0
undefined undefined undefined

প্রবন্ধ - মনোজিৎকুমার দাস

Posted in




















মহাভারতের প্রধান মহিলা চরিত্র বলতে দ্রৌপদীকে আমরা বুঝি। তাঁর বিক্রমশালী পঞ্চ স্বামী। নিঃসন্দেহে তিনি এই মহাকাব্যের প্রধান নারী চরিত্র। তাঁর চরিত্রের গভীরতা ও সাহস মনে দাগ কাটে। কিন্তু দ্রৌপদী ছাড়াও মহাভারতে এমন অনেক অনেক নারী চরিত্র আছে, যাঁরা অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য অবদান রাখলেও কাব্যে উপেক্ষিতা থেকে গিয়েছেন। তাঁদের নাম সহসা কেউ মনেও আনে না

এমনই একজন উপেক্ষিতা নারী আহিল্যাবতী। এই নাগকন্যার জন্যই একদা প্রাণরক্ষা হয়েছিল দ্বিতীয় পাণ্ডব ভীমের। কিন্তু সেভাবে তাঁর কথা জানে না প্রায় কেউই। সর্পরাজ বশকের মেয়ে ছিলেন আহিল্যাবতী। তিনি অত্যন্ত সুন্দরী, বুদ্ধিমতী এবং প্রতিভাময়ী ছিলেন। নিজের ছেলেকে নিজের হাতে অস্ত্রবিদ্যা শিখিয়েছিলেন তিনি।

একদা মহাদেবের বাগান থেকে একটি ফুল চুরি করেছিলেন আহিল্যাবতী। তাঁর এই কাজে অত্যন্ত রেগে গিয়ে দেবী পার্বতী বসক-কন্যাকে মানবী জন্মের অভিশাপ দেন। তবে এই গল্পের শুরু আরও আগে। পঞ্চপাণ্ডব তখনও ছোট। দুর্যোধন ও শকুনি মিলে একবার ভীমকে বিষ খাইয়ে নদীর জলে ফেলে দেন। অচেতন অবস্থায় ভীম এসে পৌঁছন আহিল্যাবতীর নাগ-রাজ্যে। বুদ্ধিমতী আহিল্যা ভীমকে দেখেই তাঁকে দ্বিতীয় পাণ্ডব হিসেবে চিনতে পারেন। বিষক্রিয়ায় ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে ভীমের। আহিল্যাবতীর অনুরোধেই তাঁর বাবা নাগরাজ বশক মহাদেবে দেওয়া বর ব্যবহার করে ভীমের প্রাণ ফিরিয়ে দেন।
পরবর্তীকালে মানবীজন্ম নিয়ে ভীমের পুত্র ঘটোত্‍কচের সঙ্গে বিয়ে হয় আহিল্যাবতীর। আহিল্যাবতী ও ঘটোত্‍কচের ছেলে বারবারিক। তাঁকে যুদ্ধবিদ্যা শেখান আহিল্যাবতী নিজেই। ছেলের অন্তরে দয়ামায়ারও সঞ্চারও করেন তিনি। বারবারিকের প্রতিভায় খুশি হয়ে তাঁকে তিনটি অসাধারণ তীর উপহার দেন মহাদেব এবং অগ্নিদেব দেন একটি ধনুক। মা আহিল্যাবতীর থেকে শিখে অস্ত্রবিদ্যায় পারদর্শী বারবারিক মহাভারতের যুদ্ধেও পাণ্ডবদের পক্ষে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন।

0 comments: