কবিতা - সৌমিত বসু
Posted in কবিতাপ্রায়ই তার সুতো ছিঁড়ে যায়। ঘুড়ির মতো সে উড়ে এসে পড়ে এর ওর ছাদে। মাঞ্জা দিয়ে সে ঢেকে রাখে সুতোর মসৃণতা। যাতে কেউ টের না পায় সুতোরও একটা মন আছে। কেউ অসুস্থ হলে সে কেঁদে রাত কাবার করে অথচ সকাল হলেই চোখে কাজল টাঙিয়ে নিঃশব্দে বাস এ গিয়ে বসে। তার আঙ্গুল নিশপিশ করে অথচ সে বোতামে চাপ না দিয়ে টার্কিশ ব্লু রঙের ছবিতে মত্ত থাকে, ভাবনায় থাকে এয়ারপোর্ট থেকে কতদূর তার বাড়ি, দুটো খাটের মাঝে কতখানি ফাঁক।
এক একদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে সে একটা ডানা পেয়ে যায়। অতীত অগ্রাহ্য করে সে উড়তে থাকে।কতগুলো চড়াই তাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যায়, আকাশ পেরিয়ে, হাতানিয়া দোয়ানিয়া পেরিয়ে, শিবমন্দির পেরিয়ে একটা জঙ্গলের ভেতরের দোতালার ঘরে। নতুন রং করা সেই ঘরের দেয়াল তাকে ইশারায় ডাকে, যত্নে পেতে দেয় সংসারের শতরঞ্চ। তার মন পড়ে থাকে নিচের ঘরের এক বৃদ্ধার চেয়ারে, ঠাকুরঘরে। হঠাৎ জলপাইপ চালিয়ে সে ধুয়ে দিতে থাকে ঘরের ভেতর ঝুলে থাকা সমস্ত ভাবনা,সে টের পায় সুতো ছিঁড়ে গেছে, সিঁড়িসর্বস্ব একটা ঘরে উড়ে যেতে হবে। সে তার সবটুকু দিয়ে তৈরি হয় জানালার ফাঁক গলে উড়ে যেতে নতুন আকাশে।