Next
Previous
Showing posts with label সম্পাদকীয়. Show all posts
0

সম্পাদকীয়

Posted in





শেষ হলো ৪৫তম কলকাতা আন্তর্জাতিক পুস্তকমেলা। একবছর বিরতির পর। প্রাক বৈশাখের নিদারুণ দাবদাহ মাথায় নিয়ে। সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্ককে স্থায়ী বইমেলা প্রাঙ্গণরূপে ঘোষণা করা হলো। সাধুবাদ। একই সঙ্গে উঠে এল অনেক প্রশ্ন। এই অসময়ের মেলার সাফল্য নিয়ে যে ঢক্কানিনাদ, তার সারবত্তা সঙ্গত কারণেই বিস্ময়ের উদ্রেক করেছে নাগরিকমহলে। অনেক প্রকাশকের মেলা পরবর্তী প্রতিক্রিয়াই তার প্রমাণ। তবু আমাদের আশা এই মিলনক্ষেত্র আরও বিস্তৃত হোক। মানুষ বই পড়ুন আরও। কাগজ, কালি আর নতুন বইয়ের গন্ধে আমরা নিমজ্জিত হই ক্রমাগত এবং অনবরত।

ভালো থাকুন। সৃজনে থাকুন। নববর্ষের আগাম শুভেচ্ছা!
0

সম্পাদকীয়

Posted in



ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে - lull before the storm, অর্থাৎ ঝড়ের আগের থমথমে পরিবেশ। কিন্তু এই যাকে ঝড় বলছি, তা কি ঝড় না অন্য কিছু? আপাতভাবে অতিমারির তাণ্ডব এখন অনেকটাই স্তিমিত; কিন্তু এরই মধ্যে বিশেষজ্ঞরা শুনিয়ে রেখেছেন তৃতীয় ঢেউয়ের সতর্কবার্তা, যা নাকি অনিবার্য।

বাণিজ্যমহল দেখছেন সিঁদুরে মেঘের সংকেত। গতবারের লকডাউনের পরও কয়েক মাসের মধ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর একটা আভাস ছিল, এবার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিপরীত।

এদিকে খবরে প্রকাশ, এ বছর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হচ্ছে না। সাবধানতা অবলম্বনের জন্যই নাকি এই সিদ্ধান্ত। আর যে কারণে এই ব্যবস্থা তথা অবস্থা, তা আমরা সকলেই জানি। পর্যাপ্ত টিকাদান সুনিশ্চিত করা যাচ্ছে না!

ওদিকে ইউরোপের একাধিক দেশে আশ্চর্য এক অবিশ্রান্ত বর্ষণ আর জলপ্লাবনে শতাধিক মানুষের প্রাণহানীর মর্মান্তিক খবর বাতাসকে ভারি করে তুলেছে আরও...

আচ্ছা, আমরা কোনও জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি বসে নেই তো?

এরই মধ্যে সম্প্রতি হারালাম সাংবাদিক রাজীব ঘোষ ও চলচ্চিত্রকার গৌতম বেনেগালকে। এ ক্ষতি অপূরণীয়। তাঁদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা...

সতর্ক থাকুন, সুস্থ থাকুন

শুভেচ্ছা নিরন্তর

0

সম্পাদকীয়

Posted in




সম্পাদকীয় 

দেখতে দেখতে কাটতে চলেছে করোনা আক্রান্ত ২০২০। এমন ঘটনাবহুল বারোটা মাস সম্ভবত আমাদের অনেকেরই কল্পনাতীত ছিল। লকডাউন শব্দটির সঙ্গে আমরা পরিচিত হয়েছি এই সময়ের মধ্যেই। শিখেছি কীভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে একে অপরের সঙ্গে মেলামেশা করা যায়। যাকে সত্যিই মেলামেশা বলা যাবে কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। মানুষের তৈরি করা এই সমাজের রীতি নীতি আদব কায়দার সমীকরণ এই সাবধানী পদক্ষেপের ফলে ভেঙে পড়তে পারে কিনা সেটাও আলোচনার বিষয়বস্তু হতে পারে। এ কেমন সময় যখন করমর্দন, আলিঙ্গন বা চুম্বন অলীক হয়ে উঠলো? তবুও তো আমরা স্বপ্ন দেখবো, অপেক্ষা করবো নতুন এক ভোরের। ফেলে আসা দিনগুলো দুঃস্বপ্ন বলে মনে হবে।

নববর্ষের শুভেচ্ছা সকলকে!
1

সম্পাদকীয়

Posted in

সম্পাদকীয়

নৈরাজ্যবাদীরা সমাজের অর্থনৈতিক সংগঠনের রূপরেখা যেভাবে ভেবেছেন, তার থেকে সমাজবাদীদের চিন্তা খুব একটা ভিন্ন নয়; শাসনের প্রক্রিয়া সম্বন্ধে তাঁদের ধারণাটাই শুধু আলাদা। নৈরাজ্যবাদীরা মনে করেন যে, সরকার সমস্ত শাসিত জনগণের মতের উপরে ভিত্তি করে চলবে, শুধুমাত্র সংখ্যা গরিষ্ঠের নয়। অস্বীকার করা যায় না যে, সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসনও সংখ্যালঘিষ্ঠের শাসনের মতোই মানবিক স্বাধীনতার পরিপন্থী। সংখ্যাগরিষ্ঠের 'অনুপম' ক্ষমতার কারণ মতবাদের গোঁড়ামি ছাড়া আর কিছুই নয়। একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তার সেই সমস্ত শ্রেষ্ঠ নাগরিকদের দমন-পীড়নে পর্যুদস্ত করতে পারে, বিশেষত যাঁদের স্বাধীন চিন্তার বিকাশ প্রগতির পক্ষে অপরিহার্য উপাদান হিসাবে পরিগণিত হয়, যা অবশ্যই অত্যন্ত গুরুতর এক চিন্তার বিষয়। তবে এ ইতিহাস নতুন নয়। এই গভীর দুশ্চিতার পরিপ্রেক্ষিতে এনকাউন্টার বা এন আর সি/ক্যাব ঠিক কিনা-কে উপলক্ষ্য বলেই প্রতিভাত করা যায়, মূল উদ্দেশ্য কখনই নয়! এমতাবস্থায় শুধু প্রত্যাশা এইটুকুই যে, দেরিতে হলেও সব কিছু সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই সমস্ত পক্ষেরই নিদ্রা ভঙ্গ হবে।

সচেতন থাকুন, সাবধান থাকুন

শুভেচ্ছা নিরন্তর
7

সম্পাদকীয়

Posted in

সম্পাদকীয়


সবেমাত্র চলে গেলো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। কত জাঁকজমক, কত আড়ম্বর। প্রসঙ্গক্রমে হঠাৎই মনে পড়ে গেলো জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়ির দুর্গাপুজোর কথা। ভাবতে অবাক লাগে, তত্ত্ববোধিনী সভা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার দশ বছর পরেও ঠাকুরবাড়িতে দুর্গাপুজো হতো। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ এই সময়টা ইচ্ছে করেই কাটাতেন প্রবাসে। তবে দ্বারকানাথ অত্যন্ত দরাজ হস্তে প্রচুর খরচ করতেন। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির মা দুর্গাকে খাঁটি সোনার গয়না দিয়ে সাজানো হতো এবং সালংকারা সেই প্রতিমাকেই বিসর্জন দেওয়া হতো গঙ্গায়। ক্ষিতীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিকথায় পাওয়া যায় সে কথা, ‘...ভাসানের সময়েও সে গহনা খুলিয়া লওয়া হইত না—সম্ভবত ভাসানের নৌকার দাঁড়ি মাঝি বা অন্য কর্মচারীরা তাহা খুলিয়া লইত, কিন্তু প্রতিমার গা-সাজানো গহনা আবার ঘুরিয়া ফিরিয়া বাড়িতে উঠিত না।’ আবার এই বাড়ির কনিষ্ঠ পুত্রটিই ১৯৩৫ সালের ২৯ আগস্ট একটি ব্যক্তিগত চিঠিতে রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়কে লিখলেন, ‘এখানকার বন্যাপীড়িতদের সাহায্যার্থে অর্থসংগ্রহ-চেষ্টায় ছিলুম। ব্যক্তিগতভাবে আমারও দুঃসময়। কিছু দিতে পারছিলুম না বলে মন নিতান্ত ক্ষুব্ধ ছিল। এমন সময় দেশ ও আনন্দবাজারের দুই সম্পাদক পূজার সংখ্যার দুটি কবিতার জন্যে এক শ টাকা বায়না দিয়ে যান, সেই টাকাটা বন্যার তহবিলে গিয়েছে। আগেকার মতো অনায়াসে লেখবার ক্ষমতা এখন নেই। সেইজন্যে ‘বিস্ময়’ কবিতাটি দিয়ে ওদের ঋণশোধ করব বলে স্থির করেছি। ক্লান্ত কলম নতুন লেখায় প্রবৃত্ত হতে অসম্মত।’ ... বাহ রে বাঙালি!

কথায় কথা বাড়ে। রবীন্দ্রনাথকে মনে পড়লে নোবেলের কথা আসবেই। আর নোবেলের কথা এসেই গেলে এই মুহূর্তে অভিজিতের কথা এড়িয়ে যাই কি করে? হ্যাঁ, অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জী; সাউথ পয়েন্ট, প্রেসিডেন্সি, জে এন ইউ, ভি সি ঘেরাও, ১০ দিন তিহার জেলে কাটানো, শেষে ‘চ্যানেল করে’ নোবেল বাগানো। মাঝে পরকীয়া, বিপথু সন্তানের আত্মহনন, বিবাহবিচ্ছেদ...

দাঁড়ান, দাঁড়ান... সমস্যাটা ঠিক কোথায়? নোবেল পাওয়ায়, নাকি সাফল্য অর্জন করায়?  এই নোংরামীর পিছনের আসল উৎসটা কি? উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনৈতিক অপপ্রচার, নাকি আদিম ঈর্ষা? আমরা খেয়ালই করি না, এই মারাঠি মায়ের কৃতী সন্তানটি কিন্তু মাতৃভাষায় বলতে অনুরোধ করা হলে নির্দ্বিধায়, না মারাঠি নয়, বাংলায় বলে ওঠেন! কি আশ্চর্য!

একটু বিস্তারিতই বলি। গণতান্ত্রিক(?) প্রক্রিয়ার নির্বাচন করে যে রাষ্ট্র প্রধানকে আমরা গণপ্রতিনিধি হিসাবে শাসন যন্ত্রের শীর্ষে বসাচ্ছি, একদিন সেইই  ঠিক করে দিচ্ছে আমরা কী খাবো, কী পরবো, কী পড়বো, এমনকি কী চিন্তা করবো, কোন রাস্তায় চিন্তা করবো। জাস্ট নেওয়া যাচ্ছে না আর! আর ওই আদিম ঈর্ষার কথা বলছিলাম না, ওটা মনে হয় ঠিক বলছিলাম না। কেননা, আদিম ঈর্ষার প্রেক্ষাপটে সক্রিয় ছিলো স্বচ্ছ জান্তব প্রতিদ্বন্দ্বিতা; এখনকার মতো হীনমন্যতা নয়! - আমি পাচ্ছি না, তুমি কেন পাবে!- মানবিকতার কি চরম দীনতা!

এমনিতেই হেমন্ত বিষণ্ণতার ঋতু। আরও বিষণ্ণতা ওঁৎ পাতে আনাচে কানাচে... অথচ

কথা ছিলো রক্ত-প্লাবনের পর মুক্ত হবে শস্যক্ষেত...
কথা ছিলো, কথা ছিলো আঙুর ছোঁবো না কোনোদিন...
কথা ছিলো, চিল-ডাকা নদীর কিনারে একদিন ফিরে যাবো...
একদিন সুবিনয় এসে জড়িয়ে ধ’রে বোলবে: উদ্ধার পেয়েছি...
– রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ

সুস্থ থাকুন, সৃজনে থাকুন
শুভেচ্ছা নিরন্তর
0

সম্পাদকীয়

Posted in

সম্পাদকীয়


'তখনও সেখানে 
পেঁজা তুলোর আকাশ ছিলো, 
সাদামেঘের ডাক ছিলো
শিউলি ফোটার সকাল ছিলো
শিশির ভেজা ঘাস ছিলো
কাশফুলের পালক ছিলো
ডাকের সাজের দুগগা ছিলো
বুকে ভালোবাসাও ছিলো

আর ছিলো সে...'


প্রকাশিত হলো ঋতবাক শরৎ সংখ্যা। এভাবে তো বলি না কখনও! সচরাচর বলি, 'প্রকাশিত হলো ঋতবাক ষষ্ঠ বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যা'। আসলে সেদিন কৃষ্ণপ্রিয়র লেখা একটা বইয়ের ভূমিকার পাণ্ডুলিপির নিচের স্বাক্ষরে দেখলাম কৃষ্ণপ্রিয় লিখেছেন, শরৎ, ১৪২৬; হঠাৎ খেয়াল হলো শরৎ এসে গেছে!

এখন তো আলাদা করে ঋতু বোঝার উপায় প্রায় নেইই। সারা বছরই আবহাওয়া মোটামুটি একই রকম। মিশ্র। অথবা হয় প্যাচ প্যাচে গরম, নয়তো ঘ্যান ঘ্যানে বৃষ্টি! অভিমানী প্রকৃতিও কেমন নির্বিকার, নিস্পৃহ; দিন দিন হারাচ্ছে তার বৈচিত্র্য। 

এই যে এখনও যাঁরা বুঝতেই চাইছেন না আগামী কুড়ি বছরের মধ্যেই আসছে সেইসব ভয়ঙ্কর দিন, এখনও যাঁদের প্রাণের ভেতরটা হু হু করে উঠছে বিছানার গদির নিচে জমানো প্লাসটিক ব্যাগগুলোর কথা ভেবে, তাঁদের জন্য আমারও খুব মন খারাপ লাগছে, জানেন!

অবশ্য উল্টোদিকে সেই তাঁদের কথাও বলা উচিত, ওই যাঁরা সারাদিন-রাত চাকরী করছেন সব নামী নামী মাল্টিন্যাশানাল কম্পানীর হাই হাই পোস্টে; অথবা অন্য কোথাও, অন্য কোনোখানে... এঁরা কিন্তু তাও ভাবেন। এই পৃথিবীর কথাই ভাবেন, সত্যি বলছি। গ্লেন বা নিদেন পক্ষে অ্যাবসল্যুট হাতে নিলে এসব কথা ভাবাই দস্তুর। তাই ভাবেন। 

আসলে, বিদেশ থেকে আনা সাড়ে উনিশ হাজার টাকা দামের বিয়ন্সে হিটের গন্ধে শিউলির মৃদু সুবাস চাপা পড়ে গেছে সেই কবে...

আজকাল আর 'রাই জাগো, রাই জাগো' গেয়ে ভোরেরবেলা গোঁসাই ঠাকুর ঘুম ভাঙান না যে! তাই আমাদের ঘুম ভাঙতে বেশ বেলা হয়, অনেক দেরিতে... তাই সবেতেই লেট... লাল 'কালি'র দাগ পড়ে!!

আসুন, বেশি বেলা হয়ে যাওয়ার আগে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করি... 

শুভাচ্ছা নিরন্তর
0

সম্পাদকীয়

Posted in


সম্পাদকীয়



ঋতবাক ৫ম বর্ষ, ১২তম সংখ্যা। সময়টা স্মৃতিমেদুর। পাঁচ বছর পূর্ণ করে ছয়ে পা দিতে চলেছে ঋতবাক। একটা পথ চলা। সব সময় সমান যায়নি। অনেক উত্থান পতন, তবু দিশা পরিবর্তন হয়নি। যাঁরা ছিলেন, যাঁরা আছেন, সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা। 

বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আমাদের আনন্দ ঘোষণা, এই সংখ্যা থেকে পত্রিকার কার্যনির্বাহী সম্পাদকের পদ অলংকৃত করবেন বন্ধুবর শিশির রায়, সাহিত্য জগতে যাঁর পরিচয় দিতেই লাগে না। আমরা সম্মানিত বোধ করছি।

এদিকে আশেপাশে চলছে অনেক কিছুই। ডাক্তার পেটানো, বিশ্বকাপে ভারতের পারফরমেন্স, রাজনৈতিক গুলতানি, ইত্যাদি প্রভৃতি। কিন্তু জরুরী একটা বিষয় বহুল ঘটনা স্রোতের মধ্যেই ভুস করে কেমন ভেসে উঠেই তলিয়ে গেল। খানিকটা চাপান উতোর হলো অবশ্য, তবুও কিছু প্রশ্ন রয়েই গেল। 

বলি খোলসা করেই! হ্যাঁ, বিষয়টা - জল। পরিসংখ্যান বলছে, পৃথিবীর পুরো পেয় জলের মাত্র কমবেশি ৫% গার্হ্যস্থ কাজে ব্যবহার করা যায়। অনেক অপচয় করলেও, যদিও সেটা একেবারেই কাম্য নয়, তবুও ১০%এর বেশি খরচ হয় না। বাকি ৯০% জল খরচ হয় কৃষি এবং শিল্পে। 

প্রথমে ধরা যাক, কৃষির কথা। যে কোনও দেশের কৃষি ব্যবস্থা বেড়ে ওঠে সে দেশের জলবায়ু বা আবহাওয়ার আনুকূল্যে। কিন্তু এখন যে সব উচ্চ ফলনশীল শস্য সারা বছর ধরে চাষ করা হচ্ছে, তাতে যে বিপুল পরিমাণ জলের প্রয়োজন, তার যোগান আসছে কোথা থেকে? 

এর পরে যদি শিল্পের কথায় আসি, সেখানেও তো অবস্থা তথৈবচ। ওই যে, ১ লিটার সফট ড্রিঙ্ক বানাতে ৭ লিটার জল অপচয় হয়, একথা এখন সবাই জানে। সবচেয়ে ভয়ানক কথা হলো মাটির নীচ থেকে যথেচ্ছ জল তোলায় কোনও বাধা নেই। মাটি যার মাটির নিচের জলও তার। আশ্চর্য নিয়ম!

আরও আশ্চর্যের বিষয়, এখনও পুকুর বোজানো, পুকুরের পাড় বাঁধিয়ে ফেলা, যথেষ্ট পরিমাণে গাছ না লাগানো হয়েই চলেছে। কোনও এক অজ্ঞাত কারণে, পুরসভার অনুমতিপ্রাপ্ত বহুতলগুলিতে রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং মাস্ট নয়। যথেচ্ছভাবে মাটির উপরিতল কংক্রিটে মুড়ে ফেলাও বারণ নয়...

কি হচ্ছে এসব!

আকাটেও নিজের বাড়ির যত্ন নেয়! বাড়ি না থাকলে থাকবো কোথায়? কি জানি, বাবা

সচেতনতার উদয় হোক, একে আত্মসচেতনতাই বলা ভালো...

শুভেচ্ছা নিরন্তর
0

সম্পাদকীয়

Posted in


সম্পাদকীয়

শুভ বিজয়ার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রকাশিত হলো ঋতবাক ষষ্ঠ বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা।

আজ আশ্বিন মাসের শুক্লা একাদশী তিথি। বাঙ্গালীর সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর রেশ এখনও কাটেনি। এই লেখা যখন লিখছি, বাইরে ঢাকের আওয়াজ, প্রতিমা নিরঞ্জনের মিছিল। 

মনটা ভারী হয়ে ওঠে। না, মা চলে যাচ্ছেন, সেই আবেগে নয়। কেননা জানি, যাওয়া তো নয় যাওয়া! এ তো ফেরার আয়োজন! মন ভারী হয়ে ওঠে অন্য কারণে। বিষদেই বলি।

"দুর্গা পুজোয় জগজ্জননী বসুন্ধরা হয়ে ওঠেন বিশ্বরূপা, ভয়ঙ্করী আদ্যাশক্তি রূপান্তরিতা হন শুভঙ্করীতে। এই জীবন প্রতিমতা থেকে জন্ম নেয় তার প্রতিমা। মাতৃপূজা হয়ে ওঠে মুক্তির পূজা, মানুষের পূজা। গার্হস্থ্য গরিমায় তিনি দেখা দেন মানবীমূর্তিতে।" - শাস্ত্র ও সাহিত্যের কচকচানি।

কিন্তু বাঙ্গালীর আগমনী এবং বিজয়া তো মূলতঃ বাংলার মাতৃহূদয়ের গান। এক অর্থে, বাঙ্গালীর কন্যা-পূজা। কিন্তু বছরের বাকি দিনগুলোয়? 

মানি, বাঙ্গালী সচেতন হয়েছেন। কিন্তু যথেষ্ট সচেতন হয়েছেন কি? এখনও মেয়ে জন্মালেই ইনভেষ্টমেন্ট স্কীম অ্যানালিসিসে বসে যান বিচক্ষণ অভিভাবক। "অঞ্জলীর মান্থলি স্কীমে ১২ মাস জমালে এক মাস ফ্রী"! ...সত্যিই কিন্তু এখনও অধিকাংশ মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত বাঙ্গালী পরিবারের এটাই অত্যন্ত পরিচিত একটা চিত্রপট। 

তবুও আশার কথা, দিন একটু একটু করে বদলাচ্ছে। সেদিন শুনলাম, এক মধ্যবিত্ত পিতা তাঁর একমাত্র কন্যাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আমার যা টাকা আছে, তাতে করে হয় তোমায় ম্যানেজমেন্ট পড়াতে পারি, নয়তো বিয়ে দিতে পারি; তুমি কি চাও? মেয়ে এখন বড়ো কম্পানীতে উচ্চপদে চাকরীরতা। 

কিন্তু মানতেই হবে, এখনও এই চিত্র বিক্ষিপ্ত, অপ্রতুল, দুর্লভ। আসলে আমাদের কন্যা-পূজা সেই দিনই সার্থক হবে, কোনও পিতার জিজ্ঞাসার অপেক্ষা না রেখে যেদিন বিয়ে দেওয়া নয়, কন্যাকে স্বাবলম্বী করে তোলাটাই সমাজের নিয়ম হয়ে দাঁড়াবে আর 'কন্যাদায়গ্রস্ত' শব্দবন্ধটি অভিধান থেকে অপ্রতুল ব্যবহারে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

সুস্থ থাকুন, আনন্দে থাকুন, সৃষ্টিতে থাকুন...

শুভেচ্ছা নিরন্তর।
0

সম্পাদকীয়

Posted in


সম্পাদকীয়


প্রকাশিত হলো ঋতবাক ষষ্ঠ বর্ষ, প্রথম সংখ্যা। এতদিন পরেও সম্পাদকীয় লিখতে বসে -যে-কথা বলিতে চাই, / বলা হয় নাই, / সে কেবল এই– / চিরদিবসের বিশ্ব আঁখিসম্মুখেই / দেখিনু সহস্রবার / দুয়ারে আমার। / অপরিচিতের এই চির পরিচয় / এতই সহজে নিত্য ভরিয়াছে গভীর হৃদয় / সে-কথা বলিতে পারি এমন সরল বাণী / আমি নাহি জানি।

অকপট স্বীকারোক্তি। কিন্তু সব সময়, সব পরিস্থিতিতে দোষ-গুণ স্বীকার করে নেওয়া কি এতই সহজ! কিম্বা ধরুন, স্বীকার করে নেওয়াই গেল, দোষ আমার! কিন্তু আমার দোষের কারণে ঘটে যাওয়া বিপর্যয়, যা অনেকের বিপর্যয়, এমনকি, প্রাণ নাশেরও কারণ হলো, তাকে তো আর বদলানো যাবে না কোনও ম্যাজিকেই! 

মাঝেরহাটের সেতু ভেঙ্গে পড়ে, বাগরি মার্কেটে প্রায় চার দিন ধরে জ্বলতে থাকে আগুন। আমরা ভুলে যাই কেরলের সেই বন্যা-তাড়িত মানুষগুলোর কথা। মনে পড়েনা ফুটপাথে ধর্ণায় বসা ছেলেদের শুকনো বিষণ্ণ মুখগুলো। সব ভুলে যাই। না, সব ভুলে থাকি। ফেসবুকবাজি শেষ হলে নিমগ্ন হই আত্মরতিসুখ আস্বাদনে। আসলে 'আত্ম' শব্দটি গৌরব হারিয়ে 'আমি'তে এসে ঠেকেছে, আর গতিক দেখে 'আত্মীয়' শব্দটি অবলুপ্তির রাস্তা ধরেছে।

তবুও কিছু অবশিষ্ট থেকেই যায়। পার হয়ে আসা বছরগুলো তারই সাক্ষ্য বয়ে চলে। তবুও আশ্বিন আসে। কাশ আর শিউলি, সাদা মেঘ আর ভোরের শিশির জানান দেয় আসছে উৎসবের দিন। আসন্ন উৎসবের আয়োজনে মেতে উঠুন। তবুও কখনও কখনও 'আপন হতে বাহির হয়ে বাইরে'ও দাঁড়ান। সচেতন হোন, সহমর্মিতা অনুভব করুন। 

সুস্থ থাকুন, আনন্দে থাকুন, সৃষ্টিতে থাকুন

শুভেচ্ছা নিরন্তর
0

সম্পাদকীয়

Posted in

সম্পাদকীয়

"এমন করিয়া চার পাঁচ বছর কোথা দিয়া যে কেমন করিয়া কাটিয়া গেল তাহা চোখে দেখিতে পাইলাম না।"

রবিপ্রদক্ষিণপথে ঋতবাকের পাঁচে পা। 

'তোমরা রচিলে যারে 
নানা অলংকারে
............
বাহির হইতে
মিলায়ে আলোক অন্ধকার
কেহ এক দেখে তারে, কেহ দেখে আর।
খণ্ড খণ্ড রূপ আর ছায়া,
আর কল্পনার মায়া,
আর মাঝে মাঝে শূন্য, এই নিয়ে পরিচয় গাঁথে
অপরিচয়ের ভূমিকাতে।'

তিনিই বলে দিলেন সমস্তটুকু। মনে পড়ছে জন্মক্ষণটি। সেদিন যাঁরা ছিলেন সঙ্গে, আজও আছেন। কেউ সক্রিয়ভাবে, কেউ প্রচ্ছন্নভাবে অন্তরালে। তবু আছেন। মাঝে কতজন এলেন, চলেও গেলেন। কেউ কেউ রেখে গেলেন অনেক কিছু। আবার অনেকেই শুধু নিয়েই গেলেন দু'হাত ভরে। কত প্রতিভা আবিষ্কৃত হলো, কত প্রতিভা নির্মূল হলো জন্মমুহূর্তেই। আর রইলেন আপনারা... অনন্ত শুভেচ্ছা নিয়ে। 

এই দীর্ঘ অতীত পথ সবসময় সুগম ছিলোনা, স্বভাবতই। অনেকেই চেষ্টা করেছেন অন্তর্ঘাত করতে, ক্ষতি সাধন করতে। কিন্তু ওই যে, শুভ আর সত্যের জয় রোধ করা যায়নি কোনও দিনও!

এই ক'বছরে সঞ্চয়ও তো বড়ো কম নয়! বহু সুখস্মৃতি আজ ভীড় করে আসছে। এক একটা মাইলফলক আমরা উদযাপন করেছি একসঙ্গে। সত্যিই সকলে না থাকলে আজকের এই দিনটি আসতোই না। 

কাজের কথা হবে অন্য কোথাও অন্য কোনও দিনে... আজ শুধু সুখানুভবে আবিষ্ট হওয়ার দিন। 

এমনি করেই সঙ্গে থাকুন

শুভেচ্ছা নিরন্তর
শব্দঋণ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
0

সম্পাদকীয়

Posted in



সম্পাদকীয়


বার বার নষ্ট হয়ে যাই
একবার আমাকে পবিত্র
করো প্রভু, যদি বাঁচাটাই
মুখ্য...

-শক্তি চট্টোপাধ্যায়


প্রকাশিত হলো ঋতবাক চতুর্থ বর্ষ, দ্বাদশতম সংখ্যা। অর্থাৎ পায়ে পায়ে পাঁচে পড়লো ঋতবাক। আনন্দে আপ্লুত হয়ে খুশীতে আত্মহারা হওয়ার কথা। কিন্তু, বিশ্বাস করুন, পারছি না। বিস্বাদ লাগছে! সব কিছু! বিবর্ণ পৃথিবী! 

কি অবলীলায় বিশ্বকাপে মেতে উঠি, সেলফি-ঝড়ের বন্যা বইয়ে দিই। ওদিকে ছেলেগুলো মরছে! দশদিন আগে যখন ওরা প্রতিবাদ শুরু করেছিলো, একবার হিসেব করে দেখুন তো - কি করছিলাম আমরা। না, না - তখন সময় ছিলোনা!

ডিগ্রী কলেজে ভর্তির থার্ড লিস্ট বেরলো না। গাল ভরা অ্যানাউন্সমেন্ট - ব্যাকডোর অ্যাডমিশন বন্ধ! ওয়ারেন্ট বেরলো কয়েকটা ছোটো ছোটো বিশ-বাইশ বছর বয়সী ছেলের নামে, যারা দালালি করছিলো। ক্যয়া বাত!

সত্যি বলুন তো, ওরাই কি আসল অপরাধী? 

অবশ্য অনলাইন অ্যাডমিশন আবার খুলেছে... আসলে এখন, মানে বিশেষ করে আজকের দিনটার জন্য অ্যাডমিশন রি-ওপন করা খুব জরুরি ছিলো...

শুধু, মেডিক্যল কলেজের ঘাড়-ট্যারা ছেলেগুলোকে যদি কিছু করে বাগে আনা যেত, অন্তত এই সময়ে...! একটাই যা রক্ষে, মেডিক্যল-পড়া ছেলেগুলো ডিগ্রী কলেজে পড়া ছেলেগুলোর মতো সংখ্যায় অত বেশী নয়! তবে, শহিদও তো চাই! না হলে 'দিবস' পালন হবে কি করে?
-
-
-
-
কতবার তো নষ্ট হলাম, একবার পবিত্র হতে পারছি না কেন!
0

সম্পাদকীয়

Posted in





































সম্পাদকীয়


ধর্মপত্নী হবে নারী?
শ্রেষ্ঠ কবিতা হবো
যুগপৎ সঙ্গম শয্যায়...

ধন্য বাঙালি! গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর প্রকোপে প্রাণ অতীষ্ঠ। তবুও বাঙালি তার প্রিয় নারীর মুখশ্রীতে খোঁজে সহস্র বছরের ভাষ্কর্য, বিচারে বসে ওষ্ঠচাপা হাসির ণত্বষত্ব ব্যাকরণ নিয়ে, বয়ঃসন্ধি রসায়নে আদর তন্দ্রার জন্মবীজ আহরণে নিষ্ঠ হয়! বাঙালি এমনই। 

প্রসঙ্গক্রমে, গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর কথা যখন উঠেই পড়লো, তখন এ বিষয়ে একটি ইন্টারেস্টিং পয়েন্ট অফ ভিউ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার না করে পারছি না। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে আমরা সকলেই জানি, গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্ব উষ্ণায়নের মূল কারণ দূষণ তথা গ্রীনহাউস এফেক্ট - যার ফলে প্রতিনিয়ত পৃথিবীর সামগ্রিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে, মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাবে, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পাবে এবং অবশ্যম্ভাবী ফলস্বরূপ পৃথিবী তথা মানব সভ্যতা সময়ের বহু আগে ধ্বংস হবে। 

এই পুরো ডিক্লারেশনটার মধ্যে কেমন যেন একটা "যেমন পাপ করেছিস, তেমন ফল ভোগ" - বা "দেখ কেমন লাগে" - গোছের বার্তা লুকিয়ে রয়েছে। প্রকৃত ঘটনাটি কি, একবার তথ্য-পরিসংখ্যানে চোখ বুলিয়ে দেখা যাক। 

বিশ্ব উষ্ণায়নের মূল কারণ গ্রীনহাউস গ্যাসের প্রতিক্রিয়ায় দূষিত হয় জলীয় বাষ্প ৩৬%, কার্বন-ডাই-অক্সাইড ৯%, মিথেন ৪%, ওজোন ৩% (ন্যুনতম)। তার মানে, সাকুল্যে ৫২% দায় মানুষের। তাহলে বাকি দায় কার? শুনলে অবাক হবেন, বাকি দায় প্রকৃতির নিজের। 

আসুন, পৃথিবীর ইতিহাসের দিকে একবার ঘুরে দাঁড়িয়ে দেখি। মনে রাখবেন, আমরা মানব সভ্যতার ইতিহাস দেখতে চাইছি না, দেখতে চাইছি পৃথিবীর ইতিহাস। আজ থেকে আনুমানিক ১৫/২০ কোটি বছর আগে, ডাইনোসররা তখনও পৃথিবীর বুকে রাজত্ব করছে দাপটে। বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা এখনকার তুলনায় ১২ গুণ বেশী, পৃথিবীর সামগ্রিক তাপমাত্রা এখনকার তুলনার কয়েক গুণ বেশী, মেরু প্রদেশে নেই বরফ, সমুদ্রের উচ্চতাও এখনকার তুলনায় ১০০ থেকে ২৫০ মিটার উঁচু।

তাহলে? তাহলে বিষয়টা হলো এই যে, পৃথিবীর তাপমাত্রা হ্রাস বা বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ হলো সোলার ভ্যারিয়েশন বা সূর্যের তাপমাত্রার হ্রাস বা বৃদ্ধি, যা মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আসলে বলতে বাধ্য হচ্ছি, বিশ্ব উষ্ণায়ন এখন নিজেই একটা সিস্টেম ও ইন্ডাস্ট্রি এবং আধুনিক পপ কালচারের একটা অবিচ্ছেদ্য অঙ্গও বটে। গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ন্ত্রণের যে গাইড লাইন দেওয়া হচ্ছে, তা স্রেফ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রপাগান্ডা ছাড়া আর কিছুই নয়। এর পিছনে পুরোদমে কাজ করছে বিশ্বরাজনীতির একটা নোংরা চক্র যার টিকিটি বাধা আছে অর্থ নামক এক অনর্থের কোল আঁচলে। 

এমতাবস্থায়, প্রাকৃতিক সম্পদকে যথেচ্ছ নষ্ট না করে যত্ন করে কিপটের মতো রেখে রেখে ব্যবহার করা, আর সম্পদগুলির পুনঃপ্রতিস্থাপন (সৌরশক্তি, জল, বন ও বায়ু সম্পদ, মূলত)করা ছাড়া আমাদের আর কিছু করার আছে বলে মনে হয় না। 

তাই, বাঙালি যা করছে, ঠিক করছে। তাইই করা উচিৎ। নিজের বসতবাটি সামলাও আর সাহিত্য করো।

শুভেচ্ছা নিরন্তর


তথ্য- গুগলমামা
4

সম্পাদকীয়

Posted in



সম্পাদকীয়


মধ্যদিনে যবে গান বন্ধ করে পাখি,
হে রাখাল, বেণু তব বাজাও একাকী…

উদগ্র উত্তাপে শহর উদ্‌ভ্রান্ত… তবুও বাঙালীর সাহিত্য রসবোধে টান ধরানোর সাধ্য নেই স্বয়ং প্রকৃতিরও। এমাসেই গেল বাঙালীর অন্যতম প্রধান উৎসব, রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী। একজন মানুষ (নাকি অতিমানুষ!) জন্মের ১৫৮ বছর পরেও কি অসম্ভব প্রাসঙ্গিক এবং আধুনিক, ভাবতেও আশ্চর্য লাগে। 

কিন্তু একইসঙ্গে একথাও মনে হয়, রবীন্দ্রনাথের যথার্থ এবং সম্পূর্ণ মূল্যায়ন বুঝি আজও হয়নি। এখন আর শুধু আলোচনা ভালো লাগে না... এবার সময় হয়েছে তাঁকে যথার্থ উপলব্ধি করার। ‘তিনি আমার প্রাণের আরাম আত্মার শান্তি মনের আনন্দ’... এ কথা বার বার উচ্চারণ করলেই শুধু হবে না আর... এবার এই আরামকে, শান্তিকে, আনন্দকে সুগভীর ভাবে জীবনের স্বতঃস্ফূর্ততায় মিলিয়ে দিতে হবে। আর এই ভাবেই হয়তো তাঁর যথার্থ এবং সম্পূর্ণ মূল্যায়ন করে তাঁকে পূর্ণাঙ্গ শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা যাবে। 

এই শ্রদ্ধা নিবেদনের ধারায় ঋতবাকের এবারের প্রয়াস 'ঝরনাতলার নির্জনে'। রবীন্দ্র গানের বিবর্তন বিষয়ে লিখছেন শিবাংশু দে। ধারাবাহিক ভাবে, আগামী কয়েক মাস ধরে। 'জোড়াসাঁকো জংশন ও জেনএক্স রকেটপ্যাড'। লেখকের নিজের ভাষায় - ক্লান্তিহীন যাত্রাপথের গান, শুধু কি আনন্দে? নাহ, মানুষের যাবতীয় ভাবনার শ্রমসংহিতা, সবাইকে জায়গা করে দেওয়ার অলিখিত ঈশ্বরী দায় , একলা ইঞ্জিনের পিছনে অন্তহীন সারিবাঁধা কামরার ঝমঝম সিম্ফনি .... রবীন্দ্রসঙ্গীত 

নিয়মিত বিভাগগুলির সঙ্গে সঙ্গে থাকছে রবীন্দ্র-বিষয়ে আরও বেশ কিছু লেখা। পাঠক বন্ধুদের অনেকদিনের অনুরোধে সাড়া দিয়ে এই সংখ্যা থেকে শুরু হলো নতুন বিভাগ 'ঋতু ম্যাডামের রান্নাঘর থেকে'। থাকছে দারুণ দারুণ সুস্বাদু সব রান্নার রেসিপি। 

সময় খুব দ্রুত বদলাচ্ছে। প্রত্যেক দ্বিতীয় বা তৃতীয় মানুষটির মুখ মুখোশে ঢাকা। মোকাবিলার হাতিয়ার সৎ সাহস, সচেতনতা আর কঠোর পরিশ্রম। সততা মানে সেন্স অফ কারেক্টনেস। সমস্ত প্রতিকুলতার মধ্যেও আমরা ভালো থাকবো। আমরা ভালো আছি।

শুভেচ্ছা নিরন্তর
0

সম্পাদকীয়

Posted in


সম্পাদকীয়


হুম। আবার বাংলা নিউইয়ার! ১৪২৫। অতএব একটা গোটা দিন সৌখিন পাঞ্জাবি-পায়জামা, লালপেড়ে শাড়ি খোঁপায় বেলফুল, ‘হ্যাপি নববর্ষ’, ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’। আর তারপর মাসখানেকের মধ্যে এই “২৫” সংখ্যাটা ক্রমে ক্রমে অস্পষ্ট হতে থাকবে আমাদের মগজে – তারপর ফের সেই একই চিত্রনাট্য – ‘এই গুরু, এটা যেন বাংলা কত সাল - ২৩ নাকি ২৬?’

এই আমাদের বিশুদ্ধ বাঙালিয়ানা – আমাদের কোনও শাখা নাই – নাম ও সহি মিলাইয়া লইবেন।


এগারো মাসের বাচ্চা কিম্বা আশি বছরের বৃদ্ধা - কারুর রক্ষে নেই – সবাই মেয়েছেলে – রোজকার সংবাদপত্রের একঘেয়ে খবর – বিরক্ত লাগে আজকাল – এরা কি আর কোনও খবর পায় না? প্রথম প্রথম মোমবাতি নিয়ে হাঁটতেও হয়েছে বেশ কয়েকবার – সন্ধ্যেবেলা অফিস থেকে ফিরে ফ্রেশ হয়ে হ্যান্ডলুম কটনের শাড়ী, মোটা করে কাজল আর বড়ো টিপ পরে সকলের সঙ্গে মিছিলে - যদিও আমার বাড়িতে কোনও এগারো মাস বা আশি বছর নেই! পরের দিন আবার একগাদা টাকা খরচ - স্পা করাতে! তবু – ইটস্‌ মাই সোশ্যাল রেস্পন্সিবিলিটি –

এও আমাদের বিশুদ্ধ বাঙালিয়ানা – আমাদের কোনও শাখা নাই – নাম ও সহি মিলাইয়া লইবেন।


কলেজলাইফে খুব লাল সালওয়ার পরতাম – পরতে ভালোও বাসতাম - অনেক পরেছি, পরতে পরতে রঙ নষ্ট হয়ে গেছে, তবুও – এখন সাদা শাড়ী পড়ি, নীল পাড় – বেশ লাগে – এখনকার ফ্যাশন!  ইদানিং আবার গেরুয়া ছেয়ে যাচ্ছে শপিংমলগুলো – নেক্সট মাসের স্যালারি পেলে – ভাবছি ...

হ্যাঁ, এও আমাদের বিশুদ্ধ বাঙালিয়ানা – আমাদের কোনও শাখা নাই – নাম ও সহি মিলাইয়া লইবেন।


ওমুকের ছেলে জয়েন্টে ক্র্যাশ করেছে – ওর ছ’টা মাস্টার ছিলো – তোমার সুপুত্রকে তো গুনে গুনে আট’টা দিয়েছিলাম – গত দু’বছর ধরে টেনেছি – স্মার্টফোন, ল্যাপটপ যেদিন চেয়েছে, পরেরদিনই এনে দিয়েছি – এই ইনভেস্টমেন্টের এই রিটার্ণ? আসলে আমারই বোঝা উচিৎ ছিলো – আরে বাবা, জিন বলে তো একটা ব্যাপার আছে, না? তোমার ছেলের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করাটাই ভুল – ওমুকের তো ওই চাকরি, আমি কাউন্সিলারকে দিয়ে সময় ও জায়গামতো পালিশ না দিলে এতদিনে পথে বসতো – ঈশ্‌, আমার ‘পেস্টিজ এক্কেবারে পাংচার’! 

আরে, এটাও আমাদের বিশুদ্ধ বাঙালিয়ানা – আমাদের কোনও শাখা নাই – নাম ও সহি মিলাইয়া লইবেন।


সামনে কবিপক্ষ – এই চল্‌, একটা পত্রিকা বের করি – বাংলায় লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশের সঠিক সময় এই কবিপক্ষে। কেন? আমরাই লিখবো – সদনে পঁচিশে বৈশাখ ধুন্ধুমার বিক্রি করবো সবাই মিলে – দে, চাঁদা দে – সাতদিনের মধ্যে লেখাপত্র জমা দে – তারপর কম্পোজ-প্রেস-বাইণ্ডিং অনেক কাজ –

ঠিকই ধরেছেন, এও আমাদের বিশুদ্ধ বাঙালিয়ানা – আমাদের কোনও শাখা নাই – নাম ও সহি মিলাইয়া লইবেন।

শুভেচ্ছা নিরন্তর
0

সম্পাদকীয়

Posted in

সম্পাদকীয়



'শব্দকে লুকিয়ে রেখে শব্দেরই তাজ্জব এই খেলা
গোধূলিবেলায়
যে লোকটা দেখিয়ে স্মিত হেসে 
পর্দার আড়ালে চলে যায়, 
তাকে গুরু মানি। 

কিন্তু একইসঙ্গে এও জানি,
এ-খেলা জীবনে কেউ তিনবার দেখে না। 
একবার সে দেখে তার শৈশবদিবসে
আরবার গোধূলিবেলায়
যখন সে আকাশে তার ক্লান্ত চোখ রাখে। 

সম্ভবত মহাকাশ তারই জন্য আঁকে
অনন্ত ইঙ্গিত ভরা নিশীথির স্থির চিত্রখানি।' [নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী] 


শব্দের আড়ালে শব্দের অনন্ত বিস্তারকে ছুঁতে চায় ঋতবাক। বিভিন্ন সংখ্যায় বিভিন্নভাবে। শব্দের নানান খাঁজ থেকে নিঃসৃত নানা রঙের বোধের আলকধারায় আশিরনখ ভিজিয়ে পবিত্র হতে চায়। ঋতবাক জানে, সাহিত্যের প্রথম পাঠ আমরা নিই শৈশবে। সোনার ঘটের মুখ সরিয়ে শব্দ দিয়ে ঢাকা সত্য অল্প হাসেন আমাদের পানে চেয়ে। তারপর, যা দেখেছি, তাকে আখর বাঁধনে বাঁধার চেষ্টা আমরা করে চলি জীবনভোর। ছোটদের জন্য লেখা সাহিত্য বাণীদেউলের সিঁড়ির প্রথম ধাপ। কিন্তু, এই লেখা ছাপান বড়রা, লেখেন বড়রা, কিনে দেন বড়রা। আর গোলটা বাধে এখানেই। বড়রা ধরে নেন ছোটদের তাই ভালো লাগে যা বাজারি আর মচমচে। একবার আশপাশে চেয়ে দেখুন। বাঁধা গতে ফেলা, চটজলদি ভালোলাগার উপকরণে তৈরি, একই জাতীয় লেখা হয়ে চলেছে বাংলা শিশু-কিশোর সাহিত্যে। অবিকল জাঙ্ক ফুডের মতো। অথচ, ভাত, কয়েক টুকরো মাংস, ভাজা পেঁয়াজ মিশিয়ে, নাড়াচাড়া করে, ক্যাওড়া জল ছড়িয়ে, খেতে দিলেই, আজও সোনামুখ করে খেয়ে নেয় ছেলেমেয়েরা। মানে, শুধু ইচ্ছে আর সৃষ্টিশীলতা চাই। পৌনপৌনিকতা নয়। এই কারণেই ঋতবাক, চতুর্থ বর্ষ, প্রথম সংখ্যায় আরম্ভ হয়েছিল শিশু-কিশোর বিভাগ। আর, দ্বিতীয় সংখ্যা, যা আমাদের পুজো সংখ্যাও, সম্পূর্ণভাবে শিশু-কিশোর সংখ্যা হিসেবে গড়ে তোলা হলো। ঋতবাকের প্রথম শিশু-কিশোর সংখ্যা। এ দায়টা নিতেই হলো। ভৌতিক কাহিনী, রূপকথা, কল্পবিজ্ঞান, কবিতা, ভ্রমণকাহিনী, প্রবন্ধ, কুইজ, মুক্তগদ্য, বইপত্তরের খবর সবই রইল। আর তার সঙ্গে রইল সিনসিয়ারিটি। ছোটদের জন্য না লিখলে কলম শুদ্ধ হয় না : এই বিশ্বাস।

এই সংখ্যায় ধারাবাহিকগুলো বেরোবে না। আবার পরের সংখ্যা থেকে বেরোবে। এছাড়া, এই সংখ্যা সম্পাদনার দায়িত্বে আছেন, অতিথি সম্পাদক সুস্মিতা কুণ্ডু। ভাবছি, এখন থেকে মাঝে মাঝেই বিশেষ সংখ্যা বার করে, নবীন প্রতিভাদের হাতে তার ভার ছেড়ে দেব। বাক্ এর কাছে, ঋতের কাছে দায়বদ্ধতা থেকেই এই কাজ করতে হবে। 

শুভকামনা নিরন্তর।