একটা বুড়ো মানুষকে এত ভয়?
“ওরা ভয় পেয়েছে জীবনে,
ওরা ভয় পেয়েছে মরণে,
ওরা ভয় করে সেই স্মৃতিকে,
ওরা ভয় করে দুর স্বপনে”
--পল রোবসনের জন্যে নাজিম হিকমতের কবিতা “ওরা আমাদের গান গাইতে দেয় না” থেকে।
গত ৫ তারিখে হোলি ফ্যামিলি হাসপাতালে মারা গেলেন স্ট্যান স্বামী; ৮৪ বছরের এক বুড়ো, যার পার্কিনসনগ্রস্ত হাতে জলের গেলাস ধরা মুশকিল, চামচ ধরে রাখতে পারেন না, লেখা বা টাইপ করা তো দূরের কথা। আদালত মেডিক্যাল রিপোর্ট থেকে জেনেছে যে উনি কানেও কম শুনছেন, চোখে দেখেছে যে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে অভিযুক্ত লোকটি একজন দুর্বল অশক্ত বৃদ্ধ। তবু তার জামিনের আবেদন বারবার খারিজ হয়। মুম্বাইয়ের বিচারাধীন বন্দীদের জন্যে শহরের বাইরে তালেদায় নির্মিত বিশেষ জেলে রাখার জায়গা ১৬০০, রয়েছে ২০০০ এর বেশি। তবুও নয়? কোভিডের সময়ও নয়? আমরা তো শুনেছিলাম যে মহামান্য সর্বোচ্চ আদালত নির্দেশ দিয়েছেন যে এই মহামারীর সময়ে বেশিরভাগ বিচারাধীন বন্দীদের ছেড়ে দিতে? ফাদারের বিরুদ্ধে মামলাই শুরু হয়নি। কোভিডের পরীক্ষাও অনেকদিন করা হয়নি। কিন্তু জামিনের শেষতম আবেদনের শুনানি ঝুলিয়ে রাখা হোল। তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে।
শেষসময়ে মুম্বাই হাইকোর্টের দয়া হল। তাকে মুম্বাইয়ের হোলি ফ্যামিলি প্রাইভেট হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার অনুমতি মিলল।
আগে যতবার মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে জামিনের আবেদন করা হল প্রাণ সংশয়ের কথা বলা হোল,--কারণ ওই জেলটিতে কোন বড় ডাক্তার নেই, তিনজন আয়ুর্বেদিক ডাক্তার রয়েছে- ততবার এন আই এ (ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি) বাধা দিল; বলল -ন্যাকামি, স্ট্যান মেডিক্যাল গ্রাউন্ডের আড়ালে অনায্য সুবিধে নিতে চাইছেন। আদালত সরকার পক্ষের যুক্তি মেনে নিল।
যাক, ফাদার স্ট্যান স্বামী শেষে মরে গিয়ে প্রমাণ করলেন যে তিনি অন্ততঃ মিথ্যেবাদী ছিলেন না।
খাঁচায় বদ্ধ পাখির গানঃ
জেসুইট পাদ্রী স্ট্যান স্বামী এসেছিলেন তামিলনাড়ু থেকে, কিন্তু গত পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে ঝারখন্ডের আদিবাসী এলাকাই ছিল তাঁর ঘরদোর, তাঁর পরিবার। থাকতেন চার্চ সংলগ্ন এককামরার ঘরে, লিখতেন প্রচুর—প্রায় ৭০টি বই প্রকাশিত হয়েছে। অধিকাংশের বিষয় সমাজের বঞ্চিতদের অধিকার হননের বিরুদ্ধে।
তাঁর বিশ্বাস ছিল পরম করুণাময় ঈশ্বরে, বিশ্বাস ছিল ভারতের সংবিধানে, আস্থা ছিল অহিংস গান্ধীবাদী পন্থায়। ওই আস্থা থেকে হয়েছিলেন মানবাধিকার কর্মী।
উনি মনে করতেন আইনি পথেই লড়াই করে আদিবাসী, অন্ত্যজ ও অল্পসংখ্যকদের কেড়ে নেওয়া অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া যাবে। তাই রাঁচির উচ্চ আদালতে স্বতঃ প্রণোদিত হয়ে ‘পত্থলগড়ী’ আন্দোলনের সংগে যুক্ত থাকার অভিযোগে বিনাবিচারে বন্দী প্রায় ৪০০০ আদিবাসীর মুক্তির দাবিতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন। সংবিধানের পঞ্চম শিডিউলে ঘোষিত আদিবাসী অঞ্চলে (ছত্তিশগড়, ঝারখন্ড ও অনেকগুলো রাজ্যের নির্দিষ্ট জেলায়) কর্পোরেটের স্বার্থে অরণ্য ও খনিজ সম্পদের লুন্ঠনের বিরুদ্ধে মুখর হয়েছেন, জল-জঙ্গল-জমিনের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে সামিল হয়েছেন। বন্দীমুক্তির দাবিতে কোলকাতায় অনুষ্ঠিত জমায়েতে উপস্থিত হয়েছেন। আবার ঝারখন্ডে সংবিধান প্রদত্ত গ্রামসভার অধিকার, ‘বাগেইচা’ পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এসব করে উনি অনেকদিনই বিজেপি সরকারের চক্ষুশূল।
ভয় কিসের? ভয় এই জন্য যে বিনাবিচারে বন্দী স্ট্যান কান্নাকাটি করেনি, ও জামিন চেয়েছিল সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে। ও নিজের লোকজনকে তখনই বলেছিল –‘ সম্ভবতঃ আমি বাঁচব না। কিন্তু খাঁচায় বন্দী পাখিও গান গাইতে পারে, তার গান গাওয়ার অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারেনা’।
শেষ সময়েও প্রশ্ন তুলেছিল ইউএপিএ ‘র অসাংবিধানিক ধারা নিয়ে।
মনে পড়ছে ইন্দিরা শাসনে ইমার্জেন্সির সময় ফক্কড় কবি নাগার্জুনের কবিতাঃ
“জলী ঠুঁঠ পর বৈঠকর গই কোকিলা কুক,
বাল ন বাঁকা কড় সকী শাসন কী বন্দুক”।
পোড়া গাছের ডালে বসে কোকিল দিচ্ছে কুক,
তার একটি পালকও ঝরেনি দেখে ক্ষমতার বন্দুক”।
স্ট্যানের অপরাধঃ
তিন বছর আগে, ১লা জানুয়ারি, ২০১৮ তারিখে যখন পুণে জেলার ভীমা-কোরেগাঁও এলাকায় এলগার পরিষদ আয়োজিত দলিত অস্মিতার সমাবেশে (১৮১৮ সালে দলিত বাহিনীর হাতে ব্রাহ্মণ নেতৃত্বের পেশোয়া বাহিনীর পরাজয়ের দুশো বছর) গেরুয়া ঝান্ডা হাতে একটা দল ঢুকে পড়ে হামলা চালায়। একজন যুবক মারা যায় ও পাঁচজন আহত হয়। প্রাথমিক অভিযোগ ওঠে দুই হিন্দুত্ববাদী নেতা শম্ভাজী ভিড়ে ও মিলিন্দ একবোটের দিকে। ওঁরা আত্মগোপন করেন। কিন্তু কিছুদিন পরে তৎকালীন বিজেপি সরকার ১৫ জন মানবাধিকার অ্যাক্টিভিস্টকে ‘আর্বান নকশাল’ নাম দিয়ে গ্রেফতার করে। এঁদের মধ্যে অন্ধ্রের কবি ও কার্যকর্তা আশি বছরের ভারভারা রাও, ছত্তিশগড়ের আদিবাসী ও শ্রমিকদের মধ্যে কাজে নিবেদিত সুধা ভরদ্বাজ, দলিত গবেষক ও লেখক এবং আই আই টির অধ্যাপক আনন্দ তেলতুম্বে, সাংবাদিক গৌতম নওলাখা, উকিল সুধীর ধাওলে, রোনা উইলসন ও অন্যেরা। এঁদের বিরুদ্ধে প্রথমে অভিযোগ আনা হয় যে এঁরা নাকি নিষিদ্ধ মাওবাদী দলের সদস্য এবং এলগার পরিষদের আয়োজনে আর্থিক সাহায্য করেছিলেন। শুধু অভিযুক্তরাই নন, আয়োজকদের মধ্যে জাস্টিস সাওয়ান্তের মত তিনজন প্রাক্তন বিচারপতি- সবাই ওই অভিযোগ অস্বীকার করেন। এরপর এঁদের কম্পিউটার জব্দ করা হয় এবং অভিযোগ আনা হয়যে এঁরা নাকি প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার জন্যে মাওবাদীদের টাকা অস্ত্রশস্ত্র সাপ্লাই দেবার কথা ভাবছিলেন এবং সেসব একে অন্যকে ই-মেইল করেছেন!
প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ ই-মেইলের মাধ্যমে!! এমন হাস্যকর অভিযোগ, কিন্তু তিনবছরেও বিচার শুরু হয়নি। অভিযুক্তরা ওই মেইলকে-- যাতে প্রেরক,প্রাপক ও প্রেষণের তারিখ কিছুই নেই- চ্যালেঞ্জ করেছেন। কেন? আমেরিকার এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ‘আর্সেনাল’ নামের সংস্থাটি একবছর ধরে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের পরীক্ষণের ভিত্তিতে রিপোর্ট বের করেছেন যে ওই প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্রের কথিত রিপোর্টটি ফেক এবং অভিযুক্তদের কম্পিউটারে পরে প্ল্যান্টেড।
তখন এন আই এ সংস্থা লাগিয়ে দিল ইউ এ পি এ( আনলফুল অ্যাক্টিভিটিজ প্রিভেনশন অ্যাক্ট), এর প্রভিশনে জামিন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই হয়। আদালত বলল, ওইসব এভিডেন্স ফেক নাআসল সেসব যখন মামলা শুরুও হবে তখন কোর্ট দেখবে। এখন সরকার পক্ষের অভিযোগকে সত্যি ধরে নিয়ে সবার জামিন খারিজ। এর ফলে সরকার চাইলেই কাউকে এই অ্যাক্টের জোরে বিনাবিচারে বছরের পর বছর আটকে রাখতে পারে।
স্ট্যানের সঙ্গে কী হলঃ
অগাস্ট ২০১৮ সালে পুণে পুলিশ স্ট্যানের কামরায় হানা দিয়ে ওঁর কম্প্যুটার, বইপত্তর ও কিছু ক্ল্যাসিক্যাল গানের সিডি জব্দ করে নিয়ে গেল, ১৫ ঘন্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করল, কিন্তু অ্যারেস্ট করল না। আবার রেইড হল জুন ২০১৯ সালে, তখনও গ্রেফতার করেনি। কিন্তু এরপর তদন্ত গেল কেন্দ্রীয় সংস্থা এন আই এ’র কাছে। ওরা ৮ই অক্টোবর, ২০১৮তে এসে বলল-তোমাকে আমাদের সংগে মুম্বাই আসতে হবে। কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করার আছে।
স্ট্যান বললেন -আমি আগেও সহযোগিতা করেছি, এখনও করব। আমার সঙ্গে আপনারা ভিডিও কনফারেন্সে যত ইচ্ছে জেরা করুন, আমি রাজি। কিন্তু এখন কোভিড মহামারী চলছে, ঝারখন্ড সরকার কাউকে, বিশেষ করে বুড়োদের ঘরের বাইরে যেতে মানা করছে। আমার অনেকগুলো স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে।
এন আই এ’র টিম শুনল না। ওরা স্টানকে মুম্বাই নিয়ে জেলে ঢোকাল, কিন্তু, পরবর্তী ছ’মাসে, স্ট্যান মারা যাওয়া অব্দি একবারও জিজ্ঞাসাবাদ করল না, আদালতে একবারও নিজেদের কাস্টডিতে নেয়ার আবেদন করল না; অথচ জামিনের আবেদন হলেই আদালতকে বলল যে স্ট্যানকে জেলের কুঠুরির বাইরে রাখা নাকি রাষ্ট্র ও সমাজের জন্যে ভারি বিপদ। আর আদালতও মেনে নিল।
ঠিক করেছে, কারণ কে বলে স্ট্যান অথর্ব? শেষ দিনগুলোতেও Sec 43D(5) of UAPA,নিয়ে হাইকোর্টে পিটিশন লাগিয়েছে। হাত-পা-কান অচল হলেও ওর মাথা যে সচল। এই ধারা রদ হলে যখন তখন কাউকে ধরে বছরের পর বছর বিনা বিচারে আটকে রাখা রাষ্ট্রের পক্ষে কঠিন হবে। জামিন পাওয়া সহজ হবে। এই ‘বোকা বুড়ো’ যে খালি অন্যদের কথা ভাবে!
এখন মারা যাওয়ার পরও হাইকোর্ট যদি স্ট্যানের আইনি লড়াইয়ের পিটিশনের শুনানি শুরুও করে তাহলে আমাদের পাপের বোঝা কিঞ্চিৎ লাঘব হবে। (চলবে)
কিছু আইনি প্রশ্ন---
তোলো আওয়াজঃ
For the first time, in over 3 years since the fake Bhima Koregaon (BK) charges were filed and arrests made, leaders of 10 political parties have written to the President of India, calling upon him to ensure that the BJP Govt releases all persons arrested on politically motivated charges in BK or other cases, under UAPA. While this is a delayed welcome step, we do know that unless these parties (many of who have been in favour of UAPA) take a clear public position against UAPA, their limited pleas will not have an impact. It is high time all parties and groups which feel that democracy and opposition in India is being throttled by the BJP, must take an open and unambiguous stand against UAPA and sedition.
We record our appreciation for the efforts of the lawyers in this case as well as the occasional benevolent interventions of the Court (such as shifting Fr Stan to Holy Family Hospital). However, we cannot but convey out deepest angst at the manner in which the judiciary, in general, has chosen to deny bails to most political prisoners in the UAPA matters (including Stan), even as trials are pending for years and years! Despite glaring evidence like the Arsenal reports pointing to how the accused activists have been implicated in a malafide manner, neither was the trial process hastened nor were bails granted, especially to the elderly and sick, in Covid times ! We hope, even if posthumously, the Mumbai High Court takes up, in right constitutional spirit, the legal challenge Fr Stan has posed to Sec 43 D (5) of UAPA, which makes bail provisions extremely stringent. This would have an implication for the release of all others arrested as well.
From Gandhi to Gauri or more recently Mahavir Narwal to Fr Stan, we all know that the ideological killers of all these brave-hearts are the same. On the one hand, their singular aim to convert this nation of diverse identities into a monolith Hindu Rashtra needs to be confronted and defeated head on. On the other, their pro-corporate agendas of pushing ahead the Farm Laws and Labour Codes needs broader resistance. The 7 months strong farmers movement is a stellar example of mass people’s resistance.
Our challenge lies in building and supporting similar, collaborative and sustained movements of the working class and oppressed peoples, against dilution of labour laws, environmental laws, draconian laws, corporate attacks and resource loot in Schedule-V areas as well as for ensuring accessible public health, education and livelihood, income security for all. Human rights defenders, social activists, people’s organizations are facing an unprecedented clamp down today. Only a united and defiant push-back by all democratic forces can keep the fascists and authoritarian rulers in check.
Stan has fought his battle powerfully and moved on. Taking inspiration from him, it is now for us, as a people, as a nation, to decide how do we take the struggle ahead. We hope that all the current outrage is channelized constructively into a nation-wide and sustained movement against draconian, anti-people laws and state repression. Laws like UAPA and Sedition which have always been invoked to persecute political activists must be repealed summarily. Institutions like NIA that are an affront on the federal spirit need to be disbanded.
The right to bail, even in UAPA matters, as powerfully upheld by the Delhi High Court recently must be widely publicized and understood as flowing directly from constitutional liberties. Right-wing hate-mongers, be it in the Elgar Parishad case or in the anti-CAA protests, who even now are continuing to vilify deceased Stan and other activists, are the ones who need to be behind bars. A broader movement for release of the Bhima Koregaon 15 as well as all political prisoners, including adivasis, dalits, muslims, transgender persons across the country and prison reforms is the need of the hour. Let us all join forces and work collectively to build upon the momentum for addressing all these.
We also extend our solidarity to the grassroots movements in Jharkhand who are committed to taking forward the work initiated by Stan, including the release campaign of more than 4,000 adivasi undertrials and preserving the Bagaicha resource space in Ranchi, nurturing it as a centre of political learning and action. Acknowledging the empathetic statements by Jharkhand CM both after Stan’s arrest and his departure, we call upon the Hemant Soren Govt. to take a clear stand against UAPA, furnish truthful affidavits in the Ranchi High Court on the PIL filed by Fr Stan and facilitate the early release of all adivasi prisoners across jails in Jharkhand. That would be a true salute to the departed soul of Stan Swamy. Johar.
0 comments: