2

কবিতা - রঞ্জন রায়

Posted in




















(১)

আমার যা কিছু প্রতিরোধ ভেঙে দিয়ে
কবিতা ছুঁয়েছে স্বপ্নের বাতিঘর।
খড়কুটো দিয়ে বুকেতে বেঁধেছে বাসা,
কবিতা আমার আড়াইটে অক্ষর।
আড়াই আখরে যে প্রেম দিল না ধরা,
কবিতা যে তার গোপন দীর্ঘশ্বাস,
মাঝরাত্তিরে জানলায় দিয়ে টোকা,
করল আমার চরম সর্বনাশ।

আমাদের চোখ মৃত মাছেদের মত
ঘরের দেয়াল মানবগন্ধহীন;
বুকের ভেতর হাজারো মাইক্রোচিপস,
আদম-ঈভের ভাষাও বৈদ্যুতিন।

হঠাৎ কখন অকালবৈশাখীর
তান্ডবে ঘরে ঢোকে দুরন্ত হাওয়া,
এক ফুৎকারে নেভায় ঘরের বাতি
শুরু হয়ে যায় কবিতার আসা-যাওয়া।

অনেক খেয়েছ, এ ও নিশ্চয় জানি,
আজ-নয়-কাল আমাকেও তুমি খাবে।
ছেঁদো কথা থাক, বলে ফেল তাড়াতাড়ি
কবিতা, এবার কোথায় বেড়াতে যাবে?



(২)

লোকটা যে খাবি খাচ্ছে
মুখে তার একটু জল দাও।
জল নেই? এক আঁজলা? দু-এক গণ্ডুষ?
না হয় চোখের থেকে লবণাক্ত দু-ফোঁটা ঝরুক।
তাও নেই?
তবে যাও, দৌড়ে যাও সোনাঝুরি নদীটির পাড়ে;
প্রাণপণে খোঁড়ো বালি
কিছু জল উঠে আসতে পারে।
আঁচল ভিজিয়ে নাও, নিংড়ে দাও ওর শুকনো ঠোঁটে ,
--সুজাতার ছোঁয়া লেগে কোন বুদ্ধ যদি জেগে উঠে।


(৩)

বন্ধু তোমার লীলা অপার, অশেষ চমৎকার,
ডানহিলের প্যাকেট থেকে ধরাও চার্মিনার।

কোন পাড়াতে তোমার অফিস? জানবে কি কেউ?
রামোঃ;
মোড়ের মাথায় ট্যাক্সি ধরে ঘরের কাছে থামো।
সব দলেতেই আছো তুমি, সবার তুমি মিতা,
তবু তোমার দোরগোড়াতে হরণ হল সীতা।
একলা এলাম, একলা যাবো—এই করেছ সার,
ডানহিলের প্যাকেট থেকে ধরাও চার্মিনার।

বয়স কালে এল নারী যেমন সবার আসে,
তোমার মত কেউ চলেনি মুখটি দিয়ে ঘাসে,
ভালোবাসার আগুনখেলায় আমরা পুড়ে ছাই,
তুমি শুধু খুঁচিয়ে দিয়ে দিয়েছ ধরতাই।
হ্যাঁ বল নি, না বল নি কাউকে একটিবার,
ডানহিলেরই প্যাকেট থেকে ধরাও চার্মিনার।

2 comments:

  1. ডানহিলের মধ্যে চার্মিনারদের এই অভিনব আধুনিক সনাক্তকরণ সফল হোক।
    আপনার কবিতার আশাবাদ ভাইরাল হোক।

    ReplyDelete
  2. বাহ্! বাহ্! চমৎকার! অনেকদিন পর মনের মত কবিতায় আগুনখেলা! ডানহিলের প্যাকেট থেকে ধরাও চারমিনার ' অনবদ্য!!!

    ReplyDelete