প্রচ্ছদ নিবন্ধ - মালিনী মুখার্জি ও সুদেষ্ণা দত্ত
Posted in প্রচ্ছদ নিবন্ধভাষা আন্দোলন – কালকের ও আজকের
মালিনী মুখার্জি
ভাষা আন্দোলন কার?
সে অনেক আগের কথা। আমি তখন শান্তিনিকেতনের ছাত্রী। আমার রুম মেট বা কক্ষসাথী হল চট্টগ্রামের মেয়ে সুদীপাদি। তা ছাড়াও আরো অনেক বন্ধু আমার বাংলাদেশের। তখন অত ভাষা দিবস টিবস বুঝি না। কিন্তু জানুয়ারি মাস থেকে বাংলাদেশি বন্ধুদের গানের মহড়ায় কিভাবে যেন জুটে যাই। শিখে ফেলি একুশের সেই বিখ্যাত গান– আমার ভাইএর রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি (আহা কী দরদ দিয়ে গাইত তনুশ্রী) আর বাংলা আমার দেশ / মাটি আমার মা/ শহিদের দান /ভুলতে পারবো না। তারপর একুশে সকালে রাস্তায় আলপনা আঁকা। বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রী বাদে খুব বেশি লোক জমা হত এমন নয়। আঁকতে আঁকতে গাইতে গাইতে জানতে পারি বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের কথা। কিছু অর্বাচীন বন্ধু তখনও ছিল (এখনও আছে)। আমায় জিজ্ঞেস করত – বাংলাদেশের আন্দোলন, তোর তাতে কী? বাংলা ভাষার জন্য এত লোক প্রাণ দিল, আমার তাতে কী??
ভাষা আমাদের জড়িয়ে থাকে
সেই সব ঘটনার পর আরো পঁচিশ বছর পার হয়ে গেছে। এই কিছুক্ষন আগে মাস্কট থেকে সেই বাংলাদেশের তনুশ্রী আমায় আমন্ত্রন জানিয়েছে তার সংগঠনের একুশের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে – এখন তো সব অনলাইন। দেশ বিদেশের খুদে খুদে বাচ্চারা নানারকম বাংলা উচ্চারণে বাংলা গান গাইছে, কবিতা বলছে, নিজেদের লেখা পড়ছে। তাদের বাবা-মা রা উৎকীর্ণ হয়ে লক্ষ্য রাখছে, উচ্চারনে ত্রুটি হলে ধরিয়ে দিচ্ছে, বাংলা ভাষাকে আঁকড়ে আছে, নিজের মাতৃভাষাকে আঁকড়ে আছে মাস্কাট, টেক্সাস আরো নানা জায়গায় বসে।(এক বিদেশবাসী বন্ধু একবার বলেছিল, সবই ভালো, শুধু নিজের ভাষায় কথা বলার জন্য প্রাণ হাঁপিয়ে ওঠে, আর ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে না কো তুমি’ শুনলে কান্না পায়।)ভাষা বেঁধে রেখেছে আমাদের একসাথে।
যে যার ভাষা
মাসাইমারার এক স্কুলে গেছি আড্ডা দিতে। গানের কথা যখন উঠল, আমি তাড়াতাড়ি বেছে নিই – মোরা সাদাসিধা মাটির মানুষ দেশে দেশে যাই/মোদের নিজের ভাষা ভিন্ন আর ভাষা জানা নাই। তাই শুনে ছাত্রীরা মুগ্ধ!! আমিও গেয়ে আহ্লাদিত। আমি যখন তাদের বলি ‘এবার তোমরা গাও’, তারা এক লাফে উঠে নিজেদের ভাষায় নেচে নেচে গায়। তারা খুব ভালো ইংরেজি জানে। আমিও জানি। কিন্তু যখন আমাদের গান গাইতে বলা হয়, আমরা মাতৃভাষাই বেছে নিই। তারমানে যার যার মাতৃভাষা তার তার কাছে নিজেকে প্রকাশ করার, জাহির করার সবথেকে প্রিয় মাধ্যম।
কিন্তু প্রায়ই দেখি নিজের ভাষার প্রতি সংবেদনশীল হলেও অন্যের মাতৃভাষাকে অপমান করতে আমরা দ্বিধা করি না।
ইতিহাসের দিকে ফেরা যাক
কলেজ জীবনের শেষে একদিন হুট করে গিয়ে হাজির সুদীপাদির ঢাকার বাড়িতে। তার সাথে, অন্য বন্ধুদের সাথে, আবার কখনো একাই ঘুরে ঘুরে দেখি ভাষা আন্দোলনের স্মারক, মিউজিয়াম। ভাবি, কতটা বুকের পাটা থাকলে এরকম অত্যাচারের মুখে তুড়ি মেরে লড়াই করেছিল আমার বয়সি ছাত্রছাত্রীরা। শুধু ভাষার জন্য এরকম করা যায়? তারপর বহুবার বাংলাদেশ গেছি। বন্ধুদের মধ্যে দেখেছি একুশে নিয়ে তাদের আবেগ, ভালবাসা।
আর জেনেছি তার রাজনৈতিক ইতিহাস। শুধু সাংস্কৃতিক আন্দোলন বললে পূর্ণ সম্মান দেওয়া হয় না এই ভাষা আন্দোলনকে। জানতে পারি এই আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে সাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় বাংলার মানুষ। নিজের অধিকারের দাবীতে শুরু হয় এই আন্দোলন। উর্দুকে সরকারি ভাষা করে সরকারি চাকরি, ব্যবসা, এবং অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা থেকে বাঙালিকে বঞ্চিত করার যে ষড়যন্ত্র এঁটেছিল তখনকার সরকার, তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় পূর্ব বাংলার মানুষ।
দুটো জিনিষ মনে হয় এই আন্দোলনের নিজস্ব বিশ্লেষণ করে। এক- অন্যর সংস্কৃতিকে সম্মান না করে, পেটে পা দিয়ে নিজের সংস্কৃতিকে গিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা একধরনের ফ্যাসিবাদ। ইতিহাস দেখাচ্ছে যে সাধারণ মানুষ সেই চক্রান্ত মেনে নেয় না। দুই- যেটা আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে কেবল মাত্র উর্দুকে সরকারি ভাষা করার প্রচেষ্টা, সেটার পেছনে রয়েছে একটা জাতিকে অর্থনৈতিক আর সামাজিক ভাবে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র।
এই ধরনের ষড়যন্ত্র নানা জায়গায় নানা ভাবে করেছে যারা ক্ষমতায় আছে তারা। একটু নিজের ঘরের দিকে মুখ করে তাকালে দেখতে পাব এই সময়ে সেই কালো মেঘের ছায়া। সেই সাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদের জোর করে নিজের ধর্মকে শ্রেষ্ঠ বলে প্রচার করার অছিলায় অন্যকে পায়ে পিষে ফেলার চেষ্টা। আর ধর্মের অছিলায় একটা গোটা সমাজের অর্থনৈতিক শিরদাঁড়া ভেঙ্গে ফেলা। বাংলাদেশেও কিছু মানুষ ছিল যারা এই সাম্প্রদায়িকতাকে নিজেদের স্বার্থে সমর্থন যুগিয়েছিল। এখানেও সেরকম লোকের অভাব নেই। কিন্তু ওই যে বললাম, সাধারন মানুষ ঘুরে দাড়াবেই।
তাই ভাষা আন্দোলন আজও প্রাসঙ্গিক। কিন্তু সেই কলেজের অর্বাচীন বন্ধু কোথায় কে জানে—নাহলে তাকে বুঝিয়ে বলতাম।
*******************************************************************************
Language, local ecology, and Sovereignty: Why we must pledge to safeguard biodiversity on International Mother Language Day?
Sudeshna Dutta
My mother-in-law taught me how to differentiate methi from piring shaak, hingche from brahmi. She also taught me to recognise and cook chakunde and kalkasunde – two vegetable varieties still available in the rural part of the Budgebudge- Mahestala area. Due to her family’s humble economic background, she had to learn about the vegetables that were accessible outside the market. The free food helped the family of eight to stay afloat in their most challenging time.
Nandi Kachhap, an adivasi woman activist from Jharkhand, while giving me a tour of her village in 2017, showed me the exact plant and referred to it as chakor shaag. I got to know how the villagers of Nagri utilise chakor as a source of nutrition.
In 2019 after enrolling in the Agroecology course, I learned about the value of free food in protecting the food and nutritional security of economically marginal people. The importance of chakunde and kalkasunde, Hingche and piring lie in the traditional local knowledge that our elders have preserved through the language. As the rampant and careless urbanisation hence concretisation, have almost wiped out these local biodiversities from the everyday experiences of the ordinary people, the local knowledge preserved in the local language is withering away from the collective memory. Once dispossessed from the local biodiversity, knowledge, and language, the poor get any fair chance to disentangle themselves from the web of food insecurity.
The sense of autonomy depends on the way an individual perceives her freedom in making choices. The awareness regarding once competence arises from the understanding of self-sufficiency. Therefore, knowledge of self in a way brings out the agency role of the knower. An individual’s sense of autonomy and competence are related to the extent she understands herself as “the dynamic promoters of social transformations.” (Sen 2000, 189)
Sen has argued that an active agent possesses the capability to interpret her wellbeing. Her empowerment lies within her freedom in making decisions of choosing to be a participant or non-participant in an act and “taking responsibilities of that decision” (ibid). An individual’s agency lies within her decision-making process. It again depends on her ability to reinterpret the meaning of “wellbeing”. The method of making meanings in the mother language structures the autonomy of the self. Interpretations or ‘making meanings’ is the hidden bridge connecting ‘knowledge of self’ to the ‘agency factor’.
From the perspective of ecofeminism, through the creation of new meanings, the community members exhibit their nature of relationships with the surroundings. The value system that evolves from each member’s physical, psychological, emotional, and social relationships with the local biodiversity structures the collective sense of freedom.
The meaning of a particular object expands with time as new experiences make their way into the life of the individual situated within a specific social and cultural location and having a distinct view of the world. Susan Griffin points out that acknowledging the process of making meanings is crucial as it challenges the hegemony of a fixed meaning/interpretation and, thus, a particular knowledge system. According to her,
meaning, like life, is interdependent. Similar to the process by which an ecosystem sustains itself, meaning arises from meeting and connection, from overlapping boundaries, shifting identities. No single perspective can reveal the truth of the whole. The truth exists in no particular site. No particular site can even be said to exist separately, or permanently. And perhaps no written or spoken meaning can ever subsume or confine the experience of meaning (or hope, or love) (Griffin 2014 Indian Reprint, 226).
For an individual who shares close relationships with the local biodiversities as part of her everyday living, the local ecosystem’s sustainability ensures the survival of language and the sustenance of her authority over interpretations.
Place plays a crucial role in structuring the knowledge as it is where we accumulate experiences, understand ourselves through the changes that happen around us, reflect on those experiences and articulate our understandings through multiple codes of communication. The place becomes far more critical for those who depend on the various elements of the local ecology for self-sustenance.
The connection between the knower and the land demands constant interactions. The cultural and ethical values that thrive within the adivasi culture depend on the process and the objects of cognition. Human beings as an agent of knowledge, learn about the ‘world’ outside her through productive relationships. A knowledge system that cognises community members’ direct and multiple connections with the various elements of the surroundings as the basis of autonomy and power is open to accept the changes and can use creative imagination to manipulate the changes in favour of the community’s sustenance and sustainability. The multidimensionality and the dynamic aspects present in such production of knowledge makes the system open-ended.
The knowledge systems that exist within the ecocentric communities is related to the knowledge of life support. Unlike the knowledge system promoted by the corporate-controlled agri-business industry, these’ knowledge systems are diverse as each of these communities has developed their knowledge systems through various interactions with the local ecology.
According to Dayamani Barla, the renowned adivasi activist of Jharkhand, the adivasis have structured their culture of preserving the forest because their knowledge system finds unnecessary accumulation of the forest products would cause an imbalance within the local ecology. The peace and solidarity existing within the community would be in peril. That is the reason, says Barla, adivasi villagers of Jharkhand choose to preserve the jal-jangal-jameen over the economic development projects.
A village girl, Barla claims, knows the names of more than a hundred plants and their diverse uses. This Munda girl can expand the horizon of her possessed knowledge if she can continue maintaining her close connections with the local biodiversities, village society and Mundari language– her mother tongue. The physical, psychological, historical, social, and ecological relations existing beneath the adivasi interpretations of the jal-jangal-jameen make the landscape environmental heritage of the adivasi societies. Without the legacy, the adivasi languages would cease to evolve as they would lose their ability to create meanings from their epistemic standpoints. They will lose their freedom to envisage and choose the course of the future. The actual colonisation of indigenous and other ecosystem people begins when they hardly have any choice left but to accept the interpretation and value system of the dominant other.
Amartya Sen, in his book Development and Freedom, has argued that the true freedom of an individual exists in her capability to accept or refuse the interpretations of wellbeing and development. In his words:
To see individuals as entities that experience and have wellbeing is an important recognition, but to stop there would amount to a very restricted view of the personhood of women. Understanding the agency role is thus central to recognising people as responsible persons: not only we well or ill, but we also act or refuse to act and can choose to work one way rather than another. And thus we -women and men- must take responsibility for doing things or not doing them. (Sen 1999, 190)
The idea of food sovereignty argues that small-scale farmers and food producers, specifically those who are related to sustenance based food production, must have the rights to choose what to produce and how to yield without jeopardising the autonomy over sustainability. Preservation of the local ecology plays a crucial role in maintaining the sovereign status of the ecologically rich people because they have preserved the knowledge of sustaining diverse relationships with the local ecology in their local languages. Their ability to stand against any imposed monolithic unilinear meaning rests on their competence in creating definitions from their epistemic standpoints. For the ecosystem people, it is imperative to preserve the local biodiversities to maintain autonomy over knowledge and interpretation.
I have started this writing with a memory of my mother-in-law. I now conclude this writing with another anecdote. During the pandemic-induced lockdown phase, a woman from a nearby slum area came to my house with the hope of getting some monetary help. I initiated a conversation with the old lady and tried to understand how far the local biodiversities had helped her to avoid the family’s dependency on the market. I got to know from her the natural sources of the free food are on the brink of disappearance. The absence of knowledge regarding natural, free food resources in the community memory has discouraged the members from preserving natural resources. The absolute impoverishment of these people, I realised, was that they could not imagine themselves as capable of sustaining themselves in that trying time. The lady could neither collect free food from her surrounding, nor she could teach her granddaughter the utilisation of those plants.
Now one day before the international Mother language day, while vigorously typing to finish this short article of mine, I am thinking how many of us would pledge to preserve kulekhara and sajne to resist the control of corporate over public immunity and local nutrition.
0 comments: