35

গল্প - অসীম দেব

Posted in

কৈশোর যৌবনে ভ্যালেন্টাইন ডে কথাটাই আমরা শুনি নি। যদি কোনভাবে বিই কলেজে পড়াকালীন জানতাম যে ভ্যালেন্টাইন’স ডে কি বস্তু, তাহলে আমাদের কি অবস্থা হতো? আর আমাদের কলেজের টেলিফোন দাদুরই বা কি অবস্থা হতো? গল্পের খাতিরে ধরে নিচ্ছি যে কিছুক্ষনের জন্য আমরা বিই কলেজের ৭০ এর দশকে আছি। এবং ধরে নি যে ভ্যালেন্টাইন’স ডে ৭০এর দশকেও ছিলো।

একটা ভূমিকা। সেই সময় গোটা বিই কলেজ ক্যাম্পাসের হস্টেলের ১,২০০ ছাত্রছাত্রীর জন্য ছিলো একটিই মাত্র পাবলিক ফোন। আর আমাদের সকলের ফোনদাদু ছিলেন এক বহুল চর্চিত বর্ণময় চরিত্র, যিনি সারাদিন নাতনীদের ফোন রিসিভ করে ছেলেদের হস্টেলে হস্টেলে গিয়ে মেসেজ পৌঁছে দিতেন। ফোন করা অদেখা অপরিচিতা সব নাতনীরাই ছিলো তাঁর অত্যন্ত প্রিয়। এতটাই প্রিয় ছিলো যে ফোন এলে আমাদের দাদু সেই ফোন আর ছাড়তেই চাইতেন না। এবার সেই পটভূমিকায় একটি গল্প লেখার চেষ্টা করছি। সব চরিত্রই কাল্পনিক। দুর্ভাগ্যবশত যদি মিল দেখা যায়, সেটা নেহাতই কাকতালীয়।

*******

টেলিফোন দাদুর চিন্তার শেষ নেই। গতবারের ভ্যালেন্তিন দিবসের দিনটি বারবার মনে আসছে। এবার সেরকম হলে এই চাকরীট যে তিনি ছেড়েই দেবেন, সেরকম সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছেন। সে না হয় চাকরী ছেড়ে দেবেন। কিন্তু সামনের সপ্তাহেই ভ্যালান্তিন দিবসে যে উৎপাতগুলো হবে, ক্যাম্পাসের ১,২০০ অবাধ্য ছেলেমেয়েকে সেইদিন তিনি কিভাবে সামলাবেন? এখন বয়স হয়েছে। এই বয়সে সামলানো? এই বয়সে এত টেনশন নেওয়া যায়?

স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সেক্রেটারি ইন্দ্রনাথ বলে দিয়েছে যে আপনি বরং প্রিন্সিপালকে গিয়ে আপনার সমস্যার কথা বলুন। তাই দুর্গানাম জপ করতে করতে বেলা এগারোটা নাগাদ ফোনদাদু গেলেন প্রিন্সিপালের অফিসে। সেক্রেটারি হারানবাবু নিয়মমতনই জানতে চাইলেন, কি ব্যাপারে দেখা করতে চান?

ভ্যেলেন্তি দিবস নিয়ে ওনার সাথে কিছু কথা আছে।

হারানবাবু চায়ে চুমুক দিচ্ছিলেন। একটা বিষম খেলেন।

“ভ্যালেন্টাইন’স ডে? আপনার ভ্যালেন্টাইন’স ডে নিয়ে প্রিন্সিপাল স্যার কি করবেন?” হারানবাবু অবাক।

“সে অনেক লম্বা কথা, অনেক ঝামেলা আছে, তুমি সেসব বুঝবে না। আমি সেটা সোজা স্যারকেই বলবো।“

হারানবাবু আর কথা বাড়ালেন না। ফোনদাদু প্রিন্সিপালের ঘরে ঢোকার দরজা ফাঁক করে উঁকি দিয়ে দেখলেন। সব চেনা লোকেরাই আছেন, নিশ্চিন্তে কথা বলা যাবে। আবার দুর্গানাম জপ করে ঘরে ঢুকলেন।

“স্যার, একটা নিবেদন ছিলো। স্যার, জানি না, কিভাবে আপনাকে বোঝাবো। বলছিলাম, সামনের সপ্তাহেই তো ভ্যালেন্তিনন দিবস। তাই কিছু কথা ছিলো।“

শুধু প্রিন্সিপাল নয়, সেখানে উপস্থিত প্রফেসর তরুণ শীল, প্রফেসর সুনীল চৌধুরী, উপেন মৌলিক, ভঞ্জ স্যার, আর অন্য যারা ছিলেন সকলেই অবাক। এই সত্তর বছর বয়সী টেলিফোন দাদু ভ্যালেন্টাইন ডে নিয়ে আলোচনা করতে এসেছেন সোজা কলেজের প্রিন্সিপালের সাথে?

“স্যার, বলছিলাম, প্রতিবার ভীষণ গোলমাল হয়। এবারেও ঝামেলা হবে। সকাল থেকেই বাইরের সারা দুনিয়ার মেয়েরা আমাকে ফোন করবে। আর এছাড়াও...”

প্রিন্সিপাল আর দেরী না করে ওখানেই দাদুকে থামিয়ে দিলেন।

আরে? সে তো প্রতিদিনই আপনার নাতনীরা দাদু, দাদু করে ডেকে কত সুখদুঃখের কথা বলে। আর আপনার তো প্রচুর সুনামও আছে, আপনি নাতনীদের সাথে ফোনে অনেক কথা বলেন। এ তো নতুন কিছু নয়।


না স্যার, ঐদিন অনেক অনেক ফোন আসবে। আপনি বুঝতে পারছেন না স্যার।


ফোন এলে আসবে। রোজ দশটা ফোন আসে, সেদিন পঁচিশটা ফোন আসবে। আপনি রোজ যেভাবে আপনার নাতনীদের সাথে কথা বলেন সেভাবেই সেদিনও কথা বলবেন। এখানে সমস্যা কোথায়?

না, প্রিন্সিপাল স্যার ফোনদাদুর সমস্যা বুঝতেই চাইছেন না।

দাদু চলে গেলে প্রথমেই মুখ খুললেন প্রফেসর তরুণ শীল। “ওফ, গতবারের ভ্যালেন্টাইন’স ডে আমার মাথা খারাপ করে দিয়েছিলো। সকালে উঠেই দেখি আমার কোয়ার্টারের বাইরের সিঁড়িতে লাল গোলাপ ফুলের পাহাড়। জানি না ছেলের দল কখন যে রেখে গেছে। ঠিক যেন কবরখানা। একবার পরিস্কার করি, জঞ্জাল ফেলার জায়গায় ফুলগুলো ফেলে আসি, তো কিছুক্ষণ পরেই দেখি আবার সেই ফুলের পাহাড়। পরে শুনলাম, ঐ জঞ্জাল থেকেই ছেলেরা সেই ফুলই আবার তুলে নিয়ে এসে আমার বাড়ির সিঁড়িতে রেখে যায়। বোঝো এবার! আমার দুই মেয়ে তো রেগে ফায়ার।”

প্রফেসর সুনীল চৌধুরীর অভিজ্ঞতা অন্যরকম। “আপনি তো থাকেন মধুসূদনের বাড়িতে, সেই এক কোনায়। কিন্তু আমার কোয়ার্টার তো রাস্তার উপরেই একতলায়। গতবার ছেলেরা বাড়ির সামনে সক্কালবেলায় নাচতে নাচতে কীর্তন গেয়েছিলো ইয়ে জিন্দেগী উসি কি হ্যায়, প্যার কিসি সে হো গয়া। কি সাহস!!”

প্রফেসর চৌধুরী জানেন যে, ছেলেরা আনারকলি সিনেমার এই গানটা ওনার বড় মেয়ে তিলুর উদ্দেশ্যেই গায়। আর প্রিন্সিপাল ছিলেন রসিক লোক, অন্যরকম ভাবেন।

এ তো ভালো গান। আমার বিয়ের পরে ঐসময়ের বিখ্যাত গান। আর তুমিও তো তখন কচি বয়সের ছিলে, ঝর্ণা সিনেমায় গিয়ে এই সিনেমাটা অনেকবার দেখেছিলে, সেরকমই তো জানি।

হোক সেই সময়ের গান। তাই বলে সক্কাল সক্কাল বাড়ির সামনে কেত্তন গাইবে?

ভঞ্জ স্যারেরও অভিযোগ আছে। “আরে, আপনাদের ভাগ্যে তো বছরে শুধু একদিন। আমার মেয়ে চুমি তো ম্যাক আর রিচার্ড হলের ছেলেদের থেকে নিয়মিত চিঠি পায়। সোহম নামের এক ছেলে, সে কবিতা লিখে পাঠায়। হিমাই নামের ছেলেটা হস্টেলের সামনে মোটর বাইক চালায়।“

এবার উপেনবাবু মুখ খুললেন। “আমারও একই সমস্যা।“

প্রিন্সিপাল স্যার অবাক, “তোমার মেয়ে? আরে, তোমার মেয়ের তো স্কুলে যাওয়ারও বয়স হয় নি।“
- আমার ক্ষেত্রে মেয়ে নয় স্যার, আমার ভাইঝি’কে গান গেয়ে শোনায়। সেকেন্ড গেট দিয়ে আসতে যেতে “নিম্মি কেমন আছো?” বলে হাঁক মারে। এঁরা কি বয়সের ধার ধারে? ভেবে দেখুন, দান্তেবাবুর মাত্র সাত আট বছরের মেয়ে সোমা যখন প্রাইমারি স্কুলে যায়, তখন সাহেবপাড়ার সব ছেলেরা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। ভাবতে পারেন?
প্রিন্সিপাল স্যার এতসব জানতেন না। সকলের কথা শুনে বুঝলেন যে, এই ভ্যালেন্টাইন’স ডে’তে ছেলেদের মধ্যে উন্মাদনাটা একটু বেশিমাত্রায়ই থাকে।

ওদিকে বাড়িতে ফোনদাদুর স্ত্রীও খেয়াল করেছেন, যে স্বামী কেমন যেন চিন্তিত, কিছু একটা সমস্যা নিশ্চয় আছে, কিন্তু দাদু কিছুই খুলে বলছেন না। অবশেষে দিদিমার “আমার মাথা খাও” বারবার শুনতে শুনতে বলেই দিলেন নিজের সমস্যার কথা। দিদিমা এই ভ্যালেন্তিন দিবস ব্যাপারটা জানতেন না। সব শুনে উল্টো দশ কথা শুনিয়ে দিলেন। সারা পৃথিবী জুড়ে প্রতি বছর এত বড় একটা পূণ্যতিথি আসে। ঐ দুধের শিশুর ছেলেমেয়েরাও কত নিষ্ঠাভরে সেই তিথি পালন করে অথচ দাদু জীবনে একদিনের জন্যও সেটা পালন করলেন না? দিদিমা ওয়ার্নিং দিয়ে দিলেন, এই বছর তুমি যদি ভ্যালেন্তিন দিন পালন না করো, তো তোমার একদিন আর আমারও একদিন হয়ে যাবে।

নির্দিষ্ট দিনে ফোনদাদু বেশ ফুরফুরে মেজাজেই বাড়ি থেকে বেরোলেন। দিদিমা বলে দিয়েছেন, আজকে ভ্যালেন্তিন দিন, মনে থাকে যেন। দাদু অন্যদিন ফোনবুথে আটটা নাগাদ চলে আসেন, আজ সাতটার আগেই পৌঁছে গিয়ে দেখেন ইতিমধ্যেই লম্বা লাইন পড়ে গেছে। দূর থেকেই বুঝলেন কি একটা যেন ঝামেলা চলছে। আজ এসব যে হবেই, সেটা তিনি আগেই আন্দাজ করেছিলেন।

ব্যাপারটা জটিল। মাঝরাতে কিছু ছেলে ইট পেতে লাইন রেখে গিয়েছিলো, সেই ইটগুলো উধাও। কিছু ছেলে লাইন দিয়েছিলো, কিন্তু ভোরবেলা বেগ আসাতে হস্টেলে গিয়েছিলো, পেট হাল্কা করতে। ইটের লাইন সামলে রাখার জন্য যাদেরকে বলে গিয়েছিলো, তাঁদেরও বেগ এসে যায়। তাঁরাও সব নিজেদের পেট হাল্কা করতে হস্টেলে চলে যায়। এরপর ছেলেরা ফিরে এসে দেখে সব গোলমাল হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে লাইনে বিরাট বিশৃংখলা।

একটা ফার্স্ট ইয়ারের মেয়ে এই সাত সকালেই উপস্থিত। কানপুরে বয়ফ্রেন্ডকে ফোন করবে। ছেলেদের লাইনে সে দাঁড়াবে না। আর সবার আগে সেই ফোন করবে। ছেলেরা শুনেই রেগে গেলো। মেয়েটি লাইন ভেঙে সবার আগে চান্স পাবে, সেটা কোন সমস্যাই নয়। অভিযোগ অন্যরকম। কলেজে হাজার খানেক ছেলের মাঝে কি একজনকেও পাওয়া গেলো না, যে এই মেয়ে খুঁজে খুঁজে কানপুরের এক বয়ফ্রেন্ডকেই পছন্দ করলো? যে ছেলেরা ভোররাতে এসে লাইন দিয়েছে, তাঁরাও মেয়েটার দাবী মানতে রাজি নয়। ওদিকে দাদু শুনতে পাচ্ছেন, বুথের মধ্যে একের পর এক ফোন বেজেই চলেছে। কি কান্ড!

বুথ খুলতেই আবার ঝনঝন করে ফোন বেজে উঠলো। দিনের প্রথম ফোনটা তুলতেই অপর প্রান্ত থেকে একটা মিষ্টি গলার আওয়াজ “দাদু, আমি খেয়ালী বলছি, এতবার তোমাকে ফোন করছি, সেই সকাল থেকে।“ রোজ এত এত ফোন আসে, কে যে খেয়ালী, কে যে পিয়ালী, কে যে কোয়েলী এসব কিছুই দাদুর মনেই থাকে না। তবে এইরকম মিষ্টি আওয়াজে দাদু এক অনাবিল রোমাঞ্চের আনন্দ অনুভব করেন। দাদুর পার্থিব সব টেনশন দূর হয়ে যায়,

“হ্যাঁ, দিদিমণি, কেমন আছো?” দাদু তাঁর রোজকার নিজস্ব স্টাইলে আলাপ শুরু করে দিলেন।

দাদু, আজ ভ্যালেন্টাইন ডে দাদু, আই লাভ ইউ দাদু, আই লাভ ইউ, লাভ ইউ।

দাদু রোজই অনেক অনেক ফোন রিসিভ করেন, কিন্তু আই লাভ ইউ কেউ বলে না। দাদু ঠিক শুনছেন তো? বিশ্বাস হয় না।

দাদু, লামিকে, মানে ঐ শংখকে একটা খবর দিতে হবে, দাদু। আজ বিকেল চারটের সময় লামি যেন লাইটহাউস সিনেমার বাইরে আমার জন্য অপেক্ষা করে। খবরটা দিয়ে দিও প্লিজ।

দেখো কান্ড! গতকালই তো তিন তিনটে ফোন এসেছে এই লামির জন্যই। হ্যাঁ, স্পস্ট মনে আছে দাদুর। একজন বলেছে, আজ দুপুরে হস্টেলে গিফট নিয়ে আসবে, একজন বলেছে লিপিতে দুপুরের শো’তে রাম তেরি গঙ্গা মইলির টিকিট কেটে রাখবে। আরেকজন কি যে বলেছিলো ঠিক মনে আসছে না, তবে সেও সিনেমার কথাই বলছিলো। আর আজ এখন এই সাত সকালে কে এক খেয়ালীও সেই সিনেমার কথাই বলছে। যাক গে, সে লামিই বুঝবে। দাদুর কাজ মেসেজ দেওয়া, দিয়ে দেবে।

ফোনে কথা শেষ হতেই সঙ্গে সঙ্গে আবার ফোন বেজে উঠলো। কিন্তু ছেলেরা নিয়ম করে দিয়েছে, যে দুটো ইনকামিং পরপর চলবে না। সাথে সাথে আউটগোইং চালু রাখতে হবে। লাইনে সবার আগে সমীর, ১৫ নম্বর হস্টেলের, ছেলেরা নাম দিয়েছে রমণীরঞ্জন, ছোট করে রমণী। মাঝরাতে এসে লাইন দিয়েছে, সকালে প্রচন্ড বেগ আসা সত্ত্বেও বেগ চেপে রেখে লাইনে ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলো। আর বেশিক্ষণ হয়তো চেপে রাখতে পারবে না।

দাদু, আমি মালদা’র ঝামাগ্রামে ফোন করবো।

মালদা, চামাগ্রাম, ঝামাগ্রাম। হবে না। হবে না। সে তো এসটিডি করতে হবে। এখানে এসব এসটিডি ফেসটিডি হয় না। অন্য কোথাও যাও।“

দাদু বেশ বিরক্ত। এই খেয়ালী মেয়েটা বেশ ভালো মেজাজ এনে দিয়েছিলো, এই ঝামাগ্রামের ছেলেটা এসে সব বরবাদ করে দিলো।

মালদা হবে না? তাহলে দাদু এই নম্বরটাই লাগিয়ে দিন।

এটা কোথাকার?

এটা এখানের, হাওড়ার, শালিমার, ঐ ফোরশোর রোডে।“

দাদু নম্বর লাগিয়ে দিলেন। শুনলেন ছেলেটা ভাঙ্গা ভাঙ্গা হিন্দীতে কথা বলছে। মামুলী কথা, দাদু তাড়া দিয়ে যাচ্ছেন, ফোন ছাড়তে হবে। লাইনে আরও অনেক ছেলে আছে। কিন্তু রমণী নিজের মনেই মিনিট তিনেক ধরে কথা বলে গেলো।

এই ফোন শেষ হতেই রমণী আরও একটা কলকাতার নম্বর ধরিয়ে দিলো। দাদু নিরুপায়, রমণীকে ফোন ধরিয়ে দিলেন।

এই ফোন শেষ হতেই রমণী আরও একটা ফোন করতে চায়। বাইরে লাইনে দাঁড়ানো ছেলেরা এবার হল্লা লাগিয়ে দিলো। একদল বলছে কেউ একটার বেশি ফোন করতে পারবে না। রমণী কাতর অনুরোধ জানলো, যে রাত থাকতেই সে লাইন দিয়েছিলো, এমনকি সকালে প্রচন্ড বেগ আসা সত্তেও সে লাইনে অবিচল ছিলো। দাদুকে অনুরোধ, আর একটাই, শুধু একটাই ফোন সে করতে চায়। “দাদু, প্লিজ। আমি আর থাকতে পারছি না। এই ফোন করেই আমি পায়খানা করতে ছুটবো।“ দাদু নিজের সামনেই দেখছেন, ছেলেটা বেগের চাপে ছটফট করছে, কিন্তু নিজের লক্ষ্যে অবিচল।

বাইরে আবার তুমুল হট্টগোল, অধিকাংশ ছেলেরাই বলছে অন্তত তিনটে ফোন যেন সকলকে করতে দেওয়া হয়। আবার কেউ কেউ চারটে পাঁচটা ফোনের অধিকারও দাবী করছে। দাদু সব শুনে নিয়ম করে দিলেন, কেউ দুটোর বেশি পরপর আউটগোইং ফোন করতে পারবে না। এরপরে দুটো ইনকামিং এর জন্য স্লট রাখতে হবে। এদিকে দেখা গেল যে অনেকেই আছে যারা শুধু ইনকামিং এর অপেক্ষায় ভীড় করে দাঁড়িয়ে আছে। দাদু তাঁদের একটা আলাদা জোনে ভাগ করে দিলেন।

সবে মিনিট পনেরো হয়েছে, দাদু বুথে এসেছেন। এইসব দেখে এরই মধ্যে দাদুর পাগল হয়ে যাওয়ার উপক্রম। খেয়ালীর সাথে কথা বলে আজকের দিনটা সুন্দর শুরু হয়েছিলো। কিন্তু এই বদ ছেলের দল সেটা বিগড়ে দিলো। দাদু উঁকি মেরে বাইরের লাইন দেখলেন। আন্দাজ শ’খানেক ছেলে, এবার ধীরে ধীরে আরও নিশ্চয় আসবে। মানে সারাটা দিনই বরবাদ।

এবার একটা ইনকামিং ফোন এলো। সুন্দর মিস্টি গলা। “দাদু, আমি নুপুর, তুমি কেমন আছো?”

দাদুর আবেগ আবার উথলে উঠলো। এই “তুমি” সম্বোধন দাদুর খুব ভালো লাগে। যেন নিজের আপন লোক। আপনি আপনি বলে ডাকলে মেয়েগুলোকে কেমন যেন দূরের লোক মনে হয়।

“আমি ভালো আছি নুপুর, তুমি কেমন আছো?”

বাইরে প্রতিবাদ, “দাদু, সময় কম, কথা কম। কাজের কথায় আসুন। শুধু মেসেজটা নিয়ে নিন।“

দাদুর ইচ্ছে ছিলো আরও কিছুক্ষন মেয়েটির সাথে কথা বলেন। মেয়েটার সাথে দু’দন্ড কথা বলে যে আনন্দ পাবেন, সেই যো নেই।

দাদু, আপনাদের সাত নম্বর হস্টেলে অনিরুদ্ধ থাকে, তবে তুমি ঐ নামে ওঁকে খুঁজে পাবে না। শকুন আর বিরিঞ্চি নামেই ছেলেরা ওঁকে চেনে। আমাকে বলেছিলো, আজকের দিনের জন্য সুলা রাসা সিরাজ প্রেজেন্ট করতে। আমি বাজারে গিয়ে দেখি, ওটা তো রেড ওয়াইন, সেটা তো মদ। আমি বুঝতে পারছি না দাদু, ও কি আমার থেকে মদের বোতল গিফট চেয়েছে? তুমি একটু ওকে বলবে? যেন আমায় ফোন করে? প্লিজ দাদু।

এই “প্লিজ” কথাটায় এত মধু ঝড়ে পড়ে যে দাদু আর না করতে পারেন না।

শোনো মেয়ে, কি যেন নাম বললে? যদি মদ হয়, বিনা দ্বিধায় দিয়ে যাও। এখন তো মডার্ন মেয়েরা মদ, গাঁজা, চরস এসবই প্রেজেন্ট করে।

ঠিক আছে দাদু, আমি আজ এক বোতল রেড ওয়াইন নিয়ে আসছি। তোমার জন্যও কি আনবো দাদু?

না গো দিদিমণি, আমার জন্য দরকার নেই। তবে এক বোতলে ওঁদের কি আর হবে? এলে কম করেও চার পাঁচ বোতল নিয়ে এসো। ওঁদের হস্টেলে আরও অনেক মদ খাওয়ার পাবলিক আছে, এক বোতলে ওঁদের হবে না। আর পারলে বিড়ি সিগারেটও আনতে পারো।

দাদু ভাবেন, কি যে দিনকাল এলো! গতকালই একটা স্কুলে পড়া মেয়ে এই সাত নম্বর হস্টেলেই শৈবাল নামের একটা ছেলেকে ভ্যালেন্তিন দিবস উপলক্ষ্যে একগাদা সিগারেট উপহার দিয়ে গেছে। ছেলেটা সিগারেট খায়, কিন্তু বাড়ি থেকে যে টাকা আনে, সেই বাজেটে কুলোয় না, তাই মেয়েটা ভালোবেসে নিয়মিত সিগারেট উপহার দেয়। দাদু ভেবে ভেবে কুলকিনারা পান না। স্কুলে পড়া মেয়ে তাঁর বয়ফ্রেন্ডকে ভ্যালেন্তিন দিবসে সিগারেট, মদ উপহার দেয়?

একটি মেয়ে এসেছে, দাদু ভাবেন এঁকে তো কলেজে ছোট্টবেলা থেকেই দেখছেন। ক্যাম্পাসেরই কোন স্টাফের মেয়ে। নিশ্চয় বাড়ি থেকে ফোন করতে অসুবিধে, তাই এখান থেকেই ফোন করতে চায়। “দাদু, চিনতে পারছো? আমি তিলু।“

দাদু, দুঃখ পেলেন। মুখ চেনেন, নামটাই জানেন না।

আশেপাশের ছেলেদের মধ্যে খানিকটা গুঞ্জন উঠলো। এই তিলুর উপর ওদের অনেক অভিমান আছে। বিই কলেজে জন্ম, বাবা বিই কলেজের প্রফেসর, আর মেয়েটা নিজেও বিই কলেজেই পড়ে। অথচ বিই কলেজের এত ছেলে থাকতেও ও কেন যাদবপুরের ছেলের সাথে প্রেম করে? না হয় যেদো ছেলেটা চ্যাম্পিয়ন স্পোর্টসম্যান, তাই বলে বিই কলেজে কি স্পোর্টসম্যানের আকাল পড়েছে?

তিলু হিন্দী ইংরেজিতে মিনিটখানেক প্রেমালাপ করে চলে গেলো। ছেলের দল মুখ হাঁ করে সব দেখলো। দাদু যাবার সময় বললেন, “আবার এসো তিলু। যখনই সময় পাবে চলে এসো।“ দাদু সুযোগ পেলেই কলেজের নাতনীদের কত আদর করে বলেন তাঁরা যখনই সময় পাবে, যেন এই ফোনদাদুর কাছে চলে আসে। কিন্তু শুদুই দরকার ছাড়া কোন মেয়েই আসে না। এখানেও দাদুর দুঃখ।

আজকে দাদু সত্যিই ব্যাস্ত। লাইন দিয়ে এরকম দাঁড়ানো প্রতি বছরই একদিন হয়। এবার যেন আরও বেশি। তার উপর এবছর সিকিউরিটির লোকেরা যত সব অচেনা মেয়েদের দাদুর কাছেই পাঠিয়ে দিচ্ছে। তাঁরা সব রকমারি গিফট নিয়েও আসছে। কেউ আনছে ফুলের তোড়া, অনেকেই আনছে মদের বোতল। আবার অনেকের গিফটগুলো এমনভাবে প্যাকেটে মোড়া যে বোঝাই যাচ্ছে না ভেতরে কি আছে। শুনেছেন গতবার ময়ূখ নামে ওর পুরুলিয়ার এক ছেলেকে ওঁর জেলা স্কুলের গার্লফ্রেন্ড গিফট প্যাকে গাঁজার সরঞ্জাম পাঠিয়েছিলো। মেয়েটি ময়ুখকে এত ভালোবাসে যে ময়ুখের কোন ইচ্ছাই সে অপূর্ণ রাখবে না। দাদু আবার ভাবেন, আর অবাক হয়ে যান। আজকালের মেয়েরা ছেলেদের এতই ভালোবাসে যে ভ্যালেন্তিন দিবসে মদের বোতল, গাঁজা এইসব উপহার দেওয়ার প্রথা চালু করে দিয়েছে?

এবার একটা ছেলের ফোন। দাদু বিরক্ত, ছেলেদের ফোন একদমই পছন্দ করেন না। “দাদু, আমি সুকান্ত বলছি। ফাইন্যাল ইয়ারের সুকান্ত, সিউড়ি থেকে বলছি।”

– হ্যাঁ, তাড়াতাড়ি বলো, বাইরে লম্বা লাইন।

– কেমন আছেন দাদু?

– বাইরে লম্বা লাইন, তাড়াতাড়ি কাজের কথা বলো।

– দাদু, লেডিজ হস্টেলে অঞ্জনাকে একটা মেসেজ দিতে হবে।

দাদু রেগে যাচ্ছেন। কে এক মর্কট সুকান্ত, কাজের কথা না বলে অযথা সময় নষ্ট করছে।

– দাদু, অঞ্জনাকে বলবেন, আমি আজ সিউড়ি’তে আটকে গেছি, বিকেলে কলেজ যাচ্ছি। লেডিজ হস্টেলের নীচে অপেক্ষা করবো।

– ঠিক আছে, বলে দেবো।

– দাদু, প্লিজ ভুলে যাবেন না।

– কি মুস্কিল। আরে বলছি তো, বলে দেবো। ফোন ছাড়ো, বাইরে লম্বা লাইন।

– এই সন্ধ্যে ছ’টা নাগাদ। মানে এই পাঁচ দশ মিনিট দেরি হতে পারে।

দাদুর বিরক্তির পারদ বাড়ছে। একটু রেগেই বললেন, “বলেছি তো, খবর দিয়ে দেবো। এবার ফোন ছাড়ো।“

– ঠিক আছে দাদু, আপনি ভালো আছেন তো?

দাদু ফোনের লাইন কেটে দিলেন। সুকান্ত ছেলেটা দাদুর মেজাজটাই বিগড়ে দিলো।

ফোনের আসর চলছে। ছেলেমেয়েরা আসছে, যাচ্ছে। দেখতে শুনতে একটি বেশ স্মার্ট, মডার্ণ মেয়ে এসেছে। বললো “হোয়ার ইজ শ্যাঙ্গুপ্তা হল, দাদু?”

ইংরেজি শুনে খানিকটা ঘাবড়ে গেলেও দাদু নিজেকে সামলে নিলেন। বুঝলেন বাইরের মেয়ে। দাদু খুশী, একের পর এক অল্পবয়সী নাতনীরা আসছে। এঁদের অনেকের সাথেই আগে ফোনে অনেক কথা হয়েছে। সামনাসামনি এই প্রথম। দাদুর মন খুব প্রফুল্ল। খুবই মিঠে গলায় প্রশ্ন করলেন “কোন হল?

– শ্যাঙ্গুপ্তা হল।

দাদু কিছুই বুঝলেন না। পাস থেকে একজন আওয়াজ দিলো, “দাদু সেনগুপ্ত হস্টেলের কথা বলছে।“
– তাই বলো, সেনগুপ্ত হল। কার জন্য এসেছো? তোমার চেনাজানা কেউ আছে ওখানে?

– ও, ইয়েস। আমি স্যুকান্ট কে মিট করতে চাই। কিছু গিফট এনেছি ফর হিম।

দাদুর কেমন যেন সন্দেহ হলো। একটু আগে যে ছেলেটি ফোন করেছিলো, তাঁর নামও তো সুকান্ত। বললেন, “তুমি কি সিউড়ি শহরের সুকান্তের কথা বলছো?”

পিছনে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো, সে এগিয়ে এলো। “এক্সকিউজ মি, তুমি সুকান্তকে চেনো?”

– অফ কোর্স চিনি। হিলেকটোনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং ফাইন্যাল ইয়ার, শ্যাঙ্গুপ্তে থাকে।

– না, তুমি চেনো না। ও সিউড়ি নয়, বালিগঞ্জে থাকে। আমি ওকে পনেরো নম্বর হস্টেলের দিন থেকে চিনি, আমি অনেকবার হস্টেলে ওঁর রুমে এসেছি।

– শো হোয়াট? ও আমাকে বলেছে পাশ করে গেলেই ডারজিলিন, ডীগা, সান্টীনিকেটন নিয়ে যাবে।
– দীঘা? শান্তিনিকেতন? ব্যাস? ও কিন্তু আমাকে বলেছে সিমলা, গোয়া নিয়ে যাবে। থ্রি নাইটস ফোর ডেজ প্রোগ্রাম।“

আশেপাশের জনতার মাঝে একটু মৃদু গুঞ্জন উঠলো। সুকান্তকে ওরা সবাই চেনে। ক্যালিবাজ ছেলে। তাই বলে এখন থেকেই থ্রি নাইটস ফোর ডেজ আউটডোর প্রোগ্রাম? সাধারণ ছেলেদের ক্যালি লাইটহাউস, মেট্রো, অলকা, মায়াপুরী, ইডেন গার্ডেন, ভিক্টোরিয়া, ব্যাস ঐ পর্যন্তই। এর উপরের গ্রেডের ছেলেদের জন্য গার্ডেন বারের মদ, গাঁজা। কিন্তু সুকান্ত এখন কলেজে থাকতেই থ্রি নাইটস ফোর ডেজ প্রোগ্রাম সেট করছে?

দাদু ভাবছেন, এই সুকান্ত প্রায়ই ফোন করতে আসে। দিন দুয়েক আগেই ফোনে কাকে যেন বলছিলো মেয়েটি যেন পাসপোর্ট রেডি রাখে। ব্যাংকক নিয়ে যাবে। এখন অন্য দুটি মেয়ে এসে বলছে দীঘা, সিমলা, গোয়া। আবার খানিক আগে ফোনে বলেছে যে সন্ধ্যাবেলায় এসে অঞ্জনার সাথে দেখা করবে।

না, ফোনদাদুর মাথায় কিছুই ঢুকছে না।

ইতিমধ্যে আরেকটা ইনকামিং ফোন। একটি মেয়ে করছে। “দাদু, ভালো আছো? আমি একটূ তাড়াতাড়িতে আছি। সেনগুপ্ত হলের সুকান্তকে একটা খবর দিতে হবে।“

– সুকান্ত, সেনগুপ্ত হলের? শোনো মেয়ে, তোমার নম্বর অনেক পিছনে, মানে তুমি পাঁচ নম্বরে আছো।

– পাঁচ নম্বর? মানে?

– মানে, তোমার পাসপোর্ট আছে?

– হ্যাঁ, আছে তো। সুকান্তই করিয়ে দিয়েছে। ও পাশ করলেই আমরা ইউরোপ বেড়াতে যাবো। সেরকমই আমাদের প্ল্যান আছে।“

না। দাদু আর নিতে পারছেন না। উনি জেনেছেন, এইসব কাজকম্মোকে আধুনিক বাঙ্লায় বলে মাল নামানো। যাই হোক, কে কোথায় কি মাল নামাচ্চে, দাদুর জানার কি দরকার? দাদুর কাজ খবর পৌঁছে দেওয়া, আজকে যে সব গিফট আসছে, সেগুলো পৌঁছে দেওয়া, তিনি শুধু তাই করবেন। আবার মাঝে মাঝেই হতাশায় ভুগছেন। উনি কেন কলেজজীবনে এরকম ভাগ্য নিয়ে জন্মান নি?

এভাবেই সারাটা দিন কেটে গেলো। কতজন যে আজ তিনটে, চারটে, পাঁচটা করে ফোন করেছে। আর কতজনের জন্য যে চারটে, পাঁচটা করে ইনকামিং ফোন এসেছে, তাঁর হিসাব করা মুস্কিল। তাঁর উপর পাহাড়প্রমাণ ফুল, আর কতরকমের যে গিফট। আরও জানলেন, ছেলেরা কিরকম সব মাল নামায়।

এবার ঘরে ফিরতে হবে। দাদু সমস্ত গিফট হস্টেলের ছেলেদের কাছে পাঠান নি, কিছু নিজের জন্য লুকিয়ে রেখে দিয়েছেন, যদিও জানেন না, প্যাকেটের ভেতর কি আছে। কাজ শেষ করে রিক্সা ডেকে ঐ লুকিয়ে রাখা গিফটগুলো নিয়ে বাড়ি চললেন।

ফুল আর গিফট প্যাক পেয়ে দিদিমা খুব খুশি। ফুলগুলো সাজিয়ে রেখে, এক এক করে প্যাক খুলছেন। বেশিরভাগই মদের বোতল, আর আছে সুগন্ধি পারফিউম, দামী পেন, এইসব। দামী পেন মনে হয় পড়াশুনায় ভালো ছেলেদের জন্য মেয়েরা পাঠিয়েছে।

চলো গিন্নি, আজকের সন্ধ্যায় আমরা একসাথে ওয়াইন খাই। যাও, গেলাস নিয়ে এসো।

দিদিমা রান্নাঘর থেকে গেলাস নিয়ে এলেন।

আরে, আরে স্টিলের গেলাস নয়। স্টিলের গেলাসে কেউ ওয়াইন খায় না। কাঁচের গেলাস নিয়ে এসো।

কাঁচের গেলাসে রেড ওয়াইন খেতে খেতে দিদিমা দাদুর গলা জড়িয়ে সোহাগ করে বললেন “হ্যাঁ গো, এই ভ্যালেন্তিন তিথিটা কি বছরে একবারই আসে? পুন্নিমে অমাবস্যার মতন প্রতি মাসে আসতে পারে না?”

35 comments:

  1. নিখিল রঞ্জন চ্যাটার্জি, বিই কলেজ21 February 2024 at 14:45

    বেশ ভালো ।পড়ে মজা পেলাম ।

    ReplyDelete
  2. ইন্দ্রজিৎ কর্মকার, বিই কলেজ, ৭১ মেকানিক্যাল21 February 2024 at 14:48

    *অসাধারণ, অপূর্ব !!!* *আমাদের গ্রুপে শেয়ার করছি !!!* 👌👍

    ReplyDelete
  3. প্রফেসর সুধেন্দু সাহা21 February 2024 at 14:50

    বেশ লিখেছ। মন্দ নয়।

    ReplyDelete
  4. Absolutely brilliant from a seasoned writer.
    Extremely fascinating to your stories as usual.
    Regards. Ajoy Ghosh.

    ReplyDelete
  5. জীবন চৌধুরী, বিই কলেজ, ১৯৬৮21 February 2024 at 15:34

    ভালো লাগলো ফোনদাদুকে মনে রেখেছো । গল্পটাও ভালো লাগলো।

    ReplyDelete
  6. স্বপন বসু, দুর্গাপুর আরই কলেজ21 February 2024 at 15:38

    খুব ভালো লাগলো, হস্টেলের সেই মজাদার দিনগুলো, সে শিবপুর হোক, বা দুর্গাপুর

    ReplyDelete
  7. Srabani Guha, Architect21 February 2024 at 17:14

    🤣🤣🤣🤣🤣🤣

    ReplyDelete
  8. অপূর্ব, অসাধারণ হয়েছে। ক্যাম্পাসের পুরনো সেই দিনের কথা আর কি ভোলা যায় ?

    মিহির হালদার

    ReplyDelete
  9. অর্ণব চন্দ্র, বিই কলেজ21 February 2024 at 20:16

    পড়লাম, দ্বিতীয়ার্ধটা বেশি ভালো লেগেছে, অসীমদা

    ReplyDelete
  10. Awe- sadharan. O have posted in our beca63 chat group with 60 members even today.

    jayanta majumdar, 1963 be college

    ReplyDelete
  11. বিজিত কুমার রায়21 February 2024 at 20:22

    পড়লাম । বেশ মজার, ভালো লাগলো ।

    ReplyDelete
  12. গল্পটা পড়ে বেশ মজা পেলাম। ফোনদাদু, কলেজ - খুব প্রানবন্ত হয়ে উঠল। ঐ সময়ের কথা মনে এলে কেমন যেন বিভোর হয়ে যাই। তবে প্রশ্ন- কয়েকজনের নাম গল্পে পেলাম - খোদ লেখক বাদ !!!

    ReplyDelete
    Replies
    1. সুপ্রিয় হালদার ১৯৭৭ ইলেকট্রনিকস বি ই কলেজ।

      Delete
  13. খুব ভালো লাগলো। ভালো লেখ তুমি।

    ReplyDelete
  14. মিতা বলছি সকাল সকাল গল্পটা পড়ে এত আনন্দ পেলাম খুব ভালো লাগলো দাদা আমি রিতা

    ReplyDelete
  15. দেবাশীষ তেওয়ারি, ১৯৬৯ বিই কলেজ22 February 2024 at 12:39

    এটা রিলাক্সড হয়ে পড়ার মতই জিনিস। খুব এন্জয় করলাম

    ReplyDelete
  16. আমাদের সময় মানে '৬৫-৬৯ সালের সময় নয়। তবে দাদুকে নিয়ে অনেকটা লেখা হল। দাদুকে আমারও দরকার হত😂
    রবীন হালদার, বিই কলেজ, সিভিল

    ReplyDelete
  17. I am BEcollege Alumnus Prabir Sengupta 1952Electrical,
    now 94+years old. Thoroughly enjoyed it.

    ReplyDelete
  18. সঞ্জয় চক্রবর্তী, বিই কলেজ, ১৯৭৪22 February 2024 at 20:04

    Asim Deb এর signature style এ লেখা গপ্পো। অভ্যস্ত আছি।
    পাঠিয়ে দিচ্ছি।

    ReplyDelete
  19. পুরো টা ভালো করে এইমাত্র আবার পড়লাম ... অসাধরন রসবোধ আর বুদ্ধিদীপ্ত লেখা ... খুব ভালো লাগলো...৷ শান্তা, স্কটিশ চার্চ কলেজ

    ReplyDelete
  20. Reenku Roy Choudhury Bhaumik23 February 2024 at 15:32

    Enjoyed reading your hilarious account of the imaginative Valentine’s Day in the 70s of the 20th century

    ReplyDelete
  21. সুন্দর কল্পনা । সুন্দর লেখা। ফোন দাদুর চরিত্রটা বেশ প্রাণবন্ত লাগলো।

    ReplyDelete
  22. খুব ভাল লাগল। লিখে যান। আপনার ভাল লেখার হাত।
    বনানী চৌধুরী, সুরজকুন্ড, দিল্লি

    ReplyDelete
  23. তরুণ কান্তি মুখার্জি24 February 2024 at 22:28

    আমি বিই কলেজের নই, বা কোনদিন হস্টেললে থাকিনি। কিন্তু লেখার বর্ণনায় গল্পের ছবিটা বুঝতে পারি। খুব ভালো মনোরঞ্জন করা লেখা।

    ReplyDelete
  24. খুবই সুন্দর লেখা, পড়ে বেশ আনন্দ পেলাম।

    ReplyDelete
  25. দেবদত্ত ভট্টাচার্য25 February 2024 at 20:37

    আপনার কল্পনাশক্তির বাহবা দিতেই হবে। 👏🏾🌷

    ReplyDelete
  26. রুমা কুন্ডু, সুরজকুন্ড, ফরিদাবাদ25 February 2024 at 22:37

    সত্তর দশকের পটভূমিকায় লেখা গল্পটি অতি মনরঞ্জক।সরস বাচনভজ্ঞীতে খুব সুন্দর লিখেছেন। সব চরিত্র কাল্পনিক, কিন্তু প্রকৃত চরিত্র দাদু দুর্দান্ত। খুব ভাল লাগল পড়ে।আরও লিখুন।

    ReplyDelete

  27. অসীম দা'র গল্পগুলো খুবই মজার হয়, আর অনবদ্য, একবার পড়তে শুরু করলে শেষ না করে ওঠা যায় না, আরও দু'একবার পড়তে ইচ্ছে হয়।

    তিলোত্তমা চৌধুরী লাহিড়ী, দিল্লি

    ReplyDelete
  28. ভাস্কর দত্ত চৌধুরী28 February 2024 at 22:36

    এইমাত্র লেখাটা এক নিশ্বাসে শেষ করলাম। মনে হলো যেন ঘটনাগুলো চোখের সামনে ঘটছে। খুব জীবন্ত লেখনী। খুব ভালো লেগেছে । একটু দেরিতে জানালাম বলে ক্ষমা প্রার্থী

    ReplyDelete
  29. শাশ্বতী চক্রবর্তী, দিল্লি, সুরজকুন্ড2 March 2024 at 09:57

    বেশ লাগলো ,তবে সিরিজে দিলে পড়তে সুবিধা হয়। মোবাইলে একটানা পড়ি না ,একটু রেখে পড়ি।

    ReplyDelete
  30. সিদ্ধার্থ দাস, সাংস্কৃতিক পরিষদ3 March 2024 at 22:45

    গল্পখানা কিন্তু খাসা ছিল, দাদা ।

    ReplyDelete
  31. দারুণ আইডিয়া, অনবদ্য

    অশেষ ব্যানার্জি, '৭৭ বিই কলেজ

    ReplyDelete
  32. দারুন নামিয়েছিস। ভীষন প্রানবন্ত। পুরানো দিন গুলো আবার ভেসে আসে।

    ReplyDelete
  33. দারুন নামিয়েছো গুরু। আরো কিছুর অপেক্ষায় রইলাম।

    উৎপল নাহা, বিই কলেজ (৭ নম্বর হস্টেল)

    ReplyDelete
  34. চমৎকার লেখা, সঞ্জীব চ্যাটার্জী অথবা তারাপদ রায়ের খুব কাছাকাছি। যথেস্ট রসবোধ না থাকলে এইরকম লেখা সম্ভব নয়।

    ReplyDelete