Next
Previous
0

গল্প - সমরেন্দ্র বিশ্বাস

Posted in







‘গ্রান্ডপা, স্কুলে আমাদের সবাইকে নিউ ডায়েরী দিয়েছে।’
‘বাঃ, খুব সুন্দর তো!’
‘এখানে নেম অ্যাড্রেস সব রাইট করে নিতে বলেছে। আমি সবকিছুই রাইট করে নিলাম। শুধু ……..’
‘শুধু কি?’
‘এই পার্মানেন্ট অ্যাড্রেসের জায়গাটা ব্লাঙ্ক রেখেছি। এখানে কি লিখবো? আমাদের ছত্তিশগড়ের হোম-অ্যাড্রেস, না কি ক্যালকাটার অ্যাড্রেস?’

দাদু ক্লাস ফাইভে পড়া নাতির দিকে একটু চেয়ে রইলো। তারপর একটু হাসলো। - ‘আমাদের পার্মানেন্ট অ্যাড্রেস কোনটা? দাদুভাই, সেটা তো আমিও জানি না!’‘পাপা তো বলে, আমার গ্রান্ডপা অনেক কিছু জানে!’
‘সোনাভাই, আমি জন্মে ছিলাম পূর্ব পাকিস্থানে, তখন সেটাই আমার পার্মানেন্ট অ্যাড্রেস। তারপরে এলাম এপার বাংলায়, বনগাঁতে। সেখান থেকে কোলকাতা – তখন কোলকাতাই আমাদের ঠিকানা। তার পরে চাকুরী নিয়ে উড়িষ্যার ভূবনেশ্বরে। সেখান থেকে ফিরে আবার এলাম কোলকাতায়, গড়িয়াতে বাড়ি বানালাম। ভেবেছিলাম সেটাই পার্মানেন্ট। তারপরে তোর বাবার চাকুরীর সাথে সাথে আমরা গুজরাটে, আর এখন আছি ছত্তিশগড় – এটাই আমাদের অ্যাড্রেস। আসলে জানিস তো? মানুষের অ্যাড্রেস বদলাতেই থাকে – সেটাই মানুষের নিয়তি। দশ বছর বাদে কে কোথায় থাকবো, সেটাও অজানা!’
‘সে তো বুঝলাম। কিন্তু, ডায়েরীর এই জায়গাতে কিছু রাইট না করে যদি ব্লাঙ্ক রাখি? ক্লাস টিচার তো আমাকে ডাটবে!’
‘ওই জায়গাটা ফাঁকাই রেখে দে। তোর টিচারকে বলিস, লোকেদের পার্মানেন্ট অ্যাড্রেস বলে কিছু হয় না।’