ঋতু ম্যাডামের রান্নাঘর থেকে - মৈত্রেয়ী চক্রবর্তী
Posted in ঋতু ম্যাডামের রান্নাঘর থেকেঝাল চা
চমকে উঠলেন? তাহলে একটা গল্প বলি, একটি বাচ্চা মেয়ের কথা শুনেছিলাম, তিনি নাকি নতুন কোনোখাবারের কথা শুনলেই মুখ বেঁকিয়ে বলে দিতেন, ‘ও আমার মা রোজ আঁদে’ অর্থাৎ তাঁর মা রোজই সেইপদটি রান্না করেন। গল্পটা এখানে বলার উদ্দেশ্য একটাই, ঝাল চায়ের উপকরণ শুনলে অনেকেই হয়তঅমন বলে উঠবেন, এ এমন আর কী? এ তো আমরা রোজ বানাই। আজ্ঞে হ্যাঁ, খুবই প্রচলিত কিছুউপকরণ দিয়ে বানাতে পারবেন ঝাল চা।
আদার বেশ বড় একটা টুকরো। ধরুণ, আপনার তিনটে আঙ্গুল পাশাপাশি রাখলে যতোটা হয় ,সেইপরিমান এক টুকরো, একটা তেজপাতা, দুটো বড় টুকরে দারচিনি, দুটো ছোটোএলাচ, দু-তিনটে লবঙ্গ, আট-দশটা গোটা গোলমরিচ, আর একটা স্টার অ্যানিস। এই সবগুলি একসাথে ফোটাতে হবে। আদারটুকরোটা একটু থেঁতো করে নেবেন অবশ্যই। আর গোলমরিচ গুলিও আধভাঙা করে নেবেন। এই জলটাফুটিয়ে সেই জল ছেঁকে নিয়ে, এমনি আদার জল হিসেবেও খেতে পারেন। সর্দি, কাশি, গলা খুসখুসএকদম চলে যায়। আর, এই জল দিয়ে চা বানালেই পাবেন ঝাল চা। চিনি না দিয়ে গুড় ব্যবহার করলেচায়ের স্বাদ, গন্ধ আরোও বেড়ে যায়। হয়ত ক্ষতিও একটু কম হয়, চিনি খাওয়ার চেয়ে। আর স্টার অ্যানিসবা তারা মৌরি / চক্রফুল বস্তুটি অ্যামেরিকায় ফ্লুএর জন্য বহুল ব্যবহৃত ওষুধ টেমিফ্লু-এর অন্যতমউপাদান বলে জানতে পারার পর আমি অনেক রান্নায় ব্যবহার করি। আর সেই কারণেই আদা জলেওদিই। নিয়মিত এই চা বা আদাজলটি খেলে গলার অনেক অসুবিধা দূর হয়ে যায়। এমনকি, কোনোউপলক্ষ্যে যদি গলার প্রচুর ব্যবহার হয়, গলা চিরে গেছে এমন অনুভূতি হয় এই জলটা কিন্তু খুব উপকারেআসে। তবে হ্যাঁ, মাথায় রাখবেন, গলার সমস্যা থাকলে কিন্তু প্রথম চুমুকে গলায় চট করে ঝটকা লাগে।স্টিং করে। কিন্তু সেটাই ওষুধ কাজ করছে তার নিদর্শন।
আমি আদাজল বানিয়ে আলাদা করে অন্য পাত্রে নিয়ে চা বানাই। এতে সুবিধা একটাই যে, যদি শুধুআদাজল হিসেবে ব্যবহার করতে হয় সেটাও করা যাবে। ওই আদা ইত্যাদি উপকরণগুলি কিন্তু একাধিকবার ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিবার আদার টুকরোটা একবার করে থেঁতো করে নেবেন, দেখবেন আরোওকিছুটা রস বেরিয়ে আসছে।
এভাবে বানানো চাকেই কেউ মসালা চা, কেউ বম্বে চা বিভিন্ন নামে ডাকেন। দেখলেন তো, আপনাদের অতি পরিচিত চা কেই একটু অন্যভাবে পরিবেশন করলাম।