0

ধারাবাহিক - সুদীপ ঘোষাল

Posted in





















ইংরাজী ১৯২০ সাল। বৃটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে জোর কদমে। তখনকার সময়ে রায় পরিবারের সুমনের জীবনের ঘটনা। সুমন যাত্রাদলে বাঁশি বাজায়। আর গোপনে বিপ্লবীদের সাহায্য করে নানারকমভাবে। ঠিক একশো বছর আগে রাশিয়ার অক্টোবর বিপ্লব বিশ্বের আরও অনেক দেশের মতো ভারতেও কমিউনিস্ট আন্দোলনের জন্ম দিয়েছিলো।

গত শতাব্দীতে ভারতের বামপন্থী রাজনীতিও নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে গেছে, আর তাতে অক্টোবর বিপ্লব তথা সাবেক সোভিয়েত রাশিয়ার একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ছিলো আগাগোড়াই। সাঁইথিয়ার ভাড়া ঘরে থাকে।

রুশ বিপ্লবের নায়ক ভ্লাদিমির লেনিন বা তার উত্তরসূরী স্তালিন একটা পর্বে ভারতের কমিউনিস্টদের প্রবলভাবে আলোড়িত করেছেন, কিন্তু পরে চীনের সাংস্কৃতিক বিপ্লব বা মাও জে দংয়ের আবেদনই যে ভারতের বামপন্থীদের কাছে বড়ো হয়ে ওঠে তাতেও বোধহয় কোনও ভুল নেই।

কিন্তু ভারতে কমিউনিস্ট আন্দোলনের ইতিহাসে একশো বছর আগেকার সেই অক্টোবর বিপ্লব ঠিক কীভাবে ছায়া ফেলেছে?

বিশ্ব জুড়ে কমিউনিস্ট আন্দোলনের একটা মূল কথাই হলো আন্তর্জাতিক সংহতি বা সলিডারিটি। সুদূর রাশিয়ার বলশেভিক বিপ্লবের ঢেউ ভারতে আছড়ে পড়েই যে এদেশে কমিউনিজমের বীজ রোপিত হয়েছিলো তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে কোনও দ্বিমত নেই। পাঁচ ছেলের পরে আবার পুত্রসন্তান হয়েছে রায় পরিবারে। খুব সুন্দর দেখতে হয়েছে। কোনও লোকের যাতে নজর না লাগে তাই নাম রাখা হলো কালো। সুমনবাবু খুব খুশি। সুমনবাবুর বোন সুমিতাও খুব খুশি। সুমনবাবু খুব ভালো বাঁশি বাজান। যাত্রাদলে রাতের পর রাত তাকে বাঁশি বাজাতে হয়। আড় বাঁশি। তাই বেশির ভাগ রাতে তিনি বাড়ি ছেড়ে থাকেন। যাত্রাদলের মেয়ে রূপসী সুমনকে ভালোবাসে। সুমন সুদর্শন। ভালো চিত্রশিল্পী। সুমনরা দুই ভাই। বিমল তার ছোটো ভাই। সুমনের বৌ খেনী আর বিমলর বৌ কুড়ো। একদিন খেনী, কুড়ো আর বিমল গঙ্গায় স্নান করতে গেলো। বিমল সাঁতার জানে না। তাই কুড়ো বললো, বেশিদূর যাবে না। ভয় লাগে।

— ঠিক আছে যাব না।

কিন্তু জোয়ারের টানে ভেসে গেলো কুড়োর সিঁদুর। বিমলকে খুঁজে পেলো না কেউ।

তারপর কুড়োর সুন্দর চুলের বেণী কেটে ঝুলিয়ে রাখা হলো বাড়ির মাচায়। কুড়ো বাল্যবিধবা হলো। চিরজীবন বয়ে বেড়াবে কয়েক দিনের বিয়ের জীবনের স্মৃতি।

খেনীর ছেলে কালো। খেনী নিজেও যেমন সুন্দরী আবার ছেলেটিও তাই। মহিলামহলে খেনীর রূপের খুব সমাদ। সুমন বাড়ি এলে বলে, তোমাকে আর বাঁশি বাজাতে হবে না। জমি জায়গা দেখাশোনা করার পর আমাদের আর কোনও অভাব থাকবে না ।

সুমন বললো, দেখো আমি শিল্পী মানুষ। জমি জায়গা নিয়ে আমি থাকতে পারবো না।

— পারবো না বললে হবে না। ছেলে মানুষ করতে হবে। জমি বেদখল হয়ে যাবে।

— আমাকে বোঝার চেষ্টা করো দয়া করে। আমি শিল্পী মানুষ। আমি বাঁশি ছাড়া মৃত। আমাকে রেহাই দাও।

খেনী চোখের জলে অন্য ঘরে চলে গেলো। তার সংসারের চিন্তায় মন খারাপ হয়ে গেলো।

আজ রাতে গান নেই। তাই ছুটি। বাড়িতেই আছে। তবু রাতে বৌয়ের কাছে না থেকে বাগানে বাঁশি বাজায় সুমন। তার সুর শুনে খেনীর ভয় হয়। এই আপদ বাঁশি তার সংসার ভেঙ্গে দেবে না তো? এই চিন্তায় খেনী রাত কাটায়। আর সুমন সারা রাত রূপসীকে মনে রেখে বাঁশি বাজায় ক্ষণে ক্ষণে।

তারপর রাত পোহালেই চা, মুড়ি খেয়ে বেরিয়ে পরে সুমন। আজ যাত্রা আছে। মীরার বঁধুয়া। মুরারী বাঁশি মুখে ধরে থাকবে আর আড়াল থেকে বাজবে সুমনের বাঁশি। আজ কৃষ্ণ সাজবে মুরারী। মীরা মুগ্ধ হবে সুরে। রূপসী আজ মীরা সাজবে। কত লোকে হাততালি দেবে। পুরষ্কার পাবে মুরারী। রূপসী জানে, দলের সবাই জানে বাহাদুর বংশীবাদকের বাহাদুরী। তবু মুরারী নামের কাঙাল সেজে কপটতা করে। সুমনের তর উপর রাগ হয় না। কৃপা হয়। রূপসীর পিছন পিছন ঘুর ঘুর করে মুরারী। কিন্তু রূপসীর মন পায় না।

রূপসী আড়ালে সুমনকে বলে, ডিম, দুধ খাবে। আমার কাছে আসবে। আমি দেবো।

— আমার বেশি খেলে বদহজম হয়। হাল্কা মুড়ি আমার প্রিয়।

— না না। মুখ দিয়ে রক্ত উঠবে।

— বেশি খেলে আমার বাজাতে কষ্ট হয়।

— ঠিক আছে। আমার কাছে এসে তুমি যখন বাঁশি বাজাও আমার মনটা কেমন হারিয়ে যায়।

— জানি আমি। তোমার জন্য আমি বাঁশি বাজাই। তুমি আমার বাঁশি শুনলেই হবে। আর কাউকে চাই না।

সুমন বাঁশি বাজানোর সঙ্গে কোনও আপোষ করে না। তাতে না খেয়ে থাকতে হলেও থাকবে। কোনও আপত্তি নেই।

অপরদিকে রাবণ অপেরা এদের প্রতিদ্বন্ধি। তারা সুমনকে নিজেদের দলে আনার জন্য নানারকম রাজনীতি করে। কিন্তু সুমন দল ছাড়বে না।

মুরারী অপেরায় তার প্রিয়া রূপসী আছে। তাকে ছেড়ে কি করে সে বাঁশি বাজাবে।

রাবণ অপেরার ম্যানেজার বললো, তোমার খুব অহঙ্কার। আচ্ছা তোমাকে আমরা দ্বিগুণ টাকা দেবো। আমাদের দলে এসো।

— না আমি পারবো না। আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।

— আচ্ছা তোমাকে দেখে নেবো।

নিরহঙ্কার সুমনের লোভ নেই। সে সুরে সুরে মহাসুরের সঙ্গে মিলতে চায়।

সুমনের ছয় ছেলের মধ্যে এখন শুধু বেঁচে আছে কালো। একবার গ্রামে ওলাউঠা হয়েছিলো। সেই মহামারিতে মরে গেছে সুমনের পাঁচ সন্তান। খেনীর এখন একমাত্র ভরসা এই কালো। সে ভাবে, তাকে মানুষ করতে হবে। বাবার মতো বাউন্ডুলে যেন না হয়। ভাগীদার গণেশ হাজরা জমি দেখাশোনা করে। সুমন ছ’মাসে, ন’মাসে একবার বাড়ি আসে। টাকা-পয়সা মাঝে মাঝে পাঠায়। এইভাবে সময়ের তালে তালে কালো পড়াশোনা শিখে বড়ো হতে থাকে।

কেতুগ্রামের মেনকা সম্পর্কে খেনীর আত্মীয়। রূপে, গুণে, সংগীতে মেনকার জুড়ি মেলা ভার। পড়াশোনায় তার সমকক্ষ কেউ নেই। মেনকা গ্রামের আপদে বিপদে সকলের আগে এগিয়ে যায়। গ্রামের লোকেরা খুব ভালোবাসে মেয়েটিকে।

ক্ষ্যান্তবুড়ি মরে গেলে মেনকা চাঁদা তুলে পাড়ার দাদাদের নিয়ে তার শবদাহ করেছিলো। গ্রামের বয়স্ক লোকেরা তাকে দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করেছিলেন। মেনকা নিজে একজন স্বাধীনচেতা তরুণী। নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে সমাজের মঙ্গল করাই তার লক্ষ্য। তার জন্য তিলে তিলে নিজেকে সে উপযুক্ত করে তোলে।

এই গ্রামে এক সুদখোর লোক ছিলো। গরীবদের কাছে সে দশ শতাংশ হারে সুদ নিত। দেনা শোধ না করতে পারলে জমি জায়গা সোনাদানা কেড়ে নিত। মেনকা এই লোকটাকে দেখতে পারতো না। তাকে দেখলেই রাগ হয়ে যেত। জব্দ করার ফন্দি আঁটতো দিনরাত।

মেনকা কৃষক পরিবারের সন্তান। সে হাঁস পুষতো। তার হাঁসগুলো যখন ডানা ঝাপটে জলে নেমে ডুব দিতো তখন সেও হাঁস হয়ে ডুব দিতো অতল জলে। মুক্ত খোঁজার আশায় তার ডুব। ডুবে ডুবে কখনও তার বেলা বয়ে যেত। কিন্তু মুক্ত তার অধরা রয়ে যেত।

রাতে সে শিক্ষা নিত চাঁদের বাগানে। তার শিক্ষক বলতেন, চাঁদের বুকে অই যে কালো কালো দাগ দেখছো অইগুলো কলঙ্ক। তবু একটা তৃণ অবধি পৌঁছে যায় তার আলো। কাউকে বাদ দেয় না সে। তিনি মেনকাকে বলতেন, জীবনে যতই বাধা আসুক। এগিয়ে যাবার পথ থেকে সরে আসবে না। একদিন ঠিক সফলতা তোমার সঙ্গে সঙ্গে হাঁটবে।

তারপর সকালে উঠেই মেনকা বই হাতে যায় শিক্ষকের বাড়ি। সঙ্গে ছাগল, ভেড়া, হাঁস। তাদের যথাস্থানে রেখে তারপর শিক্ষকের বাড়ি যায়।

সুদখোর মহাজন মেনকাকে দেখে বললো, এই সুন্দরী শোন। এদিকে আয়।

মেনকা বলে, কী বলছেন বলুন?

— একবার দুপুর বেলায় আমার সঙ্গে আমার বাড়িতে দেখা করিস তো।

— কেন? আমার সঙ্গে কী কাজ?

— গেলেই জানতে পারবে। মহাজন এমনি ডাকে না। তোমার কপালে আজ প্রাপ্তিযোগ আছে। যেও বেশ।

— এমন আদরের ডাক কি আর ফেলতে পারি। যাব।


ঠিক দুপুরবেলায় মেনকা তার দলবল নিয়ে হাজির হলো মহাজনের বাড়ি। সবাই ভূতের সাজে উঠে পড়েছে আম গাছে। পাকা আম। সব পেড়ে খাচ্ছে সকলে। মেনকা সাদা শাড়ি পরে কড়া নাড়লো মহাজনের দরজায়। মহাজন বাইরে বেরিয়ে মেনকাকে দেখে পাগলপ্রায়। গায়ে হাত দিয়ে বলে, আয় ভেতরে আয়।

— যাব? আমরা ভূত-পেত্নির দল তোর বাগানে থাকি। আজ মেনকার সাজে তোর কাছে এলাম। অই দেখ তোর বাগানে কত ভূত।

মহাজন খুব ভিতু। ভূতের ভয়ে সে রাতে বাইরে বেরোয় না। ভয়ে বললো, তোরা ভূত। ওরে বাবারে, আমার সব আম শেষ করে দিলো রে।

সঙ্গে সঙ্গে মহাজনের গালে এক থাপ্পড়। মহাজন, জোড় হাতে ক্ষমা চাইছি। আমাকে ছেড়ে দাও।

— ছেড়ে দিতে পারি। একটা শর্তে। যত দলিল, সোনা তুই চুরি করেছিস সবাইকে ফেরত দিবি। তা না হলে আবার আসবো।

— না না। আমি সব দিয়ে দোবো। আমি আর সুদের কারবার করবো না।

তারপর কিছুদিন পর সুদখোর মেনকার বাবার জমির দলিল ফেরত দিয়েছিলো। হয়তো ভূতের ভয়ে তা না হলে লোকবলের ভয়ে। মেনকার বাবা বলতেন, মনে রাখবি মা, জল জল গঙ্গাজল। আর নল, বল লোকবল। বল বা শক্তির মধ্যে লোকবল শ্রে। তার প্রমাণ মেনকা হাতেনাতে পেলো। সুদখোর মেনকার সামনা সামনি হয়নি আর কোনও দিন। মেনকা জানে, ওরা সবলের ভক্ত আর দুর্বলের যম।

মেনকার সঙ্গে সবসময় বন্ধুরা থাকতো। প্রায় বিশ-পঁচিশজন গ্রামের ছেলেময়ে খেলা করতো একসাথে। দলবল নিয়ে গ্রামের বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজ করতো নিঃস্বার্থভাবে।

মেনকা এইভাবে বড়ো হতে লাগলো। তারপর সে গ্র্যাজুয়েট হলো। তার বাবা এখন খুব খুশি মনে কৃষিকাজ করেন।

সুমনের বাঁশি বাজানো দেখে লাইনের অনেকে হিংসা করে। রূপসী বলে, ভালো কাজ করলেই শত্রু বেড়ে যায়। সুমন বলে, ছেড়ে দাও ওসব কথা। এসো আমরা সাধনা চালিয়ে যাই। তারপর সুমন বাঁশি বাজানো শুরু করলো। তার বাঁশির নবসুরে রূপসীর দেহ কেঁপে উঠলো। সুমন খুশি মনে স্নান সমাপন করলো।

রূপসীর হাতের রান্না খুব ভালো। সুমন খেলো। রাতে আজ কাজ নেই। মুরারী রাতে রূপসীর ঘরে এলো। সে বললো, শোনো সবাই। যাত্রাদলের এখন কোনও কদর নেই। তাই আমি আপাতত আলকাপের দল করবো।

সুমন বললো, যাত্রাদল তাহলে উঠিয়ে দেবে।

— না। বন্ধ হলো আপাতত। আবার ডাক পেলে হবে নিশ্চয়। আলকাপের নায়িকা হবে রূপসী।

— না, দাদা রূপসী নয়। ঝুলনকে করো।

— কেন? তোমার গায়ে লাগছে না কি?

সুমন বললো, রূপসী আজেবাজে ভাষা বলতে পারবে না।

মুরারী বললো, কি বলছো রূপসী।

রূপসী বললো, আমি নাচ করবো। কিন্তু তোমার বিপরীতে অভিনয় করবে ঝুলন ভাই।

বেশ তাই হবে। কালকে আমাদের আলকাপ হবে। বায়না দিয়ে গেছে।

সুমন বলে, এখন আলকাপ শোনার লোক বেশি। আড়ালে রাতের বেলায় ভদ্রলোকেরাও চাদর মুড়ি দিয়ে শুনতে আসে আলকাপ। খিস্তিখেউড় শুনতে মজা লাগে। মেয়েদের নগ্ননাচ দেখতে ভালো লাগে দর্শকের। টাকা পয়সাও দেয় অনেক। তাহলে যাত্রার ভবিষ্যৎ কি?

রূপসী বলে, ছাড়ো তো ওসব কথা। এখন চলে গেলেই হলো।

মুরারী ভালো ব্যবসাদার। সে নিশিকান্তকে দলে নিলো। ভালো আলকাপ করে। নাম আছে। দলের নাম দিলো, নিশিকান্তর আলকাপ।

তারপর পরের দিন রাতে শুরু হলো আলকাপ। সুমনের বাঁশির তালে নিশিকান্ত আর রূপসী নাচ আরম্ভ করলো। তারপর শুরু হলো আলকাপ। নিশিকান্ত একটা রসগোল্লার হাঁড়ি দুপায়ের ফাঁকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি এলো। তারপর ঝুলন মেয়ে সেজে নিশিকান্তর হাঁড়ি থেকে রসগোল্লা খেলো। আহা কি মিষ্টি। আরও খাবো।

নিশিকান্ত বললো, তোকো হাঁড়ি উপুড় করে রস খাওয়াবো। আয় আমার শালি।

এইভাবে আসর জমে উঠলো। প্রচুর টাকা পেলো নিশিকান্ত। তার নাম শুনেই লোকে ভিড় করে আলকাপ শুনতে আসে।

মুরারী বলে, দেখো সুমন, যাত্রার থেকে টাকা বেশি আলকাপে। মানুষ যা চায় তাই করতে হবে। তা না হলে না খেয়ে মরতে হবে।

সুমন কোনও উত্তর দেয় না। শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।

সুমন আজ অনেক দিন পরে বাড়ি গেলো। ছেলেটি বড়ো হয়েছে। পাশে কুড়োর বাড়ি। বিধবা হওয়ার পর ও একা থাকে। একা রান্না করে খায়। একাদশী করে। প্রচুর উপোষ করতে হয়। সুমন একবার বলেছিলো, তুমি আমার ভায়ের বৌ। তুমি ভালো গান জানো। চলো যাত্রাদলে গান করবে। এভাবে জীবনটা নষ্ট করে কি লাভ। খেনী রেগে গিয়ে বলেছিলো, বেশি বাড়াবাড়ি কোরো না। গ্রাম থেকে বাস ওঠাবে না কি? ও ওর মতো থাক। সুমন চিন্তা করে দেখলো, এখনও কুসংস্কার দূর হতে অনেক সময় লাগবে। তারপর নিজের সংসারের কথা ভেবে আর ওসব নিয়ে কথা বলেনি। কুড়ো, খেনী দুইবোন। কালোকে কুড়োর কাছে রেখে শান্তি পায় দু’দন্ড খেনী। নিঃসন্তান কুড়ো কালোকে পেয়ে মাতৃত্বের স্বাদ অনুভব করে। 

0 comments: