জায়গা কোথায়? জীবন্ত ঝর্ণার জলধারা এসে সমাধির চারপাশের গহ্বর জলে পূর্ণ করে দিচ্ছে, জীবনের শাশ্বত সত্যের বাণী প্রাচীন ভাষায় এই সমাধির মর্মরের গায়ে উৎকীর্ণ রয়েছে। এ তো মৃত্যুর নয়, বেঁচে থাকার গল্প, বেঁচে থাকার শিক্ষা। 

আগে সে যা শিখেছে, তাঁর সঙ্গে এই শিক্ষার কোনো মিল নেই। এই শিক্ষা বইয়ের পাতার থেকে, ধর্মগ্রন্থের কালো কালো অক্ষরের মধ্যে থেকে পাওয়া সম্ভব নয়, গাছের পাতায়, মাটির তৃণদলে, ফুলের পাপড়ির মধ্যে, লতায়, শাখায়, শিকড়ে সর্বত্র ছড়িয়ে আছে নানা রকমের শিক্ষা। পৃথিবীর মাটি থেকে উঠে আসে, সূর্যের আলোয় আত্মপ্রকাশ করে প্রকৃতি থেকে পাওয়া এই শিক্ষা। প্রকৃতির সর্বত্র জীবনের জয়গান গাওয়া হচ্ছে। মৃত এবং মূক যা কিছু, তারাও যেন মুখর হয়ে উঠছে, গোপনে গোপনে কত কথা বলে চলেছে। প্রকৃতি এতদিন এই তরুণ যাজককে এরকম কোনো শিক্ষা দেয়নি, এরকম কোনো কথা বলেনি। আজ যেন সে হঠাৎ তাঁকে জীবনের নতুন নতুন পাঠ দিয়ে চলেছে। এখন যেন সে প্রকৃতির পরম প্রিয় এক সন্তান, যাকে ধরিত্রী মা সন্তানের মত আগলে রেখেছে, প্রকৃতির পবিত্র গোপনীয় সত্য সে আপন অন্তরাত্মায় অনুভব করছে, পৃথিবীমায়ের স্নেহস্পর্শ সে অনুভব করতে পারছে। তাঁর ত্রাস, ভীতি, উদ্বেগ, সবকিছুর থেকে যেন সে মুক্তি পেয়েছে। অন্ধকার নরকের ডাক, যা তাঁকে অনবরত ভাবিয়ে তুলেছিল, সেসব কোথায় দূরে চলে গেছে। প্রকৃতির অকৃপণ ভালোবাসা পেয়ে আজ তাঁর অন্তর পরিপূর্ণ হয়েছে। প্রীতিতে উপচে যাচ্ছে তাঁর হৃদয়। যে ভালোবাসা সে পেয়েছে, বিপরীতে একইরকমভাবে প্রীতি, প্রেম ও ভালোবাসা প্রকৃতিকে দেবার জন্যেও সে আজ প্রস্তুত। 

পাহাড়ে আরোহণের যাত্রা খুব সুখকর নয়, ঢালু পথে পায়ের নিচে টুকরো পাথর ছিটকে ওঠে, পিছলে যায় নিচের দিকে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল ফ্রান্সেস্কোর কোনো গ্লানিবোধ হচ্ছিলো না। সুন্দর বসন্তের সকালে, লতাগুল্মের ঝোপজঙ্গলের মধ্য দিয়ে, বিচ গাছ, ব্ল্যাক বেরির বাগানের মধ্য দিয়ে- সে এগিয়ে চলেছিলো। প্রকৃতি যেন তাকে ঘিরেই ঘুরতে ঘুরতে এক আনন্দময় ও শক্তিশালী সিম্ফনির মতো সুর ছড়াচ্ছিলো যা সৃষ্টির গভীর রহস্যের কথা বলে যাচ্ছিলো তাঁর কানে কানে। মৃত্যুর বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়ে থাকা সৃষ্টির রহস্য উদ্ঘাটিত হচ্ছিলো তাঁর কাছে। তরুণ যাজকের মনে হল যে, প্রকৃতির এই সিম্ফনির সুরের পাশে যারা এতদিন ‘জুবিলিটি ডিও ওমনিস টেরা’ কিম্বা ‘বেনিডিক্‌ট কোলি ডমিনো’র সুরের প্রশংসা করেছে, তারা নিজেকেই প্রতারণা করেছে। 

(চলবে) 

*সারকোফাগাস- পাথরের তৈরি সূক্ষ্ম অলঙ্করণ যুক্ত সমাধির বাক্স। কফিন নয়। 

গেরহার্ট হাউপ্টমান রচিত ‘ড্যের কেৎজার ফন সোয়ানা’ অবলম্বনে লেখা

0 comments: