2

সম্পাদকীয়

Posted in




সম্পাদকীয়



দেখতে দেখতে বইমেলা একেবারে দোরগোড়ায়। গত কয়েকটা দিন কেটে গেলো অসম্ভব ব্যস্ততায়। ঋতবাক মুদ্রণ সংখ্যার প্রস্তুতির ব্যস্ততায়। এই ব্যস্ততার সূচনা অবশ্য বেশ কিছুমাস আগেই। সেই সময়, একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে তখন সেরা একশোটি লেখা বাছাইয়ের কাজ চলছিলো। ‘প্রবন্ধ কটি আছে?’, ‘গল্পগুলো সব একজায়গায় করে দাও তো’, ‘কবিদের একটা লিষ্ট পাওয়া যাবে কি?’... নির্বাচকদের হাজারও সাহায্য - ফোন, মেইল, দৌড়োদৌড়ি! 

একেবারে প্রথমে ঠিক হয়, সংকলনটি হবে একশো পৃষ্ঠার। কিন্তু ঋতবাকের সঙ্গে নিয়মিতভাবে সম্পৃক্ত প্রায় দু’শো কবি-সাহিত্যিককুলের এমনকি নির্বাচিত লেখাগুলিকে পুনর্বিবেচনা করেও যে আয়তন দাঁড়ায়, তাতে করে একটি পাঁচশো পৃষ্ঠার সংকলনও কম পড়বে, একথা বোঝা গেলো অচিরেই। পুনঃসিদ্ধান্তে পৃষ্ঠাসংখ্যা দেড়শো করেও বিশেষ সুরাহা হলোনা, বলাই বাহুল্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাধ্যের চোখরাঙ্গানিতে সাধের রাশ টানতেই হলো একটি দু’শো পৃষ্ঠার সংকলন প্রকাশের সিদ্ধান্তে। 

লেখা নির্বাচনের পরেই অবশ্য শুরু হলো আসল কাজ। প্রুফ চেকিং...প্রুফ চেকিং...প্রুফ চেকিং!! এক দফা, দুই দফা, তিন দফা... তাও কিছু ভুল থেকে গেলো কিনা, কে জানে! তার পরেও প্রচ্ছদ তৈরী, বিজ্ঞাপন অলঙ্করণ, পৃষ্ঠা আর বাঁধাই কেমন হবে, বইমেলার কোন স্টলে থাকবে ঋতবাক, কোথা থেকে সংগ্রহ করা যাবে, আরো কত ধরনের ব্যবস্থাপনা! প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, বইমেলায় ঋতবাক পাওয়া যাবে থিম প্যাভেলিয়নের পাশেই ‘এই সহস্রধারা’ স্টলে, স্টল নম্বর ৩৯৮ এবং লিটিল ম্যাগ প্যাভেলিয়নে ‘গ্রাফিত্তি’-র টেবিলে। এই সম্বন্ধীয় যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে আগামী ২রা ফেব্রুয়ারী প্রকাশিতব্য দেশ পত্রিকার বইমেলা সংখ্যায়, যা ৩১শে জানুয়ারী থেকেই পাওয়া যাবে সমস্ত বুক স্টলগুলিতেই। 

যাবতীয় ঝড়ঝাপটা সামলে শেষ পর্যন্ত ঋতবাক প্রস্তুত। আগামী ২৫শে জানুয়ারি, ২০১৬, বিকেল ৩টেয় সংকলনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শোভাবাজার রাজবাড়ির ঠাকুরদালানে। উদ্বোধন করবেন নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ী। উপস্থিত থাকবেন রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য, বিশ্বনাথ রায়, সুজিত আচার্যের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা। এ এক পরম পাওয়া। 

বইমেলায় প্রকাশের জন্য প্রস্তুত আরো একটি বই। ঋতবাকের ব্যবস্থাপনায় নন্দিনী সেনগুপ্তের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অরণ্যমেঘবন্ধুর দল’। এক অসাধারণ কবিতা সংকলন। ২৫শে জানুয়ারি, ২০১৬, বিকেল ৩টেয়, ঋতবাক মুদ্রিত সংস্করণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানেই শোভাবাজার রাজবাড়ির ঠাকুর দালানে এই কাব্যগ্রন্থটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বিশিষ্ট কবি অনীক রুদ্র। ভূতাত্ত্বিকের প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রত্যাশিত ভাবেই আদ্যন্ত প্রকৃতির সুবাসে সুরভিত। তিনপর্বে বিভক্ত গ্রন্থের প্রথম পর্বে অরণ্য, দ্বিতীয় পর্বে মেঘ-জল-নদী মনকে আবিল করে তুললেও তৃতীয় তথা শেষ পর্বে কবি ছুঁয়ে গেছেন সেই প্রকৃতিরই সন্তান, ভৌগোলিক সীমারেখা অতিক্রমী সর্বকালীন ছিন্নমূল মানুষের মর্মস্পর্শী অন্তরবেদনা... সামগ্রিকভাবে যা একজন মননশীল কাব্যপাঠকের সচেতন কাব্যতৃষ্ণাকে চূড়ান্তভাবে তৃপ্ত করবে, নিঃসন্দেহে। এককথায়, নন্দিনী সেনগুপ্তর 'অরণ্যমেঘবন্ধুর দল' একাধারে প্রকৃতিপ্রেমী ও সমাজসচেতন কাব্যরস-পিপাসু পাঠকের সংগ্রহে স্থান পাওয়ার দাবী রাখে প্রশ্নাতীত ভাবেই। 

২০১৬ বইমেলায় প্রথম মুদ্রিত সংকলন প্রকাশের টানটান উত্তেজনার চরম মুহূর্তে প্রকাশিত হলো ঋতবাকের নিয়মিত আঠারোতম ওয়েব সংখ্যা। এই সমগ্র পথচলায় সঙ্গে পেয়েছি অসংখ্য সাহিত্যপ্রেমী সুহৃদ-বন্ধুজনকে। ঋতবাকের পক্ষ থেকে তাঁদের সকলকে জানাই অশেষ কৃতজ্ঞতা। 

শুভেচ্ছা নিরন্তর...

সুস্মিতা বসু সিং

2 comments:

  1. শুভেচ্ছা। প্রত্যেকটি লেখায় বেশ ভালো। মুদ্রণ ঋতবাকের জন্য আগাম শুভেচ্ছা।

    ReplyDelete
  2. রোমাঞ্চকর লেখা!

    ReplyDelete