0

ধারাবাহিক - নন্দিনী সেনগুপ্ত

Posted in










- ‘ব্রেজেন, ব্রেজেন, আমার দিকে তাকিয়ে দেখুন!’

সে একটা কণ্ঠস্বর শুনতে পেলো। সে জানে যে কণ্ঠস্বরটা ক্লিউইৎসের, তার রেজিমেন্টের ডিভিশনের সুন্দরী ডাক্তার। সে হাসপাতালে ফেরত এসেছে বলে নির্ঘাত ক্লিউইৎসকে পাঠানো হয়েছে এখানে। কিন্তু সে এখানে ফিরে আসতে চায় না, তার রেজিমেন্ট সম্পর্কে কোনওকিছু শুনতে, দেখতে চায়না সে; ক্লিউইৎসের দিকে তাকাতেও চায়না।

সে দৃঢ়ভাবে দূরে ডানদিকের দেওয়ালের অন্ধকার কোণে টাঙানো ছবিটার দিকে তাকিয়ে রইলো। ছবিটায় একপাল ভেড়া, তাদের গায়ে শিল্পী ধূসর আর সবজেটে রঙ চড়িয়েছেন। ভেড়ার পালের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে এক মেষপালক; বাঁশি বাজাচ্ছে, গায়ে নীল কোট।

সে এমন কিছু কথা ভাবছিল, যা হয়তো অন্য কেউ কল্পনাও করতে পারবে না। ওই কথাগুলো ভাবতে এখন ভালো লাগছে তার, যদিও সেসব ভারি উদ্ভট। সে জানেনা, সে আদৌ ক্লিউইৎসের কণ্ঠস্বর শুনতে চায় কিনা! স্বাভাবিক কারণেই সে শুনতে পাচ্ছে তার কণ্ঠ, কিন্তু এই ব্যাপারটা সে নিজের কাছেও কবুল করতে চায়না। ‘খুব ভালো লাগছে ক্লিউইৎস, যে আপনি এসেছেন!’- এই কথাগুলো উচ্চারণ করতেও ইচ্ছে করছে না তার। সে ঘাড় শক্ত করে দূরে ছবিতে বাঁশি বাদনরত মেষপালকের দিকে তাকিয়ে রইলো।

এরপর সে কাগজের খচরমচর শব্দ শুনতে পেলো। বুঝতে পারলো যে তার মেডিকাল হিস্ট্রি দেখছে ডাক্তার। সে ছবিটায় মেষপালকের ঘাড়ের দিকে তাকিয়ে রইলো। তার হঠাৎ মনে পড়লো বেশ কিছুদিন আগে সে ওইভাবে ঘাড় নেড়েছিল একটা সুন্দর রেস্তরাঁয়। দুপুরবেলায় সেখানে ভদ্রলোকেরা লাঞ্চ খেতে আসে। সে ওইভাবে মাথা নিচু করে ‘বাউ’ করেছিল। হ্যাঁ, এসব শরীরী ভাষার নানা সূক্ষ্ম খুঁটিনাটি ব্যাপার আছে বইকি! সে খুব দ্রুত এসব আদবকায়দা রপ্ত করেছিল। ছোট করে কিম্বা বড় করে বেশ নিচু হয়ে ‘বাউ’ করা, কিম্বা হাল্কা করে ঘাড় নাড়া, অথবা মাথা না ঝাঁকিয়ে চোখ একটু খোলা-বন্ধ করা। তুমি মাথা আদৌ ঝাঁকাবেনা, কিন্তু মনে হবে যে ঝাঁকালে। আদবকায়দার এই তফাতগুলো অনেকটা আর্মির নানা পদের মতো। পাতা-কাটা কিম্বা সাধারণ ইস্ত্রি করা কলারে পদকের ধাতুর টুকরোগুলো থাকা এবং না থাকার মতো। ওই রেস্তরাঁয় ‘বাউ’ করার শ্রেণিবিন্যাসের ব্যাপারটা খুব জটিল নয়, সেটা নির্ভর করে পকেটের জোর, অর্থাৎ বিলের অঙ্কের উপরে। সে কখনোই কারো সঙ্গে বিশেষ বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করবার চেষ্টা করেনি; কক্ষনো হাসেনি, যতটা পেরেছে নিজের মুখমণ্ডল ভাবলেশহীন করে রেখে দিয়েছে। তবে ভাবলেশহীন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সে সদাসর্বদা তীব্র সতর্ক থাকতো। যার দিকে সে দৃকপাত করতো, তারই অবস্থা কেমন অপরাধী গোছের হয়ে যেতো। সে তাকালেই লোকে মনে করতো যে তাদের উপরে বিশেষভাবে নজর রাখা হচ্ছে। অনেকেই অদ্ভুত আচরণ করতো। কেউ কেউ ঘাবড়ে গিয়ে খাবারের প্লেটে আলুসেদ্ধর উপরে ছুরি চালিয়ে দিতো, আবার সে সরে গেলে অনেকেই নিজের ওয়ালেট হাতড়ে দেখতো একবার। সে এটা দেখে বিস্মিত হতো যে, অনেকেই এই রেস্তরাঁয় বারেবারে আসে, এমনকি যে লোকগুলো তার অদ্ভুত শীতল দৃষ্টি দেখে ঘাবড়ে যায়, তারাও। তারা ফিরে ফিরে আসতো, যাতে তাদের দিকে তাকিয়ে ‘বাউ’ করা হয়; বড় রেস্তরাঁর এই অদ্ভুত অস্বস্তিকর নকশাবাজি আরও সহনীয় করে নেওয়ার চেষ্টায় ফিরে ফিরে আসতো তারা। তার আভিজাত্যপূর্ণ আর্যসুলভ ধারালো সরু মুখ ছিল, ফ্যাসানদুরস্ত স্যুট পরে থাকার কায়দাকানুন জানা ছিল এবং বিনিপয়সার ভোজ ছিল। কিন্তু যখনি সে নিজের একটা অহংকারী ভাবমূর্তি তুলে ধরবার চেষ্টা করতো, তখনই তার ভেতরে একটা অদ্ভুত উদ্বেগ কাজ করতো। মাঝেমাঝে সে ঘেমেনেয়ে উঠতো, হঠাৎ প্রচণ্ড ঘাম হয়ে ভীষণ অস্বস্তি শুরু হত তার। তার মনিব ছিল সমাজবাদী, ভালোমানুষ গোছের, যার আচরণে সে বিব্রত বোধ করতো। যখন সন্ধের শেষভাগে রেস্তরাঁ ধীরে ধীরে ফাঁকা হতে শুরু করতো, তখন মোটা মোটা আঙুল দিয়ে সিগার বক্স খুলে তিন চারটে নিয়ে ঢুকিয়ে দিত তার কোটের বুকপকেটে তার প্রচুর আপত্তি সত্ত্বেও।

-‘হা ঈশ্বর!’ একটা অপ্রস্তুত হাসি হেসে তার মনিব বিড়বিড় করতো, ‘নিয়ে যাও, এগুলো খুব ভালো সিগার!’ সে নিয়ে যেতো। পরে ফাইটেনের সঙ্গে বসে ধূমপান করতো সে; ফাইটেন ছিল তার রুমমেট। সেও সিগারের উৎকর্ষে বিস্ময় প্রকাশ করতো।

-‘ব্রেজেন’ বলতো ফাইটেন, ‘ব্রেজেন! আরেব্বাস, কাঁপিয়ে দিলেন তো! কী ভালো তামাকের পাতা! দারুণ সিগার তো!’ সে কোনও উত্তর দিতনা এবং ফাইটেন কোনও ভালো ড্রিঙ্ক নিয়ে এলে বিশেষ দ্বিধা দেখাতো না পান করবার ব্যাপারে। ফাইটেন লিকিওর কোম্পানিতে কাজ করতো। প্রচুর ট্যুরে যেতে হত তাকে। ভালো ব্যবসাপত্র হলে সে অনেকসময় একবোতল শ্যাম্পেন নিয়ে ফিরতো।

-‘স্পার্কলিং ওয়াইন!’ সে জোরে জোরে নিজেকে শুনিয়ে বলে উঠলো, ‘ঠাণ্ডা স্পার্কলিং ওয়াইন!’

-‘এই এক হয়েছে! এই একটা কথাই উনি বারবার বলতে থাকেন!’ ওয়ার্ডের ডাক্তার বলে ওঠেন পাশের সহকর্মীকে।

-‘আপনি কর্নেলের কথা বলছেন?’ ক্লিউইৎস নিঃস্পৃহভাবে প্রশ্ন করে।

-‘হ্যাঁ, কর্নেল ব্রেজেনের কথা বলছি। একটাই কথা উনি বলেন, স্পার্কলিং ওয়াইন, ঠাণ্ডা স্পার্কলিং ওয়াইন! আর মাঝেমধ্যে বলেন, মেয়েমানুষ, অল্পবয়সী মেয়েমানুষের কথা!’

তাকে ওই রেস্তরাঁয় বসেই খেতে হত, যেটা খুব সুখকর ছিলনা। পেছনদিকের ঘুপচি নোংরা ঘরে বিশ্রী টেবিলক্লথের উপরে খাবার দিয়ে যেত রেস্তরাঁর শেফ, যে মোটেই খুব বন্ধুত্বপূর্ণ ছিলনা। সে পুডিং ভালবাসতো, এসব সে মনেও রাখতো না। খাবার সময়ে তার নাকেমুখে এবং গলায় রান্নার ভাপ, তেল এসব লাগতো। মনিব মাঝেমাঝেই ঢুকত আর বেরোত সেই ঘুপচি জায়গাটায়, তারপর গুটিসুটি মেরে তার পাশে বসে মুখে সিগার নিয়ে একটা বোতল থেকে গ্লাসে শ্নাপ ঢেলে নিঃশব্দে পান করতো।

পরবর্তীকালে সে আদবকায়দা শেখাবার ক্লাস খুলেছিল। যে শহরে সে থাকতো, সেখানে এরকম ধরনের ক্লাসের ভারি কদর। সেখানে প্রচুর ধনী মানুষ বসবাস করতো; তবে এই মানুষগুলোর ধারণামাত্র ছিল না যে আমিষ রান্নার পদে মাংস ছাড়াও ‘মাছ’ বলে একটা কোনও বস্তু আদৌ থাকতে পারে এবং চিরকাল তারা ছুরি কাঁটাচামচের বদলে হাত দিয়ে তুলে খাবার খেয়ে এসেছে। এখন তাদের প্রাসাদোপম বাড়ি, গাড়ি, মেয়েমানুষ সবকিছুই আছে। কিন্তু ঠিকঠাক কেতাদুরস্ত চালচলন বলতে যা বোঝায়, সেসব কিচ্ছুটি নেই। ব্রেজেন তাদের সামাজিক আদবকায়দা শেখাতে শুরু করেছিল। রান্নার পদের শ্রেণিবিভাগ, ক্রমপর্যায় ইত্যাদি ছাড়াও চাকরবাকরদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করা দরকার, এসবও শেখাতো সে। সন্ধেবেলা নিজে তাদের সঙ্গে ডিনার করতে বসে হাতে ধরে শেখাতো নানা কায়দাকেতার প্রতিটি ধাপ। কীভাবে ছুরি কাঁটা ধরতে হয়, কীভাবে শ্যাম্পেনের বোতল খুলতে হয়, ইত্যাদি নানা খুঁটিনাটি ছিল এই ক্লাসের পাঠক্রম।

-‘শ্যাম্পেন’... সে জোরে চেঁচিয়ে উঠলো... ‘ঠাণ্ডা শ্যাম্পেন!’

-‘হা ভগবান, হা ভগবান!’ ক্লিউইৎস আর্তনাদ করে উঠলো, ‘ব্রেজেন, আমার দিকে তাকিয়ে দেখুন!’ সে ক্লিউইৎসের দিকে তাকাবার কথাও ভাবতে চায়না। এই রেজিমেন্টের কোনও কিছু দেখতে চায়না সে, এই রেজিমেন্ট সম্পর্কে কিচ্ছুটি শুনতে চায়না, কারণ সে জানে এই রেজিমেন্টটা, যেটার নেতৃত্ব তার হাতে ছিল, সেটা তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়েছে। ঘোড়ার নাদি, ফ্রি স্যুটার, সুগার লোফ ইত্যাদি নানা সঙ্কেত, অবশেষে... বধ্যভূমি, হ্যাঁ শেষ সঙ্কেত... মানে সব শেষ।

কিছুক্ষণ পরে সে বুঝতে পারলো যে ক্লিউইৎস চলে গেছে।

সে খুশি হল, কারণ এখন আর তাকে ভেড়ার পাল এবং মূর্খ মেষপালকের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবেনা। ছবিটা ডান দিকের দেওয়ালে বেশ অনেকটা দূরে। একটানা তাকিয়ে থাকতে থাকতে তার ঘাড়ে ব্যথা হয়ে গেছে। দ্বিতীয় ছবিটা একদম তার সামনে ঝুলছে। এই ছবিটার দিকে তাকিয়ে থাকতে সে বাধ্য, যদিও এই বাধ্যতামূলক ব্যাপারটা তার পছন্দ নয়। ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে মুকুট পরা রাজকুমার মাইকেল এক রোমানিয়ান চাষার সঙ্গে কথা বলছেন। চাষার ভাবভঙ্গি খুব উত্তেজনাপূর্ণ। সে দুইপা জোড়া করে শক্ত করে ঝুঁকে পড়েছে তরুণ রাজার দিকে। তার হাতে উপহার। উপহারটা সে রাজকুমারের পায়ে নিবেদন করতে চায়। উপহারটা ঠিক কী সেটা বোঝা যাচ্ছেনা, রুটি এবং লবণ, নাকি ছাগলের দুধ দিয়ে বানানো একতাল চীজ। তরুণ রাজা মৃদু হাস্যে চেয়ে আছেন চাষার দিকে। আহা, ব্রেজেন কত দিন এই ধরনের দৃশ্য দেখেনি। যাক, অবশেষে তাকিয়ে থাকার মত একটা জায়গা পাওয়া গেলো। ঘাড় ব্যথা না করেও সে নির্ভয়ে নিশ্চিন্তে এই ছবিটার দিকে তাকিয়ে থাকতে পারবে।

ক্লাস নেবার সময় যেটা তাকে ভীষণ অবাক করতো, যে মানুষ এইসব কায়দাকেতার ছোটখাট অ্যাকটিং, কাঁটা চামচ ধরবার নিয়মকানুন সত্যিই শিখতে পারে! অবশ্য সে এখনও জানেনা এবং দীর্ঘ দিন ধরে জানতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছিল যে এসব সত্যিই কোনও শিক্ষণীয় বিষয়! সে সভয়ে লক্ষ্য করতো যে প্রায় মাস তিনেক পরে এক শ্রেণির মানুষ এবং তাদের স্ত্রীরা বেশ সুন্দর কেতাদুরস্ত ব্যবহার করতো তার সঙ্গে, সপ্রতিভ অথচ বিনয়ী ভঙ্গিতে হেসে তার হাতে চেক ধরিয়ে দিত। আবার কারো কারো দ্বারা এসব কিছুই সম্ভব হত না। তাদের আঙুল এতটাই আনাড়ি তারা খাবলেখুবলে না ধরে চীজের টুকরো কাটতে পারতো না কাঁটাচামচ দিয়ে, ওয়াইনের গ্লাসের সরু বোঁটার মত অংশটা ঠিকভাবে ধরতে পারতো না। আবার আরেকটা তৃতীয় শ্রেণি ছিল, যারা কিছুই শিখতে পারতো না এবং এই শিখতে না পারা নিয়েও তারা বিশেষ বিচলিত ছিলনা। অবশ্য আরও একটা শ্রেণি ছিল, যাদের বিষয়ে সে বিশেষ কিছু জানতো না, তবে তাদের সম্পর্কে শুনেছিল, যারা কোনওদিন তার ক্লাসে যোগ দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেনি।

এইসময়ে যে জিনিসটা তার বেশ পছন্দের ছিল সেটা হল যে ওই মানুষগুলোর স্ত্রীদের সঙ্গে চুপিচুপি ঘুরতে যাওয়া। নিরাপদ একটু অভিযান, যেগুলো থেকে কখনোই নিরাশ হয়ে ফিরতে হয়নি তাকে। তবে তার মনে হত যে একবারের পর থেকেই মহিলারা অনীহা দেখাতো তার সঙ্গে বেরোবার ব্যাপারে। তার প্রচুর এডভেঞ্চারের অভিজ্ঞতা আছে নানা ধরনের মহিলাদের সঙ্গে, তবে তাদের মধ্যে কেউই তার সঙ্গে দ্বিতীয়বার দেখা করতে আসেনি, যদিও বেশিরভাগ মহিলাদের সঙ্গেই সে শ্যাম্পেন পান করেছিল।

-‘শ্যাম্পেন’... সে জোরে জোরে নিজের সঙ্গে কথা বলে উঠলো...‘ঠাণ্ডা শ্যাম্পেন!’ সে একা থাকলে নিজের সঙ্গে প্রায়ই এটা বলতো। ভালো লাগে তার। হঠাৎ যুদ্ধের কথা মনে পড়ে তার। এক মুহূর্তের জন্যই মনে পড়ে। ঠিক তার পরেই আরও দুটো লোক এসে ঘরে ঢোকে। সে ছবিতে তরুণ রাজা মাইকেলকে দেওয়া রোমানিয়ার চাষার হাতে ধরা উপহারটার দিকে তাকিয়ে থাকে; ওই একতাল বস্তু যেটা চীজ না রুটি- বোঝা যাচ্ছে না, সেটার দিকে নিবিষ্টদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। ছবিটার এবং তার নিজের মাঝখানে একঝলক সে প্রধান ডাক্তারের সুন্দর নমনীয় গোলাপি আঙুলগুলো দেখতে পেলো। ডাক্তার তার উপরে ঝুঁকে পড়ে তার জ্বরের চার্টটা হুক থেকে নামিয়ে নিলো।

-‘স্পার্কলিং ওয়াইন!’ চেঁচিয়ে উঠলো ব্রেজেন, ‘শ্যাম্পেন এবং অল্পবয়সী এক সুন্দরী মহিলা!’

-‘মিস্টার ব্রেজেন’ প্রধান ডাক্তার নরম গলায় বলেন, ‘মিস্টার ব্রেজেন’। তারপরে একমুহূর্তের নীরবতা। তারপরে তিনি পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ডাক্তারকে বলেন... ‘ দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে রেজিমেন্টকে বাধ্য হয়েই মিঃ ব্রেজেনকে বাদ দিয়ে ভিয়েনার দিকে নতুন করে যাত্রা শুরু করতে হবে, কিন্তু...’

-‘হ্যাঁ!’- বলে ওঠেন ওয়ার্ডের ডাক্তার। তারপরে আর কিছু শোনা যায় না। যদিও ওরা কাছেই দাঁড়িয়ে আছে। হ্যাঁ, বেরিয়ে যায়নি। কারণ, দরজার শব্দ শোনা যায়নি। তারপরে ওই অভিশপ্ত কাগজগুলোর খচরমচর আওয়াজ শোনা গেলো। ওরা আবার খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে তার মেডিকাল হিস্ট্রি পড়ছে। কেউ কোনও কথা বলছেনা।

(চলবে)

0 comments: