0

সম্পাদকীয়

Posted in





'

অস্মিতা'। বাতাসে কান পাতলেই এখন এই শব্দটি শোনা যাচ্ছে। অবশ্যই এর আগে 'বাঙালি' যোগ হলে তবেই তৈরি হচ্ছে প্রার্থিত সেই দ্যোতনা, যার প্রভাবে আপাতত পশ্চিম বাংলা তথা ভারতের রাজনীতি সরগরম।

প্রতিবেশী একটি রাজ্যে নাকি সরকারী ফর্মে মাতৃভাষা বাংলা লেখা হলে, তাকে চিহ্নিত করা হচ্ছে বাংলাদেশী বলে। ভারতের অন্যত্রও ছবিটি প্রায় একইরকম। বাংলায় কথা বলে বিপাকে পড়েছেন, এমন ঘটনার কথা প্রায় রোজই গোচরে আসছে।

বিষয়টি, বলাই বাহুল্য, গভীর শঙ্কা উদ্রেককারী। একটু তলিয়ে ভাবলে একথা বুঝতে অসুবিধা হয় না পরিকল্পিত এই ঐকতানটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কিন্তু কী সেই উদ্দেশ্য, যা নিয়ে রাজনীতির কারবারীরা ময়দানে নেমে পড়েছেন, 'বাঙালি অস্মিতা' রক্ষা করার জন্য? রাস্তাঘাটে অভাবনীয় খারাপ বাংলায় (যেমন ধরা যাক, শহরের দীর্ঘতম উড়ালপথটির অনেক জায়গাতেই সাবধানবাণী দেখা যায়, সামনে তীব্র বাঁক, গাড়ি আস্তে চালান! কোন ইংরেজি প্রতিশব্দের বাংলা এখানে তীব্র, তা সহজেই অনুমেয়) লেখাগুলি যখন চোখে পড়ে, তখন কি এই অস্মিতা বিপন্ন হয় না? বা কোনও ব্যাংকে গিয়ে পরিষেবা পাওয়ার জন্য যখন শরণাপন্ন হতে হয় হিন্দি বা ইংরেজির? তখন?

আসলে এক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা হচ্ছে চিরাচরিত সেই নীতি। কৌশলী প্রচার। ক্ষমতায় টিকে থাকতে গেলে, যার প্রয়োজন অসীম। সরকার বা বিরোধীপক্ষ - দুই গোষ্ঠীর লক্ষ্য একটিই। প্রচারেও তাই খুব রকমফের নেই। পরিধেয়ের রং দিয়েই মূলত চিনে নিতে হবে বক্তা কোন পক্ষের। ব্যবহারিক অন্যান্য সমস্ত লক্ষণই অতি সাদৃশ্যপূর্ণ। 'বাঙালি অস্মিতা' কেন, এই জাতিটির সম্পূর্ণ বিলুপ্তি ঘটলেও নেতানেত্রীবর্গের কিছু এসে যাবে না।

সুস্থ থাকুন। সচেতন থাকুন।

শুভেচ্ছা অফুরান।

0 comments: